নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জাপানের জন্য শোক

লিবিয়ায স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসুক।

আফরিন জাহান

You must remember that, you fighting against destiny. You have to make your own future.

আফরিন জাহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘নারী দিবস’ সবটাই কি বাড়াবাড়ি?

০৮ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:১২

ক্যালেন্ডারের পাতার আজকের দিনটা বিশ্বের সকল নারীর জন্য একটি ব্যতিক্রমী দিনতো বটেই কারণ আজ যে ৮ মার্চ। বিশ্বজুড়ে আজ সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে নারী দিবস। নিত্য নতুন বিভিন্ন দিবসের ভিড়ে এই দিনটা অনেকটাই আলাদা। কারণ মানুষ হিসেবে একজন নারী পরিপূর্ণ অধিকারের দাবিতে সুদীর্ঘকাল যে আন্দোলন চালিয়ে আসছে, তারই সম্মানস্বরূপ পালিত হচ্ছে আজকের নারী দিবস। অন্তত একটা দিন গোটা বিশ্ব আলাদা করে মনে করে নারীরাই এই জগতের শক্তির উৎস আর প্রেরণা। যদিও, আলাদা করে বছরের একটা বিশেষ দিনে নারী দিবস পালন করা নিয়ে নানা কথা হয়। নিন্দুকরা নাক সিঁটকে বলেন, সবটাই বাড়াবাড়ি। কিন্তু যারা এ কথাটা বলেন তারা নিশ্চয় ইতিহাসের পাতাটা ভাল করে উল্টে দেখেননি। তাই বিশেষ করে তাঁদের জন্য আর সকলের জন্য থাকল নারী দিবসের এই জানা কথাগুলো --
সামাজিক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন ধারায় দেখা যায়, নারী কোনও অংশেই পুরুষের পিছনে ছিল না। ফ্রান্সের প্যারি কমিউন, ফরাসি বিপ্লব, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক আন্দোলনসহ ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে পুরুষের পাশেই নারীকে দেখা যায়। কিন্তু, কাঙ্ক্ষিত দাবি নারী সমাজ অর্জন করতে পারেনি। কর্মক্ষেত্রে নারীর মজুরি পুরুষের চেয়ে কম। আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশনের ২০০৯-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বে পুরুষের চেয়ে নারী ১৬ ভাগ পারিশ্রমিক কম পায়। অপর এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, পৃথিবীতে নারীরা কাজ করছে শতকরা ৬৫ ভাগ। বিপরীতে, তার আয় মাত্র শতকরা দশ ভাগ। পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সংখ্যানুপাত প্রায় সমান। অথচ, দুনিয়ার মোট সম্পদের একশ` ভাগের মাত্র এক অংশের মালিক মেয়েরা। মেয়েদের গৃহস্থালী কাজের আর্থিক স্বীকৃতি এখনও দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ, তা অর্থনৈতিক মূল্যে অদৃশ্যই থাকে। অন্যদিকে, দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা তো বটেই এমনকী উন্নত বিশ্বের চিত্রটাও অনেকটা একই। কখনও শ্লীলতাহানি, কখনও যৌন নির্যাতন, কখনও মেয়ে হিসাবে জন্মানোর জন্য চূড়ান্ত নিপীড়ন, আবার কখনও ধর্ষণ। মহিলারা সত্যি ভাল নেই। বিশ্ব, সমাজ, যুগ যত তাল মিলিয়ে এগোচ্ছে, ততোই এগিয়ে চলার চেষ্টা চালাচ্ছে মেয়েরা। কিন্তু, কিছু মানুষের লোভ-লালসা, আর কিছু অদৃশ্য শক্তি মহিলাদের কেমনভাবে যেন পিছনে টেনে ধরে রেখেছে। সেই অদৃশ্য শক্তিকে অগ্রাহ্য করে কেউ কেউ অনেক উপরে উঠতে পারলেও, বেশিরভাগই সেই অদৃশ্য শক্তির কাছে পরাজয় স্বীকার করছেন। ইতিহাসের পাতা কিন্তু বলছে মেয়েরা পারবে সেই অদৃশ্য শক্তিকে ভেঙে ফেলে অনেক অনেকদূর এগিয়ে যেতে।

ইতিহাসের পাতা থেকে--
১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সেলাই কারখানার নারী শ্রমিকরা রাস্তায় নামেন।
১৮৬০ সালের ৮ মার্চ নারী শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নিজস্ব ইউনিয়ন গঠনে ব্যর্থ হয়।
১৮৮৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনের নেত্রী ক্লারা জেটকিন পুরুষের পাশাপাশি নারীর সম-অধিকারের দাবিটি আরও জোরালো করেন।
১৯০৭ সালে জার্মানির স্টুটগার্টে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সম্মেলন।
১৯০৮ সালে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে ১৭টি দেশের ১০০ জন প্রতিনিধি নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন।
১৯১১ সাল থেকে ৮ মার্চ দিনটিকে `নারীর সম-অধিকার দিবস` হিসেবে পালিত হয় ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে এই সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী
১৯১১ সালের ১৯ মার্চ প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করা করা হয়। এই দিনে সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, অষ্ট্রিয়া ও জার্মানিতে লক্ষাধিক নারী মিছিল ও সমাবেশের মধ্য দিয়ে এ দিনটি উদযাপন করেন।
১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে।
১৯৪৫ সালে সানফ্রান্সিসকোতে জাতিসংঘ স্বাক্ষর করে `জেন্ডার ইকুয়ালিটি` চুক্তিতে নারী অধিকারের যৌক্তিক দাবিগুলো বিবেচনায় রেখে ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে অনেকটা এগিয়ে যায়।
১৯৭৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৮ মার্চ নারী দিবস পালনের জন্য উত্থাপিত বিল অনুমোদন পায়।
১৯৮৪ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ঘোষণা করে জাতিসংঘ। ঐতিহাসিক সংগ্রামের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ এই সিদ্ধান্ত নেয়।
২০০৯-এ বিশ্বের ২৯টি দেশে সরকারি ছুটি সহ প্রায় ৬০টি দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালিত হয়েছে।

২০১০ সালে বিশ্বজুড়ে নারী দিবস পালন করা হয় এবং অভূতপূর্ব সাড়া মেলে।
ইতিহাসকে স্বীকৃতি-- বিশ্বের অনেক দেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয় ৮ মার্চ। এরমধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, বেলারুশ, বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, কিউবা, জর্জিয়া, গিনি-বিসাউ, ইরিত্রিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, লাওস, মলদোভা, মঙ্গোলিয়া, মন্টেনেগ্রো, রাশিয়া, তাজাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উগান্ডা, ইউক্রেন, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম, জাম্বিয়া।
এছাড়া চীন, মেসিডোনিয়া, মাদাগাস্কার, নেপালে শুধুমাত্র মেয়েরা এদিনে সরকারি ছুটি পায়।
তবে এটা নি:সন্দেহে বলা যায়, অনেক প্রতিবন্ধকতা জয় করেই এগিয়ে চলছে নারীরা। আকাশে বিমান ওড়াচ্ছে নারী। হিমালয়ের চূড়ায় উঠছে নারী; বন্দুক কাঁধে যুদ্ধেও যাচ্ছে নারী। নারীর নিয়োগ বাড়ছে সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে। ছোট-বড় ব্যবসায় নামছে নারী। শিক্ষায় বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। এভাবেই হয়তো একদিন পূরন হবে বেগম রোকেয়ার সুলতানার স্বপ্ন।জয় হোক সকল নারীর।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:১৯

মারুফ মুনজির বলেছেন: আজ অফিসে এসে ১০ টার মতো পত্রিকা পড়লাম, আজ নারী দিবস হিসেবে নারীদের নিয়ে প্রচুর লেখা, গবেষনা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, সফল নারীদের গল্পও প্রকাশিত হয়েছে অনেক, তার মধ্যে বনিক বার্তার প্রধান নিউজটা আমার ভালো লেগেছে, বাংলাদেশের সফল ১০ নারীর জীবন নিয়ে রিপোর্ট, এই রিপোর্ট পড়ার পর কিছু প্রশ্ন মাথায় এসেছে যা আমি নিউজ পরে জানতে পারিনি, জানা থাকলে জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন
১.এই সফল নারীরা কি বিয়ে করেছেন, তাদের স্বামীদের পেশা কি, তাদের দাম্পত্য সম্পর্ক কেমন ছিলো, এসব নারীরা কিভাবে এই সম্পর্ক ম্যানেজ করতেন, তাদের স্বামীদের কি ভুমিকা ছিলো, সেটা কতটা ইতিবাচক কতটা নেতিবাচক, নেতিবাচক হলে কিভাবে ম্যানেজ করেছেন। মোট কথা পারিবারিক জীবন কেমন ছিলো।
২. এসব নারীরা পরিবারে কিভাবে সময় ম্যানেজ করতেন, এদের কয়টা করে ছেলে মেয়ে রয়েছে, তাদের সন্তানরা কি কি করেন, তাদের সন্তানরা কি ভালোভাবে গড়ে উঠেছে নাকি স্পয়েল হয়েছে, যদি ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে সেটা ম্যানেজ করেছেন, এই সন্তান লালন পালনে তাদের স্বামীদের কি ভুমিকা ছিলো।
৩. এই সফল নারীদের অর্থনেতিক হিসেব কেমন ছিলো, তাদের সম্পত্তি কিভাবে খরচ করেছেন।
৪. পরিবারে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন কিভাবে, স্বামী ও তার পরিবার এই পারস্পারিক দুই পরিবারের সদস্যদের সাথে কিভাবে সম্পর্ক ম্যানেজ করতেন।
৫. এই সকল সফল নারীদের কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ কেমন ছিলো, তাদের কলিগদের কি ধরনের ভুমিকা ছিলো, এই পর্যন্ত উঠে আসায় তাদের কি কি চ্যালেঞ্জ ছিলো।
৬. এরা যদি কেউ অবিবাহিত বা ডিভোর্সি হয়ে থাকেন তাহলে তাদের এ পর্যন্ত জীবন কিভাবে পরিচালনা করেছেন।
৭. এই সফলদের জীবনের এই বেলায় এসে জীবন সম্পর্ক ধারনা কি, তারা কি জীবনে ভুল করেছেন, নাকি সঠিক করেছেন।

২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:২১

আফরিন জাহান বলেছেন: বনিক বার্তায় প্রতিবেদনটি যিনি লিখেছেন প্রশ্নটি তাকে করলে নিশ্চয় উত্তর পাবেন কারণ আমি ঐ পত্রিকাটি আজ পড়িনি। থ্যাঙ্কস

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.