রিফাতের চাদঁ

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৯

রিফাতের আকাশটা বড়ই নিরানন্দ। তাঁর আকাশে সুন্দর একটা চাঁদ নেই। আকাশটা তে কোন সময় দিন আসে না। সব সময় গুটগুটে অন্ধকার হয়ে থাকে। তাঁর আকাশের তারারা সেই গুটগুটে অন্ধকারের মাঝে কিছুটা আলো ঢেলে দেয়। তবে সেই আলো দিয়ে তো আর পথ চলা যায় না । রিফাতের একটা চাঁদের বড়ই দরকার। যে চাঁদ রুপালী আলোয় ভিজিয়ে দিবে তাঁর আকাশটাকে। রিফাতের দরকার একখন্ড মেঘ। যে মেঘ তাঁর আকাশের পুরোটা বুক জুরে থাকবে । কখনো একপলশা বৃষ্টি দিয়ে তাকে ভিজিয়ে দিয়ে যাবে। আবার কখনো গুড়ুম গুড়ুম আওয়াজে মাতিয়ে রাখবে তাঁর পুরোটা আকাশ।



রিফাত একখানা চাঁদের খোঁজে ফেইসবুকে যায়। কিন্তু সে সেখানে গিয়ে বুঝতে পারে এখানের চাঁদ গুলো বড়ই নিরানন্দ। তাঁরা আকাশ ভালোবাসেনা। তাঁরা আকাশের বুকে আলো দিতে চায় না। আর বাকি চাঁদ গুলো অনেক আগে থেকেই অন্যের আকাশে আলো দিয়ে যাচ্ছে। এখানে রিফাতের জন্য কোন যায়গা নেই। রিফাত আবার ফিরে যায় তাঁর আকাশের তারাদের কাছে। তাঁরাদের বলে তাকে একটা চাঁদ খুজে দিতে। কিন্তু তাঁরারা বলে চাঁদের যতোই আলো থাকুক চাঁদের কিন্তু কলঙ্ক ও আছে। সেই কলঙ্কের ভার কিন্তু সব আকাশ নিতে পারে না। রিফাত তারপরেও বলে আমার একটা চাঁদ লাগবেই।



ছয় মাস হয়ে গেছে। কেউ কোন কিছু মন থেকে চাইলে তা আল্লাহ তাকে দেয়। আল্লাহ রিফাতের মনের আশা ও পূরণ করেছে। রিফাত খুব সুন্দর একটা চাঁদ পেয়েছে। সেই চাঁদের আলোয় এখন তারাদের দেখা যায় না। রিফাত ও তারাদের ভুলে গেছে। সেই চাঁদের আলোয় তাঁর পুরোটা আকাশ ম্লান হয়ে গেছে। তবে সময় যতোই বাড়তে থাকে চাঁদের আলো ততোই কমতে থাকে। এখন চাঁদ বেশিরভাগ সময় ই মেঘের আড়ালে থাকে। সেই মেঘ তাঁর বুকে ঝড়ে না পরলেও গুড়ুম গুড়ুম আওয়াজে তাঁর কান ঝালা পালা করে দেয় প্রতিদিন। রিফাতের এখন আর মেঘ ভালো লাগে না। মেঘের গর্জন ভালো লাগে না। তাঁর দরকার একফোটা প্রশান্তি। কিন্তু চাঁদ কি আর তা বুঝে। চাঁদের কাজ সময় হলে আলো দিবে। আর সময় চলে গেলে লুকিয়ে থাকবে আমাবস্যার আড়ালে।



রিফাত শুধু চাঁদের আলো চেয়েছিলো। একটু প্রশান্তি চেয়েছিলো। কিন্তু চাঁদের আলোর সাথে চাঁদের কলঙ্কের কথা হয়তো রিফাত ভাবে নি। তাই চাঁদের আলো নয় চাঁদের কলঙ্কই রিফাতের পুরো আকাশটাকে ভরিয়ে দিয়েছে। রিফাত এমন চাঁদ চায় না। তাই এই চাঁদের থেকে পালিয়ে যায় তাঁর সেই তারাদের কাছে। রিফাত উপলব্ধি করতে পারে চাঁদের আলো বেশি হলেও তা ক্ষনস্থায়ী একসময় তা চলে যায়। কিন্তু তারারা সব সময় থাকে আকাশের সঙ্গী হয়ে। তারাদের আলোয় পথ চলা না গেলেও পথ হারিয়ে যায় না। আর সবচেয়ে বড় কথা তারাদের কোন কলঙ্ক নেই। রিফাত বুঝতে পারে চাঁদ তাঁর জন্য না। তাঁর জন্য তারারাই যথেষ্ট।



চাঁদ= প্রেমিকা

তারা = বন্ধু

০ টি +০/-০