নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুখে আমার উসখুস করছে বারুদ-\nবুকে আমার জ্বলে উঠবার দুরন্ত উচ্ছ্বাস ;\nআমি একটা দেশলাইয়ের কাঠি ।.....

সদানন্দ দেবনাথ

অমৃতস্য পুত্র

সদানন্দ দেবনাথ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওয়ান ওয়ে......

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৬


ওয়ান ওয়ে......

ক্লাস সেভেনে উঠেছি এবার।আগের সব বন্ধু গুলো আছে।নতুন ক্লাস পরিচিত বন্ধু। দিন ভালোই কাটছে।হঠাৎ ক্লাস শুরুর দুই সপ্তাহ মত পর, দ্বিতীয় পিরিয়ডে।একটা নতুন ছেলে এলো।ও নাকি অন্য স্কুল থেকে এসেছে।এখানে ভর্তি হয়েছে।পেছনের দিকে জায়গা ছিলো,সেখানে গিয়ে বসলো।তৃতীয় ক্লাসে রাফি চলে যাওয়ায় নতুন ছেলেটা বসলো রাফির সিটে।ঠিক আমার সোজাসুজি পাসের সারিতে।এর মধ্য বান্ধবিদের সাথে আলোচনা হয়ে গেছে কিভাবে ওকে পচানো যায়।নতুন তো একটু মজা করাই যায়।ছেলেটা বেশ ভাব ধরে বসে আছে।কিন্তু মনে হচ্ছে বেশ চটপটে।বালক তোমার ভাবের কি হাল করি দেখবে. হু।ক্লাস শেষে স্যার বেরিয়ে যেতেই আমরা একদল ছেলে আর একদল মেয়ে গিয়ে হানা দিলাম।এর মধ্য একদল ছেলে বন্ধু জুটিয়ে ফেলেছে।রিয়া গিয়ে ওকে বললো তোমার নাম কি?
--আবির। তোমাদের?
--আমি রিধিমা,যে নাম জানতে চাইলো ও রিয়া,আর এ রুপা,ও শাম্মি।
--তোমাদের...
হঠাৎ ম্যাডামের আগমনবার্তা। আর কথা হলো না।সেদিন আর কথা হয় নি।পরের দিন স্কুলে এসেই দেখি আবির বসে।আমাকে দেখে বললো।
--কেমন আছো রিধিমা?
--এই তো ভালো তুমি?
--ভালো।তুমি তো দলের লিডার?তাই না?
--মানে????
--না। মানে রিফাত বললো তোমরা নাকি শান্তশিষ্ট ছেলেদের র্যাগ করো?
--আরে না। সব মথ্যা কথা। (রিফাত তোর আজ হবে।মনে রাখিস)
--বির বিড় করে কি বলো???
--কই কিছু না।(এত দিন আমি সবাই কে জ্বালিয়েছি।আজ আমি এর কাছে ধরা খেয়ে যাচ্ছি।
--আচ্ছা, আমরা তো এক ক্লাসে পড়ি ফ্রেন্ড হতে পারি না?
--হুমম।আজ থেকে আমরা ফ্রেন্ড।
এই ভাবে আবিরের সাথে বন্ধুত্ব।কিছু দিনের মধ্য সবার সাথে ওর ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেলো।এই ভাবে আমার স্কুল জীবন চলতে লাগলো।তখনও অবশ্য দুজনই তুমি করে বলতাম।দিন ভালোই চলছে।সারাদিন ক্লাস, আড্ডা, লাইফটা মন্দ না।কিভাবে যে বছর শেষ হলো বুঝতে পারলাম না।ক্লাস এইটে উঠলাম।এইটে ওঠার পর বাড়ি থেকে নতুন ফোন পাই।ফোন পেয়ে ফোন নিয়ে পড়ে থাকি। এভাবে আরও এক বছর চলে গেলো।ক্লাস নাইনে উঠে, হঠাৎ একটা ছেলের প্রেমে পড়লাম।ছেলেটাকে কখনও দেখিনি।ফোনে পরিচয়।আমার প্রেম ভালই চলছিলো।সাথে সব আগের মতই।৬ মাস পর থেকে আমাদের সমস্যা শুরু হলো।ও পড়াশোনা আর সাথে কাজ করতো।তাই আমাকে সময় দিতে পারতো না।এভাবে চলতে চলতে একসময় আমাদের যোগাযোগ একেবারে কমে গেলো।কিছুদিন পর পর একটু কথা হতো।আমি এটা নিয়ে খুব রিয়েক্ট দেখাতাম।সত্যি আমার খুব খারাপ লাগতো।ফলাফল ব্রেকআপ।
সে যোগাযোগের সব ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়।নিজের কাছে নিজেই যেনো কেমন হয়ে গেলাম।কারও সাথে তেমন মিশতে চাইতাম না। বন্ধুরা তো আবাক।আমার মত মেয়ের এমন চুপ দেখে।ডিপ্রেশনে থেকে পরীক্ষা দিলাম।ফলাফল খুব ভালো হলো না।ক্লাস টেনে উঠলে নতুন সমস্যা।সামনে এস এস সি পরীক্ষা। কিন্তু আমার পড়া শোনায় মন নেই।আমার এমন খারাপ সময়ে আবির এগিয়ে এলো।আমাকে একদিন খুব করে ধরে সব শুনলো।তার পর থেকে, আবির আমার জীবন গুছিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিলো।ওর হাত ধরেই আগের মত হতে পারলাম।আবির সব সময় আমার সাথেই থাকতো।আমাকে সব পরিস্থিতিতে সাপোর্ট দিতো।বলতে গেলে আবির না থাকলে হয় তো আমার কোন অস্তিত্ব থাকতো না।এভাবে চলতে চলতে,আমরা খুব ক্লোজ হয়ে গেলাম।এক সময় আবিষ্কার করলাম। আবির ছাড়া আমার লাইফ শুকনো ত্যাজপাতা!!বুঝলাম,আমি আবিরের প্রতি দুর্বল হতে শুরু করেছি।দুই দিন অসুস্থ থাকায় স্কুলে আসতে পারলাম না। তখন সারাক্ষণ আবিরের কথা মনে পড়তো।মনে হতো আমার সব কিছু শূন্য। আমি এবার সত্যি বুঝতে পারলাম,আমি সত্যি আবির কে ভালোবাসি।কিন্তু আবিরের কি ভাবে বোঝাবো।ও কি আমাকে ভালোবাসে?সাহস করে একদিন বলে দিলাম আমার মনের কথা।এর পর আবির আমাকে যা বললো।তাতে আমি পুরোপুরিভাবে হতাশ হয়ে গেলাম।ও নাকি আমাকে শুধুই একজন ভালো বন্ধু ভাবে।তাহলে কি আমি ভুল স্বপ্ন দেখেছি?না তা হতে পারে না। ওর চোখে আমি শুধু বন্ধু নয়। তার থেকে বেশি কিছু দেখেছি।একদিন স্কুল ছুটির পরে মাঠে আবিরকে থামালাম।মাঠের পাশে ছায়ায় বসে।আবার আমি আমার মনের কথা বলি।
--আবির আমারর কিছু বলার ছিলো
--বলো
--আমি সত্যি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
--দেখো রিধিমা,আমি আগেও তোমাকে বলছি।এখনও বলছি।আমি কোন রিলেশনে জড়াতে চাই না।আর আমি তোমাকে কখনও ওই চোখে দেখি না।তুমি জাস্ট ফ্রেন্ড।আমি তোমার মত বন্ধুকে হারাতে চাই না।
--হারাতে চাও না বলেই তো বলছি বন্ধনটা আর একটু মজবুত করতে।দেখো,আমার খারাপ সময়ে, তুমি যে ভাবে আমাকে সাপোর্ট দিয়েছো।এটা অন্য কেউ পারবে না।আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি।
--বাট, আমি বাসি না।
--কেনো?? তোমার কি অন্য মেয়ের সাথে কোন রিলেশন আছে?
--না আমার কারও সাথে কোন রিলেশন নেই।
--তাহলে আমাকে ভালোবাসতে তোমার সমস্যা কোথায়??
--বার বার এক কথা কেনো বলো???অসহ্য।
--আবির শোনো।একটু দাড়াও।
আমার কোন কথা না শুনে সে চলে যায়।পরের দিন স্কুলে আবার দেখা।সব কিছুই নরমাল। তার সাথে যে আমার এমন কিছু হয়েছে সেটা কাউকে বুঝতে দেয় না।অন্যদিনের মতই ব্যবহার করে।আমি আসলে কনফিউজড হয়ে যাই!আসলে সে কি চায়?এভাবে দেখতে দেখতে এস এস সি পরীক্ষা চলে আসে।পরীক্ষা শেষে সময় গুলো খুব ইনজয় করলাম।আবির আমার সাথে বন্ধুর মতই ব্যবহার করতো।সব সময় পাশে থাকতো।আমি যতবার বলি ও ততবার ফিরিয়ে দেয়।আমার খুব কষ্ট হলেও আবার আবিরের কাছে ফিরে যাই।আমি ইন্টার ভর্তি হই।আর আবির পড়া ছেড়ে ব্যবসায় নেমে পড়ে।আমাদের সম্পর্ক আগের মতই চলতে থাকে।আমি তাকে অনেক ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি।তবুও আবির আগের মতই থাকে।এভাবে আমার এইস এস সি পরীক্ষা শেষ হয়।এই দুই বছরে আবির ওর ব্যবসায় খুব উন্নতি করেছে।মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।এবার আমি ডিপ্লোমা পড়ার জন্য পলিটেকনিক ভর্তি হই।আমি এর মধ্য বিভিন্ন ভাবে আবিরকে বোঝাতে চাই।এভাবে আরও তিন বছর কেটে যায়।এবার আবির রাজি হয়।তবে একটা শর্তে।
--দেখো রিধিমা।আমি তোমার জন্য সব করতে পারবো।কিন্তু বিয়ে করতে পারবো না।আর যদি বিয়ে করতে হয় তবে তোমাকে আমার পরিবারের পছন্দ হতে হবে।
--আমি তোমার শর্তে রাজি।তুমি তোমার পরিবারের সাথে কথা বলে দেখো।
--হুমম দেখবো।তবে তার আগ পর্যন্ত আমরা আগের মতই থাকবো।
--হুমম তাই হবে।
সত্যি আমি খুব আনন্দিত হয়ে ছিলাম।আমার দিন যেনো আরও ভালো কাটতে থাকলো।মনে একটা আশা ছিলো।আবিরের পরিবার আমাকে অপছন্দ করবে না।হঠাৎ একদিন বিকালে আবির আমাকে ফোন দিয়ে নদীর ধারে নিয়ে গেলো।
--রিধিমা,আমি আজ তোমার বিষয়ে বাড়িতে কথা বলেছি।
--উনারা কি বলেছেন??
--মা তোমাকে পছন্দ করে নি।তাই আমি তোমার সাথে রিলেশনশিপ রাখতে পারবো না।আই এম স্যরি।
হঠাৎ আমি যেনো অনুভুতি হীন হয়ে গেলাম।আমার পায়ের তলার মাটি যেনো হঠাৎ সরে গেলো।নির্বাক পাথরের মত দাড়িয়ে থাকলাম।
--দেখো রিধিমা,আমি তোমার মনের অবস্থান বুঝতে পারছি।কিন্তু আমার কিছুই করার নেই।ভালো থেকো।আমার থেকে ভালো কাউকে পাবে।
তার পর থেকে এই ভাবে আমার জীবন চলতে লাগলো।সন্ধায় আবির কে একবার ফোন দিয়েছিলাম।ওরা আজ নাকি কোথায় মেয়ে দেখতে গিয়েছিলো।মেয়ে আবিরের মায়ের পছন্দ হয়েছে।
রাত দুটো বাজে,কেউ একজন দোতলার বেকুনিতে দাড়িয়ে আছে।অন্ধকারে শুধু ছায়া মুর্তির মত দেখা যায়।তাকে চেনা যায় না।শুধু একটা নারী মূর্তি। নিঝুম রাতে মাঝে মাঝে,শুধু ফুপিয়ে কান্নার শব্দ ভেসে আসে।হৃদয়ের গভীর থেকে, কিছু হারানোর বেদনা,না পাওয়ার বেদনা কান্না হয়ে চোখের জলে ভেসে যায়।আর জেগে থাকে কারও অপেক্ষায়

ফেবু ফেন্ড রিধিমা জাহানের অনুরোধে লেখা।ছেলে হয়ে মেয়েদের সাইড নিয়ে লেখা।!!!কেমনে যেনো হয়ে গেছে

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.