নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাকপ্রবাস

বাকপ্রবাস

সৈয়দ আহমেদ হাবিব

বাকপ্রবাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

শরৎ মেঘ (একটা অনু গল্প লেখার চেষ্টা)

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০৪



বিয়ের পর মেয়েরা খুব ঘন ঘন বাবার বাড়ী আসতে চায়, আসলে আবার অনেকদিন থেকে যেতে চায়, দোটানায় ও ভোগে খুব, স্বামীকে যখন ফিল করে আর ভাবে বেচারা কি করছে, কি খাচ্ছে, সকালে কিছু না খেয়ে অপিস চলে যাচ্ছে নাতো! আর অন্য রকম একটা মায়াবী টান সেটাতো প্রতিনিয়তই অনুভব করে।



অন্তু একা শুয়ে শুয়ে টিভি দেখছিল, বউ নেই একা একা লাগছে খুব, চ্যানেল গুলো একে একে চেইন্জ করে দেখছে কিন্তু কোনটাতেই তার মন বসছেনা, নাটক এর চাইতে গানের দিকেই খুব ঝোক অন্তুর, আজকে গানও ভাল লাগছেনা, মোবাইলে একটা ম্যাসেজ এসেছিল খানিক্ষণ আগে, বউ পাঠিয়েছে নিশ্চয় এখনো দেখা হয়নি



"তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে খুব, দেখা করা যাবে?"



মিথিলা প্রতি বছর একবার আসে দেশে, থাকা হয় মধ্যপ্রাচ্য দুবাইতে, সেখানে ওর হাজব্যান্ড এর ব্যাবসা আছে, মিথিলার একটা ফুটফুটে মেয়ে আছে নাম বর্ণমালা, ক্লাস ফোর এ পড়ে, দুবাইতে যদিও বাংলাদেশী স্কুল আছে তবুও বর্ণমালাকে একটা ইন্ডিয়ান স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে, মিথিলার হাজব্যান্ড বাংলাদেশী স্কুল এর প্রতি খুব একটা আস্থা রাখতে পারছিলনা তাই ইন্ডিয়ান স্কুলে ভর্তি করাল মেয়েকে, মেয়ের স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি দিলে মিথিলা প্রতি বছর দেশ থেকে ঘুরে যায় মাস খানেক এর জন্য



খাবার অর্ডার দেয়া হয়েছে, স্যুপ এর বাটি টেনে নিল দুজনে নিজেদেরটা, তাদের মনে সেই আগের মতো বুক কাঁপানো টানগুলো নেই, দুজনেই সংসার করে সুখী, অতীত বিষয়টাকে তারা খুব একটা প্রশ্রয় দেয় তা কিন্তু না, সেটা এমন একটা বিষয় চাইলেই ভুলা যায়না, তবে খুব একটা নাড়াচড়া না করাটাই মংগল বলে মনে করে তারা দু'জনই, মিথিলা গতবারও যখন দেশে এসেছিল অন্তুর সাথে দেখা করেছিল, সেটা ছিল বিয়ের পর তাদের প্রথম দেখা, আর আজকের দেখা করাটা দ্বিতীয় বারের মতো



হঠাৎ করেই মিথিলার বিয়ে হয়ে গিয়েছিল, ষ্টুডেন্ট থাকা অবস্থায়, অন্তুর তখন প্রতিরোধ করার উপায় ছিলনা, আর মিথিলাও বুঝতে পারছিলনা কি করা উচিত, অভিভাবকদের সাথে সংগ্রামে যাবার উপকরণ বা অবস্থা মিথিলার ছিলনা তখন, খুব কষ্ট পেয়েছিল উভয়ই তবুও তারা বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে নতুন করে শুরু করেছে, আবেগে ভাসিয়ে দেয়নি নিজেদের



-তোমার বউকে দেখাবেনা?

না, দেখনা, আমিতো দেখতে চাইনি তোমার স্বামীকে



-অন্তত ছবি দেখাও, মোবাইলে ছবি নেই?

আছে তবে দেখাতে মন চাইছেনা



-খুব সুন্দর বুঝি?

হুম, খুব কিনা জানিনা, তবে আমার ভালই লাগে



-আমার চাইতেও?

ওরকম করে দেখা হয়নি কখনো, তুমি তোমার মতো সুন্দর সে তার মতো, কম্পেয়ার করা হয়নি, করা অবশ্য উচিতও হবেনা



-আমার যে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে, পৃথিবীর সব চাইতে ভাল স্বামীটার সংসার করছে সে, কিছুটা হিংসাও আছে

তাই! পৃথিবীর সবচাইতে ভাল স্বামীটা তুমি গ্রহণ করলেনা, পচাটা কেন বেছে নিলে?



-হয়তো তোমাকে ঠকাতে চাইনি বলে

নাকি ঠকতে চাওনি বলে?



-তোমার সাথে কথায় পারবনা, হার মানলাম, বাচ্চা কখন নেবে ঠিক করেছ?

মাত্র তো বিয়ে করলাম, যাকনা একটু সময়, তাছাড়া সে এখনো পড়ছে, সামনে মাষ্টার্স পরীক্ষা, এখন ঝামেলায় ফেলতে চাইনা



-তুমি কি জান তোমার ছেলে হবে

কেন তোমার মেয়ে হয়েছে বলে?



-জানিনা, তবে আমার মনে হচ্ছে তোমার ছেলে হবে

লাব কি তাতে, তোমার মেয়ের বয়েস আমার ছেলের চাইতে বেশী হয়ে যাবেনা?



- আমার যে আর একটা মেয়ে হবেনা সেটা কি করে বলি হা হা হা



অন্তুর একাকিত্বের দিন ফুরাল, বউ ফিরে এসেছে



এই শোন একটা সুখবর আছে, মিষ্টি খাওয়াতে হবে, আই এ্যাম ইন এসপেক্টেট...



অন্তুর মুখে হাসির প্রচ্ছন্ন একটা রেখা দেখা দিল, আর মনে মনে হিসেব মিলাচ্ছিল, আমরাতো এখন সন্তান চাইনি, বউ ঘনঘন বাবার বাড়ি যেতে চায় কেন, এমন নানান মেঘের আনাগোনা সেই হাসিটা কিছুটা ম্লান করে দেবার চেষ্টা করছিল



(বি.দ্র. অন্য ব্লগে অন্য চোখে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.