নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমাকে সংখ্যালঘু বলে গালি দিবনে না আমাকে সনাতনী হতে অনুপ্রানিত করুন । ধন্যবাদ ।

সাগর কর্মকার

আমি স্বাধীনতা চাই ।

সাগর কর্মকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুন্দরবন বাচাও ।

১০ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:২৬

সুন্দরবন বাচাও । :((
"দি রওশন সার্কাস ও আমার হাতি প্রেম"
ক্লাস এইটে পড়ি। অংক ক্লাস।পিছনের বেঞ্চে বসে ঘাস ফড়িং নিয়ে খেলছি।হঠাৎ মাইকে শুনলাম।
হৈ হৈ কান্ড রৈ রৈ ব্যাপার। আসিতেছে!আসিতেছে!
দি রওশনন-নন-ন সার্কাস। আমার ক্লাসের ১২টা বাজিয়ে দিয়ে মাইকটা চলে গেল।ঘাস ফড়িংগুলো কৌটায় ভরে পকেটে রাখলাম।এখন আমার শুধুই অপেক্ষা, স্যার কখন বের হবেন, আর আমি কখন দৌড় দেব।
কামারপাড়া স্কুল মাঠে একমাস সার্কাস চলবে। স্কুল থেকে বাড়ি এসে দেখি বাড়ির সামনে বিশাল হাতি।আর হাতির পিঠে আমার বয়সি একটা ছেলে বসে আছে।সাইকেল ফেলে দিয়ে ঐ ছেলেকে বললাম হাতির পিঠে উঠবো। সে বললো ৫টাকা লাগবে। বললাম দেবো।আগে হাতির পিঠে নাও।বাড়ির সবার কাছে আমার এমন আচরণ খুবই পরিচিত। আমি হাতির পিঠে ঘন্টাখানেক থেকে নেমে পড়লাম।ততক্ষণে ছেলেটার সাথে পরিচয় জমে উঠেছে।তার নাম সবুজ, আর আমি পলাশ।দুজন হাতির পিঠে বসেই বন্ধু হয়ে গেলাম। সে আমাকে নামিয়ে দেয়ার আগে বললো কাল সকাল ৮টার মধ্যেই সার্কাস মাঠে আসবে,তোমাকে নিয়ে ঘুড়বো।
আমি সারা রাত ঘুমাতে পারি নি। সেদিন সন্ধ্যায় মা তেল ভাজা পিঠা বানিয়েছিলেন।পরদিন সকালে দুই পকেট ভর্তি করে পিঠা নিয়ে, নাস্তা না করেই প্রিয় লাল সাইকেলে চেপে বেড়িয়ে পড়লাম। ৮টার আগেই আমি পৌছে গেলাম।বিশাল এলাকা; টিন দিয়ে ঘিরে রেখেছে। তার ভিতরে অনেক বড় তাবু টানানো। আমি অবাক হয়ে সব দেখছিলাম। তাবুর বাহিরে বড় বড় চারটা হাতি,তাদের বিশাল কান দোলাচ্ছে আর শূর দিয়ে কলাগাছ খাচ্ছে।সব থেকে বড় হাতিটাই সবুজ চালায়, সে ঐ হাতির মাহুত(হাতি চালক কে মাহুত বলা হয়) বন্ধুত্বের হিসেবে এ হাতির মালিক এখন সবুজ আর আমি। সবুজ বললো তোমার সাইকেল তাঁবুর ভিতরে আমার ঘরের সামনে রাখ।কেউ নেবে না।সাইকেল রেখে সবুজ আমি হাতির পিঠে চেপে বেড়িয়ে পড়লাম। আমার সামনে সবুজ, এরপর আমি,আমার দুপাশে বড় দুটো বস্তা(পাটের ছালা)।সবুজ বলে দিলো একটায় চাল আর একটায় ধান। আমাকে কি করতে হবে; বুঝে গেলাম।প্রতিটা বাড়ির সামনে যাই আমি চাল হলে চালের বস্তা,ধান হলে ধানের বস্তায় ভিক্ষা নেই। টানা একটা মাস এভাবে কেটেছে। বাড়িতে কেউ কিছু বলতো না।আমি সারাদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা হাতির পিঠে ঘুরতাম।মনে মনে পরিকল্পনা করলাম আমিও সার্কাস দলের সাথে চলে যাবো।ওদের কি আনন্দ! ইসস!আমার জীবনটা যদি এমন হতো!!
সার্কাস দলে যোগ দেয়া হলো না। যেদিন সবুজরা চলে গেল দুবন্ধু অনেকটা সময় গলা ধরে কানলাম। আমি হাতির শূরে হাত বুলিয়ে দিলাম।
আমি হাতিটার জন্য পরম ভালোবাসা অনুভব করলাম!আজো সে ভালোবাসা মলিন হয়নি!!
................
সেদিন প্রথমআলো পত্রিকা খুলেই খবরটা চোখে পড়লো, জামালপুরের সরিষাবাড়ি গ্রামের কাছেই ভারত থেকে আসা হাতিটা ঘোরাফেরা করছে। ভারত সরকার, তাদের হাতি, তাদের জাতীয় সম্পদ ফেরত পেতে চায়। এ উদ্দেশ্যে তারা একটা টিম পাঠিয়েছে।যারা এ হাতিকে চেতনা নাশক ওষুধ প্রয়োগ করে ধরবে,এরপর তাদের দেশে ফিরিয়ে নেবে। খুব মহৎ উদ্দ্যোগ। সরকারকেই তো এগিয়ে আসতে হবে দেশের অমূল্য সম্পদ রক্ষার জন্য। ভারতের হাতি উদ্ধার অভিজানে
১)চেতনা নাশক ওষুধ!
২) ট্রাঙ্কুলাইজার গান!
৩) যমুনা সার কারখানার ক্রেন!
৪)ভারতের হাতি উদ্ধারকারী দল!
৫)আমাদের বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী!
৬)উৎসুক জনতা!
এবং
৭) আমাদের প্রচার মাধ্যম! ও আমাদের সরকার সকলের আন্তরিকতা দেখে আমি মুগ্ধ। আমাদের দেশের গণমাধ্যম,সরকার,বনবিভাগ সকলেই বন্য প্রাণীর প্রতি অনেক বেশি ভালোবাসা সঞ্চয় করে রেখেছেন।
ঠিক যেমন আমার মনে আজও আছে ছেলেবেলার হাতি প্রেম!
সরকারের,গণমাধ্যমের এবং ভারতের বন্য প্রাণীর প্রতি এ ভালোবাসাকে শ্রদ্ধা জানাই।
কিন্তু আমার মনে কয়টা প্রশ্ন কিছু উত্তর খোঁজে!

১) ভারতের একটা বাচ্চা হাতি কি আমার গোটা সুন্দরবনের থেকে দামী?
২) ভারত সরকার একটা হাতির জন্য এক সপ্তাহ থেকে পাগলের মত করছে,তাহলে আমার দেশের সরকার সুন্দরবনের জন্য মমতা দেখাচ্ছে না কেন???
৩) গণমাধ্যম গুলো কেন সুন্দরবনের পক্ষে জন সচেতনতা মূলক কথা বলছে না?(যা বলছে সেটুকুও না বলার সমান)
৪) আমরা যারা ভারতের হাতি নিয়ে, হাতির দেশে ফেরা নিয়ে রাতের ঘুম হারাম করেছি, তারা কেউ কি সুন্দরবন রক্ষা কর, কথটা একবারো উচ্চারণ করছি?
৫) ভারত তার একটা হাতির জন্য যে মমতা দেখালো, আমরা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের জন্য দেশের ক'জন মানুষ সে মমতা দেখাতে পেরেছি?
৬)দেশে চাইলে আরো ১০০টা রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করা সম্ভব, কিন্ত আমাদের দেশের এত বড় সম্পদ একবার ধংস করলে কি আর পাওয়া সম্ভব??
দেশের ১৬+ কোটি মানুষের ক'জন আমরা সুন্দরবন দেখেছি? আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের ক'জন বলতে পারবে সুন্দরবনের কথা?
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আজ বিকৃত, যে দেশে সাত বীর শ্রেষ্ঠর নাম আমরা বলতে পারিনা, যে দেশের মানুষ আমরা ১৯৫২,১৯৫৪,১৯৫৬,১৯৫৮,১৯৬৪,১৯৬৭,১৯৬৯,১৯৭০,১৯৭১ এ সালগুলোর মর্ম বুঝিনা!যে দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানিত হতে হয়! যে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো (আওয়ামীলীগ সহ সকল দল)বঙ্গবন্ধুর সম্মান দিতে জানেনা!!
যে দেশে অন্যায়ই ন্যায়, সে দেশর জন্য; সৃষ্টকর্তার এমন মূল্যবান উপহার রক্ষা করার মানসিকতাও কারো থাকার নয়!!!

আসলে আমরা শিক্ষিত, কিন্তু আমাদের বিবেক কি শিক্ষিত?
(অনেক রাত হলো ঘুমাই....সুন্দরবন গোল্লায় যাক, রামপালের লাভ, ভারত খাক, তুই শালা দেখতেই থাক!)
ফজলুল হক পলাশ স্যার ।
ফজলুল হক পলাশ স্যারের প্রথম প্রকাশ ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৪৫

শেয়াল বলেছেন: আবাল সবকডা ! !

১১ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৫১

সাগর কর্মকার বলেছেন: শেয়াল ভাই কি বললেন কাকে বললেন বুঝলামনা ।

২| ১১ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:০৫

সাগর কর্মকার বলেছেন: শেয়াল ভাই কি বললেন কাকে বললেন বুঝলামনা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.