নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্ত বিহঙ্গ শাহিন

আসসালামু আলাইকুম, আমার সম্পর্কে জানতে চান? নিচে কিছু লিখলাম। আমার দৃষ্টিতে আমি পৃথিবীর বিখ্যাত খারাপ মানুষের একজন,আর লোকের চোখে ধোঁয়া তুলসি পাতা। খারাপ মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে পারি না,তবে মনে মনে ঘৃণা করি। স্রষ্টা আল্লাহকে সবচেয়ে বেশী ভালবাসি,তারপর আমার প্রিয় নবী মুহাম্মদের রাসূলূল্লাহ(সা:), যিনি সৃষ্টি না হলে, এই বিশ্বের কোন কিছুই সৃষ্টি হত না। তারপর আমার শ্রদ্বেয় মা-বাবাকে। তারপর আমার পরিবার,এরপর বন্ধু-বান্ধব। গার্লফ্রেন্ড নামক দুপায়া ঘুম হারাম করা অপদার্থ এখনো জুটেনি,তাই এর ক্যাটাগরি করলাম না। অলি-আওলিয়াদের বড়ই ভালবাসি,তাদের থেকে আমি ইসলামকে ভালবাসতে অনুপ্রেরনা পেয়েছি। আপনি কে হোন , তা আমার দেখার বিষয় নয়। আপনি হতে পারেন একজন রিকশা চালকের মেয়ে, হতে পারেন বিল গেটস বা কার্লোস স্লিম এর মত বড়লোকের ছেলে তাতে আমার কোন আসে যায়না । আমি একজন সাধারন ছেলে , তাই কেউ বন্ধু হতে চাইলে সাধারন মন নিয়ে বন্ধু হলে খুশি হবো। আমি হযরত মুহাম্মদের (সা:)এর জীবন-আদর্শ অনুসরণ করার চেষ্টা করি। তবে মানুষ হিসেবে আমার ভুল-ক্রটি হওয়াই স্বাভাবিক,সেই ভুলগুলি আমাকে বললে আমি খুশি হবো,আর তার জন্য অগ্রিম ধন্যবাদ। ডাকনাম-শাহিন উচ্চতা-৫'৮"(১৭২cm) ওজন-৬২ kg বর্তমান শখ-ফেইসবুক চালানো আর গেইম খেলা। মাঝে মধ্যে লেখালেখি করি(গল্প,কবিতা)। সৃষ্টি জগতের সবই পছন্দ হয়।তবুও প্রিয় এর মাঝে আরো প্রিয় থাকে। প্রিয় গায়ক-তাহসান।(গান কম শুনি। মন খারাপ থাকলে অথবা নিজেকে একা মনে হলে।) চেনা মানুষের সাথে অনেক ফাইজলামি করি, অচেনাদের কাছে অনেক নীরব,ভদ্র। মানুষের সাথে মিশে যাই খুব তাড়াতাড়ি। আগে পড়ালেখার প্রতি অনেক আগ্রহ ছিল, এখন এই জিনিসটা অনেক বিরক্ত লাগে। অবসর পাইলে প্রকৃতির বুকে সাতার কাটি। বৃষ্টি আমার প্রিয় জিনিস। "বৃষ্টির দিনে মনে হয় রবী ঠাকুরের গান, বৃষ্টি পড়ে টাপুর টপুর রাস্তায় এল বান।" যাই হোক আর কিছু লিখলাম না।

মুক্ত বিহঙ্গ শাহিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অ্যানপ্রিডিক্টেবল-২ By মুক্ত বিহঙ্গ শাহিন

২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৯



-কেমন আছো শ্রভ্র?



-আমাকে বলছেন?



-হুম। কেমন আছো?

-ও ও , তুমি!!! ভাল।



-জানতে চাইবা না আমি কেমন আছি?



-কেমন আছো?



-আসলে কি বলবো,আমাকে অনেকটাই ভুলে গেছো।



-হুম। এখন আমি সব কিছু ইচ্ছে করে ভুলে যাই। আসলে ভুলে যাওয়াই ভাল। আশাটা যখন নিরাশা হয়ে যায়,তখন মানুষ একটু অন্য মনস্ক হয়ে যায় , ত্রিভুবনে কি হচ্ছে, তা খেয়াল থাকে না। হয়তো বা আমার সেরকম কিছু হয়েছে। আমার বন্ধু মহিউদ্দিন বলতো," মানুষকে কখনো পুরোপরি আপন করতে নেই, আমার মানুষের কাছ থেকে কিছু আশা করতে নেই,নতুবা অনেক কষ্ট পাওয়া যায়।" তার কথা আমি তখন বিশ্বাস করিনি,আজ তাই সত্যি হল।



-ওও তাই, শ্রভ্র। তোমার কাছে আমি ক্ষমা চাবো না, কারন আমি সেই যোগ্যতা হারিয়েছি।



-আজ পর্যন্ত যারা আমাকে কষ্ট দিয়েছে অথবা আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে, তাদের আমি ক্ষমা করে দিয়েছি। তাই তুমি ক্ষমা নিয়ে চিন্তা করো না।ক্ষমার জন্যে এতদূর না আসলেও পারতে।



-না, আমি ক্ষমার জন্যে আসিনি। শুধু দেখতে এসেছি তুমি কেমন সুখে আছো? বউ-বাচ্চা নিয়ে অনেক সুখে আছো বুঝি? তোমার বাবুটা দেখতে অনেক সুন্দর বুঝি?



-সুখ!!! অনেক সুখে আছি। আর বিয়ে! এই জগতে সবাই চাইলে ও স্বার্থপর হতে পারে না। আচ্ছা নীলা তোমাকে একটা প্রশ্ন করবো? আমাকে কেন ভালবাসলে। আমিতো তোমাকে ভালবাসতে বলিনি।

তোমিই তো আমাকে প্রথম ভালবাসতে বলেছিলে। তবে কেন তুমি আমার সাথে এরকম করলে? তুমি না বলেছিলে,ভালবাসা এক সুখে ঘেরা স্বর্গ, পবিত্রতার বন্ধন। কেন এটাকে কলঙ্কিত করলে?



----। বিয়ে করনি কেন? আমাকে অনেক ভালবাসতে বুঝি? আসলে আমি অনেক স্বার্থপর। মেয়েরা অনেক স্বার্থপরই হয়। অামি পারিনি সেদিন আমার বাবাকে মৃত্যুর মুখে ফেলে তোমার হাত ধরে পালিয়ে যেতে। আমি বড়ই স্বার্থপর।



-কি হয়েছিল তোমার বাবার?



-বাবার ব্লাড ক্যান্সার ছিলো। ডা্ক্তার বলেছিলো বড়জোড় তিন মাস বাচবে। আমি বাবাকে খুব ভালবাসতাম। মা আমার কাছে এসে হাতাজোড় করে বললো, তোর বাবার শেষ ইচ্ছে, তোকে আকাশের সাথে বিয়ে দিতে চায়। আমি বললাম,সম্ভবনা,কারন আমি শ্রভ্রকে প্রচন্ড ভালবাসি। তোর বাবা প্রচন্ড অসুস্থ,ডাক্তার বলছে, তাকে কোন রকম মানুষিক কষ্ট না দিতে। না হয়,সব আশা নিরাশা হয়ে যাবে। তুই রাজি হয়ে যা মা, তোর বাবার দিকে চেয়ে। আমি সেদিন আমার সুখের কাছে আমার বাবাকে বিসর্জন দিতে পারিনি। তাই আমি আকাশকে বিয়ে করেছি।



-আসলে তোমার দোষ নাই। সবই নিয়তি। ভাগ্যের নিমর্ম পরিহাস আমাদের সাথে ঠাট্টামি করেছে। কি আর বলবো, শুনেছি বিধাতা নাকি, মানুষের অমঙ্গল চান না। হয়তো বা এতেই কল্যাণ নিহিত।



-হয়তো বা।



-হুম,নীলা। কেমন কাটছে বিবাহিত জীবন? অনেক সুখ না।



-বিবাহিত জীবন! খুব সুখে আছি। আদর্শগত দিক দিয়ে ছেলে অনেক সৎ-নিষ্ঠাবান একজন পুলিশ অফিসার ছিল। আশা করে ছিলাম,তোমার না পাবার ধবল হয়তোবা কাটিয়ে ওঠতে পারবো। কিন্তু পারিনি,বিধাতা আমাকে সে সুখ দেয়নি। আসলে এই অভাগী যেদিকে যায়,সেদিকেই সাগর শুকায়।



-কেন, কি হয়েছে?



সেদিন ছিল,রবিবার,বিরোধী দলের ৪৮ ঘন্টা হরতাল। আমাদের বিয়ের রাত। রাত ১০টা। আকাশ যখন বাসর ঘরে ঢুকলো,তখন হঠাৎ ফোন আসলো। ফোন শেষে , আকাশ বলল," আমাকে এখনই যেতে হবে,একটা লোক খুব বিপদে পড়েছে। আমি ১ ঘন্টার মধ্যে আসতেছি।" আর কোন খবর পাইনি,দীর্ঘ দুইমাস পর সে এসেছিলো ঠিকই, কিনতু জিবিত না ,মৃত। আসলে বিধাতার বিচার চিরন্তন,ঠিক। কাউকে কষ্ট দিয়ে কখনো সুখি হওয়া যায় না।



-সরি,তোমাকে আমি অনেক ভুল বুঝেছি। আমাকে ক্ষমা করো।





-তুমি ক্ষমা চাচ্ছো কেন? তোমার কোন দোষ নেই।



-আর বিয়ে হয়নি তোমার,নীলা?



-আকাশ মারা যাবার পর,শ্বুশর বাড়ি থেকে চলে আসি। তার ১ মাস পরই বাবা মারা যায়। বাবার শোকে মা অজ্ঞান হয়ে যায়, তারপর আর জ্ঞান ফিরে আসেনি। তারপর পাশের প্রাইমারি বিদ্যালয়ে একটা চাকরি নেই। যা মাইনে পেতাম, তা দিয়ে মিলাকে নিয়ে চলে যায়।



-আমাকে এসব বলনি কেন?



-কি করবো। আমি যে তোমার কাছে বড়ই অপরাধী। ২টার বছর ধরে, তোমার কথা প্রতিরাতে মনে হয়, কাঁদতে কাঁদতে কত রাত পার করে দিয়েছি। তবুও তোমার সামনে এসে দাড়াবার সাহস পাইনি। আর থাকতে পারলাম না। অাজ মন শক্ত করে চলে এলাম, তোমাকে একটু দেখবো বলে।



-তোমার মুখটা এত শুকনা কেন? সকাল থেকে মনে হয় কিছু খাওনি। চল কিছু খাওয়া যাক।



-আমার ক্ষুধা লাগেনি।

-আরে চলতো।

............



-আচ্ছা শ্রভ্র,আমার একটা কথা বলতে মন চাচ্ছে। যদিও সেই অধিকার আমার নেই।

-বল। সমস্যা নাই।



-আমি কি নতুনভাবে তোমাকে ভালবাসিত পারি।



-তা হয় না,নীলা। তা হয়না। যে ক্ষত মোর হৃদয়ে পড়েছে,তা শোকায়নি। আবার নতুন করে ক্ষত করতে চাও।



-না শ্রভ্র। আমি আর ক্ষত করবো না। যেই ক্ষত করেছি, তার অ্যান্টিবায়েটিক হিসেবে কাজ করবো।



-না নীলা, আমি আর এখন মেয়েদেরকে বিশ্বাস করি না। আমাকে ক্ষমা করো। কাদছো কেন,অশ্রুটা তোমার প্রধান হাতিয়ার,তাইনা। কেদে লাভ নাই। আসলে তোমার কাছ থেকে কষ্ট পাবার পর থেকে,অনেক কেদেছি,নিজেকে অনেক বুঝিয়েছি,নিজেকে আস্তে আস্তে শক্ত করেছি।



-না কাঁদছি না, চোখে কি যেন পড়েছে। সরি ,তোমাকে এসব বলার জন্যে। এখন আসি।



-আচ্ছা, ভাল থেকো। পারলে ভুলে যেয়ো।



-পারবো না।

(বলে নীলা হাটছে,অজানা এক পথে। যদিও এ পথে সে কতবার এসেছে। কিন্তু আজ সেই পথটা বড় অজানা লাগছে। নীলার বিষাদমাখা মুখের পাশাপাশি আকাশটা বড়ই হাসোজ্জল মুখে একমুঠো রোদ নিয়ে হাসছে। সবই যেন নীলার প্রতিকূলে, নীলাকে সান্তনা দেবার মত কেউ নেই। আজ আবার শনিবার। নীলা শোনেছে মানুষের শনিবার নাকি আবার খারাপ যায়।আত্মহত্যা করবে, তাও পারছে না কারন বাড়িতে তার ছোট বোন মিলা আছে। নীলা মারা গেলে ওকে দেখবে কে!)





-ছয় দিন পর। আজ শুক্রবার।

(বরাবরের মত, নীলা ফজর নামাজ পরেছে। সে প্রতিদিনিই আল্লাহর কাছে,শ্রভ্রর জন্যে মঙ্গল কামনা করে। আজ সে আল্লাহর কাছে বলেছে,আল্লাহ তুমি আমাকে কষ্ট দাও। কিন্তি শ্রভ্রকে কখনো কষ্ট দিওনা। আর দুচোখের কিনারা বয়ে গেছে শুধু অথই জল।)



-নামাজ পড়ে ওঠতেই, কলিং বেলের চির চেনা সুর।

দরজা খুলতেই,যা দেখলাম তা কখনো বাস্তবে দূরের কথা কল্পনায় ও ভাবিনি।

দেখলাম, শ্রভ্রর হাতে একতোরা গোলাপ আর রজনীগন্ধ্যা। সে হাটুঘেরে বসে গিয়ে,আমাকে বলল," I Love u too নীলা "



তারপর শ্রভ্রকে জড়িয়ে ধরে, ওর বুকে মাথা রেখে,অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকলাম। অদ্ভুত সেই অনুভূতি, যার স্বাদ আমি আজ প্রথম পেয়েছি।



-তারপর একটু পর,শ্রভ্র বললো," মেডাম, অনেক হয়েছে। এই নিন,এর ভিতর একটা শাড়ি আছে। যান পড়ে আসেন। বাহিরে যাব।"



-আমার না এভাবেই তোমার বুকে মাথা রেখে থাকতে মন চাচ্ছে। কোথায় যাবা?



-কাজী-অফিসে যাব। আজ থেকে ২বছর আগে,বিয়ে না করে প্রেম করেছি, তাই তোমাকে হারাতে হয়েছে। এখন বিয়ে করে প্রেম করবো ,তবে তোমাকে আর হারাতে হবেনা। বুঝলা?



-হুম। Good Idea, আসছি, তুমি বস।



..............



পার্কে হাটছি পাশাপাশি দুজন ...



-শুভ্র, আজ না আমার অনেক খুশির দিন। প্রকৃতিটা ও আজ দারুণ লাগছে।

-হুম। কোমর-অবধি তোমার কর্ণ পতিত চুলের সাজ দেখে,প্রকৃতি আজ হয়তোবা কিছুটা হিংসুটে হয়ে ওঠেছে। এমন একটা রমনী পাশে থাকলে,প্রকৃতির দিকে তাকানোর সময় কই।



-হুম, তাই বুঝি। আমার সাথে ফাইজলামি করতেছো,না!



ফাইজলামি না, সত্যি বললাম।





-হাতটা ধর,আর কখনো হাত ছারবা না,বুঝলা।



-হুম।





(এভাবেই চলতে লাগলো শ্রভ্র ও নীলার সুখে ঘেরা স্বর্গ নামক ভালবাসার নীড়। ভালবাসাতো এমন একটা জিনিস যার কোন সংজ্ঞা নেই, শুধু অনুূভব করা যায়। বর্তমানে ভালবাসার অবস্থান খুবই করুণ। ভালবাসা নামক পবিত্র বস্তুকে , লোভ ও কামনা নামক ছাইপাশ দিয়ে করা হচ্ছে পদদলিত, তা নিয়ে আমি বড়ই টেনসিত। আমাদের নিজেদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সবাই ভাল থাকবেন।)



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.