নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখছি, লিখে যেতে চাই বলে...............

সায়মা নাসরিন রুম্পা

সায়মা নাসরিন রুম্পা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেয়েটি

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪০

(পুরনো বই-খাতা ঘাটতে গিয়ে পেলাম।
ইন্টারে পড়ার সময় লিখেছিলাম।)

মেয়েটি চোখে দেখে না।
না না, দেখে।তবে ইয়া বড় মোটা একটা রিমলেস চশমার ভিতর দিয়ে।
চোখে দেখে না বলে কখনো ঠিকভাবে সে কাজল দিতে পারেনি।
চোখের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কাজল চশমার মোটা কাচের আড়ালে কারো নজরে পড়বে না ভেবে সে সান্তনা পায়।
মেয়েটির চোখও গভীর কালো নয় যে তার গভীরে কেউ হারাতে পারে।
বাদামী আইরিশ আর সাদা অংশে ভরা তার অক্ষিগোলক।

মেয়েটির ঘনকালো রেশমী চুল নেই।
ইচ্ছে করলেই ফুঁ দিয়ে চোখের সামনে থেকে চুল সরাতে পারে না।
বরং চুলগুলো অবিন্যস্তভাবে ওখানেই লেপ্টে থাকে।
রেশমী চুল না থাকলেও একমাথা ঝাঁকড়া কোঁকড়া কালো চুল আছে।
বেশ বড় একটা খোঁপা হয়।
কখনো সে ওখানে গোজে লাল গোলাপ।
না, না। গোলাপ নয়। তাকে গোলাপ কে দেবে?
বড়জোর একটা গাঁদা কিংবা কৃষ্ণচূড়া।

মেয়েটি পারে না গোছগাছ করে শাড়ি পরতে।
কোনমতে পেঁচিয়ে হাঁটতে পারলেই যেন বাঁচে।
কখনো কখনো শাড়ির পেছনে অনেক সময় দেয় সে।
কিন্তু হয়ে ওঠে না।
খুব সুন্দর নিজেকে গুছিয়ে চলা।
ওভাবেও চলতে পারে না মেয়েটি।
আর ভালো রাঁধুনী হয়ে কারো মুখগহ্বর কিংবা উদরের তৃপ্তি মেটাবে, এমন যোগ্যতাও তার নেই।
সে মিছেই রান্নার ভাব করে, কিন্তু হয়ে ওঠে না কিছুই।
কতটুকু চালে কত মগ পানি দিতে হয়, আজো তার হিসেব মেলাতে পারেনি সে।
রান্না তার কাছে পড়াশোনার চাইতেও ভীষণ কঠিন কোন ব্যাপার!

মেয়েটি জানে না চোখ-ভ্রূ এর এমন নিপুণ কোন কারুকাজ, যা দিয়ে কোন ছেলে ভুলানো যায়।
কখনো কখনো তো সাধারণ কথা বলতে গেলে কথা-ই জড়িয়ে যায়।
আর গুছিয়ে বলা তো কোন দূরূহ ব্যাপার!

গতরে বড় অথচ মনে শিশু মেয়েটি সহজেই বিশ্বাস করতে জানে।
অথচ তারই বিশ্বাস তাসের ঘরের মত বারেবারে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
মেয়েটি ভালবাসত কল্পনা করতে।
একসময় তার কল্পনা হারায়।
স্বপ্নও হারায়।

অতি-সাধারণ সে মেয়েটি জানে, সাধারণের মত বৈশিষ্ট্যও তার নেই।
তবুও তার মনে হয়।
সে একেবারে ফেলনা নয়।
সৃষ্টির শুরুতেই যদি বিধাতা তাকে ধ্বংস করতেন,
তবুও সে ফেলনা হতো না।

তার আছে জ্ঞানপিপাসা।
সে জানতে চায়,
না জানা কাজগুলো সে যতন করে করতে চায়।
তার জন্য সে খোঁপা সাজাতে চায়,
যে যতন করে এই খোঁপায় গোলাপ গেঁথে দেবে।
ছড়িয়ে দেওয়া কাজল দেখে মৃদু হেসে বলবে,
কাজল ছাড়াই তুমি মায়াবিনী।
তুমি স্বপ্নচারিণী।
যার মুখনিঃসৃত ক’টি শব্দ, কবিতার ক’টি লাইন মেয়েটির মন ভরিয়ে দেবে।
মেয়েটির হীনমন্যতা কেটে যাবে।
সেই সময়টুকু মেয়েটির জন্য হবে হীরন্ময়।
তাবৎ জ্ঞান, তাবৎ ভাষা সবই হবে অচল।
চকচকে কারুকার্যখচিত রাজকীয় প্রাসাদ থেকে ভালবাসা নেমে আসবে মেয়েটির জীর্ণ কুটিরে।

মেয়েটি কেবল ভাবে আর হাসে।
আর নিজেকে তিরস্কার করে,
ধ্যুর, এও কি সম্ভব!

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪

জাহিদ জুয়েল বলেছেন: খুব ভাল লাগল।

২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৬

বেগুনী ক্রেয়ন বলেছেন: না, সম্ভব না|
এবং সেটা মেয়েটাকে মনে রাখতে হবে|

৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২০

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: অসম্ভব ভাল লেগেছে আমার

৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:২১

আবু শাকিল বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

৫| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৮

সায়মা নাসরিন রুম্পা বলেছেন: ধন্যবাদ।।

৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন

৭| ১৪ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৫

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: আমারো কিন্তু অসাধারণ লাগল। কিছুটা হাহাকার কিছু স্বপ্ন মিলেমিশে গেছে।


ভালো লাগা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.