![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাঙালির ঘটা করে দিবস পালন করার ঝোঁক রয়েছে। সাথে বড় বড় বুলিতো ঝাড়া হয়ই। বাঙালি আর কিছুই না পারুক বড় বড় বুলি ঝাড়তে ওস্তাদ। অথচ দিবস শেষ তো কার্যক্রম শেষ। বিভিন্ন দিবসে দেওয়া নানান গঠনমূলক বক্তব্যের বাস্তবায়ন দিবস-পরবর্তী দিনে না আর দেখা যায়, না শোনা যায়।
বরং দিবস পার হয়ে যাওয়ামাত্রই সেই প্রসঙ্গ হয়ে যায় স্রেফ ‘বাতুলতা’।
এবং সেই আগেকার দিবসে গৃহীত শপথ নেবার চেষ্টাকে পরবর্তিতে প্রতি পদে নিরুৎসাহিত করা হয়। কখনো কখনো প্রতিশোধ নেবার চেষ্টাও করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে নেওয়া হয়ও।
যেমন নারী দিবসের কথাই ধরুন। সেদিন নারীদের পক্ষে, নারীদের জন্য শতরকম লেখা বের হয়। সবাই বাহবা দেয় নারীদের। ফেসবুকে বয়ে যায় নারীদের পক্ষে স্ট্যাটাস ঝড়! ইনবক্সে আসে নারী দিবসের শুভেচ্ছা সম্বলিত হরেক রকম বার্তা।
যারা দিনে চৌদ্দবার নারীদের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করেন, সেদিন তারাও লুতুপুতু কন্ঠে নারীদের জয়গান গান। সারাবছর নারীদের উৎপাত করে ঐদিন ওইটুকু জয়গানে তারা বুঝিয়ে দেন, বছরের ঐ একটি দিনই কেবল নারীর। বাকি দিনগুলো কেবলই পুরুষের!
এবং তার দৃষ্টান্তও অহরহ মিলে পরদিন থেকে। নারীদের পক্ষে বাকি ৩৬৪ দিনের যেকোন একদিন লিখলেই তার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য দাঁড়িয়ে যাবে অনেক ব্যক্তি, অনেক সংঘ। ওই নারীকে তখনই খুঁজে বের করে তাকে হুমকি দেবার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। হুমকি দিয়ে কাজ না হলে চলবে তার বিরুদ্ধে বদনাম রটানোর চেষ্টা, সম্মানহানির চেষ্টা।
কিছুদিন আগে চবির ছাত্রহলের সামনে ছাত্রীদেরকে ইভটিজিং করার বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত লিখেছিলাম। লেখাটি গায়ে লেগেছে বিশেষ গোষ্ঠীর। এর দু’একদিনের মধ্যেই তাদের একজন মারদাঙ্গা একটি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে। লেখাটিতে যুক্তির চাইতে নারীদের ছোট করার প্রবণতাই ছিল বেশি।
কিছুদিন পর জানতে পারলাম, তিনি আমার হলেরই কারো কারো কাছে জানতে চেয়েছেন তারা আমাকে চেনে কিনা। দু’বার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হওয়া পাতিনেতাটি আমাকে খুঁজে বের করতে চান। দেখতে চান আমি কত সুন্দরী! কেমন সাহস আমার, আমি কিভাবে এই লেখা লিখি!
আমি নিশ্চিত পরশু নারীদিবস উপলক্ষে তিনিও নারীদের পক্ষে বড় বড় কথা বলেছেন! অথচ অন্যান্য সময় এই কথা কেউ বললেই তার গায়ের রোম খাড়া হয়ে যায়!
এই হল আমাদের দিবস পালন!
তাহলে? এতে কী লাভ? একটা দিবসেই যদি সবকিছু সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে দেশ এগোবে কি করে! দিবস-পরবর্তী দিনগুলোতে যেন এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকে, তাইতো কাম্য!
আমি পুরুষের অধিকারহীনতা চাইনা। কেবল চাই নারীরা মানুষ হিসেবে তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু পাক। এই তো যথেষ্ট!
©somewhere in net ltd.