![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মস্তিষ্ক প্রসূত শব্দলাভা উগড়ে ফেলে তবেই যে শান্তি!
ডিম আগে না মুরগী আগে সেটা নিয়ে নানা মুনির না না মত। কিন্তু আমার মতে ডিম ইজ ডিম, ডিমের উপর কোন কথা হবে না।
এখন আসি আমি কেন ডিমের পক্ষ হয়ে কথা বলছি সে বিষয়ে একটি যুক্তি খন্ডন করা যাক।
ঘটনার শুরু যখন থেকে একা একা থাকা শুরু করলাম, ঢাকায় আসার দুই বছরের মাথায় নিজে যখন একা বাসায় শিফট হলাম তখন থেকেই ডিমের সাথে আমার ভালোবাসা। সেদিন টার কথা আজও আমার মনে পড়ে জীবনের প্রথম ব্যাচেলর লাইফের সকাল, কি খাবো কি খাবো চিন্তা করতে করতে হঠাৎ ভাবলাম পাউরুটি আর ডিম, খারাপ হয় না। যেই ভাবা সেই কাজ, কাজে লেগে গেলাম। জীবনের প্রথম নিজের হাতের রান্না(!!) চোখের জলে পেঁয়াজ কুচলাম, হাত মুখ জ্বালিয়ে মরিচ কাটলাম, ডিম ভাঙ্গলাম, সেই ডিমের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খোসা গুলো বহু ধৈর্য্য সহকারে বাটি থেকে ফেলে দিলাম। এর পর তিন মাইল দূর থেকে ম্যাচের কাঠি ছুড়ে মেরে চুলায় আগুন ধরালাম।
কিন্তু এর পর কি করতে হয় আর জানা নেই, বন্ধুকে জিজ্ঞেস করতে সে বিজ্ঞের মত বললো “চুলায় তেল দে, তারপর ওটা গরম হলে পানি দিবি তারপর ডিম ছেড়ে দিবি ব্যাস”। কিন্তু আমার কাছে ঘাপলা লাগলো, আম্মা কে ফোন দিয়ে ডিম ভাজির রেসেপি টা শিখে নিলাম এবং এটাও জানালাম জীবনের প্রথম ব্রেকফাস্ট বানাতে গিয়ে কি আকাম টাই না করতে যাচ্ছিলাম একটুর জন্য। মনে মনে ভাবলাম “যাক তাও তো একটা রেসেপি শেখা গেল”।
সেই থেকে শুরু, আজ অবধি চলছে। যত দিন বেঁচে আছি চলবে। দুই বছর একা ছিলাম, এই খাদ্যদ্রব্য টি না থাকলে কত আগেই হয়তো ঢাকা ছেড়ে নয়তো দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হতো। সকালে ডিম পরোটা, দুপুরে কলেজ থেকে ফিরে ডিম ভাজি-ভাত, সন্ধ্যায় ডিমের মোগলাই, রাতে ডিম-পাউরুটি। প্রথম প্রথম ভালোই লাগতো, কিন্তু এরপরই ডিম আর আমার মধ্যে একটা দূরত্ব হয়ে গেল।
দুই বছর একা ছিলাম, এর মাঝখানে আমার সাথে ডিমের অনেকবার ছাড়াছাড়ি হয়েছে, অনেক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। কিন্তু এত সব ভুল বোঝাবুঝির পরেও আমি সফলতার সহিত চারকোণা, ত্যাচড়া, ট্রায়াঙ্গেল ইত্যাদি আকৃতির পর পারফেক্ট গোল ডিম ভাজতে শিখে ফেললাম। যেটা আমার জন্য অনন্য এক মাইলফলক হয়ে আছে।
বছর দুয়েক পর বন্ধুরা সবাই ফ্ল্যাট নিলো একসাথে থাকবে বলে। ভাবলাম একা জীবনের সমাপ্তি ঘটছে, বুয়া জীবনে পা রাখছি এবার। নিশ্চই ডিমের সাথে দীর্ঘ্য একটা দূরত্ব হয়ে যাবে। কিন্তু সত্যিকারের ভালোবাসা কি কখনো দূরে সরে যায় বলেন?
দুনিয়ের সব আইলসা একসাথে থাকার ফলস্রুতিতে ডিম আমাদের জীবনে আরো শক্ত অবস্থান দখল করলো, আগে নিজে ভেজে খেতাম। এখন বুয়া রেঁধে দেয়। এভাবেই চলতে থাকে, যেদিন বুয়া এসে দেখতো বাসায় রান্না করার মত কিছু নাই, এবং ডিম ও নাই সেদিন মনে হতো সে কোন দুর্ভিক্ষ পিড়ীত অঞ্চলে এসেছে, কারণ সে খুব শঙ্কিত গলায় বলতো “মামা আজ রান্ধুম কি, বসায় তো কিচ্ছু নাই”।
এভাবে আরো দুটি বছর কেটে গেলাম, সবার ভার্সিটি আলাদা হবার কারণে সবাই আবার আলাদা হয়ে গেলাম।
উঠলাম আবার সিনিয়র ভাই আর বন্ধুদের সাথে আরেকটা ফ্ল্যাটে, এই বাসায় এসে অবশেষে ডিমের সাথে ভালো রকমের একটা দূরত্ব হয়ে গেল, কিন্তু তারপরও ভালোবাসা তো ভালোবাসাই, সকালে ভার্সিটিতে পরটা খাই, সন্ধ্যায় মোগলাই। চলতে থাকে আমাদের ভালোবাসা, মাঝে মাঝে বুয়া না আসলে সে ভালোবাসা আরো গাড়ো হয়। আবার নিজের শেখা রেসেপি গুলো ঝালাই করে নেই।
এবং আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা এমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে যে, কেউ যদি এখন আমাকে বলে তোমার সামনে চিকেন ফ্রাই, আর অমলেট রাখা আছে কোনটা বেছে নিবে আমি নিঃসন্দেহে অমলেটটা দিয়ে চিকেন ফ্রাই টা মুড়ে মুখে পুরে দেব।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২০
জিপ্রাইম বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ
২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:১৭
প্রবাসী দেশী বলেছেন: ব্যক্তিগত গত অভিজ্ঞতা থেকে এটাই বলবো ডিম্ নিঃসন্দেহে একটি ভালো সবজি !
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১১
জিপ্রাইম বলেছেন: ডিম সবজি!! হাহা
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪৪
প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর ডিম কাহিনী। ধন্যবাদ