নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যে ভালকাজের পথ প্রদর্শন করল, তার জন্য রয়েছে এর সম্পাদনকারীর অনুরূপ সওয়াব” (সহীহ মুসলিম)

সাইফুল্লাহ্

সত্কর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। (আল ময়েদা:২)তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সত্কর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ (মুসলিম)। (আল কুরআন ৪১:৩৩)কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা (সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪)

সাইফুল্লাহ্ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলিম হিসাবে যে উত্তরটা না জানা, আপনার জন্য লজ্জাজনক

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬

আস সালামু আলাইকুম!

আমরা অনেক সময় আমাদের দ্বীন নিয়ে গর্ব করি – নিজেদেরকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শভিত্তিক জাতি বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করি । একই কথা ভৌগলিক সীমারেখা ভিত্তিক ন্যাশন-স্টেটের বেলায়ও প্রযোজ্য। আমরা স্বভাবতই আমাদের দেশকে ভালোবাসি এবং একধরনের গর্ব বোধও করি। ভালোবাসতে যদিও কোন বিশেষ কারণের বা যুক্তির ধার ধারতে হয় না, কিন্তু গর্ব বোধ করতে হলে কিছু কারণ থাকতে হয় বইকি!

আমি যখন কাউকে গর্ব মিশ্রিত স্বরে বলবো: “ইসলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও পরিপূর্ণ দ্বীন (বা ধর্ম)” – তখন কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করতেই পারে যে, কেন বা কিভাবে? প্রিয় ভাই-বোনেরা, আপনারা ভেবে দেখেছেন যে, হঠাৎ কেউ যদি আপনাকেই প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করে বসে, তবে আপনি কি জবাব দেবেন? বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ থাকলে আপনি হয়তো অনেক কিছু বলে বোঝানোর চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু তার অবকাশ না থাকলে তৎক্ষণাৎ কি বলবেন? আমরা খুব সহজ তিনটি দিক বলতে পারি:

১)আর সকল ধর্মেই কোন না কোন রূপে সৃষ্ট বস্তুর পূজা, অর্চনা, আরাধনা বা ইবাদত করা হয়। কিন্তু ইসলাম কেবলই এক আল্লাহ্ তথা সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করতে নির্দেশ দেয়। এখানে কোন ছাড় পাবার উপায় নেই – আল্লাহ্ কুর’আনে বলেছেন যে, তিনি “শিরক” মাফ করবেন না, তবে এর চেয়ে ছোট [তাঁর কাছে করা] যে কোন পাপ/অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দিতে পারেন [অবশ্য বান্দার হক্ব নষ্ট করা যে কোন পাপের account , ঐ মজলুম বান্দার সাথেই settle করতে হবে]। ইবাদতের কোন কাজে কাউকে অংশীদার ভাবার/করার কোন অবকাশ ইসলামে নেই।

২)আর সকল ধর্মাবলম্বীরা তাদের মর্জিমত আইন বা অনুশাসন পরিবর্তন করে থাকে – সামাজিক, মানসিক বা পারিপর্শ্বিক পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে। যেমন ধরুন, এখন থেকে ২০০ বছর আগেও খৃষ্টানরা সুদকে, আমরা যেমন হারাম মনে করি, তেমনি হারাম মনে করতো – কিন্তু এখন আর করে না। অথবা মাত্র ৫০ বছর আগেও পশ্চিমা খৃষ্টান জগতে সমকামিতা লজ্জার বিষয় ছিল, অথচ আজ তা গর্বের বিষয়। কিন্তু ইসলামে, ধর্মের আইন বা অনুশাসন অপরিবর্তিত থাকে – ১৪০০ বৎসর আগে যা নিষিদ্ধ ছিল, শেষ মুসলিমটি বেঁচে থাকা পর্যন্ত তা নিষিদ্ধই থাকবে – নও মুসলিম বা সাময়িক বিচ্যুত ও বিপথগামী মুসলিমকে সেই অলঙ্ঘনীয় আইনে ও অনুশাসনে ফিরে আসতে হয়। আমার বাবা জানতেন না যে, ইসলামে সুদ হারাম, তাই তিনি সুদভিত্তিক ব্যাঙ্ক ঋণ নিতেন – কিন্তু আমি জেনেছি যে সুদ হারাম, তাই আমি আমার পরিবারসহ আবার শুদ্ধ মূল ধারায় ফিরে এসেছি। এজন্যই খৃষ্টানের ছেলে জন্মগতভাবেই খৃষ্টান হয়ে থাকে, ইংলিশম্যানের ছেলে জন্মগতভাবেই ইংলিশ হয়ে থাকে – কিন্তু মুসলিমের ছেলে অটোম্যাটিক মুসলিম হয়ে যায় না। তাকে সজ্ঞানে ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম হতে হয়। তা না হলে, তার একটা মুসলিম নাম থাকে বটে, কিন্তু আল্লাহর কাছে তার মুসলিম স্ট্যাটাস থাকে না।

৩) অন্য সকল ধর্মের অনুসারীদের উৎসবগুলো হচ্ছে বাঁধনহারা আনন্দ, অবারিত ইন্দ্রিয়সুখে নিমজ্জিত হবার আয়োজন – শরীরী ভোগ-সুখে গা ভাসিয়ে দেবার সুবর্ণ সুযোগ। যারা ইংল্যান্ড বা আমেরিকায় ক্রিসমাস বা নব-বর্ষ দেখেছেন , যারা মিয়ানমার বা থাইল্যান্ডে ওয়াটার ফেস্টিভ্যাল দেখেছেন, অথবা যারা ভারতে দীপাবলী বা হোলী দেখেছেন, তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমি কি বলতে চাচ্ছি – মদ, জুয়া আর ব্যভিচারের বন্যা বয়ে যায়, আর তার সাথে সীমাহীন অপচয় তো রয়েছেই। আর ইসলামের উৎসব – যা বাৎসরিক মাত্র দু’টি [আর সাপ্তাহিক পর্যায়ে একটি, অর্থাৎ, জুম্মা] সেগুলো কেমন হবার কথা? প্রথমত সেগুলো হচ্ছে ভাব গম্ভীর ইবাদত বা উপাসনার দিন – বাঁধভাঙ্গা উচ্ছৃঙ্খলতার মৌসুম মোটেই নয়। আমরা এমনি দিনে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করি, কিন্তু ঈদের দিনে আমরা আরো একটা অতিরিক্ত সালাত আদায় করি আরো বড় সামাজিক জামাতে – যেখানে আমরা প্রার্থনা করি যে, আল্লাহ্ যেন আমাদের সংশ্লিষ্ট ইবাদতগুলি [যেমন, সিয়াম, তারাবী, ইতিক্বাফ, কুরবানী ইত্যাদি] কবুল করেন। আমরা দান খয়রাত করি, জাকাত-ফিতরা আদায় করি, কুরবানী করি – আল্লাহ্ আমাদের যে রিজিক দিয়েছেন, তা আত্মীয়স্বজনের সাথে শেয়ার করি। আমাদের মাঝে আরো প্রশান্তি ও শান্তির ছায়া নেমে আসার কথা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, প্রতিবেশী হিন্দুদের অনুকরণে বা পশ্চিমা প্রভুদের অনুকরণে আমরা সেই স্বাতন্ত্র্য ও সেসব ঐতিহ্য ক্রমেই হারিয়ে ফেলছি – এমনকি ঈদের সুন্নাহ্ শুভেচ্ছা বা সম্ভাষণটাও আমরা ভুলে গিয়েছি। আজ দেখা যায়, ডাস্টবিনে কুকুরের সাথে খাবার ভাগা-ভাগি করা মানুষের পাশ দিয়ে হেঁটে গিয়ে আমরা দেড় লক্ষ টাকার লেহেঙ্গা বা গারারা কেনার নির্লজ্জ প্রতেযোগিতায় মেতে উঠি, যাতে ঈদের দিন আমাদের বধূ-মাতা-কন্যারা পর-পুরুষের দেহ মনে পুলক সৃষ্টি করে নির্লজ্জ অহঙ্কারে রাস্তায় হেঁটে বেড়াতে পারে। পুরু লোহা-নির্মিত রুদ্ধ সিংহদ্বারের ভিতরে আবদ্ধ একান্ত নিজস্ব প্রকোষ্ঠে বসে ভুরিভোজন উত্তর ঢেকুর তুলতে তুলতে আমরা ভাবি, টেলিভিশনের কোন চ্যানেলের অশ্লীলতার কোন বিশেষ আয়োজনটা আজ, ঈদের দিনে, উপভোগ করবো! বাজারে কেনাকাটা আর অপচয়ের প্রতিযেগিতার ধুম আর ভোগ-সুখের আয়োজন দেখে, যে কারো পশ্চিমের ক্রিসমাস অথবা পুরাতন বাংলা উপন্যাসে দুর্গা-পূজার আয়োজনের কথা মনে পড়ে যাবে – সহজেই বোঝা যাবে যে, আমরা এসব উচ্ছলতা ও উচ্ছৃঙ্খলতা অন্যদের কাছ থেকে গ্রহণ করেছি। কে বলবে যে, দীর্ঘ একমাস সময় আমরা সংযম আর কৃচ্ছতার ট্রেনিং নিয়েছি – অথবা- আল্লাহর উদ্দেশ্যে sacrifice করতে আমরা যে প্রস্তুত, তারই symbolic মহড়া দিতে কুরবানী করতে যাচ্ছি!! আল্লাহ্, তুমি তোমার অন্ধ বান্দাদের দয়া করে অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে নিয়ে আসো – ভোগ-সুখে গা ভাসিয়ে দেবার জন্য যে মুসলিমরা পৃথিবীতে আসেনি, একথাটা তাদের আবার মনে করিয়ে দাও!!

যাহোক, মূলত স্বাতন্ত্র্যের এই তৃতীয় পয়েন্টটা আলোচনা করতেই, ঈদের প্রাক্কালে আমার এই আয়োজন। আজকের সুন্নাহ্ শুভেচ্ছা হচ্ছে:

”তাকব্বালাল্লাহু মিননা ওয়া মিনকুম” – আল্লাহ্ যেন আমাদের ভালো কাজগুলো [ যাবতীয় ইবাদত, সাদাক্বা, কুরবানী ইত্যাদি] এবং তোমাদের ভালো কাজগুলো কবুল করেন।

বা

“TAKABBALALLAHU MINNA WA MINKUM.”
[may Allah accept all our good deeds and all your good deeds]

আমীন!!

[শায়খ এনামুল হকের 'ইসলামের স্বাতন্ত্র্য' প্রবন্ধ থেকে সংগৃহীত]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৪

মোস্তাক খসরু বলেছেন: নিজেদেরকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শভিত্তিক জাতি বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করি। কথাটা সর্ম্পূন ভুল মুসলিম জাতি বলে কোন জাতির অস্তিত্ব পৃথিবীতে নেই। এটা একটি ধর্ম। সবাই নিজ ধর্মকেই শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে। এবং সেটাই স্বাভাবিক।
সকল ধর্মেই কোন না কোন রূপে সৃষ্ট বস্তুর পূজা, অর্চনা, আরাধনা বা ইবাদত করা হয়। আর মুসলমানরা ভাবমুর্তির পুজা করে।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৪

সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: "নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। এবং যাদের প্রতি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার পরও ওরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে, শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ, যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি কুফরী করে তাদের জানা উচিত যে, নিশ্চিতরূপে আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত দ্রুত।
যদি তারা তোমার সাথে বিতর্কে অবতীর্ণ হয় তবে বলে দাও, "আমি এবং আমার অনুসরণকারীগণ আল্লাহর প্রতি আত্নসমর্পণ করেছি।" আর আহলে কিতাবদের এবং নিরক্ষরদের বলে দাও যে, তোমরাও কি আত্নসমর্পণ করেছ? তখন যদি তারা আত্নসমর্পণ করে, তবে সরল পথ প্রাপ্ত হলো, আর যদি মুখ ঘুরিয়ে নেয়, তাহলে তোমার দায়িত্ব হলো শুধু পৌছে দেয়া। আর আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে সকল বান্দা।"(সুরা আল ইমরান: ১৯-২০)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.