![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মেঘ।ভালোবাসি গল্প বলতে।গল্প বলা আমার নেশা।আজকে যে গল্পটা বলব,সেটা আমার নিজের গল্প।এই গল্পে দুঃখ আছে,সুখ আছে,ভালোবাসা আছে।আর ভালোবাসার একটা পরিচিত মুখ আছে।আর হেলা না করে গল্পেই চলে যাই।
বৃষ্টি সেদিন একটু দেরী করেই ক্লাসে এসেছিল।আমি ব্যস্ত গল্প বলায়।তখনো নতুন এক গল্প জুড়ে দিয়েছিলাম।বৃষ্টিকে দেখিনি তখনো।এক সময় আমার গল্প শেষ হয়।ফিরে তাকিয়ে বৃষ্টিকে দেখি।তার চোখ,তার এলো চুল।তখন শুধু এই লাইনগুলোয় মাথায় ঘুরছিল,
"প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস-
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ"
সর্বনাশই বটে।আমার ঘুম যে কেড়ে নিল।আর আমি হয়ে গেলাম প্রেমিক।ভালোবেসে যে খুন হতে রাজি।ভার্সিটির দিনগুলো সত্যিই মজার ছিল।কত আবেগ ছিল,কত কষ্ট ছিল,কত ভালোবাসা ছিল।ভালোবাসা ছিল বললে ভুল হয়,ভালোবাসা এখনো আছে।ভালোবাসা তো হারায় না।
বৃষ্টি আমার সাথে একই ডিপার্টমেন্টে পড়ত।ভার্সিটির প্রথম ক্লাসেই মেয়েটার জন্য আলাদা একটা অনুভূতি জন্মায়।মেয়েটা ফরসা,দুধের মত।কালো হলেই বোধ হয় ভালো হত।তাহলে অন্তত বলা যেত "কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি।.....
কালো তা সে যত কালোই হোক।
দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ"
বৃষ্টি ফরসা হলেও তার কালো হরিণ চোখ থেকে বঞ্চিত হয় নি।তার চোখে আলাদা মায়া ছিল।স্বভাব কবি আমি যেন তখন সপ্তম আসমানে,
"বর্ণনাতে তুমি যখন,
আর তোমার স্নিগ্ধ চোখ,
নতুন কোনো কাব্য আজি
তোমায় নিয়ে লিখা হোক।
একটু করে সলজ চোখে,
একটু করে মিষ্টি হাসি,
একটু করে তোমায় ঘিরে,
অনেকটুকু ভালোবাসি"
কবিতা আমার একটু অগোছালোই সবসময়।প্রেমে পড়ে সেটা আরো অগোছালো হয়ে গেল।
সময় কেটে যায়।চারটে বছর দেখতে দেখতেই কেটে যায়।কখনো চোখাচোখি, কখনোবা একটু কথা।এটুকুই তো।ভালোবাসাটা এতটুকুতেই রয়ে গেল।তবু যখন মেয়েটা একটু হাসে তখন যেন মনটা ভরে যায়।ভালোবাসা যেন ভালোবেসে ভালোবাসারই কথা বলা। আমিও ভালোবাসি,আমিও ভালোবেসেছি।প্রতিরাতে খুন হয়েছি এই ভালোবাসারই তরে।কত সুর বসিয়েছি ভালোবাসার গানে,কত তুলির আঁচড় চালিয়েছি মনের ক্যানভাসে।তারপর একটা সময় সইতে না পেরে বলেই ফেলেছি, "বৃষ্টি, আমার কবিতার শব্দ হয়ে তুমি যে আমার মনে গেঁথে গেছো।" মেয়েটা সেদিন সলজ হেসে চলে গিয়েছিল।তারপর কিছু সুখের সময় জীবনে এসেছিল।আমার কবিতাগুলো হাসতে শিখেছিল,আমার তুলির আঁচড়ে চোখগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠছিল।ভালোবাসা সেদিন আমায় সত্যিই খুন করে ফেলেছিল।গল্প বলতে গেলে কত কিছুই তো চলে আসে।সেই অনুভূতিগুলো।সেই মিষ্টি হাসিগুলো।সেই গানের সুরের মত কথাগুলো
।কিন্তু সুখ তো আর সবার কপালে সয় না।এই অভাগার কপালেও সয় নি।
আজকে বৃষ্টির এংগেজমেন্ট।পাত্র কানাডায় বিশাল এক কোম্পানিতে চাকরি করে।দেখতে অনেক হ্যান্ডসাম।ছেলেটা ভালোও বটে।সব দিক থেকে পারফেক্ট।আমাকে একদিন ছেলেটার ছবি দেখিয়েছিল বৃষ্টি।বুঝতে দিই নি সেদিন আমি কিভাবে মরে যাচ্ছিলাম।আজ আমার সবকিছুই ঝাপসা হয়ে আসছে।আমার কবিতার লাইনগুলো আজ একটু ভালোবাসার জন্য কাতরায়।আমার মনের ক্যানভাসে তুলির আঁচড়ে আঁকা চোখগুলো আজ অচেনা কেমন জানি। অনুভূতিগুলো যেন ফিকে হয়ে আসে।কিন্তু ভালোবাসা একরত্তি কমে না।ভালোবাসাগুলো তো আর সিগারেটের ধোঁয়ার মত উড়ে যেতে পারে না।সিগারেটগুলো তাই অযথাই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।একদিন আমার প্রিয় মুখটা ধীরে ধীরে আমার থেকে দূরে চলে যাবে,অনেক দূরে।সে অন্য কারো হবে।সে অন্য কারো সাথে সংসার করবে।সে অন্য কেউ হয়তবা পারফেক্ট তার জন্য।গাড়ি-বাড়ি,হীরে-জহরতে মোড়ানো থাকবে হয়ত সে।সুখী হবে সে।কিন্তু আমি কি পারব অন্য কারো জন্য আবার ভালোবেসে মরতে?হয়ত না।মানুষ মরে একবার।আর আমি খুন হয়েছি আততায়ী প্রেমের হাতে।তাই তো ভালোবাসার কাব্য লিখি এখনো।এখনো মনে হয়, বৃষ্টি এসে বলবে,এই ঘুম থেকে উঠো।আর আমি ভাবব, সম্পূর্ণটা একটা দুঃস্বপ্ন ছিল।এরপর বৃষ্টিকে জড়িয়ে ধরে বলব,তুমি শুধু আমার।আর কারো না।। কিন্তু এমনটা হয় না।।সিগারেটগুলোও তাই ধোঁয়ার অবিরাম এক অনুভূতি দিয়ে চলে যায়,ভালোবাসাগুলো আর নিয়ে যায় না।আকাশ বিশাল।মনের দূরত্ব তার চেয়েও বিশাল।এক আকাশ মনের দূরত্ব কমিয়ে আমি ভালোবাসা পাব এমনটা চিন্তা করা নিছক.সত্যিই সেদিনের চৈত্রের দিনে আমি যেন তোমার চোখে নিজেরই সর্বনাশ ডেকে এনেছিলাম, বৃষ্টি!
০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৪৮
সজীব সাখাওয়াত বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা।।
২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৪৭
kazimasudrana বলেছেন: darun likhchen
০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৪৯
সজীব সাখাওয়াত বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৩২
বিজন রয় বলেছেন: দারুন গল্প ভালবাসাময়।