![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসসালামু আলাইকুম, আমি সাকিব। আমি একজন ব্লগার ও ইউটিউবার। আশাকরি আমার লেখা আপনাদের ভাল লাগবে।
এই গল্পটি সেই মেয়েটির যার সাথে আমার দেখা হয়েছিল কিন্তু তার কোন অস্তিত্ব নেই এই পৃথিবীতে। আমি তখন একটি বেসরকারি অফিসে কর্মরত। আমার বাউন্ডুলে স্বভাব আজীবনের। যখনি সুযোগ পাই ঢাকার বাহিরে বেড়াতে চলে যাই। রহমান সার আমাকে সার্ভেয়র কাজে যশোর যেতে বললেন। আমি বাসা থেকে সবকিছু গুছিয়ে বাস কাউন্টারের উদেশ্যে রওনা হলাম। যশোরের বাস আস্তে আরো ১ ঘন্টা দেরি। আমি টিকেট কেটে চায়ের দোকানে গেলাম। চা এবং সিগারেট খেয়ে ১ ঘন্টা সময় কাটাবো বোলে। আমার সিট্ জানালার পাশে নাহলেও আমার সমস্যা হলোনা কারণ আমি সামনের সিটে বসেছি।হটাত দেখি একটি মেয়ে আমার পাসে দাঁড়ান। মনে হয় তার সিট খুঁজছে। আমি তার সিট নাম্বার জানতে চাওয়ায় সে জানাল তার সিট নাম্বার এ১। যেটা আমার সিটের পাসে। আমি তক্ষুনি তাকে দেখিয়ে দিলাম তার সিট। তিনি আমার পাসে বসলেন। মেয়েটি সেম বরনের দেখতে। চুল গুলি কালো খোপা করা। খোপার ধরন দেখে বোঝা যায় তার চুল অনেক দীর্ঘ। চোখ গুল টানা টানা কাজল দেয়া। নাকটা মোটা লম্বা। ঠোট দুটো কমলা লেবুর কোয়ার মত পাতলা। মুখটা লম্বাটে। তার সাথে বেশি কথা হয়নি। বেশি সময় হয়নি সে এসেছে তাই তার হাঁসির বর্ণনাটি এখন দিতে পারছি না। সে হাল্কা গড়নের। দেখে শান্ত স্বভাবের মনে হলেও সহসাই বুঝে গেছি সে অনেক আলাপী ধরনের। বাস ছাড়ার সাথে সাথে সেই প্রথম আমাকে প্রশ্ন করলো "আপনি কোথায় যাচ্ছেন ?" জবাবে আমি বললাম " যশোর আপনি ? " দুষ্টুমি ভরা চোখে জবাব দিলো " যশোর " সাথে ভুবন ভোলানো হাঁসি আমিও সাথে সাথেই বুঝে গেলাম কি ভুল করেছি। বাসটি যেহেতু যশোর যাচ্ছে সেহেতু প্রতি উত্তরে এই প্রশ্নটি করা অবান্তর ছিল। তাহলে এই প্রশ্নটি সে কেন করলো? হয়তো আলাপ শুরু করার জন্য। বোকামি কিংবা অন্য কিছু সে যাই হোক। উপহার হিসেবে যে ভুবন ভোলানো হাঁসিটি পেয়েছি আমি তাতেই খুশি। আমি প্রশ্ন করলাম যশোরে কি আপনার বাসা নাকি কাজে যাচ্ছেন ? - যশোরে আমার বাসা, আপনি কেন যাচ্ছেন ? অফিস এর কাজে, আমি ঢাকায় থাকি। - ও আচ্ছা, আপনার কাজটা খুব মজার। কেন ? - এই যে অফিস এর কাজে বাহির ঘুরার সুযোগ পান। আপনি বুঝি বাহিরে ঘুরার সুযোগ কম পান ? - সুযোগ কম পাই তা ঠিক নয়, মাঝে সাঁঝে ঢাকা বেড়াতে যাই অতিয়ের বাসায়। তবে নিয়মিত নয়। আমাকে অবশ্য সব সময়ই ঢাকার বাহিরে যেতে হয় অফিস এর কাজে। - বাংলাদেশের কোন কোন জাগায় ঘুরেছেন আপনি ? আমি! রাজশাহী, বগুড়া, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা, খাগড়াছড়ি প্রায় সব জেলায় ঘুরেছি। - ওরে বাবা! আপনি দেখছি সব জায়গা ঘুরেছেন। তো কোন জায়গাটি বেশি পছন্দ হয়েছে আপনার খাগড়াছড়ি, কখনো গেছেন ঐখানে ? - না, আপনি নেবেন আমায় ? কি বলেন !? আপনি যাবেন আমার সাথে ? - আপনি নিলে অবশ্যই যাব। আপনার বাসা থেকে অনুমতি দেবে ? - প্রয়োজন নেই কেন ? - ওটা আপনি এমনি বুঝে যাবেন। এই শেষের জবাবটি একটু হেঁয়ালি মনে হলেও আমি কিছু মনে নিলাম না। মেয়েটি যে এতো বাকপটু কে জানতো। ধীরেধীরে তার প্রতি ভাল লাগা বেড়ে যাচ্ছে। কখন যে সময় কেটে গেছে বুঝতেই পারিনি। ১৫ মিনিটের জন্য যাত্রা বিরতি পেলাম আমরা। আমি তাকে জানালাম যে আমাকে ওয়াশ রুম যেতে হবে। ওয়াশ রুম থেকে পরিষ্কার হয়ে একটি দোকান থেকে সিগারেট কিনে ধরালাম। বাহিরে বেশিক্ষণ থাকতে মনে চাছেনা। তার প্রতি মনে টান অনুভব করছি। ধ্রুতই বাহিরের কাজ শেষ করে বাসের ভিতরে গিয়ে দেখি সেই মেয়েটি নেই। বাস হেল্পার কে জিঙ্গাসা করলাম মেয়েটি কোথায় সে আমাকে জানালো এই সিট্ টি খালিই ছিল। সিটের যাত্রী বাস ছাড়ার কিছুক্ষন আগে টিকেট কেনসেল করেছে। তার জানা মতে সিটের যাত্রী কোন মেয়ে নয় বরং একজন বয়স্ক বেক্তি যিনি অসুস্থতার কারণে টিকেট কেনসেল করেছেন। আমি শুনে একটু অবাক হলাম কারণ যার সাথে সারা রাত্রি কথা হলো সে কি শুধুই কল্পনা? আমার নিজ সিটে বসতে গিয়ে দেখলাম তার সিটে একটি মেয়েলি রুমাল পড়ে রয়েছে। যার গন্ধটি সেই মেয়ের গন্ধের সাথে মিল।
©somewhere in net ltd.