![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০১১ সাল।
এক বন্ধুর সাথে কি একটা বিষয়
নিয়ে প্রচন্ড ঝগড়া হয়।
বন্ধুটা খুব স্টাইলিশ ছিলো।বাবার অনেক
টাকা ছিলো।ধুমাইয়া টাকা উড়াইতো।
বাজে ছেলেদের
নিয়ে আড্ডা দিতো সবসময়।এমন
কোনো খারাপ কাজ
ছিলোনা যা সে করেনি।
মদ খাওয়া থেকে শুরু করে মেয়েদের
নিয়ে বিছানায় যাওয়া কি করেনি........!
মানুষও খুন করেছে সে!
বাবা-মা অনেক বুঝিয়েও সঠিক রাস্তায়
আনতে পারেনি।
২০১৩ সাল। বিকেল ৪.৫০।
বাজারে হাটতে হাটতে হঠাৎ চোখ
পড়লো একটা ফলের দোকানে!
একটা ছেলে চট করে মুখ ফিরিয়ে নিলো!
স্পষ্ট বুঝলাম এতোক্ষণ আমার
দিকে তাকিয়ে ছিলো!
এগিয়ে গেলাম।ডাক দিলাম।
ছেলেটা ফিরে তাকাতেই ভীষণ
ভাবে চমকে উঠলাম!
এই সেই ছেলে যার সাথে আমার
ঝগড়া হয়েছিলো। গায়ে ময়লা কাপড়।
বিবেধ ভুলে প্রশ্ন করলাম
"তোর এই অবস্থা?!"
"এক মিনিট" বলেই সে দোকান
থেকে নেমে আসলো।
দোকানে তালা লাগিয়ে আমাকে বলল
"চল"।
বললাম "কই?"
"মাঠে"।
"চল"
মাঠে গিয়ে এক কোণায়
ওকে নিয়ে বসলাম।
"তোর এই অবস্থা কেন?"
যা শুনলাম তার জন্য মোটেই প্রস্তুত
ছিলামনা!
ওর মা-বাবা আকস্মিক এক রোড
এক্সিডেন্টে মৃত্যুবরণ করেন ২০১২ সালের
মাঝামাঝিতে।
তখন সে এতিম হয়ে পড়ে।
সে প্রচন্ড একা হয়ে পড়ে।
বাবার এতো টাকা থাকা সত্ত্বেও
সে টাকাগুলো পায়নি।কেন
সে সেটা পরিষ্কার করে বলেনি।
আস্তে আস্তে সবাই ওকে ছেড়ে দেয়।
ভীষণ একা হয়ে পড়ে সে।
তার চাচা-মামারাও তাকে আশ্রয়
দেয়নি।কারণ সে ভালো ছেলে ছিলোনা।
সে প্রচন্ড একাকীত্ব বোধ করে। একসময়
সে আত্মহত্যা করতে চায়।
কিন্তু পারেনা।
আগের সেই উগ্রতা তাকে এখন কাঁদায়।
বাবা মায়ের নিষেধের কথা সবসময়
কাঁদায়..............
একসময় সে ধার দেনা করে বাঁচার জন্য এই
ছোট একটা দোকান দেয় ফলের।
নিষ্ঠুর পৃথিবীতে বেঁচে থাকার একটু ক্ষুদ্র
প্রচেষ্টা!
.................................
কথাগুলো আমার এক ভাইয়ের কাছ
থেকে শুনে কান্না চেপে রাখতে কষ্ট
হচ্ছিলো।
কিন্তু কাঁদিনি।
আসলেই কত নিষ্ঠুর এই পৃথিবী।
কত নিষ্ঠুর এই পৃথিবীর মানুষ।
পিতা-মাতা হারা একটা এতিম
সন্তানকে কেউ এতোটুকু থাকার
জায়গা দেয়নি!
তাকে বেঁচে থাকার জন্য একটুও সাহায্য
করা হয়নি।
সে হয়তো খারাপ ছিলো কিন্তু
তাকে ভালো হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
ধনী বাবার একমাত্র সন্তান আজ ছোট্ট
একটা ফলের দোকানি!
বাবা মা হারানোর ধাক্কা সামলে উঠার
আগেই অনেকগুলো ধাক্কা সে খেয়েছে!
এতো দুঃখী সে..........
নাহ....আমিও তো দুঃখী।
আমারো যে বাবা নেই।
আসলে একটা সত্যি কথা কি জানেন?
নিজের দুঃখটা নিজের
কাছে বেশি মনে হয়!
কারণ আমরা অন্যের দুঃখ অনুভব
করতে পারিনা।
আচ্ছা সব এতিমই কি দুঃখী মিয়া?
©somewhere in net ltd.