নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

%%অবাস্তব কল্পনা%%

সালমা ইসলাম

একাকী আনমনে বিষণ্নতার ছোঁয়ায় কেটে যায় ভোর।।স্বপ্নের পিছুটানে কোলাহলময় হয় দুপুর।।তাড়াহুড়ো যেন শান্ত হয়ে গড়িয়ে পড়ে বিকেলে।।পাওয়া না পাওয়ায় যেন স্বপ্নময়ী রাত কেটে যায় ঘুমে।।

সালমা ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ট্রেনের গল্প

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:১৩

আন্তঃনগর ট্রেনে বসে আছি।মনটা খারাপ।এডমন্ড মারফি সাহেবের ল' - কাজ করা শুরু করেছে। বিপদ একা আসে নাই - আন্ডা বাচ্চা নিয়ে এসেছে! ভীড় ঠেলে উঠতে গিয়ে জুতা একটা বাইরে ফেলে এসেছি।ট্রেনের স্পীড বেশি ছিল,ঝুঁকি নেয়া সম্ভব হয়নি। বাকিটাও ফেলে দিয়ে খালি পায়ে বসে আছি! শার্টের বোতাম একটা নিখোঁজ! মনে হচ্ছে ট্রেনে ওঠার চেয়ে হ্যাভিওয়েট কম্পিটিশানে নাম লেখানো সহজ! সিটে বসে হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে আছি।কারন আমার সিটের হাতল অন্যের দখলে। সেখানে এক লোক বসে আছে এবং কিছুক্ষণ পর পর বাইম মাছের মত মোচড় খাচ্ছে। পায়ের কাছে এক মহিলা তার বাচ্চা সহ মিনি-সংসার খুলে বসেছে। বৃহস্পতিবারের ঢাকা-চট্টগ্রামগামী আপ ট্রেন। অবস্থা ভয়াবহ! তখনও বুঝতে পারিনি,ঘটনা কেবল শুরু। বিমানবন্দর ষ্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। মিনিট দশেকের মাথায় দুই সিট পেছন থেকে শ্যাম বর্ণের এক সুন্দরি বেশ হম্বিতম্বি করে এগিয়ে আসলেন।তার টার্গেট আমি নই - টার্গেট আমার পাশের জানালা ঘেঁষা ভদ্রলোক। -- আচ্ছা ভাই,জানালা থেকে এই ভাবে থু-থু ফেললেন কোন আক্কেলে?অন্য কেউ যে জানালা থেকে মাথা বের করে রাখতে পারে,এটা আপনার ব্রেইনে আসেনি কেন? আমার পাশের ভদ্রলোকও কম যান না।তিনি মারমুখী ব্যাটসম্যানের মত হুঙ্কার ছেড়ে বললেন, > সিস্টার, আমার জানালায় আমি ছেপ ফালামু,বমি কইরা ভাসায়া দিমু,আফনে কওয়ার কেডা? আমি ছেপ গিল্লা খাইনা,আফনে খান। -- আমি থু-থু গিলে খেতে বলিনি। বলছি,সিভিক সেন্স বলে একটা ব্যাপার আছে! > দুই কলম বিদ্যা নিয়া আমারে সিভিল চেঞ্জ শিখাইতে আইসেন না। সিভিল চেঞ্জ আমি আফনের থিকা ভালা বুঝি। আফনে মানুষটাও কালা, আফনের ভিতরটাও কালা! লোকটা কথা বলতে বলতে ইচ্ছে করে আবার এক দলা থুথু ফেলল। শ্যামবর্ণা সম্ভবত ভাল পরিবারের থেকে এসেছে। সে আর কথা বাড়ালনা। কিছুক্ষণ আহত চোখে তাকিয়ে থেকে বিড়বিড় করতে করতে নিজের সিটে গিয়ে বসল। এমন আকস্মিক তর্ক যুদ্ধে আশপাশের মানুষ সচকিত হয়ে উঠেছে।তারা কথা বলার জন্য ভাল একটা টপিক পেয়েছে।আমারও চুপ করে থাকা সাজে না। বললাম, "ভাইজান, আপনি দুইটা ভুল করেছেন।এক, আপনার কোন কাজে অন্য কারো ক্ষতিসাধন হওয়া ঠিক না। দুই, আপনি কালো-ধলো বর্ণ বৈষম্য করেছেন।" লোকটা চোখ দুটো বড় করে বলল, " হ ভাই, উচিৎ কতায় লক্ষ্মীও বেজার অয়।" - কথা শেষ করেই সে আরেক চোট থুথু ফেলে বাইরে উদাস হয়ে তাকিয়ে রইল। কথায় আছে মরার উপর খাড়ার ঘা!খাড়ার ঘা হয়ে আমার মোবাইল বেজে উঠেছে।শিমুলের ফোন।ওর ফোন মানে ম্যারাথন দৌড়ের কাছাকাছি।সহজে ছাড়তে চায়না।আজ ওর বিয়ের পাত্রি দেখতে যাওয়ার কথা ছিল।আমি খেয়াল করে দেখেছি,অবসরে ফোন কল আসে কম। কল আসা শুরু হবে,খেতে বসলে অথবা বাথ-রুমে ঢুকলে। ভয়ঙ্কর জটে পড়লেও এই যন্ত্র বেজে ওঠে।আমি বিরক্তি নিয়ে কল রিসিভ করতেই শিমুল বলল, -- দোস্ত, তুই আমার ইয়ার বন্ধু। এত কইরা কইলাম,আমার সাথে চল,পাত্রীটা দেইখা আসি। তুই গেলিনা। কাজটা কি ঠিক করলি? আমি বিজ্ঞের মত উত্তর দিয়ে বললাম, > পাত্রী আমি না দেখলেও সমস্যা নাই,তুই দেখলেই হবে। ঘটনা কী? পাত্রী কেমন? -- পাত্রী মাশাল্লাহ দুধে-আলতা! না,ভুল কইছি,দুধ কম - আলতা বেশি। > হা-হা-হা। এত আলতা দিয়ে কি করবি?দুদিন পর তো কোল্ড স্টোরেজের টমেটোর মত হয়ে যাবে! -- তুই ইয়ার্কি রাখ। আসল কথায় আয়। > ঠিক আছে। বিয়ে করে ফ্যাল। -- দোস্ত, একটু সমস্যা আছে। পাত্রীর চোখ হালকা ট্যারা।ট্যারা দিয়া কি করুম? > থাক্,তাইলে বিয়ার দরকার নাই। -- অবশ্য, ট্যারা প্রবলেম তেমন বুঝা যায়না। লক্ষ্মী ট্যারা বলা যায়,সুচিত্রা সেনের মত লাগে! > ওকে, বিয়ে করে ফ্যাল। -- মেয়ের না-কি আগে একটা প্রেম ছিল। গভীর প্রেম! > ওটা সমস্যা না। সুন্দরি মেয়েদের স্ক্যান্ডাল থাকে। -- তবু চিন্তার ব্যাপার না!পুরান প্রেম যদি আবার গজায়া উঠে? > তাইলে বাদ।অন্য মেয়ে খোঁজ। -- দোস্ত, মেয়ের বাপের নিজের ছয় তলা বাড়ী। মেয়ের নামে দুইটা ফ্লাট! > মারহাবা!!বিয়েটা করেই ফ্যাল। -- কিন্তু, মেয়ের সাবেক প্রেমিক আমারে হুমকি দিছে,চিন্তায় আছি! > বিয়ের আগেই হামকি-ধামকি ভাল না। থাক,বিয়ে দরকার নেই। -- দোস্ত,মেয়েটা কিন্তু দুধে-আলতা! আমি আর মেজাজ ধরে রাখতে পারলামনা। বাঘের মত হুঙ্কার ছাড়লাম! > চুপ,গাধা! একদম চুপ! তুই দশ কেজি দুধে,পাঁচ কেজি আলতা গুলায়া খায়া মর।আমারে আর কল করলে তোর খবর আছে! আমি ফোন কেটে দিয়ে অভদ্রের মত শিষ বাজালাম। আমার চিৎকারে হাতলে বসা লোক লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। বেচারা ভালই ভয় পেয়েছে। পায়ের কাছে বসা মহিলার বাচ্চা বমি করে ভাসিয়ে দিয়েছে। অবশ্য এটাও আমার চিৎকারের ফল কি-না বুঝতে পারছিনা। খারাপ কিছুর সাথে কিছু ভালও বোধ হয় থাকে। ঠিক এমন একটা অভূতপূর্ব ভাল দৃশ্য আমার চোখের সামনে ঘটছে!৯০ ডিগ্রি এঙ্গেলে থাকা আমার সামনের ভদ্রলোক একটি রুমাল বের করে শিশুটির বমি করা মুখ পরম আদরে মুছিয়ে দিচ্ছেন।বমি মুছাতে গিয়ে বাচ্চার মাকে বললেন, " আমার রুমালটা কষ্ট করে একটু ধুয়ে রাখবেন। একটু পর এসে নিব,কেমন?" বাচ্চার মা কথায় সাই দিল।আমি আগ্রহ নিয়ে ভদ্রলোক কে দেখছি। উনার আচরণ বোঝার চেষ্টায় আছি। বয়সে আমার চেয়ে বছর চারেকের বড় হতে পারেন। এই গরমেও ভদ্রলোক টাই পরে আছেন। টাইয়ের নট ঢিলা করে বাঁধা। শিশুটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়ে তিনি আমাকে প্রায় অনুনয়ের স্বরে বললেন, -- কিছু মনে না করলে একটা কথা বলতে পারি? > বলুন -- আপনার পা খালি কেন! আমি ঘটনা বলতেই ভদ্রলোক হো-হো করে হেসে ফেললেন। তাঁর মুখে শিশুদের মত একধরনের সারল্য আছে।তিনি একটু অস্বস্তি নিয়ে আবার বললেন, -- আমি আসলে অন্য কিছু বলতে চাচ্ছিলাম। বলব? এমন শুদ্ধ উচ্চারণে খুব কম মানুষকেই আমি কথা বলতে শুনেছি। আমি হেসে বললাম, > সিওর!হোয়াই নট?বলুন ,কি বলতে চান। -- আপনি কি কাছে কোথাও নামবেন? আমি আশুগঞ্জ নামব। > আমিও খুব দূরের নই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া। -- তাহলে ভালই হল।আমাদের সিট এই মহিলাকে দিয়ে, চলুন না,আমরা দুজন খাবারের বগিতে গিয়ে বসি। গরমে বাচ্চাগুলো কাহিল হয়ে পড়েছে! যাত্রা পথে কথা বলার মানুষ পেলে ভাল হয়। গল্প করার জন্য আমি খুব ভাল বক্তা। বলেই ভদ্রলোক হাসলেন। আমি কখনই খুব বেশি দিলদরদি নই,তবু ভদ্রলোকের কথা ফেলতে পারলামনা। মানবতার আহ্বান অগ্রাহ্য করা অসম্ভব। খাবারের কম্পার্টমেন্ট-এ আমরা মুখোমুখি বসে আছি। টেবিলে দু কাপ চা। ভদ্রলোক একটা সিগারেট ধরাতে ধরাতে আমার সাথে ফরমালি পরিচিত হওয়ার জন্য হাত বাড়ালেন। -- আমার নাম মাইনুল। মাইনুল হোসেন চৌধুরী। ডেস্কো'তে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আছি, ঢাকা - দক্ষিণ। আমিও পরিচয় দিলাম,তবে আমার পরিচয় এত বড় হলনা। আমি ছাপোষা কেরানী টাইপের মানুষ।মাইনুল সাহেব টি-ব্যাগ নাড়তে নাড়তে বললেন, -- মিশরের রানী নেফারতিতির নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই! উনি ইজিপশিয়ান এক ফারাও-এর গ্রেট রয়্যাল ওয়াইফ ছিলেন। এই সুন্দরি মহিলা দেখতে কালো ছিলেন। জীবনানন্দ তাঁর যৌবনে এক কালো মেয়ের প্রেমে পড়েছিলেন,সেখান থেকেই তিনি "বনলতা সেন" লিখেছেন।তাঁর আভাষ কবি নিজেই এক লেখায় ইংগিত দিয়েছিলেন। কবির বোন সুচরিতা দাসও সেটা নিশ্চিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথ তো কালো মেয়ের রাজ্যই খুলে দিয়েছেন সাহিত্যপটে! কালো মেয়েরা অপরূপা হয়! সে রুপ দেখার চোখ সবার নেই! ভদ্রলোকের মুখের হাসিটা এখন আর নেই। সেখানে ছায়া পড়েছে। আমি একটু নড়েচড়ে বসলাম।ভদ্রলোক হঠাত কালো মেয়ে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন কেন,কে জানে!তবে এমন লোকের সঙ্গ আমি দারুণ উপভোগ করি। অনেক কিছু নতুনভাবে জানা যায়। আমি হেসে বললাম, > আপনার কি মন খারাপ? -- হুম,কিছুটা। কালো মেয়েটাকে অপমান করায় আমি কিছুটা মন খারাপ করেছি। জানালার পাশের ভদ্রলোককে কঠিন কিছু বলা উচিৎ ছিল। বলতে পারিনি। > কেন? মাইনুল সাহেব সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়লেন। ধোঁয়া ছাড়াটা একটা দীর্ঘশ্বাসের মত মনে হল।বেশ গরম পড়েছে। কালো মেয়ের বিষণ্ণ মুখের মত কয়েক ফালি মেঘ আকাশের গায়ে জমা হতে শুরু করেছে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।মনে হচ্ছে,প্রকৃতি ধরণীর ছবি তুলছে।বজ্র-বিদ্যুতের ফ্লাস লাইট জ্বলে উঠছে। মানুষের ছবিতে ক্লিক-ক্লিক শব্দ হয়। প্রকৃতি ছবি তুললে শব্দ হয় গুড়ুম-গুড়ুম!! মাইনুল সাহেব আমার "কেন" প্রশ্নের সরাসরি কোন উত্তর দিলেন না।তিনি জানালার বাইরে চোখ রেখে বিড়বিড় করে আবৃতি করছেন, " I bring fresh showers for the thirsting flowers, From the seas and the streams; I bring light shade for the leaves when I laid In their noonday dreams" আবৃতি শেষ করে লজ্জিত মুখে বললেন, "এটা শেলি'র কবিতা - দা ক্লাউড।আমি সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষ,তবু কবিতার প্রতি আমার ভয়াবহ দুর্বলতা আছে!দেখুন কী সুন্দর মেঘ করেছে!" আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত ভদ্রলোকের দিকে চেয়ে আছি! তিনি একটা দীর্ঘশ্বাস খুব ধিরে ধিরে ছেড়ে বললেন, -- জানেন, এক কালে এই একই দোষে দুষ্ট আমিও হয়েছিলাম! আপনি বিরক্ত না হলে সংক্ষেপে একটা গল্প শোনাতে চাই। আমি হাসি মুখে সম্মতি জানালাম। শ্রোতা হিসেবে আমি বরাবরই ভাল, তাছাড়া দু ঘন্টার ভ্রমণে গল্পের বিকল্প নাই। মাইনুল সাহেবের হাতের সিগারেট শেষ। বহুদিন এমন চেইনস্মোকার চোখে পড়েনি। তিনি আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে গল্প শুরু করলেন......... " আমি শুরু থেকেই ছাত্র হিসেবে ভাল ছিলাম। ম্যাট্রিকে গোল্ডেন পেয়েছিলাম। বাবা পিডব্লিউডি- তে চাকুরী করতেন। সেই সুবাদে মতিঝিল এজিবি কলোনিতে আমার বেড়ে ওঠা।বড় দু বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে।সংসারে কানা-ফুটো আমি-ই একমাত্র ছেলে। হঠাত আমার কানে দখিনা বাতাস লেগে গেল! ইন্টারমেডিয়েটে এসে অনলি "এ" পেলাম নটরডেম কলেজ থেকে!মামুলী প্লাস-ও জুটলনা। বুঝতে পারছেন, কী ভয়ঙ্কর অবস্থার শিকার আমি?" আমি একমনে মাইনুল সাহেবের কথা শুনছিলাম। গল্পে একটা তাল-লয় আছে। ট্রেনের ঝিক-ঝিক শব্দের সাথে গল্প মিলেমিশে ওস্তাদ জাকির হোসেনের তবলার ত্রি-তালের মত মনে হচ্ছে! আমি উৎসুক হয়ে বললাম, -- হু, বুঝতে পারছি। খুব খারাপ অবস্থা! ভেরি স্যাড! মাইনুল সাহেব আরেক কাপ চা'এর অর্ডার দিয়ে হাসলেন।বললেন, > এখানে বসে থাকলে সারাক্ষণই কিছু না কিছু খেলে ওরা আমাদের উঠিয়ে দেবেনা। হা-হা-হা...... শুনুন বাকি ঘটনা......... " আমার একটা বদভ্যাস ছিল তখন। নতুন কোথাও বাসা বদল হলে আগে দেখতাম বিল্ডিঙের কোন ব্যালকনিতে মেয়েদের কাপড় শুকাতে দেয়া আছে কি-না। শুকাতে দেয়া দেখলে ভারী আনন্দ হত।ঐ কাপড়ের রঙ বলে দিত,এখানে মেয়ে আছে। ভাবতাম,যাক বাঁচা গেল। এই বয়সে একটু প্রেম-ট্রেম না করতে পারলে সময় কাটাব কী করে!হা-হা-হা...... আমাদের বাসার সামনের দোতলায় দুজন মেয়ে ছিল।এরা ছিল দুই বোন স্বর্ণা আর বর্ণা।স্বর্ণাকে বয়সে নাগাল পেলামনা।কিন্তু বর্ণা আমার এক ইয়ার জুনিয়র।আমি তখন এইচএসসি দিয়েছি, রেজাল্টের অপেক্ষায় আছি। আমার জন্য ভালই হল।এরা দু'বোনই তৎকালীন এজিবি'র হার্ট-থ্রব মেয়ে। ভাল লাগা সিলিং স্পর্শ করল যখন জানলাম,এই মেয়েদের বাবা আমার বাবার কলিগ। ব্যাস,কিছুদিন না যেতেই আসা-যাওয়া শুরু হয়ে গেল দুই পরিবারের মধ্যে।অবশ্য, আমি কিঞ্চিৎ লাজুক প্রকৃতির হওয়ায় বর্ণার সাথে তখনও কথা বলা হয়ে ওঠেনি। মাইনুল সাহেব একটু থামলেন। তাঁর মুখের হাসি ফিরে আসতে শুরু করেছে। তিনি বললেন, -- আমার এমন রাখ-ডাকহীন গল্প শুনে আপনি অস্বস্তিবোধ করছেন না তো? > না,ভাইয়া । আমার কাছে ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে। আপনি বলুন।" - আমি কৌতূহল নিয়ে উত্তর দিলাম। ভদ্রলোক মাথা ঝাঁকিয়ে আবার মূল গল্পে গেলেন......... এক বিকেলে আমার মা ডেকে বললেন,ওদেরকে যেন আগামীকাল ডিনারের দাওয়াত দিয়ে আসি।এই প্রথম চার্লস ডারউইন সাহেবের মতবাদ সত্য মনে হল। আমি বানরের মত লাফাতে লাফাতে ওদের ঘরে ঢুকলাম! কিন্তু ভাগ্য খারাপ ছিল।স্বর্ণা-বর্ণা কেউ বাসায় নেই। বানরের মত গিয়েছিলাম,এখন হনুমানের মত মুখ অন্ধকার করে ওদের ড্রইং রুমে বসে আছি! কিছু সময় বাদে একটা কালো মেয়ে মাথায় ওড়না টেনে দিয়ে আমার সামনের সোফায় বসল।বর্ণার মা নামাজ পড়ছিলেন। এই মেয়েকে দিয়ে আপাতত নাস্তা পাঠানো হয়েছে।আলাপ করে জানলাম,সে বর্ণার এক মামার মেয়ে।মেয়েটির বাবা বেঁচে নেই।এখন বর্ণাদের সাথেই সে থাকে।বর্ণার সাথে আইডিয়ালে পড়ে। ইন্টারমেডিয়েট সেকেন্ড ইয়ার। মেয়ের নাম ফাতিমা। সে একসময় হাসতে হাসতে বলল, -- আমি গ্রামের মেয়ে।তাই আমার নামটাও একটু সেকেলে। আমি সৌজন্যতা দেখিয়ে বললাম, > না-না,ঠিক আছে। ফাতিমা নামটা ভাল। আমাদের নবিজির মেয়ের নাম! মেয়েটি হাসল। বলল, -- একটা জিনিশ খেয়াল করেছেন? ইদানীং আমাদের দেশের মুসলিমরা খুব স্টাইলিশ হয়ে গেছে।তারা ধর্ম-কর্মেও স্টাইল করে। সারাদিন ইসলামের নামে মুখে ফেনা তুলে ফেলে,কিন্তু তার ছেলের নাম কখনই উসমান বা উমর রাখেনা।একবার একজনের মেয়ে হলে আমি প্রস্তাব দিয়ে ছিলাম,রাবেয়া রাখার জন্য। মেয়ের অভিভাবক আমার দিকে সাপের দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল! পরে নাম রাখা হয় "আনুস্কা"। আরবি নাম রাখতে গেলেও নামটা আনকমন খোঁজে।প্রথম সাক্ষাতে অনেক আঁতলামো করে ফেললাম!কিছু মনে করবেন না।ভাবতে অবাক লাগে, একসময় রাবেয়া,রহিমা নামগুলো মানুষ ভালবেসে রাখত।দু-একটা এক্সেপসনাল কেইস ছাড়া এখন এ নামগুলো শুধু বাসার বুয়াদের দখলে।হা-হা-হা আমার সামনের কালো মেয়েটি হাসছে। এই প্রথম তার মুখের দিকে আগ্রহ নিয়ে তাকালাম। চেহারাটা এভারেজ। কিন্তু, তার চোখ দুটো টলটলে দীঘির মত গভীর! কালো মেয়েদের চোখ এমনিতেই সুন্দর হয়। মনে হয় জন্ম-কাজল দেয়া। সচরাচর এমন বুদ্ধিদীপ্ত কথা মেয়েদের মুখে শোনা যায়না। আমি মেয়েটার কথায় পুলকিত হলাম। এদিকে বর্ণাকে দেখতে না পারার ব্যাথায় আমার বুক টন-টন করছে।তাই আলাপ আর বেশিদূর এগোয়নি। আমি নাস্তা সেরে ঝড়ের বেগে দৌড় মারতেই এক বিপত্তি ঘটালাম। দরজায় স্বর্ণার সাথে তুমুল জোরে সংঘর্ষ হল আমার।ওরা বাইরে থেকে ফিরছিল। নাটক সিনেমায় নায়িকার সাথে সংঘর্ষ হয়, আমার হল নায়িকার বড় বোনের সাথে! বেচারী ছয়দিন ব্যাথায় চলাফেরা করতে পারেনি।শুধু এই কারনে ডিনারের দাওয়াত পিছিয়ে দেয়া হল। সাথে বাবামায়ের কান ফাটানো বকুনি ফ্রি-তে পেলাম! বর্ণার সাথে এর পরের দিনই আমার কথা বলার সুযোগ হয়ে গেল। মায়ের কাছে টিএন্ডটি-তে ফোন করেছে সে।মা কিচেনে ব্যস্ত।সুতরাং আমি রিসিভ করলাম। ফোনে দুঃখ প্রকাশ করলাম। আপুকে দেখতে আসতে চাই-তাও জানালাম। এই মেয়ে এতটা ডেয়ারিং - জানা ছিলনা!সে আমাকে খুব ঠাণ্ডা স্বরে বলল, -- তোমাকে আমি আপনি করে বলব,এই চিন্তা বাদ দাও।আমাদের বাসার আশে পাশে তোমাকে দেখলে বাড়ি দিয়ে তোমার মাথা চারভাগ করব আমি। মাত্র চারভাগ। বুঝছ, বান্দরের তালতো ভাই? আমি পরিস্থিতি সহজ করার জন্য হাসার ভাণ করলাম।সে আরও ঠাণ্ডা গলায় বলল, -- হাস কেন, বান্দর? বিশ্বাস হয়না,তাই না? আপুর সাথে একটা সার্বক্ষণিক ক্র্যাচ থাকে হাঁটার জন্য। ষ্টীলের তৈরি। তোমার মাথা ভাঙতে দা-কুড়াল লাগবেনা আমার। এসে বেড়ায়ে যাও বান্দর! মাইনুল সাহেবের প্রসন্ন মুখে এক চিলতে হাসি ঝুলে রয়েছে। একটু কেশে আরেকটা সিগারেট ধরালেন। আমার জন্য চিকেন কাটলেটের অর্ডার দিলেন। ট্রেন নরসিংদী এলে দুই ডজন পাকা কলা কিনলেন। হেসে বললেন, " আমার স্ত্রী রাতে দুধ-কলা মিশিয়ে ভাত খেতে পছন্দ করে।" তিনি আবার শুরু করলেন............ যাহোক,গল্প দীর্ঘ করবনা। বর্ণার সাথে কয়েকদিন বাদে প্রেম হয়ে গেল আমার। সময় পেলেই বাইরে ঘুরতে বের হই। সাথে ওর কাজিন ফাতিমাও থাকে। গভীর প্রণয়ের কথার সময় সে একটু দূরে গিয়ে বসে। বর্ণা ওর এই বোনটাকে অসম্ভব পছন্দ করত। আদর করে ব্লাক ডায়মন্ড ডাকত।আমি ফাজলামো করে বলতাম, " এই যে কয়লার খনি! তোমার মাঝের কিছু হীরে আমাকে দিও। আমি আমার বর্ণাকে সাজাব।" ফাতিমা ম্লান হাসি দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিত।কিছু বলতনা। একদিন স্বর্ণাকে এক পাত্র পক্ষ দেখতে এল। বুঝতেই পারছেন,আমি ততদিনে ওদের সংসারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছি। চাচা-চাচি স্বর্ণার সঙ্গে শুধু ফাতিমাকে দিয়ে পাঠাল। বলল, " বিয়ের কনের পাশে অন্য কোন সুন্দরি মেয়ে রাখতে নেই। এতে পাত্রের মন ঘুরে যেতে পারে।" ফাতিমা সামনেই ছিল।ওর থমথমে মুখের দিকে চেয়ে সেই প্রথম মনে হল, পৃথিবীতে কালো মেয়ে হয়ে জন্ম নেয়া অপরাধ। পরীক্ষার ফল বেরোল। আগেই বলেছি রেজাল্ট আশানুরূপ হয়নি।তবু রাজশাহী বিআইটি-তে টিকে গেলাম। এয়ারফোর্সের জিডি পাইলটের জন্য সুপারিশকৃত হলাম। ফাইনাল মেডিকেলে আই পাওয়ার 6/6 না থাকাতে পাইলট থেকে বাদ পড়লাম। কোন এক অদ্ভুত কারনে সমস্যাটা প্রিলি-তে ধরা পড়েনি।এতে অবশ্য আমার মন খারাপ হয়নি। ঠিক করলাম, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ব। আমার প্রেমে তখন টুইটুম্বর অবস্থা!হঠাত কি মনে করে, একদিন বর্ণার সাথে একটা ফান করে বসলাম। মনে পড়লে হাসি পায়।ওকে বললাম, -- বর্ণা,আমকে তোমার একটা কিডনি দিবা? ডিফেন্সের মেডিক্যাল থেকে বাদ পড়লাম।কে জানত,এত বড় রোগ পুষে রেখেছি! বর্ণা কেঁপে উঠল মনে হয়। বিশ্বাস করতে চাচ্ছিলনা। আমি কম্পিউটার প্রিন্ট করে কিছু ফেইক এভিডেন্স রেখেছিলাম সাথে।সেই সাথে অনুরোধ করেছিলাম,ব্যাপারটা যেন আমার ফ্যামিলির সাথে শেয়ার না করে।একমাত্র ছেলে বলে কথা! অল্প বয়সের বুদ্ধি, রহস্য করে মজা পেতাম। তখনও বুঝিনি এই রহস্য আমার এতদিনের গভীর প্রেমের ভীত নাড়িয়ে দেবে। বর্ণা কিছুক্ষণ আমতা-আমতা করে চলে গেল।আমাকে সচেতনভাবে এড়িয়ে চলা শুরু হল,এবং ১৬ দিনের মাথায় সে তার এক ইটালি প্রবাসী কাজিনের প্রেমে হাবুডুব খাওয়া শুরু করল।বুঝতেই পারছেন, সামটাইমস ফ্যাক্ট ইজ দা স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশান! আমি রাজশাহী হোস্টেলে গিয়ে উঠলাম। এক রাতে আজব এক স্বপ্ন দেখলাম! আমার গায়ে কে যেন আগুণ লাগিয়ে দিয়েছে। আমি দৌড়ে এক পুকুরের পানিতে ঝাঁপ দিয়েছি। পুকুরের পানি ভয়ঙ্কর কালো রঙের! পানিতে আমি একা নই,ফাতিমাও ছিল। স্বপ্নে এটাই স্বাভাবিক মনে হল। তার শরীর গলা পর্যন্ত পানিতে ডুবানো।সে আমার কাছে ঘেঁষলে আমি স্বপ্নের মাঝেই আঁতকে উঠলাম! কারন সে ছিল নগ্ন, শরীর পানির নিচে থাকায় বুঝতে পারিনি। ফাতিমা বলল, -- ভয়ের কিছু নেই। পানি কালো হলেও তোমার আগুণ যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করবে। কালো হলেই কোন কিছুর ধর্ম চেইঞ্জ হয়ে যায়না। বুঝতে পারছ তুমি? কাঁপুনি দিয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি,আমার তোশকে কয়েলের আগুণ লেগে সারাঘর ধোঁয়া-ধোঁয়া হয়ে রয়েছে। উত্তাপ ওখান থেকেই লাগছিল। আমার ব্রেইনের নিউরন সেল ফাতিমাকে টেনে একটা নাটক সাজিয়েছে মাত্র! মাইনুল সাহেব তাঁর মুখের সিগারেটের অবশিষ্টাংশ বাইরে ফেলে দিলেন। গল্প বলার ঘোরে আগুণ নিভে গিয়েছিল। আশপাশের অনেক প্যাসেঞ্জার কৌতূহল নিয়ে আমাদের দেখছে। ভদ্রলোক সেদিকে ভ্রূক্ষেপ না করে গল্পের শেষ অংশে আসলেন......... পরদিন সকালেই আমি ঢাকা চলে আসি।মায়ের বকুনি রেডি ছিল,বুঝতে পারিনি।মা বকা দিয়ে জানাল,ফাতিমা ইতিমধ্যে আমার মায়ের কাছে অনুমতি চেয়েছে। সে আমাকে একটা কিডনি ডোনেট করতে চায়। ট্রান্সপ্লান্টের জন্য গোপনে কিছু বায়লজিকাল টেস্টও করেছে। আপনি কি আমার কথা বিশ্বাস করছেন? মাইনুল সাহেব ক্লাশ টিচারের মত আমার দিকে চেয়ে আছেন।আমার মুখে কোন কথা জুগালো না। আমি শুধু একটা "হু" বললাম। তিনি এবার কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বললেন, ফাতিমা আসার পর,এই ছেলেমানুষি মজার ব্যাপারটা আমার মায়ের কাছ থেকে ততদিনে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। বর্ণা আমার কাছে এসে ক্ষমা চাইল।আমিও ক্ষমা করে দিলাম।দু-তিন দিন আবার আগের মত বর্ণা-কে নিয়ে ইচ্ছেমত ঘুরে বেড়ালাম। সাথে ফাতিমা থাকত। সে বরাবরের মত দূরে গিয়ে বসত। এক সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাবা-মা কে লজ্জার মাথা খেয়ে ডিক্লেয়ার করলাম, আমি বিয়ে করব।দু হাজার আট সালের ৫ই জুন আমাদের বিয়েটা হয়ে গেল। আমি হৈমন্তীর অপুর মত বললাম, "আমি পাইলাম,ইহাকে পাইলাম!!!" আমার গল্প শেষ। হা-হা-হা মাইনুল সাহেবের চোখেমুখে স্বর্গীয় একটা দ্যুতি এসে পড়েছে। ঘোরের মধ্যে ছিলাম আমি। ঘোর কাটিয়ে বললাম, > শেষ পর্যন্ত মিলন হল তাহলে। গল্পটা আমার অনেক দিন মনে থাকবে।বর্ণা ভাবির ভাগ্য ভাল, আপনার মত একজন সঙ্গী পেয়েছেন তিনি! মাইনুল সাহেব ভ্রূ কুঁচকে বললেন, -- ব্রাদার, সামান্য মিস্টেক করেছেন। আপনার ভাবীর নাম বর্ণা নয় - ফাতিমা! অনেক কাহিনী ঘটিয়ে ফাতিমাকে রাজী করাতে হয়েছে। সে গল্প অন্য কোনদিন করব। আমার কার্ড রাখেন।আপাতত বাসায় না, অফিসে আসবেন। ফাতিমা সন্তান সম্ভবা। বাবামায়ের ইচ্ছায় ফাতিমা গ্রামের বাড়ীতেই আছে।রিটায়ার্ডের পর বাবা-মা এই আশুগঞ্জের বাড়ীতেই থাকেন। বাচ্চা অনেক লেইটে নিয়েছি। আমার অনাগত সন্তানের জন্য দোয়া রাখবেন। এবার চলুন,কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেন ভৈরবের মেঘনা ব্রিজে উঠবে। আমরা দুজন আগের কম্পার্টমেন্টে ফিরে এলাম। বমি করা বাচ্চার মা, মাইনুল সাহেবের বমি মোছানো রুমাল ফেরত দিয়ে বললেন, " ভাইজান,অনেক উফুকার করলাইন। এই লন রুমাইল। আমার লগে বাসনা সাবান আছিন। ধুইয়া রাখছি।" ভদ্রলোক রুমাল পকেটে গুঁজে ব্যাগ গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। আমার মধ্যে একধরনের অস্বস্তি কাজ করছে। আমি অস্বস্তি মাইনুল সাহেবের কাছে প্রকাশ করে বললাম, -- একটা সত্য জবাব দিবেন? > অবশ্যই দিব। বলুন। -- আপনার কি মনে হয়না, আপনি ফাতিমা ভাবীকে কোন কারনে দয়া করেছেন? মাইনুল সাহেব কিঞ্চিৎ হাসলেন। বললেন, > একটা রুমাল কেনার ক্ষমতা নিশ্চয়ই আমার আছে। আমি এই বমি মাখানো রুমালটা ফেরত নিলাম কেন,জানেন? এটা আমার স্ত্রীর দেয়া।আমার কর্ম ক্লান্ত ঘামে ভেজা মুখ মুছি এই রুমাল দিয়ে।মনে হয়,এটা রুমাল নয় - ফাতিমার শাড়ির আঁচল!শুধু শারীরিক সৌদর্য দিয়ে কখনও কখনও সংসার চলে সত্য,তবে জীবন চলেনা।মন টা সুন্দর হলে দুটোই চলে। এবং ভালভাবেই চলে। আর হ্যাঁ,যতদূর জানি, বর্ণাও সুখেই আছে।সে এখন স্বামী নিয়ে ইটালি থাকে। আর কিছু বলবেন? মাইনুল সাহেব আশুগঞ্জ প্লাটফর্মে নেমে আমার উদ্দেশ্যে হাত নাড়লেন।যাত্রা শুরুর হুইসাল দিচ্ছে ট্রেন। আমি অপলক চেয়ে আছি একজন ভীষণ আবেগ পূর্ণ মানুষের দিকে! তিনি ট্রেনের উল্টো দিকে একমনে হেঁটে যাচ্ছেন।তাঁর পকেট থেকে রুমাল বের হল। তিনি তাঁর ঘামে ভেজা মুখ মুছতে মুছতে হাঁটছেন।রুমালটা ফাতিমা নামের এক মেঘবতী নারীর দেয়া ! ঠান্ডা বাতাস ছেড়েছে। কাছে কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে। আমি আকাশের দিকে তাকালাম।সেখানে ঘন কালো রঙের মেঘ সেজেছে।আজ সে পৃথিবী ভাসিয়ে নেবে তাঁর ভালবাসার করুণা ধারায় !!! (পৃথিবীর সকল মেঘবতীরা সুখে থাকুন)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.