নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সালমা রুহী

সালমা রুহী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ গোলাপ দিবস........

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৩৭

তৌহিদ আশা একজন আরেকজনকে গোলাপ দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে, হাতে গোলাপ নিয়ে দেখা করতে এসেছে!!
আশা তৌহিদের হাতে গোলাপটা দিতেই তৌহিদ উফ করে উঠলো...আশার দেওয়া গোলাপের কাটার খোচায় তৌহিদের আঙ্গুল থেকে রক্ত ঝরছে।।
আশা রক্তসমেত আঙ্গুল মুখে নিয়ে ছলছল চোখে তৌহিদের দিকে তাকালো।।
তৌহিদ বললো,"আঙ্গুলে কাঁটার খোঁচা দিয়েছ ঠিকাছে, বুকে কিন্তু কাঁটার খোঁচা দিও না!!"
আশা বললো,"সেদিন যেন আমার মরণ হয়.....।"
তৌহিদের কয়েক বাড়ী পরেই আশাদের বাড়ী, কখনো তাদের মাঝে কথা হয়নি।
প্রায়ই দু'জনে কলেজ যেতে একসাথে ঘর থেকে বের হতো,,কিন্ত কখনো কারও সাথে কথা হয়নি। তবে একজন আরেকজনকে আড় চোখে দেখতো।
আশা যখন রিক্সা ডাকতো তখন তৌহিদের মনে হতো,এর চেয়ে সুন্দর কন্ঠ পৃথিবীতে নাই!!
আবার তৌহিদ যেদিন অফ-হোয়াইট শাটের সাথে ব্লু জিন্স পড়ে বের হতো, তখন আশার মনে হতো ওর চেয়ে সুদর্শন ছেলে আর পৃথিবীতে নাই।।
তৌহিদ ম্যাথমেটিকসে অনার্স চতুর্থ বর্ষে,আর আশা ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে......
তৌহিদের মা আর আশার মায়ের ভাল সম্পর্ক। একজন আরেকজনের বাসায় প্রায়ই আসা যাওয়া......
আশা আর তৌহিদের পরিচয় কাকতালীয় ভাবে হয়েছে...
কাল আশার অংক পরীক্ষা, জটিল একটা অংকের সমাধান করতে পারছে না, প্রায় কাঁদো কাঁদো অবস্থা!!
মেয়ের অবস্থা দেখে, মা তৌহিদের বাসায় গিয়ে বললেন,"আপা কাল আমার মেয়ের পরীক্ষা, একটা জটিল অংক কিছুতেই মিলাতে পারছে না.......তৌহিদ যদি একটু দেখিয়ে দিতো......
তৌহিদের মা জানে, তার ছেলে পরিবার ছাড়া কারও সাথে মিশতে পারে না।। তিনি টালবাহানা করছেন।
আশার মা নাছোড়বান্দা, পরীক্ষা বলে কথা.......
তৌহিদ আশার মার পিছু পিছু যাচ্ছে আর ভাবছে,
"যার সাথে কোনদিন কথাই হয়নি তাকে কিভাবে অংক করাবে......।"টেনশনে তার হাত পা ঘামছে।
বই খাতা নিয়ে আশা ড্রয়িংরুমে ঢুকলো......
দূরত্ব রেখে আশা বসলো,"ভাইয়া এই অংকটা বলে খাতা কলম এগিয়ে দিলো।"
তৌহিদ অংক করছে আশা মুগ্ধ চোখে দেখছে!!!!
হঠাৎ আশার চুলের খোপা খুলে গেলো..আশার চুল যেন নাটোরের বনলতা সেেনর কবিতা, হাটু ছাড়ানো...
ফুলস্পিড ফ্যানের বাতাসে চুলগুলো এলোমেলো হয়ে গেলো,,,খাতার উপর থেকে চুল সরাতে গিয়ে তৌহিদের চোখ পড়লো আশার দিকে, অবাক চোখে তাকিয়ে ভাবছে...."ক্যানভাসে আঁকা কোন ছবি না তো!!!!"
সেই থেকে ভালোলাগা ভালোবাসা শুরু...
দুই বছর ভালই কেটেছে,সেদিন আশা বললো,"বাবার বন্ধুর ছেলে আপন লন্ডন থেকে পড়াশুনা করে আসছে,বাবার ইচ্ছা আপনের সাথে তার বিয়ে দেওয়া।"
পড়াশুনা চলছে,চাকরি হবে হবে করছে।এই মুহূের্ত কিভাবে বিয়ে করবে??
"আমাকে আর কয়টা দিন সময় দাও..তৌহিদের গলায়
অনুরোধ ঝড়ে পড়লো।।"
তৌহিদ রাত্রে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসলো, শরীরটা ভালো লাগছে না। সারাদিন আশার ফোনটাও বন্ধ পাচ্ছে।
বাসায় ঢুকতে গিয়ে দেখে আশাদের বাড়ির সামনে কয়েকটা গাড়ি দাড়ানো। ভাবলো হয়তো মেহমান এসেছে, তাই আশাও ব্যস্ত ফোন বন্ধ রেখেছে!! তৌহিদও ফোন বন্ধ করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেলো।।
সকালে ফোন অন করে তৌহিদ আকাশ থেকে পড়লো,রাত ১টায় আশার, মোবাইল থেকে মেসেজ এসেছে....
তৌহিদ আমি আমার পরিবারের কাছে হেরে গেছি। বাবা কথা দিয়ে ফেলেছেন তাই বাবার সম্মান বাচাতে বাবার বন্ধুর ছেলেকে বিয়ে করতে বাধ্য হলাম!!"
"তোমাকে আমি অনেক ভালবাসি,,বাবাকেও আমি অনেক ভালবাসি, বাবার দীর্ঘ দিনের ভালবাসার কাছে আমি হেরে গেছি। আমাকে ক্ষমা করে দিও.......।"
আশার দেওয়া গোলাপ দিবসের গোলাপের কাঁটাটা আজ তৌহিদের বুকে গিয়ে বিধেঁছে!!
"তৌহিদের বুকে রক্তক্ষরণ করে আশা কি সুখী হতে পারবে.....??????"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.