নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জলে ভেজা পদ্ম

জানতে চাই জানাতে চাই

জলে ভেজা পদ্ম › বিস্তারিত পোস্টঃ

টিনের ট্রাংক

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:০২

বাবাকে নিয়ে সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল গিয়ে নামলাম। কন্ট্রাক্টর,হেল্পার আইসা জিগাইতে লাগলো,ভাই কই যাইবেন?কইলাম দাউদকান্দি যামু।ভাই আসেন,ডাইরেক বাস,একশ আশি টাকা কইরা।আরেকজন আইসা কইতাছে,ভাই আমাদের বাসে আসেন, বাস full  হইয়া গেছে এহনই ছাইড়া দিমু।একশ পঞ্চাশ টেকা কইরা দিয়েন।টানাটানি শুরু কইরা দিলো।বাস টার্মিনালগুলোতে এমন একটা ফোর্স কন্ট্রেস্ট আমার দেশের কমন চিত্র! যামু তিশা বাসে কইরা।মূলত তিশা বাস,ঢাকা সায়দাবাদ থেকে কুমিল্লা লাকসাম, বিশ্বরোড পর্যন্ত ভাড়া কাটে।এখন আপনি দাউদকান্দি নামেন আর যেখানেই নামেন পুরো দেড়শ টাকাই গুনতে হবে।জান বাচাইবার লাইগা বুড়ো বাবারে নিয়া এক বাসের সামনে খাড়াইলাম।কারন,কোন বাসের কাছে না গেলে টানাটানি বন্ধ হইবনা। কন্ট্রাক্টর বাসের দরজায় দাঁড়াইয়া দরকষাকষি শুরু কইরা দিল।একশ আশি টেকা দিবেন,আমি কই না,একশ পঞ্চাশ দিমু।এই অবস্থায় ড্রাইভার ভেতর থেইকা ধমক মাইরা কন্ট্রাক্টররে কইল, আরে বেটা উঠা, বুড়া মানুষ দাঁড়ায়া থাকবার পারতাছেনা আর তুই বেটা ভাড়ার ক্যাচাল করতাছস?আল্লাহর নামে গাড়িতে উইঠা বসলাম।বাস ছাড়ল,যাত্রাবাড়ী আসার পর এক ফেরিওয়ালা উঠলো পপকর্ন আর পটেটো চিপস লইয়া।বিশ টাকা দিয়া দুই প্যাকেট পপকর্ন ভাজা লইলাম। সেসময় ছিল লাঞ্চটাইম।বাবা বাসা থেকে লাঞ্চ কইরা বাহির হইবার পারলেও, আমি লাঞ্চ করবার সময় পাইনাই।তাই চিন্তা করলাম ভুট্টার খই দিয়াই লাঞ্চের কামডা সাইরা হালামু।ভুট্টার খই ফ্যাটবার্ন হিসেবেও কাজ করে।প্যাকেট খুইলা খাওয়া শুরু করলাম।বাবারেও সাধলাম। বাবাও খাইতে শুরু করলেন।দেখলাম বাবাও মজা কইরাই খাইলেন।চিটাগাং রোডে অর্থাৎ কাঁচপুর ব্রিজের আগে, অনেক ফেরিওয়ালা শসা, আমড়া, বড়ই আচার, পানির বোতল, প্রান কোম্পানির ম্যাঙ্গো জুস নিয়ে উঠলেও শুধু পানি ছাড়া আর কিছুই কিনলামনা।কারন কয়েকদিন আগে একটা নিউজ পড়েছিলাম,এই রোডের ফেরিওয়ালারা শসা আর আমড়ায় বিষাক্ত ডাইংয়ের রং মেশায়।রঙ মেশালে শসা চারপাঁচ ঘন্টাও নষ্ট হয়না।দেখতে মনে হবে একেবারে টাটকা! সোনারগাঁ মুগরা পাড়া থেকে এক কমলা ফেরিওয়ালা উঠলো।তার কাছ থেইক্যা একডজন কমলা লইলাম।খাইলাম, ভুটানের কমলা মোটামুটি ভালই মিষ্টি। ফেরিওয়ালা বলতেছিলেন একনম্বর কমলা,সেরা কমলা,আগে খান পরে লন ইত্যাদি ইত্যাদি। সিঙ্গাপুরে কমলা খাইছি,নাম হ্যানি অরেঞ্জ,সাইজে ছোট।আসলে নামে যেমন, কামেও তেমন।ভেরী সুইট।বাসে বসে বসেই ইশারায় জোহরের নামাজ আদায় করলাম।দাউদকান্দি কাউন্টারে নাইমা সিএনজি কইরা বাড়িতে পৌঁছালাম।

---কাজ ছিল দুইটা।বাবারে বাড়ীতে দিয়ে আসা আর বাবার কাছ থেইকা বিশ হাজার টাকা আনা।বাবায় টেকা রাখছে ট্রাংকের ভেতর।এটার খবর একমাত্র বাবারে ছাড়া আর কোন কাকপক্ষীও জানেনা!বাবারে জিগাইলাম, ট্রাংক কই?বাবা খাটের নিচে ইশারা দিয়া দেখাইলেন।ট্রাংক ভাঙ্গার আগে বাবা কইলেন দরজাজানালা বন্ধ কইরা লইস।কেউ জানলে সমস্যা আছে।যে রোমে ট্রাংক দরজাজানালা বন্ধ কইরা,একটা দাঁ লইয়া ট্রাংক ভাঙ্গতে শুরু করলাম।ভাবছিলাম ছোটখাটো তালা হবে।কিন্তু না,তালাটা মোটামুটি বড় সরই।তালা ভাঙ্গা সম্ভব না।দাঁ দিয়া কাঁজাকুঁজা দিয়া ট্রাংক ভাঙ্গলাম।একটা পুঁটলির মধ্যে টেকা।পুঁটলি খুইলা দেখি টেকার উপর ছাঁতা পইরা গেছে।বুঝলাম অনেকদিন ধইরা এই টাকা জমাইছে।বাবা কইলেন,টাকাগুলা গুইনা ক কয়টেকা আছে। গুনে কইলাম, এক চল্লিশ হাজার!জিগাইলাম বাবা কত নিমু?বিশ হাজার নে।বাবারে কইলাম,না আমারে আরও একহাজার বেশি দিতে হইবো।ঠিক আছে ল।একুশহাজার টাকা লইয়া আবার ঢাকায় ব্যাক করলাম।

@বাবা না খাইয়া অনেকদিন সময় নিয়া এই টাকা জমাইছে।
@বাবা মার কাছথেইকা আমরা শুধু নেই।আর যে টুকু দেই তাও যৎসামান্য।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৩৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


উনার টাকা কেন নিয়েছেন?

২| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:০৩

জলে ভেজা পদ্ম বলেছেন: ভাই টাকাটা নিয়েছি মূলত বিপদে পড়েই।চাবি হারিয়ে ফেলেছিলেন বলে ট্রাংকটি ভাঙ্গতে হয়েছিল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.