![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকার দোহার উপজেলার রাধানগর গ্রামে জন্ম। বেড়ে উঠেছেন হরিচন্ডি গ্রামে। হরিচন্ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষা, জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা, জয়পাড়া কলেজ থেকে ১৯৯১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ১৯৯৪ সালে সম্মানসহ স্নাতক ো ১৯৯৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে কিছুদিন বেসরকারি চাকরি। তারপর যোগদান বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে। মন না টেকায় যোগদান করেন গভঃ ল্যাবরেটরী হাই স্কুলে। সেখান থেকে ২২তম বিসিএস-এর মাধ্যমে শিক্ষা ক্যাডারে যোগদান করেন। বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক পদে সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ, পাবনায় কর্মরত আছেন।
আমাদের প্রকল্পগুলো
সমীর আহমেদ
প্রকল্প অইলো একগুচ্ছ কাম, যা বিশেষ কুনো উদ্দেশ্য অজ্জনের জন্য সম্পাদন করা লাগে। অথবা কুনো বিশেষ লক্ষ অজ্জনের লাইগা একটি নিদ্দিষ্ট সময়সীমার মইদ্যে যেই সব কাম সমাধান করতে অয়, হেই সব কামের সমষ্টিকে প্রকল্প বলে। আরো অনেকভাবে প্রকল্পের সংজ্ঞা দিয়া থাকেন বড় কর্তাগণ। তাগো কতা কী কমু, ম্যালা বিদ্বান লোক তারা। তাগো জ্ঞানের কতা কইয়া শ্যাষ করোন যাইবো না। আমরা নাদান মুক্যসুক্য মানুষ, তাগো মিহি হা কইরা চাইয়া থাহি। আর তারা প্রকল্পের নানা বিষয়আশয় নিয়া কতা কইতে কইতে মুহে ফ্যানা তুইল্যা ফালায়। আমাগো গাঁও-গেরামের পোলাপান যেমুন টিকটিক খেলে, দাঁইড়াবান্ধা খেলে, কানামাছি, ডাংগুলি খেলে, ফুডবল আর কিরকেট খেলে, আকাশে ঘুড্ডি উড়ায়, মাডিতে ভো ভো ভনভন কইরা লাট্টু ঘুরায়, ঘুরন্ত লাট্টুডা হাতের তালুতে নেয়, খালে-বিলে-পুকুরে কিংবা গাঙে ঝপাত কইরা পইড়া ডুইবা যায়, আবার কিছুক্ষণ পর ভুস কইরা সহজেই ভাইস্যা উডে, প্রকল্পডা অইলো তাগো কাছে তেমনি এট্টা সহজ ব্যাপার আর কি। যেইভাবে খুশি হেইভাবেই তারা প্রকল্প নিয়া কতা কইতে পারে। কুনোরম অসুবিদা অয় না। যতো অসুবিদা, আমাগো। কুনো কিছুই ঠিক লাহান বুইজা উটপার পারি না। তাই হা কইরা খালি চাইয়া থাহি। চাইয়া থাকতে থাকতে শুদু এইটুকু অহন ভালো মতোন বুজবার পারছি যে, প্রকল্প অইলো কতোগুলো কাম, যা এমনি এমনি করা অয় না, আগে থেক্যা নিরধারিত এট্টা লক্ষ অর্জনের লাইগা করা অইয়া থাকে। প্রকল্প নিয়া ম্যালা কতাবার্তা কইয়া ফালাইছি। আসল কতা তো আপনাগো কওয়াাই অয় নাইক্যা। তা না কইয়াই প্রকল্প নিয়া আমি আব্দুল জব্বার, পিতা মৃত শ্যাক গহর আলী, সাং হরিচ-ি, খালি প্যাঁচাল পারতাছি। এইডা মোডেও ঠিক অয় নাইক্যা।
আমাগো উপজিলায় চারমিহি চাইরটি প্রকল্প চালু অইছে। এইগুলা অইলো, আউলিয়াবাদ প্রকল্প, বানাঘাডা প্রকল্প, জামালচর প্রকল্প আর মাহমুদপুর প্রকল্প। এই গুলান নাকি সবই শাখা অফিস। সারাদেশে এমুন আরো অনেক শাখা অফিস এইসব প্রকল্পের আছে। হুনছি, পত্যেকটি প্রকল্পেরই হেড অফিস ঢাহায়। তবে হেড অফিসের ওপরেও নাকি আরো হেড অফিস থাহে, হেইগুলান যে কুতায়, তা আমরা কেউই ঠিক কইরা কইবার পারুম না। কেউ কেউ কয়, আউলিয়াবাদ প্রকল্পের হাথে ম্যালা খায়খাতির ভারতের। ভারত নাকি এই প্রকল্পকে ট্যাকাপয়সা ও বুদ্দিপরামর্শ দিয়া সব সময় সহযোগিতা কইরা থাকে। অতীতে এই প্রকল্পের গোরতর বিপদের সুময় এই রকম ম্যালা সাহায্য সহযোগিতার নজির আছে ভারতের। তবে আমেরিকা, বিটেন, ফান্স, জার্মান, রাশিয়া, চীন, জাপানসহ আরো অনেক দ্যাশের হাথেই নাকি এই প্রকল্পের ভালো খায়খাতির। পুরয়জনে তারাও এই প্রকল্পকে সাহায্য সহযোগিতা কইরা থাকে।
বানাঘাডা প্রকল্পের ওপরের হেড অফিস যে কোনডা, তা আইজও আমরা বুইজা উটপার পারি নাই। হুনছি সোদি আরব, পাকিস্তান, ইরান, মিশরসহ আরো অনেকের বুদ্দিপরামর্শ ও ট্যাকা নিয়া এই প্রকল্প চলে। তবে আমেরিকা জাপান, বিটেনের হাথেও নাকি তাগো গভীর সম্পক্ক। আগে এই প্রকল্প ভারত বিদ্বেষী ছিল। আউলিয়াবাদের হাথে গভীর মাকামাকি দেইক্যা ভারতকে তারা সইয্যই করবার পারতো না। তবে ইদানিং প্রকল্প প্রসারের কতা ভাইবা তারা ভারতের হাথেও খাতির জমাইবার চেষ্টাচরিত্ত করতাছে।
জামালচর প্রকল্পের হেড অফিসের হেড অফিসের কতা এক কতায় কইয়া ফালানো খুবই কডিন। ইদানিং তাগো কামকম্ম কিছুডা ঝিমায়া পড়ছে। তয় অতীতে তাগো রমরমা প্রসারের সময় তারা সোদি আরব, ইরাক, ইরান, কুয়েত, আমেরিকা, বিটেন, জার্মান, ফান্স, চীন, জাপান, এমন কি পাকিস্তানের হাথেও সম্পক্ক বজায় রাখার চেষ্টা করতো। হয়তো অহনো গোপনে গোপনে হেইরম চেষ্টাও তারা কইরা থাকপার পারে।
মাহমুদপুর প্রকল্পের হেড অফিস ঢাহা অইলেও পাকিস্তান তাগো মা-বাপ, এই কতা সবাই জানে। তবে সোদি আরব, ইরান, তুরস্ক, মিশর আর আফগানিস্তানের হাথেও তাগো ম্যালা খাতির। বিশ্বে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্টার লাইগ্যা অই সব দ্যাশে যেইসব জঙ্গি সংগঠন আছে, তাগো হাথে নাকি মাহমুদপুর প্রকল্পের কর্তাব্যক্তিগো আত্মার সম্পর্ক গইড়া উডছে। তারা ট্যাকাপয়সা ও পরামর্শ দেওন ছাড়াও গোপনে আরো অনেক কিছু দিয়া মাহমুদপুর প্রকল্পকে সাহায্য সহযোগিতা করতাছে। তয় ভারতের হাথে তাগো কুনোরম খায়খাতির নাই। ভারতের নাম হুনলেই তারা ত্যালে-বাগুনে জ্বইলাপুইড়া উডে। ভারতও নাকি তাগো দুই চক্ষে দ্যাকপার পারে না। যা-ই অইক, এই সব অনেক ওপরের ব্যাপারস্যাপার। আমাগো ছোট্ট মাতায় এইসব ধরে না। তারপরও আমরা এইসব প্রকল্পের উদ্দেশ্য নিয়া মাজে মাজে ভাবনাচিন্তা করতে থাহি। তাগো আসল উদ্দেশ্যডা কী, তা আমরা আইজও বুইজা উটপার পারি নাই। যদিও তারা পিরায় কয়, আমরা খিদা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়বার চাই। সমাজে সুক-শান্তি ফিরায়া দিবার চাই। কারা আমাগো সুক-শান্তি কাইড়া নিছে, কেনই বা তারা আমাগো তা ফিরায়া দিবার চায়, কীভাবে তারা তা ফিরায়া দিবো, তা আমাগো মাতায় ডুকে না। তারা নাকি বাড়তি কিছু কামও করবার চায়। যেমুন আউলিয়াবাদ প্রকল্প ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়া ম্যালা কাম করছে। তাগো উদ্দেশ্য অইলো এই সব ইতিহাস সঠিকভাবে মানুষকে জানানো। এই জন্য ইতিহাসের ওপর তারা বেশ জোর দিয়া থাকে। কারণ মানুষ যদি নিজেগো রক্তক্ষয়ী ইতিহাসডা না জানে, তাইলে তারা তাগো ঐতিহ্যকে হারায়া ফ্যালবো। নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পক্কে যাগো কুনোরম জ্ঞান থাহে না, তারা পরগাছার লাহান খালি বাইড়া উটতে থাহে। তারপর একদিন নিজের অস্তিত্বডাই হারায়া ফ্যালে। পৃথিবীতে তাগো কুনো দাম নাই। এই সব মানুষের বাঁইচা থাকোন না থাকোন একই কতা। আর সব চাইতে গর্বের কতা অইলো দ্যাশের ইতিহাস গড়ার সুময় এই প্রকল্পের কর্তাব্যক্তিরা ম্যালা অবদান রাকছে। একুনকী বর্তমানে তা রক্ষণাব্যাক্ষণের কামেও তারা ঝাপাইয়া পড়ছে। এই ব্যাপারে তারা কুনো ছাড় দিবার চায় না। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইতিহাসের চেতনা তারা প্রজন্ম থেক্যা প্রজন্মের ভিতরে ছড়ায়া দিবার চায়।
বানাঘাডা প্রকল্প আবার অন্যরম। তাগো কাছে ইতিহাসের মূল্য আছে বটে, কারণ এই সব ইতিহাস বিনিরমাণের তারাও দাবিদার, যদিও আউলিয়াবাদের বর্তমান কর্তাব্যক্তিরা তা মোডেও স্বীকার করবার চায় না। তারা কয়, ইতিহাস বিকৃতি কইরা আমাগো বদনাম ছড়ায়া বানাঘাডা প্রকল্প ম্যালা ফায়দা লুটছে। ইতিহাসের সত্যকে তারা ধামাচাপা দিয়া, বিকৃত কইরা তরুণ প্রজন্মকে আফিমের লাহান গিলাইতাছে। যার পরিণাম মোডেও ভালো কিছু বইয়া আনে নাই। দ্যাশের মইদ্যে কেবল অশান্তি আর অস্থিরতা ছড়াইয়া পড়ছে। তাই বানাঘাডা প্রকল্প থেক্যা তারা মানুষকে দূরে সইরা থাকপার কয়। বানাঘাডা প্রকল্পের কর্তাব্যক্তিগণ এই সব অভিযোগ একেবারেই অস্বীকার করে। তাগো সাফ কতা, আমরাই ইতিহাসের বিনিরমাতা এবং রক্ষাকারী। শুধু তাই নয়, এই দ্যাশ থেক্যা খিদা-দারিদ্র্য মুক্ত কইরা মানুষের মইদ্যে শান্তি ছড়াইয়া দিবার জন্য আমরাই পরথম সবুজ প্রকল্প হাতে নিছি। পানির অভাবে যেইসব জমিন অনাবাদী থাকতো, কিংবা ভালো মতোন ফসল ফলতো না, ভাতের অভাবে মানুষ পিরায় না খাইয়া মরতো, আমরা বিশাল বিশাল খাল কাইট্যা নদী থেক্যা পানি আইনা হেই সব জমিনে স্যাচ দিবার উত্তম ব্যবস্থা করছি। পরিবেশ বান্দব, আমাগো এই উদ্যোগের কারণেই খরায় পোড়া জমিন সবুজ-শ্যামলে ছায়া গ্যাছে। দিন দিন সোনার শস্যে ভইরা উডছে মাড। তাই আমাগো এই সবুজ প্রকল্প সবার মাজে ছড়ায়া দিবার চাই। যাতে দ্যাশের মানুষ অন্তত ডাইল-ভাত খাইয়া অইলেও সুকে-শান্তিতে থাকপার পারে। বিশ্বের মাজে এট্টা আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসাবে খাড়ায়া থাকপার পারে।
মাহমুদপুরের প্রকল্প ইতিহাস চর্চার ধারেকাছে নাই। তাগো কতা অইলো ইতিহাস দিয়া কী অইবো? মানুষ মরণশীল। মৃত্যুর পর তার ভালো-মন্দের বিচার অইবো। নেকীর পাল্লা যাগো ভারি, তারা বেস্তে আর মন্দের পাল্লা ভারি অলাদের স্থান জাহান্নামে। কাজেই এই সব ইতিহাস-ফিতিহাস দিয়া তো বেস্তে যাওন যাইবো না। বেস্তে যাইতে চাইলে অবশ্যই মানুষকে খাঁটি মুসলমান অইয়া মরতে অইবো। দুনিয়ার জমিনে আল্লাহর আইন আর সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্টা করতে অইবো। এই জীবনের কুনা মূল্য নাই, যদি তা দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্টার কামে না লাগে। তাই দুনিয়ার সব ত্যাগী মুসলমানের ইতিহাস তারা বেশ ভালোভাবেই তুইল্যা ধরে তরুণ প্রজন্মের সামনে। তাগো মস্ত বড় আলেম মাওলানা সৈয়দ দিলশাদ হোসেন নূরপুরি দ্যাশের বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ মাহফিল কইরা বেড়ায়। বিদ্যাশের মাডিতেও তার ডাক পড়ে। আল্লাহর আইন প্রতিষ্টার জন্য যুগে যুগে যে সকল নবী-রাসুল এবং সাহাবীগণ জীবন উৎসর্গ করিয়াছেন, তাগো জ্বলজ্যান্ত ইতিহাস তিনি তুইল্যা ধরেন মানুষের চক্ষের সামনে। তার গলা যেমুন সুরেলা, তেমনি বলার ভঙ্গিও অসাধারণ, মুহূর্তে মানুষ এক্কেবারে মাতোয়ারা অইয়া যায়। আবেগে অন্দ অইয়া পঙ্গপাল যেমুন আগুনের মইদ্যে ঝাপায়া পড়ার জন্য ছুডে, তেমনি বেস্ত পাওয়ার আশায়, দুদিনের এই দুনিয়ার নিতান্তই ক্ষণস্থায়ী জীবনডা কোরবান করার লাইগ্যা তারা মাহমুদপুর প্রকল্পে নাম লেহানোর জন্য দলে দলে কেবল ছুটতে থাহে। তা দেইক্যা আউলিয়াবাদ প্রকল্পের লোকজন মোডেও সইয্য করবার পারে না। তারা কয়, ধর্মের নামে এট্টা চমৎকার ফাঁদ পাইতা বইছে মাহমুদপুর প্রকল্প। ধর্মভীরু মানুষকে তারা বিভ্রান্ত করছে। থুককু এট্টা কতা আপনাগো অহনো পরিষ্কার কইরা কওয়া অয় নাইক্যা। তা অইলো, মাহমুদপুর প্রকল্পের লোকজন মাহমুদপুরকে কহনো মাহমুদপুর বলে না, তারা নামটা কিঞ্চিত পাল্টায়া কয় মুহাম্মদপুর। ভবিষ্যতে আমি মাহমুদপুর কইলেও আপনারা ধইরা নিবেন, এইডা তাগো ভাষায় মুহাম্মদপুর। আমরা আমাগো জায়গার নাম মাহমুদপুর কইতে কইতে অভ্যস্থ অইয়া গেছি। তাগো বদলানো নাম মুহাম্মদপুর সহজে আমাগো মুহে আহে না। হয়তো আরো কিছুদিন চেষ্টা করলে আইলেও আইতেও পারে। কিন্তু হেইরম চেষ্টা আমরা করুম কিনা সন্দেঅ।
জামালচরের প্রকল্প মনে করে, মানুষের ইতিহাস-ঐতিহ্যের যেমুন দরকার আছে, তেমনি ধর্মেরও। তবে উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ যেহেতু মুসলিম, তাই তাগো সেন্টিমেন্ডে লাগে এমন কিছু তারা করবার চায় না। নিজেরা ইসলামের কাম করুক বা না করুক, ইসলামকে তারা এই উপজেলার প্রধান ধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি দিয়া প্রকল্প শুরু কইরা দিছে ইনশাল্লাহ। প্রতিটি মানুষকে স্বাবলম্বী কইরা দ্যাশের মইদ্যে তারা উন্নয়নের জোয়ার বহাইয়া দিবার চায়। এই প্রকল্পের কর্তাব্যক্তিরা কয়, আউলিয়াবাদ, বানাঘাডা আর মাহমুদপুর প্রকল্প যা করবার পারে নাই, আমরা তা কইরা দ্যাহাইয়া দিমু। তাগো সব রকম ব্যর্থতার মইদ্যে আমরা সাফল্যের সোপান স্থাপন কইরা দিমুই দিমু। যদি আপনারা আমাগো প্রকল্পে নামখান লেহায়া দেন, তাইলে। এই দ্যাশ, এই সমাজ আইজ অনাচার, দুরনীতিতে ছাইয়া গ্যাছে, আমরা যদি আমাগো প্রকল্পডা ঠিক মতোন দাঁড় করাইবার পারি, তাইলে দ্যাকপেন, এই সব দূর কইরা আমরা সমাজের আনাচে-কানাচে শান্তির সুবাতাস বহায়া দিমু। তবে কতা অইলো, এই প্রকল্পের মূল কর্তাব্যক্তি হোসেইন মাসুদ এনামকে কুনো প্রকল্পই সইয্য করবার পারে না। তারা কয়, অই শালা বড় ধান্দাবাজ। নারী শিকারি, কামুক পুরুষ। অ যদি অর প্রকল্পডা ঠিক মতোন ছড়ায়া দিবার পারে, তাইলে, দ্যাশের কুনো সুন্দরী মাইয়া মানুষ আর নিরাপদে ঘরে বইয়া থাকপার পারবো না, তার লগে একবার না একবার বিছানায় যাইতেই অইবো। তাছাড়া প্রকল্পের বিরাট অংকের ট্যাকা তছরুপ কইরা অনেক আগে হে ধরা খাইছিল। দুরনীতির দায়ে অভিযুক্ত অইয়া কিছুদিন হে জেলেও ছিল। তাই কতায় কতায় অই তিন প্রকল্পের মানুষ তারে চোর চোর কইয়া চিৎকার কইরা ওডে। তার সব কুকর্মের কতা মানুষের মইদ্যে ছড়ায়া দিতে থাকে। অবশ্য তা অনেক মানুষই অহন আর আগের লাহান বিশ্বাস করবার চায় না। তাগো ধারনা, অরাও এক এট্টা পাকা চোর। চোর অইয়া আরেক চোরের নিন্দা করা মোডেও উচিত না। ভূতের মুখে রাম নাম আর কি! আসল কতা অইলো অরা লোকটাকে হেয় কইরা জামালচর প্রকল্প বন্দ করবার চায়। এইডাই তাগো মূল উদ্দেশ্য। তাগো, অই সব প্রকল্পের চাইতে জামালচর প্রকল্প অনেক ভালো, ঠিক মতোন প্রকল্পডা একবার দাঁড়ায়া গ্যালে, এই দেশের মানুষের আর কুনোরম দুক্ক থাকপো না। সুকে-শান্তিতেই জিন্দেগীডা কাডাইয়া দিবার পারবো। এই কারণে অনেকেই অহন সব নিন্দা উপেক্কা কইরা জামালচর প্রকল্পের সদস্য অওয়ার লাইগ্যা আগ্রহী অইয়া উডছে।
এই উপজেলার যেকেউ যেকুনো সময় ইচ্ছা করলেই যেকুনো প্রকল্পে ঢুইকা কামকর্ম শুরু করবার পারবো। তবে একই হাথে একাধিক প্রকল্পের সদস্য অওয়া কারো মোডেও উচিত অইবো না। যদি অয় এবং হে ধরা পইড়া যায়, তাইলে, প্রকাশ্যে যেকুনো একটি তাকে গ্রহণ করিয়া লইতে অইবো। অন্যথায় প্রতারণার দায়ে তারে অভিযুক্ত করা অইবো। এক্ষেত্রে তার প্রাপ্য শাস্তি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কর্তব্যক্তিগণ নিরধারণ কইরা দিবেন। যেমুন মাহমুদপুর থুককু মুহাম্মদপুর প্রকল্প থেক্যা কেউ যদি বারায়া অন্য প্রকল্পে ঢুইকা তাগো বিরোধিতা করতে থাহে, তাইলে, তার পরিণতি খুবই খারাপ। এটা অইলো শুধু প্রকল্পের হাথেই না, খোদা তা আলার হাথে না-ফরমানি করার শামিল। তাই তার প্রাপ্য শাস্তি অইলো মৃত্যুদ-। প্রকল্পের গুপ্ত ঘাতক দিয়া তার এই শাস্তি কার্যকর করার নিয়ম আছে। আর প্রকল্প ত্যাগকারী যদি অন্য প্রকল্পে যাইয়া বেশি বাড়াবাড়ি না করে, মুহাম্মদপুর প্রকল্প সম্পর্কে কুৎসা না ছড়ায়, তাইলে তারে মৃত্যুদ- না-ও দেওয়া অইতে পারে। তবে বাগে পাইলে হাত-পাও ভাইঙ্গা শুধু ঘরে বসানোর ব্যবস্থা করা অইতে পারে। এজন্য কোন প্রকল্পে কাম করলে নিজের, দ্যাশ ও দশের উপকার অইবো, তা আগে থেক্যা ভাবনাচিন্তা কইরা, তারপর, প্রকল্পে যোগদান করা উচিত বলে মনে করেন আমাগো গিরামের বিজ্ঞজনরা।
প্রকল্পের সদস্য অওয়ার জন্য স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেহাপড়া করতে অইবো, এমন কুনো কতা নাই। অনেকে লেহাপড়া না শিক্যাও প্রকল্পের সদস্য অইয়া গ্যাছে। এমনকী প্রধান পরিচালক পদেও নিয়োগ পাইছে। যেমন বানাঘাডা প্রকল্পের কতাই ধরা যাক। এর প্রধান পরিচালকের কুনো একাডেমিক সার্টিফিকেট নাই, তারপরও হে-ই এই প্রকল্পের প্রধান হর্তাকর্তা। দিনের পর দিন একই পদে দিব্যি কাডায়া দিতাছে। প্রধান পরিচালক অওয়ার জন্য পুরয়জন শুধু ক্ষমতা আর অভিজ্ঞতা। যারা একবার এই দুইডা গুণ অর্জন কইরা প্রকল্পের প্রধান পরিচালকের পদে আসীন অইয়া গ্যাছে, বংশ পরম্পরায় তাগো পোলাপান, নাতিপুতিরা খালি এই পদে নিয়োগ পাইতেই থাকপো ইনশাল্লাহ। তাই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পোলাপান অহন, লেহাপড়া ছাইড়া দিয়া প্রকল্পের সদস্য অওয়ার জন্য আদা-নুন খাইয়া লাইগা গ্যাছে। প্রকল্পের প্রধান পরিচালক অওয়ার সম্ভাবনা নাই তো কী অইছে, নিদেনপক্ষে একজন সদস্য অইয়া যদি নি¤œস্তরের এট্টা ছোট্টখাট্টো পরিচালকের পদও দহল করবার পারে, তাইলেই ভবিষ্যত একেবারে উজ্জ্বল। তারপর উপরঅলার সুদৃষ্টি থাকলে, ক্রমান্বয়ে উপরের মিহি উডতে আর কদ্দিন লাগে! তহন প্রধান পরিচালকের কাছাকাছি থাকপার ম্যালা সুযোগ। তারপর ভাগ্যলক্ষ্মী একবার মুক ফিইরা চাইলে, বড় ধরনের এট্টা ঝড়ঝাপটার মইদ্যে যদি সবকিছু ওলটপালট অইয়া যায়, তাইলে প্রধান পরিচালকের পদেও তার আসীন অওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়ায়া দেওন যায় না। তবে এইসব কেবলই খোয়াবের কতা। যারা প্রধান পরিচালকের কাছাকাছি থাকেন, তারাই কেবল এই সব খোয়াব দেইক্যা মনে মনে সুক পাইতে পারেন, অন্যরা না। প্রকল্পের নি¤œস্তরের সদস্য বা পরিচালকদের খোয়াব কেবল ওপরের মিহি উডা। যাইগ্যা হেই সব কতা। অহন আসল কতা অইলো, কে কোন প্রকল্পের সদস্য অইবো, তাহা নির্ভর করে তার পছন্দের ওপর। তবে পত্যেকটি প্রকল্পের পাকাপোক্ত সদস্য অওয়ার কিছু শর্তাবলি আছে। যিনি যে প্রকল্পের সদস্য অইতে ইচ্ছুক, তাকে অবশ্যই হেই প্রকল্পের শর্তাবলি বা নিয়মকানুনগুলা ভালোমতোন মাইনা চলতে অইবো। যেমন,
১। প্রত্যেক সদস্য প্রার্থীকে নিজের মগজ খুইলা নিয়া বিশেষ বা বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় তা ভালোমতোন ধোলাই করার অনুমতি দিতে অইবো, তাতেও যদি মগজটা প্রকল্পের ব্যবহার উপযোগী না অইয়া ওডে, তাইলে প্রকল্প উদ্ভাবিত এট্টা কৃত্রিম মগজ মাতার মইদ্যে বসাইয়া নিতে অইবো।
২। দৃষ্টিভঙ্গি নির্ভর করে দৃষ্টির ওপর। প্রকল্পের ১০০% সাফল্যের জন্য এইডা নাকি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এট্টা বিষয়। প্রত্যেক সদস্য প্রার্থীকে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাইবার জন্য নিজের চক্ষু দুইডা তুইল্যা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে অইবো। না না, ভয় বা আতঙ্কের কিছু নাই। চোক তুইলা নেওয়ার বিশেষ বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা আছে। সম্পূর্ণ ব্যথা নাশক পদ্ধতি। হে টেরও পাইবো না যে, তার চক্ষু দুইডা কহন কীভাবে তুইল্যা নেওয়া অইছে। কৃত্রিম এই চক্ষু দুইডা জাদুর লাহান কাম করবো। জিন্দেগীতে অন্দ অওয়ার কুনো ভয়ডর নাই। বরং দুনিয়ার রূপমাধুর্য ও কদর্য দ্যাকতে দ্যাকতে এই চক্ষু দুইডা এতোদিন খালি ক্ষইয়া ক্ষইয়া যাইতেছিল। দৃষ্টিশক্তি ক্রমশই ক্ষীণ অইতে ক্ষীণতর অইতে ছিল। অহন প্রকল্প উদ্ভাবিত নতুন চক্ষু দুইডা বসাইয়া দিলে, পৃথিবীর তামাম কদর্য তার কাছে মাধুর্য অইয়া উটপো। তাছাড়া তার দৃষ্টি ক্ষমতাও বহুগুন বাইড়া যাইবো। পৃথিবীতে বইয়া মঙ্গলগ্রহে কী ঘটিতেছে, ইচ্ছা করলে তাই হে অনায়াসে দ্যাকপার পাইবো। এমন কি ভবিষ্যতে কী ঘটতে যাইতেছে, তাও হে আগেই, পরিষ্কার কইয়া দিবার পারবো।
৩। হুনছি হার্ট মানুষের দ্যাহে রক্ত সঞ্চালনের কাম করে। আবার এর মইদ্যে নাকি মিল-মহব্বতও জমা অইয়া থাকে। এতে তেমুুন কুনো সমস্যা নাই। হার্ট থাকতে পারে। তবে প্রকল্পের সাফল্যের জন্য যহন তা বাধা অইয়া দাঁড়াইবো, তহন তা ফালাইয়া দিয়া এট্টাা নতুন হার্ট লাগায়া নিতে অইবো। এই হার্টের রক্ত সঞ্চালনের ক্ষমতা যেমন অসাধারণ, তেমনি প্রকল্পের প্রতি তার ভালোবাসার মর্ম উপলব্ধি করার ক্ষমতাও অসাধারণ।
৪। বিবেকবোধ মাঝে মাঝে খুব ঝামেলা পাকায়। মানুষকে নানারম দ্বিধাদ্বন্দ্বে ফালায়া দেয়। ফলে ঠিক সুময়ে হে সঠিক সিদ্দান্ত নিবার পারে না। সফলতা দ্বারে আইয়াও ঢুকবার পারে না। ব্যর্থ অইয়া ফিইরা যায়। তাই সূক্ষ্ম প্রক্রিয়ায় বিবেকবোধ বাইর কইরা প্রকল্পের নতুন এট্টা টিস্যু সেল লাগায়া নিতে অইবো, যাতে নিজের ও প্রকল্পের স্বার্থে যে কুনো কামকাইজ করতে তাগো মোডেও হোচট খাইতে না অয়।
৫। নিজের যৌনাঙ্গ মানে লিঙ্গডা কাইট্টা ফালাইতে অইবো। না না, তাতে কারো হিজড়া অওয়ার সম্ভাবনা নাই। কুনোভাবেই তার যৌন আনন্দ এবং সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত অইবো না। কারণ হেইহানে এট্টা কৃত্রিম লিঙ্গ বসায়া দেওয়া অইবো। আর হেই লিঙ্গের সঙ্গম ক্ষমতা এতো বেশি যে, দিনে-রাইতে যতোবার খুশি, ততোবারই হে সঙ্গম করবার পারবো, এট্টুও ক্লান্ত অইবো না। প্রতিবার সঙ্গমের মাধ্যমে এক বা একাধিক সন্তান উৎপাদন করতে সক্ষম অইবো হে। বয়স তার জন্য কুনো বাধা না। পৃথিবীতে যতোদিন হে বাঁইচ্যা থাকপো ততোদিনই তার এই ক্ষমতা বলবত থাকপো। তবে যদি হে প্রকল্প থেক্যা যেকুনোভাবে বিচ্ছিন্ন অইয়া যায়, তাইলে তার এই আচ্চর্র্য ক্ষমতা সম্পূর্ণ নষ্ট অইয়া যাইবো। যা অইক এই ক্ষমতা যতোদিন বলবত থাকপো, ততোদিন, প্রতিবার সঙ্গমের সুময় হে এতো আনন্দ অনুভব করবো যে, তার মনে অইবো স্বর্গের হুর বা দেবীর হাথে মিলিত অইছে হে।
প্রত্যেকটি প্রকল্পই একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মইদ্যে প্রত্যেক সদস্য প্রার্থীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিয়োজন ও সংযোজন কইরা নিবো। এই জন্য কুনো প্রার্থীকে বাড়তি কুনো ফি দিতে অইবো না। তারা শুধু প্রকল্পের কর্তাব্যক্তিদের হাথে নিয়মিত যোগাযোগ করবো এবং তাগো আদেশ-নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মাইন্যা চলবো। তাইলেই প্রকল্পের চুক্তিপত্রে সম্মতি জ্ঞাপন করা অইছে বইলা ধইরা নেওয়া অইবো। তারপর তাগো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেইদিন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বা জাদুর লাহান, আপনাআপনি বদলায়া যাইবো, কেবল হেইদিনই তাকে প্রকল্পের প্রকৃত সদস্য বইলা গণ্য করা অইবো। আর এই সদস্য একবার অইতে পারলে, তাগো যা যা লাভ অইবো, তা অইলোÑ
১। প্রত্যেক সদস্য বিস্ময়কর ক্ষমতার অধিকারী অইবো। ক্ষমতার বলে হে সমাজে দাপাইয়া কাঁপাইয়া বেড়াইতে পারবো। এমনকি কেউ কেউ প্রকল্পের কর্তাব্যক্তিগো চাইতেও ক্ষমতাবান অইয়া উটপার পারে। ডিসি বলো, এসপি বলো সবাই তাকে কুর্নিশ করবো। তাগো যদি হে নাচবার কয়, তাইলে তারা নাচতে আরম্ভ করবো, তার নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তারা খালি নাচতেই থাকপো। বিরক্ত বা ক্লান্ত অইলেও মুক ফুট্টা কিছু কইবার পারবো না তারা। বরং এই ব্যাপারে তাগো কিছু জিগাইলে, হাইস্যা কইবো, অসুবিদা নাই, খুউপ ভালো লাগতাছে। তা দেইক্যা মনে মনে ম্যালা খুশি অইবো প্রকল্পের সদস্যরা।
২। প্রকল্পের প্রত্যেক সদস্য অত্যধিক বিত্তশালী অইয়া যাইবো। তবে এক্ষেত্রে যে যেমুন ক্ষমতাবান অইবো, হে তেমনি বিত্তশালী অইবো। যেমিহি যেইহানে হে হাত বাড়াইবো হেইহান থেক্যা তার হাতে জাদুর লাহান ধনসম্পদ, ট্যাকাপয়সা উইট্টা আইবো। অল্পদিনের মইদ্যেই হে সম্পদের পাহাড় গইড়া তুলবার পারবো। এতোটাই যে, তা চিন্তাও করোন যাইবো না। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে গাধার লাহান লেহাপড়া শিকার পর জুতার তলা ক্ষয় কইরা অনেক কষ্টে যারা এট্টা চাকরি পায়, সৎপতে থাইকা হারাজীবন উপার্জন করলেও তারা তাগো ধারেকাছে যাইবার পারবো না। হারাডা জীবন তারা খালি অভাব অনটনে কাডাইবো। তাগো জীবনে সুদিন বইলা কিছু থাকপো না। পক্ষান্তরে প্রকল্পের সদস্যদের নিকট থেক্যা ক্ষিদা-দারিদ্র্য চিরতরে বিদায় নিয়া চইলা যাইবো। দ্যাশের বিত্তহীন মানুষ কুত্তার লাহান হাড়হাড্ডি চুষবো, আর তা দেইক্যা তারা খুউপ মজা পাইবো।
৩। প্রকল্পের যে সকল সদস্য মন-মগজ ঢাইলা দিয়া কাম কইরা অধিক ক্ষমতাবান অইয়া উটপো, পর্যায়ক্রমে একদিন তারাই প্রকল্পের কর্তা ব্যক্তিতে রূপান্তরিত অইয়া যাইবো। তহন তারাই প্রকল্পের দেকভাল করার দায়িত্ব ও ক্ষমতা হাতে পাইবো।
সবগুলো প্রকল্পই কাম শুরু কইরা দিছে। অনেকে কুনোকিছু না ভাইব্যাই, সুর সুর কইরা ঢুইকা পড়ছে এক একটি প্রকল্পের মইদ্যে। আমরা যারা বোকাসোকা মানুষ, কিছুটা সন্দেঅবাদীও, তারা অহনো কুনো প্রকল্পে ঢুুকি নাইক্যা। কোন প্রকল্প কতোডা কার্যকর তা আমরা একটু যাচাই-বাছাই করবার চেষ্টা করছি। ইতোমইদ্যে যারা এই সব প্রকল্পের সদস্য অইছে তাগো খোঁজখবর নিতেছি। প্রথমে খোঁজ নেই বাছের মিয়ার। হে ধর্মভীরু মানুষ। মাহমুদপুর প্রকল্পের কর্তা ব্যক্তিদের কতায় হে অতিশয় আকৃষ্ট অইয়া সদস্য পদে নাম লেহাইছে। অল্পদিনের মইদ্যেই তার বেশভূষা একেবারে বদলায়া গ্যাছে। সব সুময় পাজামা-পাঞ্জাবি আর মাতায় টুপি পইরা ঘুইরা বেড়ায়। মসজিদে যাইয়া পাঁচ অক্ত নামাজ জামাতে আদায় করে। রমজান মাসে ত্রিশটা রোজা রাহে। ইসলামের হুকুম আহকাম মাইনা চলে। মানুষকে আল্লাহর পতে ডাকে। দ্যাশে আল্লাহর আইন আর সৎলোকের শাসন প্রতিষ্টার জন্য বাছের মিয়া কোমর বাইন্দা লাইগা গ্যাছে। সব সুময় এট্টা ইসলামি রাষ্ট্রের খোয়াব দ্যাহে হে। আর প্রতি অক্ত নামাজ পইড়া, দুই হাত তুইল্যা খোদার কাছে মোনাজাত করে, হে আল্লাহ, পাক পরোয়ার দেগার, রহিম ও রহমান, অসীম ক্ষমতা তোমার, একমাত্তর তুমিই পারো, এই পাপী-তাপী বান্দার মনের বাসনা পূরন করবার। এই রাষ্ট্রডারে এট্টা খাঁটি ইসলামি রাষ্ট্র বানায়া দাও। আমি যেন তা দেইক্যা মরবার পারি। এছাড়া তোমার কাছে আর কিছুই চাইবার নাই মাবুদ। এই জন্য এই নশ্বর জীবনডা যদি তোমার পতে কোরবান করতে অয়, তাও করতে প্রস্তুত আমি। তুমি আমার এই মোনাজাত কবুল করো খোদা।
চোক থাকতেও এতোদিন হে নাকি অন্দ ছিল। খোদার দুনিয়ার কিছুই হে দ্যাকপার পারে নাই। অহন সবকিছু তার কাছে পানির লাহান পরিষ্কার। আমাগো প্রিয় নবী মুহম্মদ (স.) এর অঙ্গুলি নির্দেশে চাঁদটা সমান দুইখ- অইয়া গেছিল, চাঁদের বুকের হেই দাগডা হে এই দুনিয়া থেক্যাই দ্যাকপার পাইতেছে। শুধু তা-ই নয়, ইদানিং হে নাকি তার প্রকল্পের সবচাইতে বিজ্ঞকর্তা সৈয়দ দিলশাদ হোসাইন নূরপুরিকে চান্দের বুকে হাঁইট্টা হাঁইট্টা সাতবার তাকে হেই পূণ্য দাগডাকে চুম্বন করবার দ্যাকছে। এই কতা কইয়া আনন্দে হে চক্ষের পানি আর ধইরা রাকপার পারে না। ফুঁপায়া ফুঁপায়া কাইন্দা ওডে। আমরা তা চাইয়া চাইয়া দেহি। তবে তার কাছেধারে সহজে ঘেঁষি না। দ্যাকলেই হে খালি আল্লাহর পতে জীবনডা কোরবান করার লাইগা মাহমুদপুর প্রকল্পে আমাগো নাম লেহাইতে কয়। আমরা রাজি অই না দেইক্যা হে আমাগো ওপরে মহা বিরক্ত। কয়, আমি পরিষ্কার বেস্ত-দোজখ দ্যাকপার পাইতেছি। মাহমুদপুর প্রকল্পে যারা জীবন উৎসর্গ কইরা দিছে, তারা বেস্তে শান্তির শীতল বাতাস গায়ে লাগাইয়া আনন্দে ঘুইরা বেড়াইতেছে। তাগো সুক-শান্তির কুনো সীমা-পরিসীমা নাই। যহন যা মন চাইতেছে, হাথে হাথেই তা-ই পাইতেছে। সুন্দর ফুলের বাগানে তারা বইয়া আছে। তাগো পায়ের নিচে বইয়া যাইতাছে মনোহর ঝরনা, চারমিহি কী সুন্দর গাছপালা! আহ দ্যাকলে চক্ষু জুড়ায়া যায়। মনডা ভইরা যায়। বেস্তের এই অনন্ত শান্তির জন্য তোমরা দুনিয়ার এই নশ্বর, ক্ষণস্থায়ী জীবনডা কোরবান করবার চাইতাছো না! ছিঃ ছিঃ! তোমাগো জায়গা নিরঘাত জাহান্নামে। আর জাহান্নাম যে কী ভয়ঙ্কর জায়গা, তা তোমরা কল্পনাও করবার পারবা না। হেইহানে দাউ দাউ কইরা খালি আগুন জ্বলতাছে। দুনিয়ার এই আগুন, হেই আগুনের কাছে কিছু না, দুনিয়ার এই শীতলতা, জাহান্নামের হেই শীতলতার কাছে কিছু না। পাপীদের দেহ একবার আগুনে পোড়াইবো, আবার বরফে চুবাইবো। হেই কষ্টযন্ত্রণার কুনো শ্যাষ নাই। অনন্তকাল ভোগ করতে অইবো তা। তাই কই, অহনো সুময় আছে, তোমরা আমাগো প্রকল্পে ঢুইকা পড়ো। তা নইলে তোমরা অই জাহান্নামের আগুনে খালি পুড়তেই থাকবা, পুড়তেই থাকবা। কেউ তোমাগো রক্কা করবার পারবো না। আহ কী ভয়ঙ্কর হেই আগুনের ত্যাজ! চক্ষের পলকে সবকিছু পুইড়া ছাই অইয়া যায়। হে মাবুদ এদের তুমি হেদায়েত করো। হু হু কইরা কাইন্দা ওডে বাছের মিয়া। মনে অয় জাহান্নামের আগুনের ত্যাজ হে এই দুনিয়া থেক্যাই কিছুডা অনুভব করবার পারতাছে। কিংবা হেই আগুন এই দুনিয়া থেক্যাই প্রতিনিয়ত দ্যাকপার পাইতাছে। তার কান্দন দেইক্যা, মাজে মাজে আমরা খুউপ বিরক্ত অই। বাছের মিয়ারে কই, এতো কান্দ ক্যা মিয়া? বাছের মিয়া কয়, তোমরা বুজবা না। তোমাগো দিল তো আল্লাহপাক মোহর মাইরা দিছে। শয়তানের ধোকায় পইড়া আছো। তোমাগো অন্তরে আল্লাহর কুনোরম ডরভয় পয়দা অয় নাইক্যা। আল্লাহপাকের কৃপায় যেদিন তোমাগো দিলের কালি উইট্টা যাইবো, জ্ঞানচক্ষু খুইলা যাইবো, হেইদিন তোমরা এই কান্দনের মর্ম বুজবার পারবা, তার আগে নয়। আমরা ব্যাকুপ অইয়া একে অপরের মিহি চাইয়া থাহি। আর বাছের মিয়া হাউমাউ কইরা কানতে থাহে।
তার এই সব কা-কীর্তি মোডেও সইয্য করবার পারে না আমাগো গিরামের আব্দুস সোবহান মাস্টারের পোলা আবুল কালাম। হে আউলিয়াবাদ প্রকল্পের সদস্য। প্রকল্প অফিসে ছোট্টখাট্টো এট্টা পদও নাকি হে পাইছে। কী পদ, তা আমরা জানি না। তবে সব সুময় তারে গায় এট্টা লাল-সবুজের গেঞ্জি পইরা চলাফেরা করবার দেহি। হাতের তুড়ি বাজাইলেই সঙ্গে সঙ্গে হাজির অয় তার একদল সাঙ্গপাঙ্গ। কেউ কেউ কয়, এইগুলি তার নিজের পোলাপান। কৃত্রিম লিঙ্গ লাগানোর পর সঙ্গমের ফলে এই সব পোলাপানের জন্ম অইছে। তার নির্দেশ পাইলে যেকুনো কিছু তারা মুহূর্তের মইদ্যে কইরা ফালাইতে পারে। ধরাকে তারা সরা জ্ঞান করে। তাগো সবকিছু আমাগো কাছে জাদুর লাহানই মনে অয়। অল্পদিনের মইদ্যেই ম্যালা জমিজমার মালিক অইয়া গ্যাছে আবুল কালাম। অহন এট্টা মোটর সাইকেল নিয়া বল্লার লাহান ভো ভো কইরা এইদিক অইদিক ছুইট্টা বেড়ায়। কহন কারে কামড় দিবো, কেডা জানে! আমরা অনেকেই আতঙ্কে দিনাতিপাত করি। হুনতেছি, এট্টা পাজেরো কিনতেও তার বেশি সুময় লাগবো না। আউলিয়াবাদ প্রকল্পে ঢুইক্যা আমাগো জন্যে নাকি হে ম্যালা কাজকম্ম করতাছে। কী করতেছে, তা আমরা কিছুই বুজবার পারতাছি না। তবে খুউপ ভালো কইরা জানি, মাহমুদপুর প্রকল্পের নাম হুনলেই আবুল কালাম রাইগা-মাইগা অস্থির। কয়, ভ-, প্রতারকের দল। অগো খপ্পরে পইড়া সহজ সরল বাছের মিয়া নষ্ট অইয়া গ্যাছে। দিনে দিনে অগো লাহানই ভ- অইয়া যাইতেছে। গ্রামের সবাইকে প্রকল্পের সদস্য বানাইবার জন্য একেবারে অস্থির অইয়া পড়ছে অরা। আর এই সবই করতাছে বানাঘাডা প্রকল্পের ছত্রছায়ায় থাইকা। তা নইলে এতো সাহস অগো কুনোদিনই অইতো না। বড় বাড় বাইড়া গ্যাছে অরা। একদিন না ঠেঙ্গাইলে অইবো না। তহন বাছের মিয়ারেও আমরা ক্ষমা করুম না। অহনো সুময় আছে, তারে ঠিক অইতে কইও তোমরা। গিরামের মানুষের এই কান অই কান ঘুইরা এই সব কতা বাছের মিয়ার কানে যহন পৌছায়, তহন হেও রাইগামাইগা আউলিয়াবাদ প্রকল্পের পি-ি চটকায়। কয়, অরা কাফের, জালেম, ফাসেক। ধর্মকর্মে অগো কুনো মতিগতি নাই, বিশ্বাস নাই। আল্লাহ-নবী, কিছুই মানে না। দ্যাহো না মিয়া, অরা মসজিদে যায় না, নামাজ পড়ে না, রোজা করে না। ইসলামের দুশমন অরা। অহনই অগো দমন করতে অইবো। তা নইলে ইসলাম রক্কা সম্ভব অইবো না। আমাগো প্রিয় নবী ইসলামের জন্য কাফেরগো হাথে কতো লড়াই করছে। ইসলাম প্রচার করতে গিয়া তার দন্ত শহীদ অইছে। হেই ইসলামকে তোমরা অগো হাত থেক্যা রেহাই করবার পারবা না? ছিঃ ছিঃ! এ বড়ই লজ্জার কতা। রাজাবাশশাগো লাহান হাতে একহান তুড়ি মারে হে। সঙ্গে সঙ্গে তারও বেশ কয়েকজন পোলাপান আইয়া হাজির অয় সামনে। সবাই যুবক। মাতায় টুপি। গায় পাজামাপাঞ্জাবি। মুখের দাড়িমোচগুলান কেবল ঘন অইয়া উডতাছে। চোহেমুহে জঙ্গিভাবের উত্তপ্ত রোশনাই ঝলকাইতেছে। আমাগো বুজবার বাকি থাকে না যে, এরা সবাই তার কৃত্রিম লিঙ্গের পয়দা। বাছের মিয়ার অঙ্গুলি নির্দেশে তারা যেকুনো সুময়, যেকারো ওপরে ঝাপায়া পড়বার পারে। সবসুময় লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত তারা। বাঁচলে গাজি, মইলে শহীদ। এট্টুও ডরভয় নাই তাগো। জীবনের জন্য কুনো মায়াদয়া আছে বইলা মনে অয় না। বাছের মিয়া তাগো লগে পিরায় গোপনে শলাপরামর্শ করে। মাজে মাজে আবুল কালামের নাম হুইনা কুদাকুদি করে।
বাছের মিয়া আর আবুল কালামের পাল্টাপাল্টি গালিগালাজ হুনতে হুনতে আমাগো কান একেবারে ঝালাপালা। প্রথম প্রথম তাগো নিয়া আমরা খুব মজা করতাম। অহন তাগো বাড়াবাড়ি দেইক্যা আর কুনোকিছুই আমাগো ভালো ঠেকতাছে না। কী করবো দিশা পাই না। সব সুময় আতঙ্কে আঁইতক্যা উডি। না জানি কুনদিন আবুল কালাম আর বাছের মিয়া আর তাগো পোলাপানগো লগে গ্যাঞ্জাম লাইগা যায়। যে কেউ খুনখারাপিও অইয়া যাইতে পারে। কেউ তা ঠেকাইবার পারবো না। হেই ক্ষমতা আমাগো কারো নাই। দুচ্চিন্তায় আমাগো ঘুম আইবার চায় না। কিন্তু আবুল কালাম আর বাছের মিয়ারা মনে অয় ভালোই আছে। দিনে দিনে খালি ট্যাকার পাহাড় বানাইতেছে। এতো ট্যাকাপয়সা তারা কীভাবে আয়-উপার্জন করে, ভাবনাচিন্তা কইরা আমরা তার কুনোরম কূলকিনারা পাই না। ভাবতে ভাবতে আমরা কেবল ক্লান্ত অইয়া পড়ি। তারপর এক সুময় মনোযোগ দেই, জামালচর প্রকল্পের মিহি। আমাগো গিরামের কয়েকজন ইতোমইদ্যেই জামালচর প্রকল্পের ভক্ত অইয়া সদস্য পদে নাম লেহানোর জন্য চেষ্টাচরিত্র করছে। তাগো চলাফেরা খুবই রহস্যময়। কহনো তারা আউলিয়াবাদ প্রকল্পের কাজকম্ম সমর্থন কইরা আবুল কালাম আজাদগো বাহবা দেয়, বানাঘাডা আর মাহমুদপুর প্রকল্পকে ঘিন্না করে। কহনো কহনো আবার বানাঘাডা আর মাহমুদপুর প্রকল্পকে সমর্থন কইরা তাগো লগে একেবারে মিশ্যা যায়। এক টেবিলে বসে। একসঙ্গে চা খায়, নাস্তা খায়। দুপুরে ও রাইতে একসঙ্গে আহারও করে। এই সব দেইক্যা আমরা হাসাহাসি করি। গিরামের মিরাজ্যারে কই, তোমাগো ভাবচক্কর তো কিছুই বুজবার পারতাছি না মিয়া। একবার এই নায়ে পাড়া দ্যাও, আরেকবার অই নায়ে। বিষয়ডা কী মিয়া, খুইলা কও তো দেহি।
আমাগো কতা হুইনা মিরজ্যা খালি হাসে, খালি হাসে। কয়, আরে মিয়া, ঝুপ বুইজ্যা কোপ মারোন লাগে। তবে আমরা পরিষ্কার ভবিষ্যত দ্যাকপার পাইতাছি, আর কিছু দিন পর আউলিয়াবাদ প্রকল্প বলো, বানাঘাডা আর মাহমুদপুর প্রকল্প বলো, অই সবের মিহি মানুষ ঝুঁকবো না। তাগো কামকাইজে মানুষ অহন ম্যালা বিরক্ত। এইবার দ্যাকবা আমাগো প্রকল্প কীভাবে আগায়া যায়। আমরা মানুষের মঙ্গল চাই, শান্তি চাই, কল্যাণ চাই। ঝগড়াবিবাদ, মারামারি এইসব আমাগো পছন্দ না। তবে গায়ে পইড়া কেউ যদি আমাগো মারবার আহে, তাইলে, আমরাও তাগো ছাইড়া দিমু না নে। হাতে তুড়ি মারার আগেই দ্যাকলাম বেশ কয়েকজন পোলাপান লাডিশোডা নিয়া হাজির। মিরাজ্যা মুচকি মুচকি হাইসা কয়, এরা সবাই আমার পোলাপান। অগো দিয়াই আমরা মানুষের জন্যে কিছু করবার চাই। আমাগোা প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের দ্বারে দ্বারে ছড়ায়া দিবার চাই শান্তি। কুনো মানুষ আর অভাবে থাকপো না। আমরা খোঁজখবর নিয়া দ্যাকছি, মিরাজ্যাও তলে তলে ম্যালা ধনসম্পদের মালিক অইয়া গ্যাছে। এই সব দেইক্যাহুইনা আমাগো টাসকি লাইগা যায়। ভাবি, কুনো এট্টা প্রকল্পে না ঢুইকা আর উপায় নাই। নইলে হারাডা জীবন খালি হাড়হাড্ডিই চুইষ্যা মরতে অইবো। নিজেরা কুনোদিন মাছমাংস দিয়া দুগ্গা ভাত খাইয়া মরবার পারুম না। পোলাপানের পাতেও এট্টু মাছমাংস তুইল্যা দিবার পারুম না। কিন্তু কুন প্রকল্পে ঢুইকা পড়বো ভাইবা ভাইবা তা-ই স্থির করবার পারতাছি না। বানাঘাডা প্রকল্পের লোকজনও আমাগো ডাকাডাকি করে। বিশেষ কইরা আমাগো গিরামের আব্দুল হালিম মিয়া, একদিন পাজেরো গাড়ি হাঁকায়া আমাগো কাছে আইয়া পড়ে। সঙ্গে তারও ম্যালা পোলাপান। অব্দুল হালিম মিয়া কয়, কুতাও ঢুইক্যা পড়ার আগে ভালো কইরা চিন্তাভাবনা কইরো তোমরা। কারো চটকদারি কতাবার্তায় রাজি অইও না। আবুল কালামরা সত্য গোপন কইরা ইতহাসকে বিকৃত কইরা নিজেগো গরিমা মানুষের কাছে প্রচার করতাছে। আর আমাগো হেয় করবার চেষ্টা করতাছে। এইডা অরা মোডেও ঠিক করতাছে না। অহন সত্য ধামাচাপা দেওনের যুগ না। যতোই অরা সত্যডাকে ধামাচাপা দিবার চেষ্টা করুক না কেন, আমাগো মরহুম বড় কর্তার নাম অরা কিছুতেই ইতিহাস থেক্যা মুইছা ফ্যালবার পারবো না। একদিন ঠিকই তা মানুষের কাছে স্পষ্ট অইয়া উটপো। এই সব নিয়া অনেক বাড়াবাড়ি করছে আউলিয়াবাদ প্রকল্প। এলাকার মানুষের কতা একবারও ভাবে নাই। খালি ইতিহাস ইতিহাস কইয়া অরা এলাকার বারোডা বাজাইতেছে। তোমরা একবার আইয়া দ্যাহো আমাগো প্রকল্পডা। কতো সুন্দর! মানুষের জন্য কী করতাছি আমরা। মনে রাইক্যো এট্টা কতা, আমাগো দ্যাশটা কিন্তু অহনো কৃষিপ্রধান। যদিও বর্তমানে অনেক বেশি বেশি নগরায়ন অইয়া গ্যাছে। আরো অইতাছে। তারপরও কৃষি ছাড়া আমাগো কুনো গতি নাই। ধানই আমাগো প্রধান শস্য। আমরা বেশি কইরা ধান উৎপাদনের চেষ্টা করতাছি। যাতে এদ্যাশের মানুষ ভালোভাবে খাইয়াপইরা বাঁচবার পারে। আউলিয়াবাদ প্রকল্পের কর্তাব্যক্তিগো লাহান আমরা খালি মানুষকে স্বপ্ন দ্যাহাই না। বাস্তবে তা পূরণ করবারও চেষ্টা করি। তাগো লাহান আমরা কহনো গালগপ্পো মারি না। যা কই হাচাই কই মিয়ারা।
আব্দুল হালিম মিয়ার কতাও আমরা ফ্যালবার পারি না। এই প্রকল্পের সদস্য অইয়াা অল্পদিনের মইদ্যে হেও একেবারে ফুইল্যাফাইপা কলাগাছ অইয়া গ্যাছে। কী করবো, দিশা পাইতাছি না। আমাগো গিরামের কেউ কেউ কয়, এই সব প্রকল্প আসলে কিছু না। সবই ফাঁকা বুলি। মানুষের জন্য, এলাকার উন্নয়নের জন্য অরা আসলে কিছুই করে না। সমাজ থেক্যা খিদা-দারিদ্র্য তাড়ানোর কুনোরম সদ-ইচ্ছা অগো নাই। উন্নয়নের কতা কইয়া অরা শুধু নিজেগো আখের গোছায়। অগো মিষ্টি কতায় নিজেগো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারায়া লাভ নাই। তাইলে মানুষ হিসেবে তোমার আর অস্তিত্বডাই থাহে না মিয়া। আস্ত এট্টা রোবট অইয়া যাইবা। রোবটের ধনসম্পত্তি যতোই থাইক, তার জন্য তার মইদ্যে প্রকৃত কুনো আনন্দের উদয় অয় না। তার কতা হুইনা আমরা খেই হারাইয়া ফেলি। কুনো প্রকল্পে নাম লেহাইতে আর সাহস পাই না।
ইদানিং হুনতেছি এই সব প্রকল্পের ব্যর্থতা দেইক্যা, ১০০ ভাগ সাফল্য নিয়া আরো নতুন নতুন কিছু প্রকল্প আইতেছে। দ্যাহা যাক, তাগো উদ্দেশ্যডা কী। এলাকার মানুষের জন্য তারা কী করবার চায়।
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমার ভাষা আমার গর্ব।
তবে ভাষার পরসিীলিত রূপ আমার ভালো লাগে।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৩৮
সমীর আহমেদ ১৯৭৩০০৭ বলেছেন: এই গল্পটি পড়া কঠিন। আমার গল্পের পাঠক কি আছে?