ধর্ম,রোহিঙ্গা এবং ইত্যাদি (২য় পর্ব)

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:১৫

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে হিটলার লক্ষ লক্ষ ইহুদি হত্যা করার পর কেউ ইহুদিদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনাই।কেউ সেদিন বলেনাই যে,তাদের হত্যা করা উচিৎ নয়,কেউ বলেনাই যে,তারা মানুষ। অমানবিক ভাবে জাতিগত নিধন কার্যে যখন হিটলার বাহিনী ইহুদিদের হত্যায় নেমেছিল, তখন অনেক মুসলিম দেশ প্রকাশ্যে অথবা পর্দার আড়ালে হিটলারকে সমর্থন করেছিল। ইহুদিদের করুণ অবস্থায় মুসলিমরা আনন্দ -উল্লাস করেছিল।
সিরিয়ার খ্রিষ্টানদেরকে যখন আইএস জঙ্গি গোষ্ঠী ক্যামেরার সামনে এনে গলা কাটছে,বুলেটের আঘাতে ভিন্নমতাবলম্বী শিয়াদের শরীর ঝাঁঝরা করে দেওয়া হচ্ছে,পবিত্র কালিমা 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ 'র পতাকা উড়িয়ে ইরাক-সিরিয়ার বিস্তীর্ণ ভূমিতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে,তখন মুসলিমদের সম্পর্কে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মনে খারাপ মনোভাব কাজ করবেই,সেটা বুঝতে কারো কষ্ট হবার কথা নয়।
এখানে লিখার কথা রোহিঙ্গা নিয়ে,কিন্তু রোহিঙ্গাদের সাথে যেহেতু ধর্মীয় মনোভাব জড়িত, তাই ধর্মকে আমাদের ভাবা উচিত।
আপনি আজ রোহিঙ্গাদের উপরে হামলার জন্য অন্য ধর্মকে,অন্য দেশকে গালি দিচ্ছেন।
কিন্তু আমি যদি আপনাকে প্রশ্ন করি,আপনি কি ভিন্নধর্মীদেরকে ভালবাসেন?
ইহুদি-খ্রিষ্টানদের হত্যা করলে আপনি আনন্দিত হবেন,তাহলে মুসলিম হত্যার সময় ইহুদি-খ্রিষ্টানরাও আনন্দিত হবে,এটাই স্বাভাবিক।
বাংলাদেশে একজন হিন্দু ছেলে মুসলিমবিদ্বেষী পোষ্ট করার কারনে যদি সেই অপরাধে তাঁর এলাকার সব নিরীহ মানুষের উপর হামলা করা হয়,বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তবে মিয়ানমারে পুলিশ ক্যাম্পে কিছু মানুষ হামলা করার পর সেখানের ভিন্ন ধর্মাবলম্বিরা নিরীহ মানুষদের হামলা করবে,বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিবে,এখানে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নাই।আমার দেশের পুলিশ যদি সংখ্যালঘু সাঁওতালদের আবাদি জমি দখল করতে যায়,তবে অন্য দেশের সংখ্যালঘু মুসলিমদের জমি সেই দেশের সরকারী বাহিনী দখল করবে,এটাইতো প্রকৃতির নিয়ম।আমাদের দেশের সংখ্যালঘুদের উপর কিছুদিন পরপরই হামলা করার রেকর্ড থাকার পরও মিয়ানমারের মানুষদেরকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যদি বোঝাতে যাই,সেটা খুবই লজ্জাজনক। একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন,
আমি অন্য ধর্মাবলম্বীদের ভালো না বাসলে তারা আমাকে এবং আমার ধর্মাবলম্বীদের কেনো ভালবাসবে?
.
.
চলবে.....

১ টি +০/-০