![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রোডাক্ট ও প্রসেসের ক্রমাগত উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি চার-ধাপের ম্যানেজমেন্ট মেথড হচ্ছে ডেমিং সাইকেল। আমেরিকান কোয়ালিটি গুরু উইলিয়াম এডওয়ার্ডস ডেমিং এই সাইকেলের প্রবর্তক। টয়োটা কতৃক বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে এই ডেমিং সাইকেল। টয়োটা প্রবর্তিত লিন ম্যানেজমেন্টের একটি অংশ হচ্ছে এই চক্র।
ডেমিং সাইকেলের-
প্রথম ধাপ – প্ল্যান [Plan]
দ্বিতীয় ধাপ – ডু [Do]
তৃতীয় ধাপ- চেক [Check] ও
চতুর্থ ধাপ – অ্যাক্ট [Act] ।
Plan-Do-Check-Act এর আদ্যক্ষর নিয়ে গঠিত হয় পিডিসিএ সাইকেল বা চক্র। এটিকে ডেমিং হুইলও বলা হয়। এই পিডিসিএ চক্র টাইম ম্যনেজমেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আমরা যে এক্টিভিটিই করিনা কেন কাজগুলোকে প্ল্যান-ডু-চেক-এ্যাক্ট সাইকেলে রেখে কাজ করা উচিৎ । আমাদের অনেক কাজেই লক্ষ্য করে দেখুন- যেই ভাবা সেই কাজ। মাঠে নামিয়ে পড়া। দুরন্ত গতিতে কিছুদূর কাজ সমাপ্তির পর বুঝতে পারা সঠিক পদ্ধতি নেয়া হয়নি। লে-আউটটি ঠিক ছিলনা। অতঃপর সঠিক প্ল্যানিং-এ বসা। অর্থাৎ পিডিসিএ চক্রের ডি থেকে শুরু হয়েছে। চক্রটি হয়েছে ডি-পি-ডি-সি-এ।
পি- প্ল্যান
সেট করুন আপনার প্ল্যান বা পরিকল্পনা। সেক্ষেত্রে ৫-ডব্লিঊ (WWWWW) অর্থাৎ Why-Who-What-Where-When (৫-ক- কেন-কে-কি-কোথায়-কখন) ছক ব্যবহার করুন। সহজ হয়ে যাবে সময়ের নিয়ন্ত্রণ।
৫-ডব্লিঊ-এর প্রথমেই রাখুন Why বা কেন । এই কেন-র মানেই হচ্ছে অবজেক্টিভ বা উদ্দেশ্য। যা কিছু করবেন- কেন করবেন তা নিজেকে জিজ্ঞেস করুন। তারপর ছকে লিখে ফেলুন। কাজটি কতোটা দরকারি ভাবুন। অতঃপর বাকি ৪টি ডব্লিউ নিয়ে ভাবুন। কাজটি কে বা কারা সম্পন্ন করবে? কাজটিতে কি কি অন্তর্ভুক্ত থাকবে? লিখে ফেলুন। উপন্যাস লিখতে যাওয়ার আগে যেভাবে লেখক আউটলাইন সাজিয়ে ফেলেন। কি কি শেষ হলে ভাবুন কোথায় কাজটি সারতে হবে? কোথায় ইমপ্লিমেন্ট করতে হবে? ইত্যাদি ইত্যাদি।
সর্বোপরি ডেডলাইন- টাইম বাউন্ড। প্ল্যান মানেই সাথে ডেডলাইন মাস্ট। ডেডলাইন ব্যতীত প্ল্যান উদ্দেশ্যহীন যাত্রা। কবে শেষ হবে কাজ আগেই সেট করতে হবে। ঘুরতে যান, বাজারে যান, দোকানে যান, মসজিদে যান, মিটিং-এ যান, ট্রেনিং-এ যান, কনফারেন্সে যান, কারও বাসায় যান, শপিং-এ যান সর্বত্রই প্রয়োজন টাইম ম্যানেজমেন্ট। দরকার ডেডলাইন।
ডি- ডু
আপনার প্রতিটি কাজ হবে পরিকল্পনামাফিক। প্ল্যানে যা লিখেছেন সেই অনুযায়ী কর্ম সম্পাদন করুন। আমরা আমাদের চোখের সামনে অনেক কাজই দেখি পরিকল্পনাবিহীন। পরিকল্পনা করা হয় বেশ কিছুদূর কাজ হয়ে যাবার পর। যখন দেখা যায় বাজেট নেই, কর্মী নেই, সময় নেই, জায়গা নেই, ত্রুটিপূর্ণ লে-আউট, ত্রুটিপূর্ণ ডিজাইন ইত্যাদি ইত্যাদি। ফলে সময়ের অপচয় হয়। অর্থের অপচয় হয়।
সি- চেক
আমাদের অনেকটা সময় ও অর্থ অপচয় হয় যথাযথ চেকিং না করার কারণে। চেকিং না থাকলে অর্থাৎ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাঝের ফারাক চাপা পড়ে যাবে। আর ত্রুটিপূর্ণ কাজে সয়লাব হয়ে যাবে। ভুল কাজে সব পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে। আর এমনটিই হয় জবাবদীহীতা না থাকলে ।
এ- অ্যাক্ট
চেকিং-এ পাওয়া ত্রুটিগুলো সারিয়ে ফেলুন। কারেক্ট করুন। নিন কারেক্টিভ অ্যাকশন। অর্থাৎ ভবিষ্যতে আর যেন এই ত্রুটি পুনরায় সংঘটিত না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিন। প্রয়োজনে প্ল্যানে পরিবর্তন আনুন। আবার প্ল্যান অনুযায়ী কর্ম সম্পাদন করুন। এভাবেই চলতে থাকবে চক্র।
সমস্যা সমাধানে এই চক্র অতুলনীয়। সমস্যা চিহ্নিত করুন। সমস্যা চিহ্নিত করতে আরসিএ বা রুট কজ এনালাইসিস (RCA- Root Cause Analysis) করতে পারেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের ভঙ্গুর অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠে যখন থেকে কোম্পানিগুলো পিডিসিএ সাইকেল ব্যবহার করতে থাকে। চলুন আমরাও যথাযথ ব্যবাহার করি এই চক্র। ISO 9001 স্ট্যান্ডার্ডেও সংযুক্ত করা হয়েছে এই চক্র। * চিত্রঃ ইন্টারনেট
©somewhere in net ltd.