নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি বলা যায়! কিছু কথায় নিজেকে ব্যক্ত করা সম্ভব না আমার পক্ষে। তাই একটা সিরিজে কিছু কিছু করে সবই বলছি।

সামু পাগলা০০৭

আমি অতিআবেগী, আগে ব্যাপারটা লুকানোর চেষ্টা করতাম। এখন আর করিনা।

সামু পাগলা০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ৫) - ঈদ মোবারক সবাইকে! কিছু পাঠকের প্রশ্নের উত্তরে আজকের পর্ব : কেমন কাটে প্রবাসে ঈদ?

২৪ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৮:৪১

পোস্টের শুরুতে সকল ব্লগারকে ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দোয়া করছি, আপনাদের সকলের ঈদ আপনজনদের সাথে নিরাপদে, নির্বিঘ্নে, আনন্দে কাটুক।

আগের পর্বগুলো:
আগের সিরিজ: কানাডার স্কুলে একদিন (এক থেকে বাইশ): পর্ব বাইশ । পর্ব বাইশে অন্য সকল পর্বের লিংক রয়েছে!
আগের পর্ব: কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ১) - বাংলাদেশীদের যেসব বিষয় বিদেশীরা অদ্ভুত মনে করে!
কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ২) - মফস্বলের কন্যের বৈদেশে শিক্ষাগ্রহন; ঘটন অঘটন এবং আমাদের নিয়ে বৈদেশীদের দর্শন!
কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ৩) - মফস্বলের কন্যের বৈদেশ ভ্রমণ; চলন ও বলন, এবং ভিনদেশ নিয়ে বৈদেশীদের দর্শন!
কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ৪) - মফস্বলের কন্যের বৈদেশ ভ্রমণ; চলন ও বলন, এবং বৈদেশীদের নানা দর্শন!

ঈদের মতো পবিত্র উৎসবকে সামনে রেখে আমি কানাডায় আমার প্রথম ঈদের অভিজ্ঞতা লিখব।

সাধারনত বাংলাদেশীরা বিদেশে গেলে বড় কোন শহরে নিজেদের জীবন শুরু করে। এতে করে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বেশি হওয়ার পাশাপাশি বড় বড় প্রবাসী কমিউনিটিতে থাকার সৌভাগ্য হয়। কানাডার বড় শহরগুলো বিদেশের মাটিতে এক টুকরো বাংলাদেশ হয়ে যায় কোন উৎসবের গেট টুগেদারে। বাংলাদেশী অনেক পাড়া আছে যেখানে বাংলা সাইনবোর্ড টাঙ্গানো দোকান, রেস্টুরেন্ট, বাজার সব পাওয়া যায়। অন্যদিকে ছোট শহরগুলোতে হয়ত কয়েকটা পরিবার পুরো জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে এবং চেনেও না একে অপরকে ভালো ভাবে। কিন্তু আমার পরিবার ডিসিশান নিয়েছিল ছোট শহরের মানুষের সরলতায় মিশে থাকবে। আমার বাবা মা ছোট শহরেই মানুষ হয়েছিলেন। ছোট শহরের প্রতি তাদের আজন্ম ভালোবাসা থেকেই বাংলাদেশে সবসময় মফস্বলে থেকেছেন। কানাডাতেও তাই করলেন। আমাদের শহরে প্রবাসীর সংখ্যা খুবই কম ছিল। আমি যে স্কুলে পড়তাম সেখানে আমিই একমাত্র বাংলাদেশী স্টুডেন্ট ছিলাম।
অন্য অনেক প্রবাসীর ঈদ গল্পে বাংলাভাষীদের সাথে দাওয়াত, আড্ডা, অনুষ্ঠান সব থাকে। অনেকটা দেশের মতোই। কিন্তু আমার গল্পটা একদম বাংলাদেশী বিহীন ঈদের গল্প হবে। এখন মূল গল্পে চলে যাচ্ছি।

সেবার রোজার ঈদের সময় আমরা গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক কাজে দেশে গিয়েছিলাম এবং স্কুলও বন্ধ ছিল। পুরো রোজার মাস দেশে থেকে ঈদ করে কানাডায় ব্যাক করেছিলাম। বৈদেশে আমার প্রথম ঈদটা তাই কোরবানীর ঈদ ছিল। আমার মনেও ছিলনা ঈদ সত্যি বলতে। দুই দিন আগে মায়ের সাথে কথা বলতে বলতে জানলাম। আসলে পাড়া প্রতিবেশী সব কানাডিয়ান, স্কুলেও কেউ এসব নিয়ে আলোচনা করছে না। একটা কঠিন প্রজেক্টের চাপে বাংলাদেশী পেপার, ব্লগ খুলিনি বেশ কদিন তাই সেভাবে জানতে পারিনি। সবমিলিয়ে মাথা থেকে চলে গিয়েছিল। মা যখন বলল খুব লজ্জা লাগল নিজের ওপরে। অবশ্য জানার পরেও বিশেষ কিছু করার জো ছিলনা। কি আনন্দ করতাম? কার সাথে করতাম?

দেশে হলে মাসখানেক আগে থেকে ঈদ আসছে! ঈদ আসছে! উত্তেজনায় দেশ জুড়ে সাজসাজ রব পরে যেত। বান্ধবীদের সাথে কোন আত্মীয় কি পোশাক দিল তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা। সারারাত দলবেঁধে মেহেদী হাতে দিয়ে গল্প করতে করতে ঘুমানো। সকালে উঠে কার রং সবচেয়ে গাঢ় হয়েছে তা দেখা। কাজিনদের সাথে ঈদের দিন বাজানো হবে এমন গান ঠিক করে জোরে বাজিয়ে প্রতিবেশির সাথে পাল্লা দেওয়া। আগে থেকেই তারাবাতি কিনে রাখা এবং কার ভাগে কয়টা পরবে তার হিসেব করা। কাছের দূরের সকল আত্মীয়ের সাথে দেখা পাওয়া। যেসব কাজিনদের সারা বছর মিস করতাম ঈদের কদিন মনের আনন্দে তাদের সাথে খেলাধূলা করতাম। দিনশেষে কে কত সালামি আদায় করল গোল হয়ে বসে সেই হিসেব করা। আর ঈদ শেষ হলে পরবর্তী ঈদের অপেক্ষা ও স্বপ্ন নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া! সবমিলে স্বপ্নের মতোই সুন্দর জীবন আমার।

এবার স্বপ্ন থেকে কানাডার বাস্তবতায় আসি। ঈদের দিন সকালে চোখ খুলেই মায়ের হাতের ঘি দিয়ে রান্না করা পোলাওয়ের সুগন্ধ পেলাম। সেটা দিয়ে ব্রেকফাস্ট করলাম। স্কুলে যাওয়ার আগে মাকে সালাম করলাম। বাবা ঘুমিয়ে ছিল, ঘুমের মধ্যেই সালাম করে স্কুলে দৌড়। জীবনে প্রথমবার ঈদের দিন স্কুল করছি, তাও আবার নরমাল পরিবেশে। কেউ সুন্দর জামা পরে নেই, উৎসবমুখর কোন ভাব নেই। আমার মন আঁকুপাঁকু করছে কাউকে বলার জন্যে যে কি বিশাল এক আনন্দ আজ!
লাইব্রেরীতে গিয়ে আমার ক্লোজ কানাডিয়ান বান্ধবী বি কে পেলাম। বি লম্বা, চিকন চাকন সাদামাটা একটা মেয়ে ছিল। ওর কাছে শেয়ার করলাম আজকে একটা বিশেষ দিন। ঈদের ইতিহাস থেকে শুরু করে সেলিব্রেশন সব বললাম। ও বলল, "ওয়াও, অসাধারন, তুমি খুব মিস করছ না এসব?" আমি অসহায়ের মতো মাথা নাড়লাম। ও আমার হাতে হাত রেখে স্বান্তনা দিল। একটু হালকা লাগল এটা ভেবে যে আমার দুঃখ, সুখ অনুভব করার মতো কিছু মানুষ এখানেও তো আছে! কিন্তু তাতে কি সব বেদনা গায়েব হয়? আরো কিছু হবার ছিল, আর তাই হলো!

আমি ঈদের সেই দিনটির বেশ কিছু আগের ফ্ল্যাশব্যাকে যাচ্ছি। তখন বেশ নতুন। অন্যদের একসেন্ট ভালোই বুঝি, কিন্তু আমার একসেন্ট তখনো কেউ বেশি বোঝে না। এজন্যে বন্ধুহীনই ছিলাম। পড়াশোনার সিস্টেমটা সবে ধরতে শুরু করেছিলাম। আগের কিছু পর্বে থমাস নামের এক ব্যাড বয় এবং তার সাথে আমার শত্রুতা বেঁধে যাবার কথা বলেছিলাম। সংক্ষেপে ওকে নিয়ে বলছি আবারো পাঠকের সুবিধার্থে!
থমাস ছিল বড়লোক বাবার বিগড়ে যাওয়া সুদর্শন নবাবজাদা। খুব লম্বা, চুল ছোট করে ছাটা, কাটা কাটা চেহারা। তবে আমার কাছে সুদর্শন মনে হতোনা ওর চোখমুখের প্রবল অহংকারী ভাব দেখে। প্রথমবার ওকে খেয়াল করে দেখি যখন ও টিচারের সাথে উদ্ধত আচরণ করছিল। লাভ এট ফার্স্ট সাইট যেমন হয়, তেমন করে আমার হেইট এট ফার্স্ট সাইট হয়ে গেল। মেয়েদের সাথে খুব ফ্লার্ট করে কথা বলত। মাঝেমাঝেই আমার দিতে তাকত। আমার ভিন্ন বেশভুষা ও চুপচাপ থাকাটা ওর কাছে ইন্টারেস্টিং লাগত বোধহয়। একদিন আমার দিকে দুষ্টু হাসি দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল হ্যান্ডশেক করার জন্যে। ওকে পছন্দ হয়না বলে হাত ধরতে ইচ্ছে করছিল না। আমি তাই নিজের হাতটা বাড়িয়ে ওর সাথে না মিলিয়ে, ওর হাতের পাশ দিয়ে কাটিয়ে নিজের কানের কাছ দিয়ে নিয়ে নিলাম। কোনকিছু না ভেবেই এমন একটা দুষ্টুমি করে বসলাম। অন্যসব স্টুডেন্টরা ছোট বিষয়টাতে অসম্ভব এক্সাইটেড হয়ে গেল। ক্লাসের ছেলেগুলো বলল, "ওহো থমাস, শি ক্রাশড ইউ ম্যান!" থমাস আমার মতো নতুন মানুষের এমন দুষ্টুমিতে অবাক হয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে অস্বস্তিভরা হাসিতে অপ্রস্তুত ভাবটা কাটানোর চেষ্টা করতে থাকল। আমি এখনো অবাক হই ভেবে যে এমন কাজ কিভাবে করলাম! এমন দুষ্টুমি করার মতো মানুষ আমি না। আমার উদ্দেশ্য ওকে ছোট করা ছিলও না, আমি ব্যাস কোনভাবে মজার ছলে হাতটা না মেলানোর জন্যে এমন করেছিলাম!
অন্যসবাই ব্যাপারটা ভুলে গিয়েছিল থমাসকে কয়দিন ক্ষেপিয়ে। কিন্তু থমাস ভুলত না। ছোট্ট একটা আকস্মিক মজাকে কেন্দ্র করে নতুন, চুপচাপ, মিইয়ে থাকা মেয়েটি একটা ব্যাড বয়ের ব্যাড লিস্টে পরে গেল!

সেই একই ক্লাসে একদিন সারাহ নামের একটি মেয়ে আসল হুইল চেয়ারে। লম্বাটে ছিমছাম মুখ, চোখে চশমা, হর্সটেইল করে বাধা হালকা ব্রাউন চুল, টিশার্ট প্যান্ট পরত। হুইলচেয়ারটা অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে পূর্ণ। মেয়েটার শুধু পা না প্রায় পুরো শরীর অবশ মনে হল। মাথাটা শুধু একটু নাড়াতে পারে। একটা ছোট যন্ত্র সেট করা হুইলচেয়ারটায়, সেখানে টাইপ করে করে সব কথা বলে। আমার বয়সী একটা মেয়ের এমন অবস্থা দেখে কতটা খারাপ লেগেছিল তা বলে বোঝানো যাবেনা। মেয়েটা খুব হাসিখুশি ছিল, একটু পরে পরে ঘাড় নাড়িয়ে দাঁত বের করে হাসত। বুকটা ফাঁকা ফাঁকা লাগত তখন। মনে হত কত ছোট বিষয় নিয়ে আমি মন খারাপ করি, আর এই মেয়েটা? চলতে, বলতে পারেনা কিন্তু কী ভীষন প্রানশক্তি!
মেয়েটা কখনো আমাদের ক্লাসে আসত। আবার কখনো স্পেশাল নিডস স্টুডেন্ট মানে ওর মতো যারা কোন দিক দিয়ে স্পেশাল তাদের সাথে ক্লাস করত। দুই ধরণের ক্লাসই ওকে করতে হত। কোন ক্লাস নরমাল বাচ্চাদের সাথে আর কোন ক্লাস স্পেশাল বাচ্চাদের সাথে। ওর সাথে একজন এসিস্ট্যান্ট সবসময় থাকতেন। তিনি ওকে খাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে গল্প করা সব করতেন। হুইলচেয়ারটা ও নিজেই সুইচ দিয়ে অপারেট করতে পারত। কিন্তু ও যেন কোথাও ধাক্কা না খায় ভুল স্পিডে সেটা তিনি পিছে পিছে হেঁটে দেখতেন।

ওকে পড়াশোনায় হেল্প করার জন্যে টিচার মাঝেমাঝে আমাকে বলতেন। ওর এসিস্ট্যান্টেরই হেল্প করার কথা কিন্তু তিনি যদি কোন বিষয় না জানতেন তবে সহপাঠী হিসেবে আমারই দায়িত্ব। বন্ধুহীন আমি একা বসতাম বলে আমার পাশে চেয়ার সরিয়ে ওকেই বসানো হতো। আমি ওর সাথে মেশার সময় খুব কশাস থাকতাম যেন আমার সহানুভূতি যেন ওর চোখে না পরে যায়! ওর মতো প্রানবন্ত মেয়ে কারও দয়া চায়না আমি তা জানতাম। আর সত্যি বলতে যে মেয়ে এমন অবস্থাতেও একটু পরে পরে দাঁত বের করে হেসে ওঠে তাকে হিংসে হতো। করুণা নয়। ওকে হেল্প করার জন্যে একটি প্রশ্ন ওকে পড়ে শোনাতে ও বোঝাতে হতো। তারপরে ও নিজের যন্ত্রে টাইপ করত উত্তর। উত্তর ভুল হলে বুঝিয়ে দিতে হতো। ও শুনতে এবং বুঝতে পারত। একদিন ওর সাথে কাজ করতে করতে দেখি এক হাতের বাহু দিয়ে তাবিজ ঝুলে পরছে। টিশার্টের হাতার মধ্যেই থাকত কিন্তু সেদিন একটু ঝুলে দেখা যাচ্ছিল। সাথে সাথে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম তুমি মুসলিম? ও বিশাল হাসি দিয়ে টাইপ করল, "হ্যা।" আমি বললাম কোন দেশের? ও লিখল, "আফগানিস্তান!" আমি ওর চেহারা দেখে ধরতে পারিনি কেননা একদম কানাডিয়ানদের মতো চেহারা ছিল। জানলাম ক্লাস ৩ তে মুভ করেছিল। আমাকে জিজ্ঞেস করল কোন দেশের? আমি বললাম বাংলাদেশের, আমিও মুসলিম। ও আবার ঘাড় নাচিয়ে প্রানখুলে হাসল। নিঃশব্দ হাসিও যে এত প্রানবন্ত হয় কে জানত?
ক্লাসটি শেষ হয়ে যাবার পরে ওর সাথে আর তেমন মেশা হয়নি। খুব ভালো বন্ধু হয়ত হতে পারিনি আমরা। ও কথা বলতে পারতনা, আর আমার ইংলিশ সুবিধার ছিলনা। দুজনেই চুপচাপ থাকতাম। আর ও পুরো সময় ক্লাসে থাকত ও না। এসিস্ট্যান্ট টিচারের লেকচার শেষ হলে এবং ও হোমওয়ার্কটা মোটামুটি বুঝে গেলে ওকে নিয়ে চলে যেতেন। সবমিলে বন্ধুত্ব না হলেও এর কাছাকাছি খুব সুন্দর একটি সম্পর্ক ছিল। স্কুলের যেকোন জায়গায় ওকে চোখে পরলে হাসতাম। ও খুব প্রাণবন্ত হাসি ফিরিয়ে দিত। এভাবে বেশ কিছু সময় চলে গিয়েছে।

ফ্ল্যাশব্যাকে যা বলা জরুরি ছিল তা বললাম। এখন ঈদের দিনে চলে আসি। কানাডায় এক বছরের বেশ কম কিছু সময় কেটে গিয়েছিল। সেই সময়ে আমি মোটামুটি এডজাস্ট করা শুরু করেছিলাম স্কুলে। ক্লোজ বন্ধু কম থাকলেও সবার মুখচেনা হয়ে গিয়েছিল। সবাই আমাকে চিনত। সবার কথা আমি বুঝতে পারি, আর সবাই আমার কথা আগের চেয়ে বেটার বোঝে। মোটামুটি কমফরটেবল পরিস্থিতি। পড়াশোনায় বেশ ভালোই করছিলাম। কিছু কিছু ক্লাস খুব স্বস্তির ছিল বেশি বন্ধু থাকায়। আর কিছু কিছু ক্লাস প্রথমদিনের মতোই অস্বস্তিতে ভরা। আমি ভালো মন্দ মিশিয়ে ছিলাম মূলত।

তেমনই এক সময়ের সোশাল স্টাডিস ক্লাসের কথা বলি। সে ক্লাসে আমার কোন বন্ধু ছিলনা, খুব দুষ্টু স্টুডেন্টদের গ্রুপে পরেছিলাম। ওদের বেশিরভাগই স্মোক করত। মেয়েরা উৎকট মেকআপ করে ক্লাসে আসত। কানাডার স্কুলে এসব নরলাম তবে প্রতি ক্লাসে এমন নমুনা কয়েকটাই দেখা যায়। কিন্তু সেই ক্লাসে বেশিরভাগই অদ্ভুত ছিল। টিচারও প্রথমদিকে সামলানোর চেষ্টা করে করে পরে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। ওদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখতাম। আমার কানাডিয়ান কাউন্সিলর একদিন কথায় কথায় আমি সেই ক্লাসে আছি জেনে বলেছিলেন, "তুমি ঐ শাখায়? মাই গড! টিচার আমাকে বলছিলেন ক্লাসটা কেমন!" কম্পিউটারে সাথে সাথে চেক করে বললেন, "অন্য শাখা সব ফুল, এই ক্লাসেই কয়টা মাসের জন্যে একটু এডজাস্ট করে নিও প্লিজ!" আমি হেসে বললাম কোন সমস্যা নেই। আমার না বলতেই ওনার এত চিন্তা খুব ভালো লেগেছিল আমার। আমি এককোণে বসে পড়তাম, আর ওরা পড়াশোনা ছাড়া বাকি যা যা করা যায় সব করত। সেই থমাস ছেলেটাকে দুর্ভাগ্যবশত প্রায়ই নানা ক্লাসে পেতাম। সেই সোশাল স্টাডিস ক্লাসেও ছিল।

ঈদের দিন এমন স্বাভাবিক ভাবে কাটছিল বলে দেশের জন্যে মনটা খুব নরম হয়ে ছিল। একটু পরে পরে দেশের কথা মনে পরে আর আমি ছলছল চোখের পানি চোখে আটকানোর আপ্রাণ চেষ্টা করি। আমাদের স্কুলে বেশ কজন কাউন্সিলর ছিলেন। একজন কাউন্সিলর ছিলেন মধ্যবয়স্ক কানাডিয়ান। মুখে সবসময় হাসি লেগে থাকত। আমার কাউন্সিলর ছিলেন না, তবে আমাকে দেখলে কেমন আছি জিজ্ঞেস করতেন। খুবই আপন ও আন্তরিক ব্যবহার ছিল আমার প্রতি। সেদিন আমার টিচারের সাথে কি নিয়ে কথা বলতে যেন ক্লাসে এসেছিলেন। কথা বলে চলে যাবার সময় আমার দিকে চোখ পরল। এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন, "কেমন আছ? সব ভালো চলছে তো?" এভাবে কথা বলতে বলতে এক সময় জিজ্ঞেস করলেন, "এখনো কি হোম খুব মিস করো?" হোম বলতে বাংলাদেশ বুঝিয়েছিলেন। আমার এমনিই মন খারাপ ছিল, আর কাকতালীয়ভাবে সেদিনই জিজ্ঞেস করলেন। আমি ছলছলে চোখে বললাম হ্যা। আমার বিমর্ষতায় কষ্ট পেয়ে উনি আমার মাথায় কাছে এসে বাবার মতো করে জড়িয়ে ধরলেন এক হাতে আলতো করে। আর বললেন, "ইট উইল গেট বেটার উইথ টাইম, ডোন্ট বি সো আপসেট মাই ডিয়ার!" ব্যাস ক্লাসের সব ছেলেদের নজর এদিকে! সবাই শিষ দিয়ে, হেই হেই করে অবাক হবার মতো শব্দ করে উঠল!

থমাস বলল, "তুমি তো বলেছিলে তোমার কালচারে ছেলেরা জড়িয়ে ধরেনা। ওনাকে তো কিছু বললে না।" আমি এখন কি বলি? কোনদিকে যাই? একজন বাবার বয়সী টিচার আর এই সমবয়সী ছেলেরা কি এক হলো নাকি? টিচারের এত মমতা ভরা আচরণে মানা করি কিভাবে? ওয়েট ওয়েট, থমাস কি করে জানল এটা? অন্য ছেলেরাই বা শব্দ করে উঠল কেন? সব ছেলেরা আমাকে এবং আমার এইসব ব্যাপার এত নোটিশ করে সেদিন প্রথম জানলাম। কবে কোন ছেলেকে জড়িয়ে ধরতে মানা করেছিলাম, সেটা পুরো স্কুলে ছড়িয়ে গিয়েছে! হায়রে! কানাডিয়ানদেরও কথা ছড়িয়ে দেবার স্বভাব আছে! থমাস ভিলেনের মতো হাসিতে বলে উঠল, "গাইজজজ, শি হ্যাজ ডাবল স্ট্যান্ডার্ডস!" এই বাজে কথায় আমি বিরক্ত চোখে তাকালাম এবং কঠোর গলায় বললাম, "তিনি আমার শিক্ষক, এখানে পরিস্থিতি আলাদা!" আর সেই কাউন্সিলর হেসেই কুটিপাটি পুরো পরিস্থিতিতে। থমাস তার বন্ধুদেরকে উস্কে দিচ্ছে, আর মজা নিচ্ছে। চেহারা দেখে মনে হচ্ছে প্রতিশোধ নিতে পেরেছে! অবশ্য সেদিনই শেষ ছিলনা। কোনদিন আমি ভুলে ওকে বিপদে ফেলে দিতাম আর কোনদিন ও জেনেশুনে আমাকে বিব্রত করত। এসব চলতেই থাকত।

সেই ক্লাস শেষ করে আমি লাঞ্চের সময় বাড়ি যাচ্ছিলাম। মন খারাপ করে ভাবছিলাম, কাউকে ঈদ মোবারক পর্যন্ত বলিনি ঈদের দিনে! সকালে বাবা ঘুমাচ্ছিল আর মায়ের সাথে ফরমালি কখনো ঈদ মোবারক বলা হতো না। সালাম করে জড়িয়ে ধরতাম শুধু। দেশে হলে এতক্ষনে ১০০ জনকে উইশ করে ফেলতাম! এসব মনে করতে করতে যাচ্ছি দেখি স্কুল ক্যাফেটেরিয়াতে আমাদের মতোই তবে একটু অন্য কাটের সালোয়ার কামিজ পরে সারাহ মেয়েটা বসে আছে। ওর এসিস্ট্যান্ট ওকে খায়িয়ে দিচ্ছে। ওর ড্রেস দেখে বুঝলাম ঈদের জন্যে। ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে বললাম, ঈদ মোবারক, তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। ও আমার কাছের বান্ধবী ছিলনা, এভাবরে জড়িয়ে ধরা হয়ত ওড ছিল। কিন্তু ও এমনভাবে হাসল যেন এটাই স্বাভাবিক! ও নিজেও অপেক্ষা করছিল কারও কাছে ঈদ মোবারক শোনার জন্যে! কি ভীষন আনন্দের ঝিলিক দেখেছিলাম ওর চোখেমুখে! এখনো চোখে ভেসে ওঠে পরিষ্কার ভাবে!

শেষের ক্লাসটি শেষ করে বাড়িতে এলাম। সব রিলেটিভদের ফোন করে উইশ করলাম। রাতে ঘুমাতে গেলাম।

আমার একটা স্বভাব হচ্ছে, যত দুঃখ আছে তা রাতে অন্ধকার ঘরে একা একা কেঁদে মেটানোর। এমন মন খারাপ করা ঈদের পরে কান্নাকাটি করার পূর্ণ প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু কাঁদতে গিয়ে মেয়েটার হাসিমুখ মনে পরে গেল! লজ্জা লাগল, ওতো আমার মতোই মন খারাপের ঈদ করেছে। তারপরে অন্যান্য সমস্যা। ওতো প্রানখুলে হেসে যাচ্ছে! আমি অনেক কষ্টে কাঁদলাম না সে রাতে, মনে হল কাঁদলে ছোট হয়ে যাব। আমাকে যা দেওয়া হয়েছে তার প্রতি অকৃতজ্ঞতা দেখানো হবে। দেশের নানা স্মৃতি মনে করে চোখ বারবার ছলছল করছিল আর আমি দাঁতে দাঁত চেপে টপকে পরার আগেই মুছে ফেলছিলাম। যেন সেই মেয়েটার সাথে আমার কোন সুখী থাকার প্রতিযোগিতা চলছে। যেন অন্ধকার ঘরে কেউ দুঃখী আমাকে দেখছে বিদ্রুপের চোখে! সারাহর হাসি মুখটার কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পরলাম নিজেও জানিনা!

বিশেষ কথা: এ পর্বটা লেখার ইচ্ছে ছিলনা। কেননা ঈদ মানেই আনন্দ। আর আমি আনন্দের কিছুই বোধহয় লিখতে পারিনি। কিন্তু কয়েকজন প্রবাসে ঈদ নিয়ে লেখার কথা আগে থেকেই বলছিলেন। তাই লিখেই ফেললাম। জানি এমন ঈদের গল্প হয়তো সুখপাঠ্য হবেনা অনেকের কাছে। তবে মেয়েটির কারণে শিক্ষনীয় হবে অবশ্যই। মেয়েটি আমার মনে ভীষনভাবে দাগ কেটেছিল। আমি শিওর ও আশেপাশের সবার মনেই প্রভাব ফেলত! মেয়েটা যেখানেই আছে ভালো থাকুক, এমনই প্রানশক্তি নিয়ে সবাইকে বাঁচতে শেখাক!

মন্তব্য ৪৬ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৪৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:১৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আপনার সব লেখা পড়তে ভালই লাগে ...

আপনার আমলে কেমন ছিল জানি না।
আমেরিকায় ও কানাডায় বর্তমানে মুসলিম স্টুডেন্টদের সুধু পোশাক দেখে চেনা মুসকিল।
কে আরব, কে হিসপ্যানিক, ব্ল্যাক, এশিয়ান .. প্রায় সবাই শার্ট-টিশার্ট, টাইট ট্রাউজার। তবে মুসলিমদের ট্যাটু থাকেনা।
কিছু নবাগত মুসলিমরা ইচ্ছাকৃত ভাবে নিজেকে এক্সপোজ করে মুসলিম হিসেবে, হয়তো অবিভাবকদের ইচ্ছায়ই।
আমেরিকায় ও কানাডাতে স্কুল ভর্তি ফর্মে বা জব এপ্লিকেশনে ধর্মিয় পরিচয় জানতে চাওয়া হয় না, স্টেট আইডি বা পাসপোর্টেও না। ..

২৪ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৯

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ। অনুপ্রাণিত হলাম।

এখানে সব ধরণের মুসলিমই দেখেছি। একদম ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরা থেকে শুরু করে বোরখাও দেখেছি। তবে বেশিরভাগই জিনস, টপস এর সাথে হুড পরে। এটা সবচেয়ে কমন!

পাঠ ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ঈদ মোবারক!

২| ২৪ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:২৩

বিপ্লব06 বলেছেন: ধন্যবাদ ঈদের দিনটা নিয়ে লেখার জন্য(পিটিশন মনে হয় আসলেই কাজ করে!)। বাইরে যারা থাকে তাদের ঈদটা দেশের সবার মত আর হয়ে উঠে না, আর আপনাদের মতো আইসোলেটেড থাকলে তো আর কথাই নাই।

আমার প্রথম ঈদে নামাজ শেষে প্রথমেই একজন একজন ব্ল্যাক মুসলিম আমার সাথে কোলাকোলি করছিল। তখন আমি নতুন ছিলাম, কিছুটা রেসিস্টও ছিলাম মনে হয়। কিন্তু এই লোকের কোলাকোলিতে আমি অলমোস্ট কেঁদে দিছিলাম। এখন অবশ্য অনেককে চিনি। অতোটা খারাপ আর যায় না। আর নিউইয়র্কে প্রচুর বাংলাদেশি।

আপনি ছোট শহরে থাকেন, যেখানে বাংলাদেশি তো দুরের কথা, মুসলিমই হাতে গোনা হবে। তারপরেও ঐদিন ভিন্ন কিছু করতে পারেন, এই যেমন, ছুটি নিয়ে কোথাও থেকে একটা ক্যাম্পিং ট্রিপ দিয়ে আসলেন। সামার তো!!!

আপনার ঈদ ভাল কাটুক!
ভালো থাকবেন!!!

২৪ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: পিটিশন! হাহা। লাস্ট বছর ঈদের সময়েও কেউ কেউ বলেছিল ঈদ নিয়ে লিখতে। তখন আর লেখা হয়ে ওঠেনি। এবারেও যখন একই অনুরোধ শুনলাম, ভাবলাম লিখেই ফেলি!

হুমম, শুধু কি আর ঈদ! প্রবাসীদের জীবনের প্রতিটি দিনই পরিবর্তিত হয়ে যায় বিদেশে আসলে ফর বেটার অর ফর ওর্স!

আপনার কোলাকুলির গল্পটার সাথে রিলেট করতে পারলাম। আমার গল্পের সাথে অনেক মিল আছে! ছোট ছোট এসব ব্যাপারও মনকে ছুঁয়ে যায় অনেকসময়!

আন্তরিক পরামর্শে কৃতজ্ঞতা।

আপনার ঈদও অনেক ভালো কাটুক।
হুম চেষ্টা করব ভালো থাকার। আপনিও ভালো থাকুন।

৩| ২৪ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৩১

Tariqulir বলেছেন: আচ্ছা, মোবাইল দিয়ো সামুতে পোষ্ট করার সময় পোষ্টে লিংক দিবো কিভাবে?

২৪ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: এটা তো আমি জানি না! মোবাইলে কখনো পোস্ট করিনি।

অন্যকেউ ওনার প্রশ্নের উত্তরটি জানলে প্লিজ বলে দেবেন। ধন্যবাদ।

ঈদ মোবারক!

৪| ২৪ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পড়ে অব্দি চুপ করে বসে আছি। অনেক ক্ষণ।

অনুভবের প্রতিটি কণায় যেন মিশে গেছে বিষাদ বাস্তবতা! বর্ণনা আর লেখনির ধার কেটেকেট বসেছে পাঠের পরতে পরতে...
কয়েক জায়গায়তো লেখাগুলো হালকা ঝাপসা লাগছিল ;)

হ্যটাস অফ - ঈদ মোবারক :)



২৪ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আরেহ সখা! কেমন আছেন? আশা করি ভালো।

একদম কবির মতোই কমেন্ট করলেন। আপনার আবেগটুকু মনকে ছুঁয়ে গেল। লেখনী সার্থক মনে হলো।

আহারে, উৎসব ও আনন্দের সময়ে চোখ ঝাপসা করে দিলাম! সরি! :(

পাঠ ও আন্তরিক মন্তব্যে ভীষন অনুপ্রাণিত করলেন।
ঈদ মোবারক আপনাকেও!

২৪ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আমি বলতে ভুলে গিয়েছিলাম আগে। আপনার দেওয়া ছবিটি অসাধারণ! কৃতজ্ঞতা জানবেন।

৫| ২৪ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:০৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আহারে, উৎসব ও আনন্দের সময়ে চোখ ঝাপসা করে দিলাম! সরি! :(

আরেহ সখি, আপনি এত্ত ভালা মানুষ ক্যারে??? ইটাত আবার সরি বলা লাগে নাকি? হা হা হা

চিকনগুনিয়া গত প্রায় সপ্তাহ ধরে সাইজ করে প্রায় চিকন করে ফেলল- সরি বলল না ;)
খালি চোখ? পারলে মগজ সহ ঝাপসা কইরা ফেলে :P

সত্যি পরিবেশ মানুষকে কত বদলে দেয়! তাইতো আমি মানুষের উপর রাগ করতে পারিনা। তাকে তো পরিবেশ দেয়া হয়নি। যদি সুন্দর পরিবেশ পেতো হয়তো আরও কত সুন্দর না জানি হতো- ভেবে। আমিও হয়তো ভাল পরিবেশ পেলে আরো অন্য!রকম হতে পারতাম! নয়?

সত্যি ব্যতিক্রমি ঈদ অভিজ্ঞতার এবং অনুভবের জন্য আবারো ধন্যবাদ। তবে দূরে থেকে ভিন্ন পরিবেশে ঈদ করার কষ্ট একবারই টের পাইছিলাম- বাড়ী পালানোর বছর-একা একা যখন ঈদ করেছিলাম। হায়! কি শূণ্যতা!!!!!

যাকগে তত্ত্বকথা! ঈদ হোক সূখময়। সবসময় :)




২৪ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ভালো মানুষ হতে পারলে ভালো হতো সখা। আমি যদি একটু ভালো মানুষ হতে পারতাম, তবে পৃথিবীর যেকোন সুখকে দু হাত বাড়িয়ে আমন্ত্রণ জানাতে পারতাম। খারাপ বলে সব ভালোকে সরিয়ে রাখি। খারাপ ভালোতে মিশ খায়না, উল্টো ভালোর জীবন কালো হয়ে যায়! ;)
আরেহ! আপনি তত্ত্বকথা দিয়ে শেষ করতে পারলে আমি তত্ত্বকথা দিয়ে শুরু করতে পারিনা? :D

ওহো! আপনার চিকুনগুনিয়া হয়েছিল? কেমন ফিল করছেন এখন?

আপনি এমনিতেই অনেক ভালো মানুষ। আরো ভালো পরিবেশের লোভ তাই করবেন না। বেশি ভালো ভালো নয়! ;)

হায় হায়, আপনি বাড়ি পালিয়েছিলেন? জানতাম না তো! কোনদিন ডিটেইলে গল্পটা শুনব!

যাই হোক, আপনি সুস্থ্য হয়ে যান পুরোপুরি। সুন্দর ঈদ কাটান।
শুভেচ্ছা রইল!

৬| ২৪ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৮

জাহিদ অনিক বলেছেন: হুম্মম্ম । বুঝতেই পারছি তোমার সেবারের ইদ ভাল ছিল না । কান্না চাপানো একটা "এই বেশ ভাল আছি" এই রকম ইদ ছিল সেটা।
তবে তোমার সেই ফিলিস্তানের বন্ধুটির থেকে সত্যিই বেঁচে থাকার রসদ পাওয়া যায় । জীবন বড্ড বিচিত্র ।
আচ্ছা, এটা তো মনে হচ্ছে কয়েক বছর আগেকার ইদের কথা। এখনকার ইদ গুলো কেমন যায় ?

তোমার এই কষ্ট কষ্ট ইদ কাহিনী পাঠকের ভাল লাগবে না,এমনটা ভাবার কোন কারন নেই। বেশ ভাল লেগেছে। গল্পে আটকে গিয়েছিলাম। ইদ অর্থ খুশী হলেও ইদ সবার জন্য খুশি হয় না । দেশেও অনেক আছে যারা ইদের দিনেও ইদের খুশি পায় না ।

ইদের শুভেচ্ছা পাগলী। শুভ সন্ধ্যা ।

২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ৮:১১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাই অনিক। কেমন আছ? ঈদে কি প্ল্যান?

সকাল সকাল তোমার কাছ থেকে শুভ সন্ধ্যা পেতে ভালোই লাগে! ;)

আফগানিস্তানি মেয়েটি সত্যিই সবাইকে হাতে কলমে জীবন শেখাতে পারে। অনন্য অসাধারণ মেয়েটির জীবনি শক্তি!

কাইন্ডা দ্যা সেইম ডিয়ার! :(
তবে আমার জীবনে একটা ব্যাপার হচ্ছে বিশেষ কোন উৎসবের আগে আগে খারাপ কিছু ঘটবেই। যেমন গতকালই কাছের এক বন্ধুর সাথে ভুল বোঝাবোঝি হয়। সে আর যোগাযোগই করছেনা। যার সাথে আমরা ঝগড়া বলতে গেলে হয়ই না, ঈদের আগে আগে তার সাথেই সমস্যা বেঁধে গেল! আমি উৎসব অনেক ভয় পাই অনিক! অনেক ভয় পাই!

ভালো লাগবে না মানে মন খারাপ করে দিতে পারে। ওপরে একজন বললেন যে চোখে ঝাপসা দেখছিলেন। এসবের জন্যেই লাস্ট বছরে অনেকের বলার পরেও লিখিনি। কিন্তু কেন লিখতে চাইছিলাম না সেটা বোঝানোর জন্যেই এবার লিখে ফেললাম। হাহাহা।

একদম ঠিক। ঈদ অনেকের কাছেই কষ্টের। দেশ বিদেশ! ঈদের দিনে বা এর আশেপাশে কেউ স্বজন হারায়, বন্ধু হারায় বা অভাব অনটন! ব্যাস দোয়া করি যেন ঈদের দিনটা অন্তত সবার ভালো কাটে!

ঈদের শুভেচ্ছা তোমাকেও।
ভালো থেকো।

৭| ২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ৮:২৬

জাহিদ অনিক বলেছেন: হুম সময়ের একটা গ্যাপ আছে। এটা থেকেই যাবে , গোল গ্রহ বলে কথা । যাইহোক, তুমি চাইলে আমাকে শুভ সকাল জানাতে পারো। সন্ধ্যা বেলায় নিশ্চয়ই আমারো সকালের শুভেচ্ছা পেতে খারাপ লাগবে না ! হা হা

ইদের প্লান বলতে আর কিছুই নেই । সবাই যে যার মত ব্যস্ত । বাবা মায়ের সাথে ইদের দিনটা কাটাতে আজই ১৬ ঘন্টা জার্নি করে গ্রামের বাড়িতে এসেছি ।

তোমার সাথে আমার মিল আছে দেখছি, আমারো এক কাছের বন্ধুর সাথে বেশ ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে ।তিনিও আমার সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ করছেন না । আমারো তাই মেজাজ একটু চড়ে আছে।
তবে বাড়িতে এসেই খাওয়া দাওয়া একেবারে জমিয়ে হচ্ছে । হা হা হা

২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ৮:৩২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহা, গুড ওয়ান! ওকে দেন, শুভ সকাল অনিক!

ইদের প্লান বলতে আর কিছুই নেই । সবাই যে যার মত ব্যস্ত ।

কথাটির সাথে রিলেট করতে পারি। উৎসব গুলো সব ফিকে হয়ে গিয়েছে। মা শুধু বলে, আমাদের সময়ে আমরা কত মজা করতাম! তোরা তো সেসব পাসই নি! আসলেই। হাজারটা উৎসবের ভীরে এক টুকরো আনন্দ যেন খুঁজে পাওয়া দায়!

১৬ ঘন্টা?! ইউ মাস্ট বি টায়ার্ড! ভালো ভাবে রেস্ট নিচ্ছো আশা করি।

এই অনিক, তোমার বন্ধুটি কি তোমার ইয়ে? কেন যেন মনে হলো! যদি তাই হয় তাকে নিজের হাসিমুখ ভিডিও করে পাঠাও। সব ঠিক হয়ে যাবে। আর তুমিও জেনে যাবে সে আসলেই তোমার হাসি পছন্দ করে কিনা! ;) :D

মিল আছে তবে অমিলও আছে। তুমি ইদ করবে আর আমি ঈদ! ;)

৮| ২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ৮:৫০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সারাহর ব্যাপারটা তোমার এই পর্বের সবচেয়ে মূল্যবান ঘটনা। সে একজন সত্যিকারের যোদ্ধা। জীবন যুদ্ধে তার আপোষহীন লড়াই মানুষ মাত্রের জন্যই আদর্শ।

বিদেশে এরকম নিঃসঙ্গ ঈদ উদযাপন কষ্টকর ঠিকই, কিন্তু আরেক দিক থেকে দেখতে গেলে এরকম পরিস্থিতি মানুষকে মানসিকভাবে শক্ত পোক্ত করে তোলে। নিশ্চয় তুমিও মানসিক দৃঢ়তা অর্জন করেছ। জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়ার কথা ভুলেও ভাববে না। শুধু মানুষই মানুষের পাশে থাকে না। প্রাণীজগৎ, গাছ পালা, নদী নালা, আকাশ আর মাটি- প্রকৃতির সব কিছু মানুষের পাশে থাকে। সৃষ্টিকর্তা এই সব কিছুই সৃষ্টি করেছেন মানুষের জন্য। তোমার প্রতি তাদের শুভকামনা নিরন্তর বহমান। তুমি আমি সেটা বুঝতে পারি না বলে নিজেদেরকে নিঃসঙ্গ মনে হয়। মানুষের মতো প্রকৃতির ভাষা নেই বলে আমাদের প্রতি প্রকৃতির ভালোবাসা বুঝতে পারি না। কিন্তু হৃদয়ের কান খাড়া করে মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা কর। দেখবে তোমার বাসার লনে ফোটা ছোট্ট একটা ঘাসফুলও বলছে, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমার বাসার কার্নিশে বসা ছোট্ট এক নাম না জানা পাখিও বলছে, আমি তোমাকে ভালোবাসি।

ধন্যবাদ সামু পাগলা০০৭।

২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ৮:৫৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেনাভাই! পোস্টে পেয়ে বরাবরের মতোই অনেক আনন্দিত।

একদম। সারাহর মতো মানুষেরা যেকোন পরিস্থিতিতে হোক সে বাস্তবে বা ডায়েরির পাতায়, সকল আলো কেড়ে নেয়!

হ্যা, এটা ঠিক। আমি মেন্টালি অনেক স্ট্রং হয়ে গিয়েছি এখানে এসে। সেটা অনেক পর্বে বলেছিও। আর প্রকৃতিকে বন্ধু ভাবার কাজটিও আমি করতাম। আমার একটা লেখায় লিখেছিলাম,

ছন্নছাড়া গন্তব্যহীন ভাবে হাটতে হাটতে স্কুলের পেছনের মাঠটায় পৌঁছে গেলাম প্রথমবারের মতো। কি ভীষন বড় এক মাঠ! ছোট করে ছাটা সতেজ ঘাসবিশিষ্ট সবুজ চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে মাঠটি শুয়ে আছে ঝকঝকে নীল আকাশের নীচে। মাথা উঁচু করে সামনে তাকিয়ে বুকে ধক করে লাগল প্রডন্ড সৌন্দর্য! সারি সারি পাহাড় আকাশ ছুঁয়ে! এ যেন আকাশ আর পাহাড়ের সৌন্দর্য প্রতিযোগীতা! এত সুন্দর আমি কি আগে দেখেছি? আমার একাকীত্ব প্রকৃতির বিশালত্বে মিলিয়ে গেল। কিছু বেঞ্চ ছিল সারি করে বসার। প্রথমদিন বসে ছিলাম বেঞ্চে। আস্তে আস্তে জায়গাটা আপন হয়ে যাওয়ায় ঘাসেই একা একা বসে থাকতাম। ঢালুমতো জায়গায় হেলান দিয়ে পাহাড় দেখতাম, সেটুকু সময় মনে কোন একাকীত্ব থাকতনা। এই আকাশ, পাহাড়ই আমার বন্ধু, এরা আমার চোখের ভাষা পড়তে পারে। ইংলিশ জানতে/বুঝতে হয়না আমাকে। কি ভীষন অভিমানের সাথে এসব কথা ভাবতাম আমি!

আপনার অসম্ভব সুন্দর কথাগুলোয় আবার মনে পরে গেল সেসব স্মৃতি, এজন্যে এখানে আবার দিলাম।
তবে হেনাভাই, এসব ভাবনা যেন অসহায়ত্ব আর অভিমানের প্রতীক! অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, প্রকৃতি, প্রানীতে একাকীত্ব মেটানোর চেষ্টা করা যায়, তবে সফল হওয়া খুব কঠিন। হয়ত অনেকে পারেও! কে জানে!

যাই হোক, ভীষন সুন্দর মন্তব্যে মন ভরিয়ে দিলেন। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
সুস্থ ও সুন্দর জীবন কাটান। অনেক শুভেচ্ছা!

৯| ২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:২৭

উম্মে সায়মা বলেছেন: ইয়াল্লাহ! ঈদের দিনেও ক্লাস! ভাবতেই কেমন লাগে। আমাদের এখানে আবার এ সুবিধাটা বেশিই। ঈদের জন্য প্রায় দু'মাস স্কুল বন্ধ দিয়ে দেয় রোজাসহ। কিন্তু তবুও ঈদের সময় মনে হত এ কোথায় এসে পড়লাম। ছুটি থাকলেইতো হল না, কিছু করার নেই। দেশে ঈদের অভিজ্ঞতা অনেকটা আপনার মতই। সকাল সকাল গোসল করে রেডি হয়ে কয়েকটা ফ্রেন্ড মিলে বেরিয়ে পড়তাম। বাড়ির সবাইকে সালাম দিয়ে সালামি আদায় করে কোথায় কোথায় যে ঘুরতাম তার কোন ঠিক নেই। সন্ধ্যার আগে টায়ার্ড হয়ে ফিরতাম। আর এখানে? সকালে উঠে শুধু শুধুই রেডি হয়ে বাসায় ঘোরাঘুরি করতাম। পরের দিকে আর সকালে উঠতামই না। সাধারণ দিনের মত কেটে যেত। হয়তো সন্ধ্যার দিকে কয়েকটা ফ্রেন্ড এলে তাদের সাথে তাদের দু'একজনের বাসায় যেতাম। তেমন আত্মীয় স্বজন নেই বলে সালামিও নেই :|
এরপর যখন দেশে গেলাম দেখি ছোটবেলার ঈদানন্দ হারিয়ে গেছে। এখন এখানে যা দেশেও তা। তখন আরেক কষ্ট। বাবা-মার সাথে ঈদ করতে না পারার কষ্ট। খুব কম প্রবাসীই আছে বোধহয় যাদের ঈদ খুব ভালো কাটে।
আপনার প্রথম ঈদের অভিজ্ঞতা শুনে আমারটাও শেয়ার করে ফেললাম। আপনাকেও অগ্রিম ঈদ মোবারক। এবারের ঈদ অনেক ভালো কাটুক।

২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:৩৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: সায়মা আপু! কেমন আছেন? আশা করি অনেক ভালো।

আপনার লেখা প্রতিটা লাইন যেন আমারই কথা!

আর এখানে? সকালে উঠে শুধু শুধুই রেডি হয়ে বাসায় ঘোরাঘুরি করতাম। পরের দিকে আর সকালে উঠতামই না। সাধারণ দিনের মত কেটে যেত।
একদম তাই। প্রথম কবার আই ট্রাইড টু মেইক এন এফোর্ট টু ফিল দ্যা ইট'স ঈদ টুডে! সাজগোজ, মেহেদী এন্ড অল। তারপরে সেই মিথ্যে চেষ্টাও বন্ধ। একা একা আনন্দ করার মানে থাকে না আসলে। ক্লাস থাকলে ক্লাস করি। বাড়িতে যদি থাকা হয়, যেমন এই ঈদে বাড়িতেই থাকব, তখন আপনি যা বললেন তাই। সাধারণ একটি দিনের মতো কাটবে।

একদম ঠিক। দেশেও ঈদ আনন্দ কমে গিয়েছে, বিশেষ করে আজকাল বাচ্চারা আমাদের মতো ফান করতে পারেনা। নেট নিয়ে পরে থাকে। নিজের কাজিন, আত্মীয়দের সাথেই অস্বস্তি বোধ করে। আর স্বস্তি বোধ করে নেটের অজানা বন্ধুদের সাথে! এই যুগের স্রোতে অবশ্য আমিও আপনিও পরে গিয়েছি। কিছু পেয়ে অনেককিছু হারাচ্ছি, না?!

অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে নিজের ঈদ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন বলে। আমি ভীষনই খুশি হয়েছি আপু! সত্যিই!
অগ্রিম ঈদ মোবারক আপনাকেও! ভালো কাটুক ঈদ সহ জীবনের সব দিনই!

১০| ২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ১১:২৩

উম্মে সায়মা বলেছেন: হ্যাঁ আপু, সব কেমন বদলে গেছে। ছোটবেলায় ঈদের আগে ঈদকার্ড দেবার হিড়িক পড়ে যেত। নতুন জামা, ম্যাচিং সব। আর এখন? সো বোরিং :|
ভালো থাকুন অনেক।

২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:১০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: একদম ঠিক আপু! ঈদ কার্ডের কথা পোস্টে বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম। ঈদের একটা বিশেষত্ব ছিল তখন ঈদ কার্ড। আহারে সেইসব সোনার দিনগুলো সব হারিয়ে গেল!

পুনরায় আগমনে কৃতজ্ঞতা রইল।
শুভেচ্ছা রাশি রাশি!

১১| ২৫ শে জুন, ২০১৭ রাত ২:১২

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ঈদ মুবারক।। কাল ঈদ, আজ তাই রুটিন মাফিক এসেছি।। দেখে গেলাম।।

২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:১১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহা, আপনার আন্তরিকতায় আনন্দিত হলাম। ঈদ মোবারক জানবেন।

না পড়ে থাকলে, পোস্টটি সময় করে কোনদিন পড়বেন আশা করি। :)
শুভকামনা!

১২| ২৫ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৫:৫২

মোঃ জাহিদুল ইসলাম (জিহাদ) বলেছেন: ঈদ মোবারক।। ☺☺
প্রথম কথা হলো আপনার লেখাগুলো আমার ভাল লাগে তাই লেখালেখি নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে।।
দ্বিতীয়ত আপনার লেখাগুলো কিভাবে এত সাবলীল হয়।আমি যদি আমার কোনো ঘটনা লিখতে যায় তা তো হয় না।।কিছু স্কিল শিখিয়ে দিন আপু।

আর হলো আমাদের এখানেও আসলে ঈদ আনন্দ শুধু ঈদ না যেকোনো উৎসবের আর আগের মতো আনন্দ হয়না।এই ব্যস্ত জীবনে কি উৎসবের দিনটা সবার সাথে কাটানোর সময় নেই।অনেকগুলো কারণে এরকম হচ্ছে।তবু যাই প্রবাসের তারা হয়তো বুঝবেন আপনজনের সাথে ঈদ কাটানোর আনন্দটা আসলে কি।।ভাল থাকবেন।।

২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:১৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: মন্তব্যে ভীষনই অনুপ্রাণিত হলাম! কাউকে স্কিল শেখাবার মতো ভালো লিখিনা, তাই সে যোগ্যতা আমার নেই। তবে কিছু জিনিস ফলো করি, আমার লেখা আপনি পছন্দ করেন বলে শেয়ার করছি।

যখন কোন লেখা লিখবেন, সেটা নিজেই বেশ কবার পড়বেন। একজন পাঠক হিসেবে পড়বেন। এতে বানান ভুল তো ধরা পরবেই। সাথে সাথে কোন বাক্য যদি সাবলীলতা নষ্ট করে তাও চোখে পরবে। কোন বাক্য হয়ত বেশি লম্বা বা অগোছালো মনে হলো, তখন সেই বাক্যটিকে পুনরায় সাজিয়ে লিখবেন। মানে যতক্ষন না নিজের মনের মতো হবে এডিট করতে থাকবেন। ভালো লেখক হতে হলে আগে রুচিশীল পাঠক হতে হয়। অনেকের বই পড়ার অভ্যাস থাকতে হয়। তখন নিজের লেখার ভুলগুলোও চোখে পরে অন্যদের দেখার আগেই!

এই কাজটি করলে একবারেই লেখা অসম্ভব ভালো হয়ে যাবেনা। তবে ইমপ্রুভড হবে। আর প্রচুর লিখুন। যত্ন নিয়ে লিখে পোস্ট করুন। অন্যরা কি সমালোচনা করল সেটা নিয়ে ভাবুন। সেইমতো লেখা ঠিক করতে করতে লেখার মান বাড়বে। লেখার হাত পেকে যাবে।

আশা করি কথাগুলো সাহায্য করবে আপনাকে!

সেটাই। ঈদের আনন্দ কমে গিয়েছে আগের চেয়ে। আজকাল এতশত উৎসব যে কোনটাই যেন ঠিকভাবে এনজয় করা হয়ে উঠছে না। আর প্রবাসিদের জন্যে তো সেটা আরোই সত্যি!

পাঠ ও সুন্দর মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
অনেক শুভেচ্ছা!

১৩| ২৫ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:৫৮

সোহানী বলেছেন: শতভাগ সহমত তোমার ঈদ পালনের সাথে..... কি আর করা উৎসব মিস করলে ও দেশ থেকে অনেক অনেক ভালো আছি আমরা। অামি জেনেভা সহ ইউরোপ এর অনেক দেশই ঘুরেছি কিন্তু কানাডার মতো এতোটা অসাধারন দেশ দেখিনি।

স্কুলগুলোতে কিছুটা ঝামেলা হয়তো আছে তবে তুমি ইউনিভার্সিটিতে গেলে বুঝবা কানাডিয়ানরা কতটা সহজ সরল ও ভালো। আমারতো মাঝে মাঝে ওদেরকে আহাম্মক মনে হয়।

প্রবাসী ঈদ মোবারক ।

২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:২৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ভালো আছি না খারাপ আছি তা জানি না। দেশে থাকলে কত ভালো বা খারাপ থাকতাম তাও অন্য অনেকের মতো সহজে বুঝতে পারিনা। শুধু জানি, জীবনে সমস্যা থাকবেই, যেখানেই থাকি না কেন। কানাডায় আসার পরে আমার চোখ দিয়ে নানা কারণে যতো জল ঝড়েছে, দেশে তার কমই হয়ত হয়েছে। কানাডার দোষ ছিলনা সেসবে। ব্যাস, জীবনে নানা সমস্যা আসতে যেতে থেকেছে। সুখ দুঃখ নিয়েই তো জীবন! যেখানেই থাকি না কেন!

হাহা, আমি অলরেডি ভার্সিটিতে পড়ছি। এখন আর হাই স্কুলে নেই। আর হাই স্কুলেও ওরা ভালোই ছিল। প্রথম প্রথম আমি বুঝতে পারতাম না কালচারটা একদমই ভিন্ন হওয়ায়। তবে সিনিয়ার ইয়ারগুলোতে বুঝতে পেরেছিলাম। কি ভীষন সরল, আন্তরিক ও বিনয়ী একটি জাতি ওরা! আর দুষ্টু কিছু ছেলেমেয়ের কথা যা আসে, তা দেশেও ছিল। সবখানেই থাকে। ফর দ্যা মোস্ট পার্ট, দে ওয়েআর রিয়েলি নাইস!

আপনাকেও প্রবাসী ঈদ মোবারক।
শুভকামনা!

১৪| ২৫ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৮:২৮

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
ঈদ মোবারক!

২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:২৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ঈদ মোবারক! ঈদ কেমন কাটালেন? আশা করি অনেক ভালো।

অনেক শুভেচ্ছা রইল!

১৫| ২৫ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:১৯

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: পোষ্টটি এখনো পড়তে পারিনি, তবে পড়বো অবশ্যই। এখন আপাতত ঈদ মোবারক জানাতেই এসেছি আপু

পোষ্টটি এখনো পড়তে পারিনি, তবে পড়বো অবশ্যই। এখন আপাতত ঈদ মোবারক জানাতেই এসেছি আপু

২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:২৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: নয়ন সাহেব!

সময় করে, আমার কথা মনে করে ঈদ মোবারক জানাতে এসেছেন দেখে ভীষনই খুশি হয়েছি। আপনাকেও ঈদ মোবারক!
সুন্দর ছবিটির জন্যে কৃতজ্ঞতা!

আপনি পোস্টটি কখনো পড়ে ফেলবেন এবং ভালো লাগবে আশা করি।
আমার সকল শুভকামনা রইল!

১৬| ২৬ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন:

২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:২৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: সুন্দর ফুলে মোরা শুভেচ্ছায় ধন্যবাদ। আপনাকেও ঈদ মোবারক আবারো!
ভালো থাকুন!

১৭| ২৬ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৮

নিওফাইট নিটোল বলেছেন: ছুটির দিনে ভাবলাম শুধু রিয়েল পড়শীদের বাসাবাড়িতে না গিয়ে ভার্চুয়াল পড়শীদের ব্লগবাড়িতেও একটু ঢুঁ মেরে অাসি না হয়........অার তাই.........যদিও ভাবি নাই ঈদের ছুটিতে অাপনি কানাডাকে নিয়ে অাসবেন ;)
তবে ছুটির মৌসুমে উৎসবের দিনগুলোকেও এখন অার অাগেরমত উপলব্ধি করতে পারি না......গ্রামেও ঘন ঘন যাওয়া হয় না- উৎসবের মাঝে লুকিয়ে থাকা একাকীত্ব তাই এখন বেশ ভালো উপভোগ করতে পারি, যদিও নিজেকে নিয়ে খুশি থাকার মাঝে একান্ত সরল অানন্দ অাছে কিন্তু সেটা অপার্থিব না!!

"এমন দুষ্টুমি করার মতো মানুষ আমি না"
দুষ্টুমি জিনিসটা ন্যাচারালি সবার ভিতরেই কাজ করে- যে মানুষটা বাইরে খুব গুমোট-গম্ভীর-সতর্ক-অমিশুক, তারও কিন্তু ভিতরে একটা প্রচ্ছন্ন দুষ্টু সত্ত্বা থাকে, তাই না? ন্যাচার থেকে অন্যের দুষ্টুমি দেখে দেখে নিজের ভিতর নিজের মতো করে দুষ্টুমির একটা ফর্ম দাঁড়িয়ে যায়......অামার ফর্মটাও এভাবে তৈরি হয়েছিল- না বুঝতাম অন্যের পাকনামি না অন্যের ছাগলামি, ব্যস এভাবেই নিজেরটা দাঁড়িয়ে গেল- একেবারেই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য........অাপনার মতো অামারও বেশ ক'বার এমন নিজস্বতা হুট করে বের হয়ে অাসার নজির অাছে, তখন ভাবতাম- শালা এটা করলাম কেমন করে অার করলই বা কে? :P

"আর এই মেয়েটা? চলতে, বলতে পারেনা কিন্তু কী ভীষন প্রানশক্তি!"
সারাহকে ক্ষণিকের জন্য মনে হল 'জুনিয়র স্টিফেন হকিং'........প্রতিবন্ধি মানুষগুলোর প্রতিবন্ধকতা জয় করা প্রাণোচ্ছল চেহারা দেখে সবসময়ই ভাবি- সুস্থ থেকেও কত প্রাণহীন থাকি অামি, প্রাণময় দেহে প্রাণের স্পন্দনকে উপভোগ করতেও ভুলে যাই সময়তে.......সারাহর মতো মানুষরা অাসলেই মনের উপর দাগ কেটে যায়!!

"গাইজজজ, শি হ্যাজ ডাবল স্ট্যান্ডার্ডস!"
অাচ্ছা, কাহিনি বুঝলাম না.......ইংলিশরা "দু'মুখো সাপ (দুই মুখের কথা যারা বলে)" কিংবা এরকম দুই নীতির মানুষকে উদ্দেশ্য করে "ডাবল ফেইসড" বা "ডাবল টাংগড" ফ্রেইজ দুটো ব্যবহার করে না? মুভিতে কখনো দেখেছি বলে মনে পড়ছে না......যদিও ভাবগত দিক থেকে অামার কাছে পারফেক্ট মনে হয় এ দু'টোকে B:-)

ঈদ মোবারক !:#P

***************
দুর্ভাগ্যবসত< দুর্ভাগ্যবশত, খায়িয়ে< খাইয়ে

২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:৪১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: যা ভাবেননি তা করতে পেরে আনন্দিত! হাহা।

সেটাই তো। উৎসবের সেই আনন্দ কোথায় গেল? সব সুখ কেন হারিয়ে যাচ্ছে জীবন থেকে?

আমি অন্যসময়ে একাকীত্বের সাথে মানিয়ে নিতে পারলেও, উৎসবের দিনগুলোতে বড্ড বেশি কাঁটার মতো বিঁধে!

নিজেকে নিয়ে খুশি থাকার মাঝে একান্ত সরল অানন্দ অাছে কিন্তু সেটা অপার্থিব না!!
খুব সুন্দর লাগল কথাটি। একদম মনের গভীর থেকে এসেছে!

আমি যাদেরকে চিনি, মানে বন্ধু আপনজন তাদের সাথে ভীষনই দুষ্টুমি করি। তবে অপরিচিত, অপছন্দনীয় মানুষটির সাথে এমনকিছু করে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম নিজেতেই!
এ বিষয়ে আপনার কথাগুলোর সাথে একমত। ঠিক বলেছেন একদম!

আসলেই! স্টিফেন হকিং এর মতোই ছিল ওর প্রতিবন্ধকতা। আর প্রানবন্ত ভাবে বাঁচার উদ্দ্যমটাও! ওর মতো মানুষেরা ভীষন স্পেশাল। ভাষায় প্রকাশ করা যায় না ওদের প্রভাবটা!

হাহা, আপনি যা ইংরেজী মুভিতে দেখেননি তেমন ইংলিশ কি ওরা ব্যবহার করেনা? একটি ইংরেজী শব্দ এবং ফ্রেইজের অনেক রূপ থাকে। যে জায়গায় যেটা বেশি এপ্রোপ্রিয়েট মনে করা হয়, তারা সেটাই বলে!

হুমম ঈদ মোবারক!

অনেকদিন পরে বানান ঠিক করে দিলেন! আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। ঠিক করে দিয়েছি।

ভীষন সুন্দর মন্তব্যে ধন্যবাদ।
অনেক ভালো থাকুন।

১৮| ২৭ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পাঁচ বছর পূর্তিতে অভিনন্দন :)

আমাদের ঋদ্ধ করুন, ঋনি করুন আর দারুন সব লেখনিতে, মাতিয়ে রাখূন ব্লগ বাড়ী...
যুগ যুগান্ত......


২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:৪২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনি খেয়াল করে অভিনন্দন জানাচ্ছেন দেখে ভীষনই খুশি হয়েছি। এত আন্তরিকতা রাখি কোথায়!? :)

জ্বী দোয়া করবেন। চেষ্টা করব তাই করার।

আমার সকল শুভকামনা রইল আপনার জন্যে!

১৯| ২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:৪৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: কিছু কারণে ওপরের অনেক মন্তব্যের উত্তর দেরীতে দিতে হয়েছে। মাফ করবেন সেজন্যে। সবাই ভালো থাকুন!

২০| ২৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:২৫

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: আমার ঈদ সারাদিন ঘুমিয়ে, ঘুমিয়ে কেটেছে ; এখন আপনার টা বলুন ।। ;)

২৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:২৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ভালো কাটেনি রে। বাদই দেই তাই আমারটা।

আপনি শুধু ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দিন পার করলেন? নাকি সালামি দেবার ভয়ে ঘুমের ভান করে ছিলেন? ;) :)

২১| ২৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:৩০

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: কারে সালামি দিমু ; সে যোগ্যতা এখনো হয়নি .... কারণ, পরিবারের আমি একমাত্র ছোট এবং আমিই শেষ !! B-) ভালো কাটেনি কেন কি হয়েছিল ? :(

২৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:৩৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: বাদ দিন তো। ভালো না থাকার আলোচনা ঈদের খুশিতে নাইবা করি।

আরেহ সালামি কি শুধু পরিবারকেই দিতে হয়? পাড়ার বাচ্চারা, ছোট ভাইরা তো আছে। তাদেরকে সালামি দিতেই পারতেন। আসলে ইচ্ছে থাকলে তবেই না উপায় হয়। ইচ্ছাই যদি না থাকে কি আর করা..... ;)

অনেক সালামি পেয়েছেন, না?

২২| ২৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:৪১

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: পাড়ার বাচ্চাদের ঈদের দিন বিকালে গাড়ী ভাড়া করে দেই; একটু ঘোরাঘুরি ও নাচানাচি করার জন্য, এটাই ওদের জন্য সালামি !! B-) আবার পরের দিন দূরে গিয়ে পিকনিকের ব্যবস্থা করে দেই ।। =p~ =p~ একটা বান্দরের হাড্ডি !!


সালামি যা পাই একটা টাকাও থকে না .................

০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৪৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হুমম! বড় হবার পরে অনেক হারানোর একটা হচ্ছে সালামি!

২৩| ২৭ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫১

নীল-দর্পণ বলেছেন: ঢাকায় যখন ঈদ করি তখন মনে হয় প্রবাসীদের মত কষ্ট লাগে। গরমে, ভিড়ে গ্রামে যেতে কষ্ট হয় কিন্তু সবার সাথে যেই আনন্দ পাওয়া যায় সেটা শহরে কোন ভাবেই সম্ভব না।


আপনার লেখা বরাবরের মতই ভাল লাগল।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৫০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: সেটাই। একদম। প্রতি বছর মানুষ কত কষ্ট সহ্য করে ঈদ করতে যায়! কিন্তু মুখে হাসি থাকে। বাড়ি ফিরে সবাইকে দেখতে পাবেন সে ভাবনা ও সুখ চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে সবার মন।

ভালো লাগায় আনন্দিত।
পাঠ ও মন্তব্যে অসীম কৃতজ্ঞতা।
শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.