নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)
১. ক্লাস ফাইভের বৃত্তি পরীক্ষায় মন দিয়ে অঙ্ক কষছি। হলে গার্ড দিচ্ছেন দুই টিচার। কেন যেন তাদের একজন আমার কাছে এসে মাথায় হাত রাখলেন। অনেকটা পিতার মমতায় আমাকে অঙ্ক দেখিয়ে দিতে লাগলেন তিনি! পরীক্ষার প্রায় শেষ, হলে ঢুকলেন আমার গৃহশিক্ষক। তিনি একে একে আমার সব অঙ্কের রেজাল্ট পাল্ট দিতে লাগলেন। দৌড়ে এলেন ওই টিচার। আমাকে ধমকে বললেন-ওই ছেলে তুমি করছ কি। আমি তার কথায় কান না দিয়ে আমার গৃহশিক্ষকের কথা মতো রেজাল্ট পাল্টাচ্ছিলাম। তিনি সজোরে একটি চড় মারলেন আমার গালে। এরপর আমার গৃহশিক্ষককে হল থেকে বের করে দিয়ে আমাকে রেজাল্ট সংশোধনের জন্য তাগাদা দিলেন। আমি অবোধের মতো কতক্ষণ হলে বসে থেকে বের হয়ে চলে আসলাম। বাইরে এসে বুঝতে পারলাম আমার গৃহশিক্ষক আমাকে যে রেজাল্ট লিখিয়েছেন তা ভুল। ওই অপরিচিত টিচারের কথাই ঠিক।আমি আর বৃত্তি পাইনি। তবে পচেও যাইনি।
২. ইন্টার এ হোস্টেলে থাকি। হঠাৎ একদিন রাত তিনটার পর আমার রুমে হোস্টেল সুপার হাজির। তার কাছে গোপন খবর আছে আমি (অসভ্য) কিছু করছি। তিনি কিছু না পেয়ে চলে গেলেন। আমি টের পেলাম কলেজে আমার বিরুদ্ধে বেনামী অভিযোগ ভারী হচ্ছে। প্রচণ্ড শক্ত হলাম। একসময় অবশ্য আমি বাধ্য হলাম হোস্টেল ছেড়ে আলাদা বাসায় উঠতে। আমার জীবনের সবচেয়ে দু:সময় ছিল ইন্টারমেডিয়েট লাইফ। ওরা শেষ পর্যন্ত আমার পরিবারের কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলো। তাদের বুঝানো হলো আমার পক্ষে ইন্টার পাশ করা সম্ভব নয়। আব্বা-ভাই থেকে আমি মোটামুটি বিচ্ছিন্ন হলাম। শুধু অসহায়ের মতো পাশে থেকে ছায়া দিয়ে গেলেন আম্মা। ওদের কথা সত্য হলোনা।
৩. আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। এবার আমার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ তুলা হলো। আমি ... মাস্তি করে বেড়াই, এই সেই...। বড় ভাই আমাকে পড়াশেনার খরচ দেয়া বন্ধ করে দিলেন। আমি বেঁচে থাকার তাগিদে মিডিয়ায় কাজ শুরু করলাম। আমার আত্মীয়দের ওই অংশটি আমাকে কাজ করে আয় করতে দেখায় ভীষণ হতাশ হলেন। আমি কিন্তু বড় স্ব:স্তি পেলাম। ভাবলাম এই বুঝি দু:সহ জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটলো।
৪. তবে না, মিডিয়ায় কাজ করতে এসে শিকার হলাম বিশ্রী রকমের পলিটিক্সের। সামনে পেলে সবায় প্রশংসা করে। একটু আড়াল হলে চৌদ্ধগোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়ে। এখানেও অদ্ভূতভাবে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হলো। আগের জীবেন একমুখী আক্রমণের শিকার হয়েছি। আর মিডিয়ায় এসে মোকাবেলা করতে শিখলাম বহুমুখী আক্রমণ। সবচেয়ে বেশি শিকার হলাম তথাকথিত একদল উগ্র মৌলবাদী ও ভণ্ডের। ওরা প্রথমে আমাকে ওদের মতো করে চলতে বলল। কিন্তু আমি তা না করায় একটা বিশেষ মিশন সেট করে আমার পেছনে লাগল কীটের দল। ছড়ানোর চেষ্টা করলো নানা কাল্পনিক প্রোপাগাণ্ডা। আমি মাজা সোজা করে হাঁটার চেষ্টা করলাম।
৫. মাস ছয়েক ধরে ভেবেছিলা্ম ওরা বোধহয় থেমে গেছে। না কাপুরুষরা কখনো থামে না। অপরের পৌরুষ ওদের ঘুম হারাম করে দেয়। তবে সামনে থেকে আক্রমণ করার সাহস বা সামর্থ্য ওদের নেই। তাই পেছন থেকে ছুড়ি চালানোর চেষ্টা করে...!
কথা হচ্ছে- ওরা মানুষের সর্বনাশ করতে ঘুরে বেড়ায়। আর প্রকৃতি ওদের কৃতকর্মের জন্য এমনিতেই শাস্তি দেয়। এসব পরাজিত কীটের স্থান তাই সবসময়ই নর্দমাতে...
©somewhere in net ltd.