নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ

সরোজ মেহেদী

The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)

সরোজ মেহেদী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেয়েটি বিবাহিতা না হলে!

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:৫০

১. ২০১২ সাল।আল মাহমুদের 'পাখির কথায় পাখা মেললাম' কাব্যগ্রন্থটি পড়ে কেন জানি মনে হলো কবি আর বাঁচবে না!এমন ভাবনা থেকেই নাড়ীর বাঁধনে আটকে থাকা এক বন্ধুকে নিয়ে কবির বাসায় গেলাম।আশা ছিল তার সাথে ছবি তুলব, স্মৃতি হবো।কিন্তু কয়েকদিনের জ্বরে ভোগা ৭৭বছর বয়সী কবি ছিলেন প্রচণ্ড দুর্বল। বিছানা থেকে মাথা তুলেই তিনি আমাদের দুজনকে বেশকিছু প্রশ্ন করলেন।তারপর কিছুক্ষণ চুপ থেকে জড়তা কণ্ঠে বললেন 'আমার খুব কষ্ট হচ্ছে'।আমরা তার কষ্ট না বাড়িয়ে ফিরে এলাম।ফিরতে ফিরতে আমাদের আলোচনায় ছিল কবির মৃত্যুর বিষয়টি।আমাদের মনে আক্ষেপ ছিল, আবার ক্ষাণিক সময়ের জন্য হলেও তার সংস্পর্শ পাওয়ার উচ্ছাসও।

২. আমাদের অবাক করে দিয়ে এখনো বেঁচে আছেন আল মাহমুদ। গত কয় বছরে দুই জন্মদিনে দুইবার আরও দুটি প্রোগ্রামে বার দুয়েক বোধহয় তাকে দেখেছি।শারীরিক শক্তি বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই মানুষটির। চোখে দেখেন না, কানে শোনেন না।এমন কি নিজের শক্তিতে উঠে দাঁড়ানোর শক্তিও হারিয়ে ফেলেছেন।এই সময়ে বিয়োগ হয়েছে প্রিয় সঙ্গিনী।দেশ ছাড়ার আগে তাকে একবার দেখে আসার খুব সখ ছিল।নানা বাস্তবতায় সে সুযোগ থেকে বন্চিত রয়ে গেলাম।বিদেশে থাকলেও পত্রিকার পাতায় চোখ রাখি কবির নতুন কবিতার জন্য।

৩. গত শনিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে ইস্তাম্বুল প্রবাসী এক বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রথম শুনি "আল মাহমুদ ২৩ বছর বয়সী এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন" ওর কথাটা কানে তুলিনি।ভেবেছি দুষ্টামি করছে।তবে রাতে ডর্মে ফিরে চোখ ছানাবরা। ফেবুতে এমন একটি বিষয় আলোচিত হতে দেখি আর একবার আমার কাছে বাঙালি তথা মানুষকে ঘৃণিত লাগল। দ্বিতীয় বিয়েটা অমাদোর সমাজে অসম্ভব কিছু না।আল মাহমুদ বা আলী শেখ নামীয় যে কেউ এমন কিছু করতে পারেন।

কিন্তু তাই বলে নিজের শক্তিতে চলাচলে অক্ষম ৮০ বছরের এক বৃদ্ধকে গায়ে পড়ে এমন অপবাদ দিতে হবে। তার সাথে জড়াতে হবে ২৩ বছর বয়সী এক যুবতীকে। এতে আল মাহমুদের কী ক্ষতি হলো বুঝলাম না।যারা ঘৃণিত এই কাজটি করলেন তারা বুঝতে পারছেন কি!

৪. আল মাহমুদ ভক্ত ঐ মেয়েটিকে(উম্মে হাবিবা নাসরিন) চিনি না বা দেখিনি কখনো।প্রথমে ভেবেছিলাম মেয়েটি সম্মান জানাতে তাকে বিয়ের প্রস্তাব করব। পরে জানলাম ও বিবাহিত।তাই ওর দাম্পত্য জীবনে শান্তি কামনা করছি।এই ঘটনার জেরে ভবিষ্যতে এককজন মানুষ হিসেবে ঐ মেয়ে মানুষটির পাশে থাকার সগর্ব ঘোষণা দিচ্ছি।

সব শেষে বলছি তুমি একা নও বন্ধু-বোন।দেখ আমরা তোমাদের লড়াইয়ে সারথি হতে উন্মুখ হয়ে আছি।জয় হোক সুন্দরের, জয় হোক কবিতার।

বি,দ্র-আমি মেয়ে হলে এমন একটি হুজুগে জড়াতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতাম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.