নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ

সরোজ মেহেদী

The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)

সরোজ মেহেদী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইস্তাম্বুলে ব্যাচেলরীয় (পহেলা) বৈশাখি সন্ধ্যা

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:৫২

শুনলাম কানাডায়ও নাকি এখন বাংলাদেশী ইলিশ পাওয়া যায়।তবে তুরস্কে এমনটা কল্পনাও করা যায় না।প্রথম বিশ্বযুদ্ধপূর্ব পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম পরাশক্তি ও বর্তমান দুনিয়ার উঠতি শক্তি তুরস্কের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কও বোধহয় তেমন নেই।যাই হোক কোনো কিছুর অভাবে থেমে থাকে না কিছু।ঠেকায় পড়লে বাঘও নাকি পানি খায়।আর আমরাতো মা ছাড়া, মায়ের মাটি ছাড়া প্রবাসী বুভুক্ষু।তাই সব শেষে নস্টালজিক করার মতো এক আয়োজনে হয়ে গেল আমাদের পহেলা বৈশাখ উদযাপন।আমরা আসলে কী করেছি তা নিচের ছবিগুলিই বলে দিচ্ছে।

গত বছর যুগান্তরের পহেলা বৈশাখের ইভেন্ট কাভার করতে রাত তিনটায় বাসা ছেড়েছিলাম।আজকের পহেলা বৈশাখ সকালে ভোর ছ’টায় ঘুম থেকে উঠে ক্লাসের জন্য ছুটেছি।সন্ধ্যায় ডর্মে ফিরে আসা পর্যন্ত বুঝতে পারিনি কত বড় চমক অপেক্ষা করছে।ডর্ম ফেরৎ ক্লান্ত দেহটা বিছানায় পেতে চোখ বুঝেছি।এমন সময় ভাইবারে মুমিনের ইনবক্স।মাছ রান্না হচ্ছে।এক ঘন্টার মধ্যে আসলে খেতে পারবা।



ইস্তাম্বুলে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত একটি ডর্মেটরিতে আমরা সাত জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী থাকি।ডর্মটিতে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য ‘চা’টাও কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করে।সুতরাং রুমে আলাদা করে চা বানিয়ে খাওয়ার কোনো অনুমতি নেই।আর রান্না করাতো আকাশ কুশুম কল্পনার মতো।রুমে চেক করে রান্নার কোনো উপাদান পেলেই তা নিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ।আমাদের মধ্যে মুমিনই একটি ছোট কোকার ও চা বানানোর যন্ত্র নিয়ে এসেছিল।ওর ওয়াটার হিটারটি কর্তৃপক্ষ নিয়ে গেছে।তবে কোকারটি নিতে পারেনি।এই কোকারটির সাহায্যে মাঝে মধ্যে লুকিয়ে বাংলাদেশী খাবার রান্না করে আমাদের খাওয়ায় ও।মুমিন রান্না করে আমরা ম্যানেজারকে গার্ড দেই!

মাছ রান্না হচ্ছে শোনার পর থেকেই নাকে ঘ্রাণ পাচ্ছিলাম।ক্ষুধাও যেন হুহু করে বাড়তে থাকে।ঘুম আর ক্লান্তিকে ছুটি দিয়ে মিনিট বিশেকের মধ্যেই ওর রুমে গিয়ে হাজির।তুরস্কের একটি সামূদ্রিক মাছকে (আলাবালেক) ইলিশের মতো করে ভাজি করেছে।সাথে পেয়াজ ভাজি আর আলু ভর্তা।আগেই ভাত রান্না করে রেখেছে।এ যেনো মেঘ না চাইতে বৃষ্টি।তানভীর ভাইকে খালাম্মার পাঠানো আচারও হাজির।সুতরাং শুরু হলো খাওয়া নিয়ে কাড়াকাড়ি।রুমে প্লেট রাখা মানে ধরা খাওয়ার আর একটা ফাঁদ পাতা।বিস্কুট রাখার বক্সই প্রিয় প্লেটের ভূমিকা পালন করল।আমাদের মধ্যে একমাত্র জয়নাল ভাই পেট বেড়ে যাওয়ার ভয়ে তুর্কি পোলাও খান না।আজ যেন তিনি সব পুষিয়ে দেয়ার মিশনে নেমে ছিলেন।

খেতে আর কত সময় লাগে।কথার ফুলঝুরি আর খুসুঁটির তালে তালে নিমিষেই ফুরিয়ে গেল খাবার।তবে খেতে খেতে স্বাদ আর শান্তির যে পরশ দেহ মনে ছুঁয়ে গেল তা যে ফুরাবার নয়!চিরন্তন এ আবেদন যেতে যেতে থেকে যায়।

সময়ের কাছে প্রতিনিয়ত পরাজয়ের স্বাদ নেয়া মন্থর বা গতিময় মনুষ্য জীবনটা দ্রুতই কেটে যাচ্ছে।এরই মধ্যে কিছু স্মৃতি জমা হয়ে যায়।আজও অনেক আনন্দ হলো, স্মৃতির পাতায় একটি খাতা লেখা পড়ে রইল।

আসছে শনিবার(১৮ এপ্রিল, ১৫) বাংলাদেশ কনস্যুল, ইস্তাম্বুল আয়োজিত পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান রয়েছে।আশাবাদী হয়ে রইলাম!



ভয়ার্ত হৃদয়ে দ্রুত খেতে খেতে ‘বা হাতে’ মোবাইলে ছবিগুলো তুলেছে ছোট ভাই সালেহ ইমরান।আমাদের আরও দুই সঙ্গী হলো কাইয়ুম ও সজল।সবার জন্য ভালোবাসা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:০৯

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ভাল লাগলো ভাই ইস্তাম্বুলে আপনাদের বৈশাখী সন্ধ্যা । আপনার লেখার মধ্যে প্রবাস জীবনের একাকীত্ব আর কিছুটা হতাশা ফুটে উঠেছে । আশা করি এটা দ্রুত কেটে যাবে ।

শুভ হোক আপনার প্রবাস জীবন .........।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৪৯

সরোজ মেহেদী বলেছেন: ঠিক হতাশা না।দেশের জন্য একটা তীব্র টান অনুভব করি কেন যেন।শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ।আপনিও ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.