নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সার্জিল খান

বাস্তবতার ভার্শন ২.৭.১২ এ আছি। নিয়মিত আপডেট হচ্ছি।

নিরুদ্দেশ পথিক

বাস্তবতার ভার্শন ২.৭.১২ এ আছি। নিয়মিত আপডেট হচ্ছি। ফেসবুক আইডিঃ https://www.facebook.com/sarxilkhan

নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুগদ্যঃ জন্মদিন

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১:০৬

প্রায় প্রতিটি পরিবারেই ক্ষমতাবান ধনী আত্মীয় থাকার পাশাপাশি গরীব আত্মীয়ও থাকে। কিন্তু এদের মাঝে অধিকাংশ মানুষই তাদের ক্ষমতাবান ধনী আত্মীয়দের নিয়ে আলোচনা বেশি করে। গরীব আত্মীয়দের জন্য তাদের মাঝে করুণার ছাপ দেখা যায়। মাঝে মাঝে তাচ্ছিল্যের ছাপও দেখা যায়। কিন্তু তারা এটা ভুলে যায়, ক্ষমতাবান আত্মীয়দের কাছে তারাও তাদের গরীব আত্মীয়ের মতোই। সমাজের সবখানেই মাৎস্যন্যায় অবস্থা আছে।



রাগীব এখন তার মেজো খালাতো ভাইয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এসেছে। গত আট বছর ধরে প্রত্যেকবারই এই ছেলেটার ঘটা করে জন্মদিন করার মানে কি কে জানে? বাবা-মা দুই সাইডেরই যত আত্মীয়স্বজন, পরিচিত হোমড়া-চোমড়া লোকদের দাওয়াত করে এনে কমিউনিটি সেণ্টার ভাড়া করার কোন মানে আছে কি না কে জানে? এই বাচ্চা ছেলেটা যখন বড় হবে, তখনও কি এ এভাবেই জন্মদিন পালন করবে? এক বছর যদি কোন কারণে জন্মদিন পালন করা না হয়, তখন এই ছেলের মাঝে কি একগুয়েমি চেপে বসবে না? তখন এর বাবা মা একে বোঝাবে কি করে?



স্টেজের চারপাশ ঘিরে অসম্ভব রূপবতী মহিলারা ঘুর ঘুর করছেন। কেউ কেউ আবার খালাতো ভাইটার গালে চুমু খাওয়ার প্রতিযোগীতায় নেমেছে। অনেকে আবার এই চুমু খাওয়ার দৃশ্যটাকে ফ্রেমবন্দীতে ব্যস্ত। কোট, টাই, বুট পড়া লোকগুলো খাওয়ার পর আয়েশী ভঙ্গিতে একে আরেকজনের সঙ্গে কথা বলছে। চারপাশে গ্ল্যামার আর গ্ল্যামার। পুরনো রংজ্বলা শার্ট আর ইস্ত্রি ছাড়া প্যান্টটা তাকে মোটেই বিচলিত করছে না। কারণ সে জানে খালা তাকে অসম্ভব পছন্দ করেন। একটু পর হয়তো বা কাছে এসে বলবেন সে খাওয়া দাওয়া করেছে কি না। যাওয়ার সময় পাঁচশো তাকার একটা নোটও গুঁজে দিতে পারেন। এটাকে একপ্রকার করুণাও বলা যেতে পারে। ক্ষমতাবানেরা তার অধীনস্থদের করুণা করবে এটাই তো স্বাভাবিক। স্বয়ং স্রস্টাই তাঁর সৃষ্টিকূলকে করুণা করেন। মানুষও তাই-ই করবে এটাই স্বাভাবিক।



খালা আস্তে করে এগিয়ে আসছেন তার দিকে, মুখে স্মিত একটা হাসি। কেন যেন মনে হচ্ছে হাসির মাঝে ধূর্ততা আছে। খালা এগিয়ে এসে বললেন,



-খাওয়া দাওয়া করেছিস?

-জ্বি।

-মিথ্যা বললি কেন? তোকে তো কোথাও বসতে দেখিনি।

-মিথ্যা বলছি না, তোমাদের চার টেবিল পরে বসেছিলাম, দেখোনি।

-টাকা পয়সা কিছু লাগবে?

-না।

-নিয়ে যা। মেসে গিয়ে কি খাবি? দুলাভাই টাকা পাঠাচ্ছে ঠিক মতো?

-জ্বি।

-আবার মিথ্যা বলছিস, টাকা পাঠালে চুল ঠিক মতো আচড়ে আসবি না? ড্রেসআপের কি অবস্থা। এভাবে চললে আমাদের সামনে আর আসিসি না। জিনিসটা অড্ দেখায়।

-জ্বি আচ্ছা।

-এত সোজাভাবে বললি, যেন সত্যি সত্যিই আসবি না।

-না সত্যিই আসবো না।

-ভেবেছিলাম, তোকে টাকা দিবো। বেয়াদবির জন্য এখন আর দিবো না।

-জ্বি আচ্ছা।



এটুকু বলতেই খালা ঠিকই তার হাতে একটা কিছু গুঁজে দিলেন। হাতে দিয়েই তিনি চলে গেলেন। মুঠ খুলে রাগীব দেখলো পাঁচশো না, এক হাজার টাকার দুইটা নোট। টাকাটা সে কেন নিলো বুঝলো না। নেওয়ার ইচ্ছা সত্যিই তার ছিল না। পরশু তার নিজেরই জন্মদিন। হয়তো বা এদের মতো এত আয়োজন করতে পারবে না। তবে ইচ্ছা তো করেই কিছু না কিছু আয়োজন করতে। সেজন্যই বোধহয় আর বাঁধা দেওয়াটা হয়নি। মানুষ সত্যিই বড় অদ্ভুত।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:১০

আমিনুর রহমান বলেছেন:



ভালো লিখেছেন। ভালো লাগলো +++

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৩২

নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। :)

২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৩২

হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনার অনুগদ্যগুলো ভালো লাগে।

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৫:৪৩

নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান ভাইয়া। :)

৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:১৯

মাক্স বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন, ভালো লাগলো!

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৫:৪৪

নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। :)

৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: খুব ভালো লাগলো পড়ে। অনুগদ্য হলেও একটা মেসেজ পাওয়া যায় আপনার লেখায়।
শুভকামনা রইলো

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৫:৪৪

নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। :) তবে কোন কিছুর মেসেজ দেওয়ার জন্য কিন্তু লেখি না। :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.