![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গতরাত্রে ঘরে ফিরে দরজায় নক করলাম। আসছি বলে একটু সময় নিয়ে মা দরজা খুলে দিলেন। ঘরে ঢুকে তো আমার দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা। নাক চেপে ধরলাম। দেখলাম ঘরের মধ্যখানে একটুকরো টায়ার জ্বলছে। জিজ্ঞেস করলাম
-মা এ কি? রাস্তার বদলে ঘরে টায়ার জ্বেলে কার জন্য অবরোধ কর্মসূচী পালন করছ?
-মা হেসে বললেন মশার জ্বালায় আর পারি না।
-ঘরে তো গন্ধ হয়ে যাবে মা!
-কিচ্ছু হবে না!
আমি টায়ারের টুকরো নিভিয়ে দিয়ে জানালা খুলে ফ্যান চালিয়ে দিলাম।
-এই কি করছ সব মশা তো সব ঘরে ঢুকে যাবে।
-ঢুকুক, আমার কাপড়গুলোর তেরটা বেঝে যাচ্ছে! আগামীকাল আবার হরতাল, কাপড়গুলো পরে রাস্তায় বেরোলে পুলিশ গন্ধ পেয়ে আমাকে পিকেটার মনে করে গ্রেফতার করবে।
মায়ের মুখের মধ্যে দেখলাম হালকা ভয়ের ছাপ পড়ল। কাপা কাপা কন্ঠে বললেন কি সব আজে বাজে অলক্ষুনে কতা বলছিস?
আসলে আমার মায়ের মধ্যে কোন ভালবাসা নেই। ভালবাসতে জানেন না, মানে মশাদেরকে। তাই এদের প্রতি তার এত নির্দয় ব্যবহার। ঘুমুতে যাওয়ার আগে ঠাশ ঠাশ শব্দ শোনা যায়! দেখলে মনে হবে যুদ্ধ জয়ের খুশীতে হাততালি দিচ্ছেন।
এখন সেটাই করছেন মহানন্দে!
আমি বললাম মা মশাদের প্রতি তোমার যে ব্যবহার ‘‘মশাধিকার’’ কমিশনের কেউ যদি জানতে পারে তাহলে তোমার খবর আছে!
-সেটা আবার কি?
-কিছুনা, খিদে পেয়েছে ভাত দাও।
খেতে বসে তো বমি আসার যোগাড়। টায়ারের পোড়া গন্ধ।
-কিরে খোকা কি হয়েছে?
-কিছুনা মা?
আমার সরল হৃদয়ের মায়ের এমন প্রশ্নের উত্তরে এর চেয়ে বেশী বলার আর কিছু খোজে পেলাম না। কষ্ঠ করে খেলাম কয়েকটা।
উফ কি যে করি? অসহ্য লাগে মশার জ্বালায়। শালাদের লজ্জা শরম নাই। কয়েল জ্বালিয়েও উপায় নেই। শালার বেটারা কয়েলের উপরে বসে ‘‘গোল কয়েল বৈঠক’’ করে।
মশারী টানিয়ে ঘুমানোর জন্য রেডি এমন সময় মা আমার পড়ার টেবিলে দুই টুকরো ভাজা মাছ সহ এক প্লেট ভাত রেখে বললেন আয় খোকা আমি তোকে খাইয়ে দেব।
আমার যতদূর বিশ্বাস ভাজা মাছ আগে ছিল না। এইমাত্র ভাজি করে এনেছেন। কারন থাকলে আমাকে খাবার টেবিলে রেখেই উঠে এনে দিতেন।
©somewhere in net ltd.