নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডুমুর ফুল

মোঃ সাইদুল ইসলাম

মোঃ সাইদুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিষিদ্ধ ভালোবাসা (৪র্থ পর্ব)

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:০৮

-জান্টুস, কী কর?"
-কিছু না, এইতো।
-তোমাকে ভীষন মিস করছি। কাল সকালে দেশে পৌছে যাবো। তোমাকে দেখার জন্য আমিতো একেবারে পাগল হয়ে আছি.!
অরু আনমনাভাবে টেলিফোনের ওপাশের কথাগুলো শুনতে থাকে। মাঝেমধ্যে একটু হুঁ-হাঁ করে। আজকাল অরু বেশিরভাগই আনমনা তাকে। অরু আনমনা হয়ে ভাবে আমি তো নিষ্ক্রিয় এক জীব এখন। ফোন রেখে একদৃষ্টিতে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখে। অপলক ভাবে থাকিয়ে রয়। ভেজা চুল থেকে টপটপ করে পানি ঝরছে। নিজের চেহারাটা নিজের কাছেই বড্ড অচেনা মনে হয়। "অরু! তুই তো এমন ছিলি না! কেন করছিস তুই এসব? বন্ধ কর----আয়নার ভেতরের প্রতিবিম্বটা যেন ধিক্কার দিতে থাকে তাকে।

****

দেশে আসার পর পরই রাজ অরু সাথে দেখা করে। রাজ অরুর হাতদুটো নিজের হাতে নিয়ে একনাগাড়ে বকবক করে চলেছে। মালয়েশিয়ায় গিয়ে এত মানুষের মধ্যে থেকেও সে অরুকে কতটা মিস করেছে, কি কি গিফট কিনেছে এসব। অরুর এসবে মন নেই। সে একবার নিজের হাতদুটোর দিকে তাকায়। কেমন নির্জীব হয়ে পড়ে আছে! তার দৃষ্টি যায় রাজের চেহারার দিকে। কেমন যেন এক ঘৃণায় গা গুলিয়ে উঠে। হাত ছাড়িয়ে নিতে চায় তবু তার হাত যেন মনের সাথে সাড়া দেয় না। রাজ হঠাৎই অরুকে বুকে টেনে নেয়। বুকভরে একবার নিঃশ্বাস নেবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় অরু, বাতাসটাও যেন বিষাক্ত হয়ে আছে। রাজ দীর্ঘ চুমু খায় কিন্তু সেখানেও অরু অনুপস্থিত। রাজের চোখ এড়িয়ে যায় এই অনীহাগুলো। কিছুটা ধাতস্থ রাজ অরুকে আলিঙ্গন থেকে মুক্তি দেয়। মেয়েটার চোখে একটা বিষন্নতা, যা কখনই মোছে না। তবু ঐ চাহনীতে কী যেন আছে, রাজ অনেক দেখেও চোখ ফেরাতে পারে না।

****

বিকালবেলা অফিস থেকে ফিরেই ইমন হাত পা ছড়িয়ে বিছানায় এলিয়ে পড়ে।
"....উফ! কাজের এত চাপ অফিসে! সরি অরু। আজ তোমাকে একবারও কল দিতে পারিনি। তুমি নিশ্চয়ই ঘরে বসে বসে বোর হয়ে গেছ।"
অরু কিছু বলছেনা দেখে ইমন আবার বললো,
"...ঠিক আছে। এই উইকএন্ড-এ আমরা মুভি দেখতে যাবো একসাথে, কেমন?"
একটুখানি মাথা দুলিয়ে অরু সায় দেয়। আসার পর থেকে সে ইমনের মুখের দিকে তাকিয়েই আছে। চোখ সরায় না এক মুহুর্তের জন্যেও। ইমন না তাকিয়েও বুঝতে পারে অরু তাকে দেখছে। ইমন কিছুটে অস্বস্তি বোধ করে। কিন্তু এই দৃষ্টির মানে সে বুঝতে পারে না।
"কি এত দেখে মেয়েটা?"
ইমন প্রায়ই লক্ষ্য করে বিষয়টা। অরু কেমন করে যেন তাকিয়ে থাকে, যেন ইমন একটা অচেনা মানুষ! নিজের স্বামীর দিকে এভাবে তাকায় কেন? চোখ বন্ধ করে একমুহুর্তের জন্য সে অরুর হাসিমুখ মনে করার চেষ্টা করে।
কই, মনে পড়ছে না তো! আশ্চর্য্য! হঠাৎই আবিষ্কার হয় গত ছয়মাসে অরুকে সে একবারও প্রাণখুলে হাসতে দেখেনি। অবাক ব্যাপার তো! তবুও ইমন চেষ্টা করে।

****

রাত দুটো বেজে ছাব্বিশ। ইমন ঘুমুচ্ছে। সেদিকে একবার তাকিয়েই চোখ ফিরিয়ে নেয় অরু। অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার নীরব চোখের জলে ভিজে গেছে শাড়ির অনেকটা অংশ। ইমনের দুর্বলতার কথা জানে সে অনেক আগে তেকে।
"কেন ইমন কেন?
---- কেন এমন তুমি? আমার চাহিদা মেটাতে কেন পরপুরুষ ডাকতে হয়? কেন খাদিজা আমাকে গালি দেয়।

নীরব চিৎকার যেন ঝড় হয়ে এখনো বয়ে চলেছে মনে। একবার মনে হয় চলে যাবে ইমনের সংসার থেকে। কিন্তু কোথায় যাবে? একটা ছেলে আছে। ছেলেটাকে কী করবে?
অরু মনে মনে আবার উচ্চারন করে
"কিন্তু আমিতো শান্তি পাই না ইমন। না তুর্য্য না রাজ কেউ আমাকে মনের তৃপ্তি দিতে পারেনি। আমি চেয়েছি সংসার, শান্তি। কোথায় গেলে আমি একটু শান্তি পাবো? " নীরব আকাশের বুকে যেন এই প্রশ্নটা জ্বলজ্বল করে জ্বলতে থাকে.......

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২৪

বর্ষন হোমস বলেছেন:

ভালবাসা নিষিদ্ধ হয় না

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.