নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কখনো নিজের নাম লুকোই না। আকাইমা শব্দ দিয়ে বানানো ছন্ম নাম আমার পছন্দ নয়। মা-বাবা\'র দেয়া নাম দিয়েই প্রোফাইল খুলেছি।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন

আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিশুতি রাতের কাঁন্না

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৫:৩৬




-১-

ময়েজ উদ্দিন কাজ করে সুবাং জায়ার একটি কারখানায়।
সুবাং জায়া রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে বেশ খানিকটা দূরে। এখানে বেশ অনেক গুলো কারখানা আছে।
ময়েজ উদ্দিনের কাজ রাতের শিফটে। দিনের শিফটে কাজ চেয়েও পায়নি।
সন্ধ্যা ৭ টায় তার শিফট শুরু হয়। সারা রাত কাজ করে সকাল ৭ দিকের সে হোস্টেলে ফিরে। হোস্টেলে তার মতো কয়েক শ লোক থাকে। তারা যে খাটিয়াতে ঘুমায় সেগুলো তিন তলা। ময়েজ উদ্দিন ঘুমায় খাটের তিন তলায়। পাশের এক রেস্টুরেন্টে থেকে তাদের সকালে নাস্তা আসে। এটাকে বলে রুটি চানাই। রুটির সাথে ঝোল সহযোগে ডাল । এই অখাদ্য তার কাছে অমৃতের মতো লাগে। গপ গপ করে খেয়ে ফেলে । তারপর তার দুই চোখে নেমে আসে দুনিয়ার ঘুম।

-২-

করিমন এর এক সন্তান। ছেলে আর শাশুড়ি নিয়ে তার সংসার। রাজুর বাবা ময়েজ উদ্দিন মালয়েশিয়াতে থাকে । বছর পাচেক আগে জমি জমা বেঁচে গিয়েছে । আগে ২ মাসে প্রায় ২৫/২৬ হাজার টাকা পাঠাতো। এক পাঠায় ১৯/২০ হাজার টাকা। তবে সব সময় পাঠাতে পারে না।
সেই দেশে তার বেতন কমেনি। কিন্তু টাকার দাম কমে গেছে বলে এখন সে আগের মতো বেশী টাকা পাঠাতে পারে না। আগে ১ হাজার রিঙ্গিত পাঠাতো। এখনো তাই পাঠায়। কিন্তু দেশে এসে টাকার পরিমাণ ৭/৮ হাজার কমে যায়। সংসার চালানো তার জন্য অনেক কঠিন হয়ে গেছে। প্রতি দিনই টাকার দরকার। জমি জমা থাকলেও তো চাল ডালের চিন্তা থাকতো না। এখন সব কিনতে হয়। করিমন বড় কষ্ট করে সংসার চালায়।
তাদের বাড়িতে কোন টিভি নেই। কারেন্টও নেই। রাজু আর তার দাদী খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যায়। করিমন এর ঘুম আসে না। বিছানায় এপাশ ও পাশ করতে থাকে। তার পাশে মানুষটার অভাব বোধ করে সে। আহা মানুষটা কোথায় থাকে কি ভাবে থাকে কে জানে। এক রাশ শূণ্যতা আর হাহাকার ভর করে তাকে। রাত বাড়তে থাকে। করিমনের ঘুম আর আসে না। আসে না। আসে না।
এক সময় পাশের গ্রামের মসজিদ থেকে ফজরের আজানের শব্দ ভেসে আসে। তখনো করিমনের চোখে ঘুম নেই। চোখ জ্বালাপোড়া করে।

-৩-

করিমন যখন ঘুমের জন্য এপাশ ও পাশ করছিল তখন অনেক দূরের সুবাং জায়ার একটি কারখানায় শেষ রাতে মেশিন চালাচ্ছিল ময়েজ উদ্দিন। আজ তার মনটা বড়ই বেচাইন। খুবই শূণ্যতা বোধ করছিল সে। মাঝে মাঝে সে খুবই শূণ্যতা বোধ করে। কেন এই শূণ্যতা সে বুঝতে পারে না। তার মনে হয় – সে খুবই একা। একা। তার পাশে কোন এক জন নেই।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৫:৫০

চাঁদগাজী বলেছেন:


জীবনের কাহিনী, বাংলার দাস ব্যবসায়ী সরকারগুলো বুঝলো না, মানুষের জীবনকে এরা মুল্য দিলো না; আমাদের লোকজন মালয়েশিয়ার লোকদের চেয়ে অনেক গূণী মানুষ, এদেরকে ভেঁরা বানায়ে রেখে বিক্রয় করছে, নাম দিয়েছে "রেমিটেন্স"; রেমিটেন্স হিসেবকারীদের বিচার করতে হবে একদিন।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:২১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আমার । ব্যক্তিগত অভিমত হল- যারা শ্রমিক শ্রেণীর মানুষ তাদেরকে দেশেই কাজের ব্যবস্থা করা দরকার। কারণ বিদেশে তাদের কোন জীবন নেই। তারা দাস। তাদের পারিবারিক জীবন নেই। তাদের স্ত্রী-সন্তানরাও পারিবারিক জীবন পায় না।

বিদেশে মানুষ যেতে পারে। তবে তারাই্ যাবে যারা পরিবার নিয়ে যেতে পারবে। যেমন ডাক্তার, প্রকৌশলী সহ আরো যারা প্রফেশনাল আছেন তারা। তারা দেশের সম্মান বৃদ্ধি করতে পারেন। এটা নিয়ে আমাদের আরো ভাবার অবকাশ আছে। আমাদের সবাইকে আরো ভাবতে হবে। কেবল রেমিট্যান্স নিয়ে ভাবলে চলবে না। মানুষ নিয়ে ভাবারও প্রয়োজন আছে।

২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: চাঁদগাজী চমৎকার মন্তব্য করেছেন।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:২৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: উনি এক জন বিদগ্ধ ব্লগার । উনি দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে ভাবেন। উনার মন্তব্য অবশ্যই চমৎকার।

তবে আপনার মন্তব্যও সুন্দর।

৩| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:১৪

মা.হাসান বলেছেন: রাজীব নুরের সাথে সহমত। জনাব চাঁদগাজীর অনেক মন্তব্যের সাথে একমত না, তবে উনি এখানে ভাল মন্তব্য করেছেন। মন্তব্যে প্লাস।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:২৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের সাথে আমি এক মত। শ্রমিকদের বিদেশে না পাঠিয়ে দেশে তাদেরকে আরো ভালোভাবে কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে বের করা দরকার।

৪| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:১২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুভ সকাল প্রিয় সাজ্জাদভাই ,

জীবনের গল্প কিছু বলার নাই। আমরা যখন নিশ্চিন্তে নিশিযাপন করি তখন এরকম হাজারো করিমনরা রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে চোখের পাতা এক না করে কাটিয়ে দেয় বিদেশ বিভুঁইয়ে আরেকটি হৃদয়ের জন্য , পরিবারের জন্য, সমাজের জন্য । গল্প হিসেবে অবশ্য কনস্ট্রাকশনের ত্রুটি চোখে পড়ল। তবে জীবন-যন্ত্রনার কথন ভালো লাগলো। পোস্টে প্লাস ।
বিগত কিছু পোস্টে ,আপনি দেখতাম অনেক পরে পরে কমেন্ট করতেন। জানিনা ব্যস্ততার সঙ্গে শারীরিক সমস্যা ছিল কিনা।
শুভকামনা ও ভালোবাসা জানবেন।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৩২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ, দাদা। জীবন এখন আমারও অনেক কঠিন। চলেছি সামনে। তবে পথ মৃসণ নয়।

শরীর ভালো আছে। কাজের সমস্যায় আছি। আপনার লেখা পড়তে মাঝে মাঝে ঢু মারি। ভালো থাকবেন সব সময়।

৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৫৫

মেহেদী হাসান হাসিব বলেছেন: আপনিতো অনেক বছর যাবৎ ব্লগিং করছেন। এত কম ভিউ ব্যাপারটা কেনো?

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আমার লেখার পাঠক খুবই কম। এতো কম যে বলাই লজ্জাকর। তবে পাঠক না পড়লে আমার তো কিছু করার নেই। আমি বিখ্যাত কোন ব্যক্তিও নই যে আমার লেখা পড়তেসবাই হুমড়ি খেয়ে পড়বে। তবে আপনি পড়েছেন দেখে আমার খুব ভালো লাগছে।

৬| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৫৮

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: জীবনের কাহিনি পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.