ছাগুবৃত্তান্ত

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১২ রাত ২:৩০

ছাগু মানে হচ্ছে ছাগল বা বকরি। ছাগল নানা জাতের হয়ঃ রামছাগলের নামই বেশি শুনছি। কিন্তু মামা কাহিনী সেইটা না। আমি বাঙ্গালী ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগুর কথাই আলোকপাত করবো। তার আগে আরও কিছু তথ্য দেই। বিচিহীন পুরুষ ছাগলকে খাসি বলা হয় আর বিচি থাকলে তাকে বলে পাঠা। বিচি থাকলে তারা মজা লইতে চায় ডার্লিঙের সাথে, তাই এদের গায়ে বিশ্রী গন্ধ থাকে। কোন কোন দেশে ছাগলের বিচি উপাদেয় খাদ্য, যেমনঃ ভারতের কিছু উপজাতি। টিভিতে দেখছি। বিচি ফালানো একদম সোজা। বিচির রং সাদা হয়। বিচি ফালাইলে খাসি দ্রুত বাড়ে। খাসি খাইতে খারাপ না, কিন্তু প্লাস্টিক প্লাস্টিক গন্ধ আসে, তাই অনেকে খায় না। আমি খাই, ব্যাপার না। খাসির মাংসের বিরিয়ানীকে বলে কাচ্চি বিরিয়ানী। ওহ, খাইতে যা অসাম। কাচ্চি উর্দু শব্দ, এর অর্থ খাসি। পাঠা বা খাসি, সিউর না আমি। পাঠা খাসি নিয়ে এতো কথা বলতেছি বইলা লাবণী দেবী গং আমাকে পুরুষবাদী সাব্যস্ত করতে পারে। কিন্তু না, আমি কোন বাদী না, হইলে বিবাদী হইতে পারি। এবার স্ত্রী ছাগল নিয়ে কথা বলি। স্ত্রী ছাগল শুধু ছাগল বলেই পরিচিত। তাই সবাই ''ছাগলের বাচ্চা'' এই ধরণের বকা দ্যায়, খাসির বাচ্চা, পাঠার বাচ্চা বকা দ্যায়না। তবে ''পাঠা'' একটা গালি। আমাদের স্কুলের এক স্যারকে আমরা পাঠা বলতাম। যাই হোক ছাগল কিন্তু দুধ দ্যায়। কিন্তু পাঠা হইল এক প্রকার ভোদাই, ''ছাগলের বাচ্চা''গুলিই সব দুধ খাইয়া ফালায়। এখানে ছাগলের বাচ্চা কোন গালি না বন্ধুগণ, কুত্তার কুকুর বাচ্চাগুলির মতো ছাগলের ছোট ছোট ছাগল বাচ্চা। কারণ কুত্তার বাচ্চা, বিলাইয়ের বাচ্চা, ছাগলের বাচ্চা, জানোয়ারের বাচ্চা বলতে বেশিরভাগ সময় মানুষকেই বুঝানো হয়। কিন্তু মানুষ কি আর উলান চেটে কাঁচা দুধ খাবে, তাই এগুলোই আসল ছাগলের বাচ্চা। তবে হালকা পানি দিয়ে সিদ্ধ করে ছাগলের দুধ খাওয়া যায়। কিন্তু স্বাদ কম। বুঝেন না ছাগল তো ছাগলই। এবার আসি হাগায়। হ্যাঁ, ছাগল হাগে, হাটতে হাটতে হাগে। গরু হাগার সময় হাম্বা হাম্বা করে কিন্তু নড়েনা। ছাগল নড়ে, নড়ে মানে দৌড়াই দৌড়াই হাগে। হাগা হচ্ছে গুটির মতো, রং গোবরের চেয়ে হালকা ডিপ। কিন্তু ভালো কথা হচ্ছে এই গুতে তেমন গন্ধ নেই। তাই মহাত্মা গান্ধীও ছাগল পালতেন। ছাগলের দুধ খেতেন। তাও আবার ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল। এথেকে বুঝা যায় ছাগলের দুধ খেলেই মহাপুরুষ হওয়া যায়। সাবেক রাজপুত্র লন্ডননিবাসী আল্লামা তারেক রহমান, তার বন্ধু গিয়াসুদ্দিন আল মামুন এবং খ্যাতিমান ব্যক্তিগত সহকারী মুসাদ্দেক আলী ফালুও ছাগলের দুধ খেতেন। তাই তারা সবাই মহাপুরুষ। কিন্তু গরুর দুধ খাবার কারণে কোকো মহাপুরুষ হতে পারেননি। এখন তার পুরুষত্বই হুমকির মুখে। ছাগলের দাড়ি হয়না, কিন্তু খাসি বা পাঠার দাড়ি হয়। দাড়ি অনেক সময় সাদা, খয়েরি, কালো এসব রঙের হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন দেশপ্রেমিক, তাই তাকে দেশনেত্রী বলা হয়। তিনি রামছাগল না দেশি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের কথা বলেছিলেন। তিনি ছাগল ভালবাসতেন, বিশেষ করে দাড়িওয়ালা পাঠা। কেন তা আমরা জানিওনা, বুঝিওনা। ২০০১ সালে তিনি পাঠাদের দল বাংলাদেশ জামায়াতে পিছলামির সাথে জোট বাঁধলেন। দেশের মানুষ যে গরুর চেয়ে ছাগল বেশি ভালোবাসে নির্বাচনে তা প্রমাণ হয়ে গেলো। পাঠাদের সাথে নিয়ে ক্ষমতায় এলেন খালেদা জিয়া। বিশিষ্ট কয়েকজন পাঠা হচ্ছেনঃ মতিউর রহমান নিজামি, আল্লামা দেলুয়ার হুসেন সাইদি, আলী আহসান মোঃ মুজাহিদ, মুফতি আমিনি, আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ। ২ জন পাঠাকে মন্ত্রী করে বেগম জিয়া পাঠা ও মানুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করলেন। দেশে ধন্য ধন্য পড়ে গেলো। এর পর তিনি নামলেন পাঠার সংখ্যা বৃদ্ধিতে। কারণ দাড়িওয়ালা পাঠা বেশি নাই। সামনে ক্ষমতায় আসবে ক্যামনে? এইভাবে সরকারীভাবে ''ব্ল্যাক বেঙ্গল কর্মসূচি'' হাতে নেয়া হল। ভালো মানুষ ধরে ধরে জোর করে ছাগল পালনে মানে ছাগল মানুষ করায় উদ্বুদ্ধ করা হল। মানুষ যা করলো, ছাগল মানুষ না কইরা মানুষরে ছাগল করলো। অনেক স্কুলপড়ুয়া পোলাপান ভর্তি হইলো মাদ্রাসায়। অতঃপর দেশে প্রায় ২৪ টি ছাগুফাইটার টিম গড়ে উঠলো। যেমনঃ জে এম বি, হিজবুত তাহরির এইসব অনেক। ছাগুরা দেশের ক্ষমতা পাইয়াই মানুষ আর ছাগুর সংখ্যা সমান বানানোর লাইগা মানুষ নিধন শুরু করলো। গরুপ্রেমিক ভারতপন্থি নেত্রী, ভাষাকন্যা শেখ হাসিনাকেও তারা মাইনাচ করতে যায়, কিন্তু সব কি সফল হয়? তারা গরুপন্থিদের গণহারে ধোলাই দিতে থাকে, কেউ মারা পড়ে, কাটা পড়ে, কারো কল্লা যায়। কুরবানিতে তখন শুধু গরু কাটা হতো। যাক ব্যাপার না। খাসি কে খায়। ছাগুরা ৬৪ জেলায় একযোগে বোমা ফাটায়। তখন জনতা বুঝতে পারে ছাগুর জোর কতো। ২ জন বড় ছাগুর আবির্ভাব হয়। শায়খ আব্দুর রহমান আর বাংলা ভাই। যাক ইতিহাস অনেক বললাম, ২ ছাগু এখন অতীত, আইনের হাতে তাদের কুরবানি হয়েছে। ছাগুর জ্বালায় বেগম জিয়ার কর্মসূচীও সফল হয় নাই, উল্টা গরুপন্থি নেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসছে। মধ্যে ২ বছর গাধাপন্থী ইয়াজুদ্দি-মইনুদ্দি-ফখ্রুদ্দি এই তিন গাধার কেয়ারটেকার সরকার ছিল। গরুপন্থি নেত্রী ক্ষমতায় আসার পর পর বড় বড় ছাগুদের ঘুম হারাম। তাদের কারণে অকারণে কুরবানি দেয়া হচ্ছে। অথচ কুরবানি দেয়ার কথা গরু। ছাগুসম্রাট বিশিষ্ট পাঠা গুয়া অরুফে গুলাম আজমের বিচি এই সরকার বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে। অতঃপর সকল পাঠাদের উপর নেমে আসে অসহনীয় নির্যাতন। সকল পাঠার বিচি আপাতত কারাগারে রেস্টে আছে। বিচার চলছে। বিচারে বিচি গুলি বাঁচানোর জন্য পাঠারা কুটি কুটি টাকা দিয়া বিদেশ থেকে বিচিযুক্ত পাঠা ভাড়া করে আনছে। দেখি শেষ পর্যন্ত কি হয়। দেশে এখনও রয়ে গেছে হাজার হাজার, লাখ লাখ বিচিযুক্ত ও বিচিবিসর্জিত খাসি ও পাঠা। কুরবানি আর কয়টারে দেয়া যায়। সমাজ, সংসার, ইন্টারনেট সবখানে পাঠা আর পাঠা। আমরা তাদের সাধারণত বলি ''ছাগু'', যা শুনতে পাঠার চেয়ে ভালো। ইদানীং ছাগুরা ফেসবুক, ব্লগে ভীষণ জ্বালায়। আজাইরা ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায় আবার ব্যান মারে। খালি সুন্দর, সুন্দর ভদ্র প্রাণীর সন্তান বইলা গালি দ্যায়। কল্লা ফালাইতে চায়, কিন্তু ওইটুকুই। আমরা বিচি নিষিদ্ধ আন্দোলন করি বইলা চামে চামে আমগো পেজগুলা, নিকগুলা রিপোর্ট মারে। এইভাবে আর চলেনা। ছাগুদের সাথে আর পারিনা। গরুপন্থি নেত্রীকে বলতে চাই, ছাগুদের সকল বিচি গণহারে হাইকুটের মাধ্যমে ব্যান করুন, বিচির জ্বালায় বাচতেছিনা। পাঠার গন্ধে টেকা দায়। অথবা হয় পাঠারা পাঠাপন্থী বেগম জিয়াকে নিয়া আবার ক্ষমতায় আসবে, তখন দেখবেন গরু কুরবানি কারে কয়। কিছুই না পারলে আমরা আবার গাধাপন্থিদেরও ক্ষমতায় আনতে পারি। অতএব সাবধান।

১৬ টি +৪/-০