| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রমিজ বাসা থেকে বের হয়েছে বাজারে যাওয়ার জন্য।রমিজকে তাঁর মা তিনশ টাকা দিয়ে বলেছে ভালো দেখে একটা মাছ আর কিছু সবজি নিয়ে আয়।মেয়েটা অনেকদিন পর জামাইকে নিয়ে আসবে,ভালো মন্দ না খাওয়ালে হয়!রমিজ বিরক্ত হয়।এত লম্বা কথা শোনার মতো সময় তাঁর হাতে নেই।সে খুব ব্যস্ত।এমনিতে সকাল আটটার আগে ঘুম ভাঙেনা রমিজের।কিন্তু আজ সারে পাঁটায় ঘুম থেকে উঠে গেছে।ক্লিন সেভ করে গোসল করে ফিটফাট।নেভী ব্লু জিন্সের সাথে কোন গেন্জিটা পড়বে সেটা নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিল কিছুক্ষন।পরে খেয়াল হলো, গত ভ্যালেন্টাইনে কনকের গিফট কালো টিশার্টটাই পরবে।আজ কনকের সাথে যেহেতু প্রথম দেখা, ওর দেয়া টিশার্ট গায়ে দেখলে কনক খুব খুশি হবে।
তুই এত সেজেগুজে কই যাস বাবা?মায়ের কথায় কপাল কুচকে যায় রমিজের।বলে-মেয়ের জামাইর জন্য বড় মাছ আনাতে পারো,আমি দশটা টাকা চাইলে দিতে চাওনা।আমি পারবো না বাজারে যাইতে।বাবাকে বলো।রমিজের কথা শুনে তাঁর মা অস্তির হয়ে যায়।কি বলে ছেলে!ঘন্টা খানেক পরে বিউটি তাঁর জামাই নিয়ে চলে আসবে।কখন রান্না করবে আর কখন খাওয়াবে।
রমিজের বাবা গুমাচ্ছে।নাকে গড় গড় শব্দ হচ্ছে।গভীর ঘুম।সকাল এখন নয়টার কাছাকাছি।ঘুম ভাঙতে কম করে হলেও আরো এক ঘন্টা লাগবে।কোন রাতে বাড়ি ফিরেছে কে জানে!রমিজের মা রাত জেগে বসে থাকে।কোনোদিন রাত দুইটা আবার কোনোদিন রাত তিনটা, সারে তিনটাও বেজে যায় কোনো রাতে।আগে না খেয়েই বসে থাকত।এখন আর না খেয়ে বসে থাকে না।রমিজের বাবা কোনো রাতে খেয়ে আসে আবার কোনো রাতে না খেয়ে আসে।ব্যাপারটা নির্ভর করে তাঁর টাকা পাওয়ার উপর।জুয়া খেলে যে দিন রমিজের বাবা টাকা হারিয়ে ফেলে সেদিন তাকে দেখলেই রমিজের মা এখন বুঝতে পারে।যত রাত করেই বাসায় আসুক দরজা খুলতে দুই মিনিট দেরি হলে রমিজের মায়ের সে রাতের শান্তি শেষ হয়ে যায়।
দরজা খুলতে দেরি হইলো ক্যান?গত রাতে ঘরে ঢুকেই রমিজের বাবার প্রথম কথা ছিল এটি।রমিজে মা কথা শুনে ভয় পেয়ে যায়।ভয় পাওয়ারও কথা।সে বুঝতে পারে আজ টাকা হারিয়েছে রমিজের বাবা।আজ রাতে কপালে না জানি কী দুঃখ নেমে আসে।রমিজের মা চুপ করে দরজাটা লাগিয়ে দেয়।কোনো কথা বলে না।রমিজের বাবা দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকে।ভিতরের রুমে আর যায় না।রমিজের মা ভিতরের রুমে চলে যেতে থাকে।তোমারে যে একটা কথা জিগাইলাম,কানে ঢোকে নাই?বয়রা নাকি?রমিজের মা দাঁড়িয়ে যায়।বলে ভিতরে চলেন।খাইছেন?এমন যত্নে ভরা প্রশ্নেও রমিজের বাবা শান্ত হয়না।তোমারে যেইডা জিগাইছি,হেইডা কও।দরজা খুলতে দেরি করলা কেন?রমিজের মা বিচলিত।এই মানুষটাকে এখন কী করে শান্ত করবে ভেবে পায়না।মাথা নিচু করে শান্ত স্বরে বলে-আমি বাথরুমে গেছিলাম।আওয়াজ শুনতে পাই নাই।চলেন ভাত খাবেন।বলেই রমিজের বাবার বাম হতটা ধরে ফেলে।এক ঝাটকায় হাত ছাড়িয়ে নেয় রমিজের বাবা।চিৎকার করে বলে-ঢং করো আমার সাথে?এই সব ঢং আমার সাথে করবানা।তোমার বাপের বাড়ি গিয়া কইরো।বলে শোয়ার রুমের দিকে চলে যায় রমিজের বাবা।রাত তখন সোয়া তিনটা।
তোর বাবা অনেক রাতে ঘুমিয়েছে।এখন উঠাতে গেলে আমারে মাইরাই ফালাইবো বাবা,তুই একটু বাজারে যা।বেশি সময়তো লাগবে না।বাজারতো কাছেই।রমিজ তাঁর মাকে ধমক দেয়।ধমেকের সুরে বলে-ওহ মা,তোমার একটা প্রবলেম কী জানো?তুমি কথা শুরু করলে আর থামোনা।দাও, ব্যগ দাও।রমিজের মা খুব খুশি হয়।মুখে হাসি ফোটে।চোখে মুখে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে।রান্না ঘর থেকে তারাতারি বাজারের ব্যাগ নিয়ে আসে।রমিজের হাতে দেয়।বলো কী মাছ আনবো?তারাতারি কইবা কিন্তু।বেশি প্যাচাল পারবা না।ছেলের এমন কথা শুনেও তিনি রাগ করেন না।রমিজের পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বলে-আচ্ছা বাবা,এখন তারাতারি যা।
বিউটি চোইলা আসবো।
বাজার রেখে রমিজ হাত মুখ ধুয়ে নেয়।গামছা দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে মনে পড়ে পারফিউম লাগানো হয়নি।পারফিউমটা হাতে নিয়ে বুকের বাম পাশে টিশার্টে একবার পারফিউম দেয়।দুই হাতের দুই বগলে পারফিউম দিতে দিতে রমিজ ভাবে গোসল করার সময় আজ বগল পরিস্কার করা উচিৎ ছিল।কনকের সাথে আজই প্রথম দেখা হবে।নিজেকে পবিত্র করা দরকার ছিল।এখন কী আবার গোসল করব?রমিজ চিন্তা করতে থাকে।আবার ভাবে না থাক,হাতে একদম সময় নেই।সারে দশটা বেজে গেছে।কনক বলেছে এগারটায় আসবে।রমিজ ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় নিজেকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখে।একবার ডান গালের দিকে তাকায়,একবার বাম গালের দিকে তাকায়।কোমরের দুপাশে টিশার্টটা আস্তে করে ধরে নিচের দিকে টেনে সোজা করে।হ্যা, এবার ইন করাটা ঠিক আছে।শেষ বারের মতো চুলটা আচড়িয়ে নেয়।
মায়ের ডাকে রমিজ দরজার দিকে ফিরে তাকায়।কপাল কুচকে যায়।মনে মনে ভাবে আবার না জানি কোন ঝামেলায় ফেলে।বাবা রমিজ,কাচামরিচের কথা তো কইতে ভুইলা গেছি বাবা।ঘরে একটাও কাচামরিচ নাই।বিউটির জামাই চিটাগাঙের পোলা।শুকনা মরিচের তরকারিতো খায়না।একটু কাচামরিচ আইনা দেনা বাবা।রমিজ নিজের রাগ সামলাতে পারেনা।কপাল কুচকে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে।কি বলবে বুঝতে পারছেনা।তোমারে নিয়া হইছে এক জ্বালা।আগে মনে থাকেনা ক্যান?আমি এখন আবার বাজারে যাইতে পারবো না।আমার কাজ আছে।বলেই রমিজ মাকে ঠেলে পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়।রমিজের মা মন খারপ করে।গোমরা মুখে রমিজের দিকে তাকিয়ে থাকে।কাচামরিচ ছাড়া রান্না কইরা কী হবে,কে খাবে?তখন তোর বাপকে কত করে বললাম,চিটাগাঙের পোলার লগে মাইয়া বিয়া দিওনা,আমার কথা হুনলোই না।বলেই রমিজের মা কাঁদতে শুরু করে।রমিজ মাকে কাঁদতে দেখে মায়ের কাছে এগিয়ে যায়।মায়ের কাধে হাত রাখে।রমিজের মা চোখ মুছতে মুছতে চেয়ারে বসে পড়ে।মা তুমি কেঁদোনা,আমি কাচামরিচ নিয়া আসতেছি।রমিজ আবার বাজারে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়।মা চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ায়।তোর কাছে কাচামরিচ কেনার টাকা আছে বাবা?গোমরা মুখে রমিজ বলে-আছে মা।রমিজ আর মায়ের দিকে তাকায় না।আবার বাজারে যাওয়ার জন্য হাটা শুরু করে।
সমাপ্ত
২|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮
বোকামন বলেছেন:
সহজ সরল গল্প ভালো লাগছে ভাই ...
প্রথম ভালো লাগা ...
ভালো থাকবেন কবি
৩|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:১৯
shfikul বলেছেন: ৎ্ অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
৪|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:২৫
shfikul বলেছেন: বোকামন,কবি বলেন ক্যান!আমি কী কবি নাকি!কিছু আবেগী কথা এলোমেলো করে লিখলেই কী কবি হওয়া যায় ভাই!কবি অনেক উপরের ব্যাপার।ঐ স্তরে পোছানোর যোগ্যতা আমার এখনো হয়নি।তবে দোয়া করবেন যেনো ভালো লিখতে পারি,আর শিখতে পারি।অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও।
৫|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৩২
বোকামন বলেছেন:
সাধারন এই পাঠক আপনার জন্য দোয়া ও শুভকামনা জানাচ্ছে..
ভালো থাকবেন ভাই...
৬|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩১
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর।দারুন লিখেছেন।ভাল লাগলো।যে সুন্দর কবিতা লিখে সে তো সুন্দর গল্পও লিখবে।কবিতার মত চমৎকার।
৭|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯
রাইসুল সাগর বলেছেন: সহজ সরল গল্পে অনেক অনেক ভালো লাগা রেখে গেলাম ভাই। শুভকামনা জানিবেন সব সময়। ভালো থাকুন বেলা অবেলার গল্পে।
৮|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫০
shfikul বলেছেন: ধন্যবাদ সেলিম আনোয়ার আপনাকে
৯|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫২
shfikul বলেছেন: ধন্যবাদ রাইসুল সাগর আপনাকে
১০|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৭
ইখতামিন বলেছেন:
অনেক ভালো লাগলো ![]()
১১|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৯
shfikul বলেছেন: ধন্যবাদ ইখতামিন আপনাকে
১২|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:০৭
মাক্স বলেছেন: কনকের সাথে কি দেখা হবে না রমিজের?
বর্ণনা ভালো লেগেছে!
১৩|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:২৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আপনি কবিতার পাশাপাশি গল্প খুব ভাল লেখেন +++++
১৪|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:৪১
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
ভালোলাগা।
++++
১৫|
২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৫২
একজন আরমান বলেছেন:
আপনার গল্পের দক্ষতাও দেখিয়ে দিচ্ছেন আমাদের।
চলুক গল্প লেখা
১৬|
২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৩৬
shfikul বলেছেন: মাক্স,কনকের সাথে দেখা হবে কিনা আমি জানিনা,ধন্যবাদ আপনাকে।
১৭|
২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৩৭
shfikul বলেছেন: ধন্যবাদ কান্ডারী অথর্ব।
১৮|
২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৪০
shfikul বলেছেন: ধন্যবাদ স্নিগ্ধ শোভন।
১৯|
২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৪২
shfikul বলেছেন: একজন আরমান,ধন্যবাদ আপনাকেও।
২০|
২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৫৬
দিকভ্রান্ত*পথিক বলেছেন: ৮ম ভাল লাগা, বেশ ভাল লেগেছে ভাই।
২১|
২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:১৬
shfikul বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ দিকভ্রান্ত পথিক।
২২|
২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:১৭
ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: শেষ হইতে মঞ্চায়তাছিলো না । তারপরও শেষ করে দিলেন ।
২৩|
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:১০
জাকারিয়া মুবিন বলেছেন:
ভাই আপনে তো দেখি সিরিয়ালি গল্প লেখা শুরু করসেন। ভাল ভাল।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫
ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: গল্প ইদানীং পড়াই হয়না, আপনারটা খুব ভালো লাগলো শফিক ভাই! অনেক ভালো লাগ রেখে গেলাম!