নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানভির জুমার

সব সময় সব জায়গায় সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে।

তানভির জুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সভ্যতা বনাম ছাত্রলীগ।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৩

ঝিনাইদহের মহেশপুরে অসুস্থ বাবার সামনে এক তরুণকে নিজের মুখে জুতার বাড়ি দিতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. আরিফুজ্জামান বিপাসের পা ধরেও ক্ষমা চাইতে হয়েছে ওই তরুণকে। এই দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে পড়েন হাসপাতালের চিকিৎসাধীন বাবা গিয়াস উদ্দিন সরকার।

৮ ডিসেম্বর মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন (৬২)। সেই দৃশ্যের স্মৃতি নিয়ে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়।

ভুক্তভোগী ওই তরুণের নাম এস এম সরকার ওরফে হোসেন সরকার। তিনিও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁদের বাড়ি মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর গ্রামে। মুখে জুতা মারার ঘটনার পর দুঃখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এস এম সরকার লিখেছিলেন, ‘মানুষ কখন আত্মহত্যা করে?’ বাবার মৃত্যুর পর তিনি কথা বলার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছেন। শুধু বলছেন, ‘ওরা আমাকে জুতা মারতে বাধ্য করার কারণে অসুস্থ বাবা খুব কষ্ট পেয়েছেন, যে কারণে তাঁকে বাঁচানো গেল না।’

বিজ্ঞাপন
জুতা মারার ঘটনা সরাসরি অস্বীকার করেননি ছাত্রলীগ নেতা আরিফুজ্জামান। তবে ঘটনা নিয়ে তাঁর ভাষ্য, তাঁরা ওই কর্মীর অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন। এ সময় এস এম সরকার দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত দিন আপনাদের সঙ্গে বিরোধ করে এসেছি, অথচ আপনারা আমার বাবাকে দেখতে এসেছেন। আমি এত দিন ভুল করেছি, এর জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।’

ছাত্রলীগ নেতা আরও দাবি করেন, ওই কর্মী নিজেই তাঁকে জুতা দিয়ে মারতে বলেন। তখন তিনি নিজে না মেরে পা থেকে জুতা খুলে এগিয়ে দেন। তখন তিনি নিজেই জুতা মারেন।

অসুস্থ বাবার সামনে তরুণকে মুখে জুতা মারতে বাধ্য করলেন ছাত্রলীগ নেতা।

এস এম সরকারের ভগ্নিপতি মোমিনুর রহমান বলেন, এস এম সরকার ছাত্রলীগ করেন। মাঝে কিছুদিন ঢাকায় ছিলেন। অল্প দিন হলো বাড়িতে এসেছেন। তিনি ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের বিপক্ষে ছিলেন। দুই পক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা লেখালেখি করে। এই লেখালেখি নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।

মোমিনুর রহমান বলেন, তাঁর শ্বশুর গিয়াস উদ্দিন সরকার ৭ ডিসেম্বর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং কিছুটা সুস্থতার দিকে যাচ্ছিলেন। হাসপাতালে বাবার পাশে ছিলেন ছেলে এস এম সরকার। সেখানে তাঁর মা মোছা. খাদিজা খাতুনও উপস্থিত ছিলেন। এক দিন পর ৮ ডিসেম্বর রাতে ছাত্রলীগ নেতা আরিফুজ্জামান বিপাস তিন–চারজন অনুসারী নিয়ে সেখানে যান। তাঁরা এস এম সরকারকে পেয়ে অসুস্থ বাবা ও পাশে থাকা মায়ের সামনেই তাঁর ওপর চড়াও হন। ফেসবুকে নানা কথা লেখার প্রসঙ্গ তুলে চাপ সৃষ্টি করেন। এ সময় এস এম সরকার তাঁদের আক্রমণাত্মক পরিস্থিতি দেখে ক্ষমা চান। একপর্যায়ে পায়ে ধরেও ক্ষমা ভিক্ষা চান। এরপরও ছাত্রলীগ সভাপতি নিজের পায়ের জুতা খুলে এগিয়ে দেন। হুকুম দেন নিজের মুখে জুতার বাড়ি মারতে। উপায় না দেখে এস এম সরকার নিজের মুখে জুতা দিয়ে বাড়ি মারেন।

মোমিনুর রহমান বলেন, এই ঘটনার পর তাঁর শ্বশুর মানসিক কষ্টে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁরা কাছে গেলে শুধু প্রশ্ন করতে থাকেন, কেন ছেলেকে দিয়ে নিজের মুখে জুতার বাড়ি দেওয়ানো হলো। তাঁর ছেলে কী অপরাধ করেছেন? কিন্তু তিনি কোনো উত্তর খুঁজে পাননি, ছেলেও বাবার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি।

এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন গিয়াস উদ্দিন। তখন তাঁরা যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তিনি মারা যান। কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়ে মোমিনুর রহমান বলেন, ছেলের ওপর এই নির্যাতন সইতে না পেরেই তিনি চিরদিনের মতো চলে গেলেন। তাঁরা এই ঘটনার বিচার চান।

এস এম সরকার সরকার বলেন, ‘জুতা মারার দৃশ্যটি দেখলেই বুঝতে পারবেন, আমার ওপর কী অত্যাচার করা হয়েছে।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে পারেননি, শুধু কান্নাকাটি করেছেন।

সূত্র: প্রথম আলো।


মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:১১

রাজীব নুর বলেছেন: ছাত্রলীগ বড় ভয়ঙ্কর।

২| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৬:২২

জগতারন বলেছেন:
ছাত্রলীগের কারণে শিক্ষাব্যবস্থা আজ ধ্বংসের পথে।
প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হলগুলো তাদের কাছে জিম্মি।
প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেন্ডার তারা নিয়ন্ত্রণ করে।
হলগুলোকে মাদকের অভয়ারণ্য তারা বানিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে দেখুন প্রতিটা ভার্সিটির শিক্ষক এবং ছাত্ররা তাদের প্রতি কত বিরক্ত।
আর একদল ভার্সিটিতে পড়ে চামচা তৈরি হচ্ছে।
তাদের চোখে মুখে কবে সভাপতি হব, সেক্রেটারি হব?
এই আশায় চামচামি করতে থাকে।
মেরুদন্ডহীন ভার্সিটি প্রশাসনও তাদেরকে সাপোর্ট দিয়ে যায় নিজের গদি রাখার স্বার্থে।
তাই ভার্সিটির শিক্ষা ব্যবস্থা ভালো করার জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা জরুরি।

৩| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৬:২৬

জগতারন বলেছেন:
ছাত্রলীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ ইত্যাদি অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয়
ও মহানগর কমিটির সভাপতি সেক্রেটারি হাওয়া আলাদিনের চেরাগ এর চেয়েও বেশি কিছু পাওয়া।
তা বিগত কয়েক কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারি দের অতীত ইতিহাস ঘাটলেই পাওয়া যাবে।
শূন্য থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পাওয়ার পর আর্থিক হিসাব করলেই বোঝা যায়।

৪| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৬:২৮

জগতারন বলেছেন:
আওয়ামী লীগ গর্জে ওঠো।
দুর্নীতি মুছে ফেলো।
দেশ গড়তে অনেক সময় তো পাওয়া গেছে,
এখনো না হলে আর কবে হবে!

৫| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৬:৩০

জগতারন বলেছেন:
ছাত্র রাজনীতি দেশের উন্নয়ণ ও আইনের সুশাসনের পথে সবচেয়ে বড় বাধা।
কথাটি প্রমাণ করতে আর কত সময় নেবে এদেশের সরকারগুলো?

৬| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:০২

বিটপি বলেছেন: চ্যাতনার রস যাহাদের দুই পায়ের চিপায় না গিয়া মস্তকে চলিয়া যায়, উহাদেরকেই ছাত্রলীগ বলে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.