নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরাই একদফা কনে দেখতে গেলাম । ঘোমটা পরে কনে বসে খাটের ওপর । আমাদের সঙ্গী মহিলারা ঘোমটা একটু তুলে মুখশ্রী দেখলেন তারপর খুবই মৃদু স্বরে ইন্টারভিউ । মেয়ের সঙ্গী কম বয়েসি একজন সব উত্তর উচু গলায় দিয়ে দিচ্ছিল । আমাদের এক মুরুব্বী তাকে জিজ্ঞাসা করলেন বিয়ে কি তোমার না বসে থাকা কনের । মেয়েটি লজ্জা পেয়ে তার মাইক বন্ধ করল । এ হচ্ছে বাঙালি জীবনের এক নিত্য দৃশ্য , কনে দেখা । তারপর চালু হল মার্কেটে গিয়ে মেয়ে দেখা । হবু জামাই সচক্ষে কনে দেখবে , কনে ওড়না মাথায় নেই , হাল্কা সাজ । সকাল ১১ টার রোদে এরকম দর্শন বেশ সিনেমাটিক । মার্কেটে দেখে পছন্দ হলে তারপর কথাবার্তা , মেয়ের বাসায় বসে । সেখানে মেয়ে কি রান্না পারে বা সেলাই টেলাই বা গান করে কিনা তা জানতে চায় বরপক্ষ । দুপক্ষ রাজী হলে ডেট ঠিক হয় । অনেকে ওখানে বসেই আংটি পরিয়ে ব্যাপারটাকে আরেক ধাপ মজবুত করে নেন । সেই আমলে আমার ধান্ধা ছিল দারুন খাবার দাবার , কনে দেখে আমি কি করব । এক দেখাদেখির আসরে আমাদের পক্ষের কনের শাড়ি তুলে বর পক্ষ মহিলারা দেখতে চেষ্টা করলে আমাদের মহিলারা তীব্র ভাষায় বাঁধা দিল । তারা বলল কনে ল্যাংড়া কিনা তা দেখতে চেয়েছিল তারা । আমরা এহেন অসভ্য আচরনের জন্য এই বিয়ে বাতিল করে দিলাম । বরপক্ষকে বিদায় জানানো হল নাস্তা পানি বাদ দিয়েই ।
বয়েস হয়েছে ২০০৩ সাল বোধ করি । খুলনার ডাক বাংলার মোড়ে ছবির দোকানে দাড়িয়ে । একটা ছেলে পি সিতে ফটোশপে একটা মেয়ের কালো হাত বাদ দিয়ে ফরসা হাত বসিয়ে দিল । তাজ্জব আমি ! সে আমায় বলল এগুলো নরমাল ব্যাপার । আমি অর্ডার পেলে এই আকাম করি , আয় ভাল , যা কিছু ঘটবে তা ছেলেকেই পোহাতে হবে ।
এখনকার সময়ে ফেসবুকে মেয়ের ছবি দেখে এবং ছেলের ছবি দেখে তারপর স্থির হয় এই বিয়ে কি সফলতার মুখ দেখবে কিনা । অনেক মেয়েপক্ষ ছেলের কান কাটা কিনা তা কনফার্ম করতে চায় । সমস্যা কি? না সবাই বলবে কানকাটা জামাই ধরে আনলে কোথা থেকে ।
এরকম একটি সিচুয়েশনে মেয়ের মানসিক অবস্থা কেমন দাড়ায় !! এক বয়স্ক মেয়ের বিয়ে ঠিক কিন্তু পাড়ার শত্রুরা জানিয়ে দিল পাড়ার আক্কাসের লগে মেয়ের লাইন আছিল । মেয়েটি রাতে গলায় দড়ি দিয়েছিল ।
আমি ভার্সিটিতে তখন , কনে দেখতে গিয়ে অনেকে গেলাম , কনের বাবা আমার লম্বা চুল , গোঁফ দেখে ভেবেছে এনাকে রাজী করাতে পারলে বর রাজী হবে । চলে আসার সময় তিনি আমার হাত জড়িয়ে কান্না শুরু করে দিলেন । আমরা বললাম সিদ্ধান্ত টেলিফোনে দেওয়া হবে । সেই বৃদ্ধ কন্যা দায়গ্রস্থ , আমার আজো মনে পড়ে ।
ব্যাক্তিগত জীবনে এক কন্যার বাবা আমি । ফেসবুকে কন্যার ছেলে বন্ধুদের ছবি দেখে সন্দেহ হল । সবে চাকুরীটা শুরু করেছে , লাইন বিগড়নোর আগেই ফ্লাগ তুলে দিতে হবে । টোপ ফেললে মেয়ে তা গিলল । সিদ্ধান্ত নিলাম বিয়ের । তাছাড়া ওর মায়ের শেষমুহূর্ত , আগেভাগেই কাজ শেষ করি ।
এইযে কালচারের কথা বললাম এখনো বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে প্রচলিত । কত মেয়ের মন ভেঙ্গেছে , দমে গেছে , মানসিক বিপন্নতা এসেছে । সবচে ভাল লাগে গার্মেন্টসের গেটে বেরিয়ে আসা মেয়েদের অপেক্ষায় বখাটে ছেলেদের দাড়িয়ে থাকার দৃশ্য দেখলে । এখানে মেয়েটার বেতনের সাথে জড়িয়ে সকল স্বার্থ । অনেকের জীবন বিপন্ন হয়েছে আবার অনেকেই সুখে আছে ।
পাঠক আপনারাও যোগ করুন আপনাদের কথা , অভিজ্ঞতা ।
ছবি ঃ ফেসবুকের অজানা উৎস থেকে ।
০৮ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:৩২
শাহ আজিজ বলেছেন: ব্যাপারটা তো তাই হওয়া উচিত ।
২| ০৮ ই জুন, ২০২১ রাত ১১:০৪
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: বর আমি নিজেই ছিলাম কনে দেখতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা ভালো ছিলো না। আজকালকার বেশীরভাগ বিয়ে উপযুক্ত (বয়সের দিক থেকে) মেয়েরা অত্যন্ত বেয়াদপ টাইপ বলে আমার ধারনা হয়েছে। বিয়ের পরে তাদের বাবার বাড়ির প্রতি মাত্রাতিরিক্ত মোহ অত্যন্ত ঘৃণ্য। এদের অনেকেই আবার বিয়ের পর মায়ের কু-বুদ্ধিতে সংসার করতে গিয়ে নিজের পায়ে কুড়াল মারে। সেটা বুঝতে বুঝতে অনেকের অবশ্য ডিভোর্সি খেতাব পড়ে যায়। বিষয়গুলো দুঃখজনক। আমার বিয়ের দেনমোহর আমি নিজেই ঠিক করেছি।
০৯ ই জুন, ২০২১ সকাল ৯:০৩
শাহ আজিজ বলেছেন: এখন নিশ্চয়ই ভাল আছেন !!
৩| ০৯ ই জুন, ২০২১ সকাল ৮:০৫
কামাল১৮ বলেছেন: কনে দেখা এটা একটা বিড়ম্বনা।বর্তমানে অনেক কমে গেছে।আমার দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি কিন্তু কনে দেখতে কেউ বাড়ী আসে নাই।দিন তারিখ ঠিক করতে আসছে।নাতি নাতনি নিয়ে সুখেই আছে।
ওর মায়ের শেষ মুহূর্ত,বিষয়টা কি?
০৯ ই জুন, ২০২১ সকাল ৯:০১
শাহ আজিজ বলেছেন: ওর মায়ের ক্যান্সার চলছে এবং আমরা জানি যে সে আর বেশিদিন নেই । ২০১৭ তে প্রস্থান ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:৩১
এম ডি মুসা বলেছেন: এতজনে দেখা লাগে, যার বিয়ে সে দেখলেই হয়