নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অলস গল্পকার

মাথায় অনেক গল্প আসে; কিন্তু লেখার মত পর্যাপ্ত ধৈর্য-শ্রম-অধ্যবসায় নেই। গল্পগুলোকে তাই ছোট করে কবিতা বানাই...

শাহেদ খান

আমি খুব ভাল একটা ছেলে। আমার সবচেয়ে ভাল দিক হল, কথাটা আমি বিশ্বাস করি ! :) ব্লগের বাইরে যোগাযোগে: [email protected]

শাহেদ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইম্প্রেশনিস্ট আর্টিস্ট :: কামিল পিসারো (Camille Pissarro)

১০ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩১



রবিবার, সাপ্তাহিক ছুটি'র দিন। দুপুর থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে একটানা। কফি বানিয়ে হোটেলরুমের জানালার পাশে এসে বসলাম - দেখতে লাগলাম বৃষ্টিভেজা এই অচেনা শহর আর শহরের মানুষগুলোকে। হঠাৎ মনে হল, আচ্ছা, এখন পিসারো উপস্থিত থাকলে তিনি কিভাবে দেখতেন এই জনজীবন? আর কিভাবেই বা এঁকে রাখতেন? যে মানুষটার প্রায় একক প্রচেষ্টায় পৃথিবীর পুরো চিত্রশিল্পের ইতিহাসই পাল্টে যেতে শুরু করেছিল, তার চোখে এক-পৃথিবী দেখার চিন্তায় বিভোর হয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। কামিল পিসারো (Camille Pissarro) - তাকে বলা হয় 'ইম্প্রেশনিজম'-এর জনক। তবে এমন জনক না, যে জন্ম দেয়ার পরই সন্তানকে ছেড়ে-ছুড়ে চলে যায়; কামিল পিসারো ইম্প্রেশনিজমকে গড়েছেন, লালন-পালন করেছেন, আর শুধু 'শিল্প' না - সব 'শিল্পী'দের প্রতিও তিনি সবসময় থেকেছেন এক নিরলস অভিভাবকের মত। পিসারো যেন আরেক ক্লাসিক উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র! ব্যক্তিগত জীবনে তাকে প্রচুর সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে সারাটা জীবন; তাই যখনই কোনও শিল্পীকে তার মত সংগ্রাম করতে দেখেছেন, তিনি পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন ছায়ার মত। অথচ শিল্প-আন্দোলনের প্রাণপুরুষ হিসেবে তার মত একজনের আগমনটা ছিল আর্টের জগতে সবচেয়ে অদ্ভূতুরে ঘটনাগুলো'র মধ্যে একটা ! অদ্ভূত বলছি তার ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে ! একেবারে অকল্পনীয় একটা জায়গা থেকে উঠে এসে একটা ছেলে কিভাবে আর্টের ইতিহাস পাল্টে দিল - আজ বলব সেই গল্প ! ইম্প্রেশনিস্টদের ঝলমলে দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম !





কামিল পিসারো



যে লোকটার হাত ধরে প্যারিসে শিল্পজগতের সবচেয়ে নাটকীয় বিপ্লবটা হয়ে যাচ্ছিল, তার জন্মস্থান কোথায় - এটা আপনাকে অনুমান করতে দিলে আমার ধারণা আপনি কিছুতেই তার জন্মভূমি দেশ'টার কথা ভাবতে যাবেন না ! প্যারিস থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার মাইল দূরে - 'ওয়েস্ট ইন্ডিজ'এর ভার্জিন আইল্যান্ডে ! শিল্পের দুনিয়া থেকে একেবারে যতটা দূরে জন্মানো সম্ভব ! এমনকী তার বেড়ে ওঠাও প্যারিসে না ! তার ওপর, পিসারো'র জন্ম এক ইহুদী পরিবারে ! আপনাকে যদি বলা হয়, পিসারো'র আগের কোনও ইহুদী গ্রেট আর্টিস্টের নাম খুঁজে বের করতে, আপনি পাবেন না ! তেমন কেউ ছিলেনই না ! ইহুদীদের মাঝে শিল্পচর্চার ব্যাপারটা একেবারেই দেখা যেত না। কে জানে, এর কারণটা হয়তো ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ~







হিব্রু বাইবেলের সেকেন্ড কমান্ডমেন্ট, যেখানে স্পষ্টভাবে বলা আছে কোনও জীবন্ত কিছুর কোনও রকম প্রতিকৃতি তৈরি করা যাবে না। যে কারণে, দেখা যায় খ্রিস্টানদের চার্চে জিসাস-মেরী-জোসেফের ছবি'র ছড়াছড়ি থাকলেও, ইহুদী'দের সিনাগগ'গুলোর দেয়াল সবসময় নিরেট সাদা।

ধর্মীয় বাঁধা থাকুক বা না থাকুক, পিসারো'র ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকি'র অভ্যাস ছিল। তার উপর পারিবারিক একটা বিব্রতকর কাহিনী'র জন্যে তার ফ্যামিলি ছিল স্থানীয় ইহুদী সমাজে রীতিমত একঘরে (ওই বিব্রতকর কাহিনীটা এখানে বলতে চাইছি না, সেটা পোস্টের উদ্দেশ্য না)। যাই হোক, এসব কারণে ধর্মের টান প্রবল থাকার কথা না। কিশোর বয়সে বাবা তাকে ফ্রান্সের এক বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়ে দেন। ক্রমেই আর্টের প্রতি তার আকর্ষণ আর দক্ষতা বাড়তে থাকে, শুধু ছবি আঁকার জন্য এক আর্টিস্ট বন্ধুর সাথে তিনি বছরদুয়েক ভেনেজুয়েলাতেও কাটিয়ে আসেন। বয়স যখন পঁচিশ, কামিল পিসারো প্রথমবারের মত পা রাখেন চিত্ররূপময় জগৎ প্যারিসে ! তখনকার সময়ের গ্রেট আর্টিস্ট গুস্তাভ ক্যুরবে', জাঁ ফ্রাঁসোয়া মিল্যে, কামিল করোট'দের সংস্পর্শে এসে পিসারো আরো পরিণত হয়ে উঠতে থাকেন। এ কিন্তু সেই 'কামিল করোট', যিনি বার্থ মরিস' আর তার বোন এডমা'কেও শিল্পীসমাজে পরিচিত করিয়ে দিয়েছিলেন।







সিনিয়র এসব শিল্পীদের সাথে আউটডোরে ল্যান্ডস্কেপের কাজ করলেও, একটা দিক থেকে পিসারো'র সাতন্ত্র্য ঠিকই তাকে আলাদা করে ফেলছিল। অন্য শিল্পীরা আউটডোরে ছবির থিমটা তুলে নিয়ে গেলেও, পরে স্টুডিওতে গিয়ে নিখুঁত ফিনিশিং-এর কাজ করতেন, ব্যাপারটা পিসারো'র মোটেও পছন্দ হল না। তার নিয়ম ছিল, বাইরে ঠিক যা দেখবেন, সেখানেই সেটা এঁকে শেষ করবেন, তাতে দৃশ্যের প্রাথমিক ইম্প্রেশনটুকু অটুট থাকে। পরে তিনি তার ছাত্রদেরও বলেছিলেন,



"Work at the same time upon sky, water, branches, ground, keeping everything going on and equal basis and unceasingly rework until you have got it. Paint generously and unhesitatingly, for it is best not to lose the first impression."

[ Rewald, John. The History of Impressionism, Harry Abrams, (1990) p. 458]



কোনও রকম দ্বিধা ছাড়া, উদার মনে ব্রাশ চালিয়ে যেতে। দৃশ্যটা মনের মাঝে যে প্রাথমিক ইম্প্রেশন তৈরি করে - সেটাকেই ধরে রাখতে ! পরে আবার ঘরের মাঝে গিয়ে কল্পনার রং মিশিয়ে ছবিকে 'পারফেক্ট' করার চেষ্টা তার কাছে ছিল একেবারেই অনর্থক একটা কাজ - "It is absurd to look for perfection."



এসব কারণে করোট এবং অন্যান্যদের সাথে তার মতপার্থক্য দেখা দেয়। কারণ অন্যদের মত কল্পনার রং চড়িয়ে পিসারো প্রকৃতির 'গৌরবময় গাম্ভীর্য'কে ফুটিয়ে তুলছিলেন না, তার ছবিতে ছিল চলমান বাস্তবতা। এবং তার মতের আর পথের লোকজন হিসেবে তিনি দেখা পেলেন কয়েকজন কমবয়সী তরুণ শিল্পী'র - এদের ব্রাশের কাজও অবাধ্য আর জোরালো, এদের ছবিগুলোও জীবন্ত আর চঞ্চল, এদের নামগুলো - ক্লদ মনে', ফ্রেডরিখ বাযিল, রেনোয়া, আলফ্রেড সিসলী... শুরু হল এক নাটকীয় ইতিহাস ! আমি আগে থেকেই বলে আসছি, 'ইম্প্রেশনিজম'-এর ইতিহাস নিয়ে আলাদা করে একটা পোস্ট দেয়ার ইচ্ছে আছে। তার আগে আলাদা আলাদা করে এর শিল্পীদের গল্প বলে যাচ্ছি। যুদ্ধের গল্প শুরু করার আগে এর সৈনিকদের পরিচিত করিয়ে নিই, তাহলে পরে যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি বুঝতে সুবিধা হবে ! তাই 'ইম্প্রেশনিজম'-এর পুরো গল্পটা স্থগিত রেখে এখন আমরা চলে যাব পিসারো'র ছবির জগতে !







পিসারো যখন প্যারিসে এসে পৌঁছান, তখন এই উন্মাদনা'র শহরে যেন মহামারী লেগে গেছে ! সবকিছু অস্থির, ভয়ানক গতিশীল - প্যারিসের জীবনযাপন পাল্টে যাচ্ছিল খুব দ্রুত। পরিসংখ্যান যদি চান, ১৮৫০-এ প্যারিসের লোকসংখ্যা ছিল লাখদশেক, আর ১৮৭০-এ সেটা বিশ লক্ষ ছাড়িয়ে যায় ! মাত্র দুই দশকে এই বিশাল পরিবর্তন পাল্টে দিচ্ছিল মানুষের লাইফস্টাইল, আর সেটা গাঢ় ছাপ ফেলেছিল আমাদের শিল্পীদের ওপরও... মনে' বা রেনোয়া'র প্রায় সব ছবিতে দেখা যায় আনন্দ-উৎসব, জীবনকে উপভোগের গল্প। কিন্তু ছোট গ্রাম-সমাজ থেকে আসা পিসারো'র চোখে বুর্জোয়াসমাজের এই ভোগ-বিলাসিতা বা ছেলে-মেয়েদের অবাধ উদযাপনের সাথে মানিয়ে নেয়া অত সহজ ব্যাপার ছিল না। তাই দেখা যায়, পিসারো'র অধিকাংশ ছবি প্যারিসের আশেপাশের গ্রামগুলোকে ঘিরে !



















প্যারিসের পত্রিকায় তাকে নিয়ে লেখা হচ্ছিল, "The brightness of his palette envelops objects in atmosphere. . . He paints the smell of the earth"

লাইফস্টাইলের ক্ষেত্রেও - রেনোয়া'র ছবিতে নিখুঁত এক্সপ্রেশনে যখন নাগরিক মানুষের উচ্ছাস-চঞ্চলতা ধরা পড়ছে, ঠিক তখন পিসারো'র ছবির লোকগুলোকে দেখা যায় কাজে-কর্মে ভয়ানক ব্যাস্ত !























শুধু কর্মব্যস্ততা নয়, তার উৎসবমুখরতাও ছিল পরিশ্রমী মানুষগুলোকে নিয়ে...







প্যারিসে পিসারোকে পুরোটা সময় যেতে হয়েছে অর্থকষ্টের মধ্য দিয়ে। মা এবং সৎবোনসহ এগার জনের বিশাল সংসার চালাতে হত তাকে শুধু ছবি-আঁকার পেশায়। এর মাঝে হঠাৎ ভালবেসে বিয়ে করে বসেন মায়ের এক পরিচারিকা'কে। মায়ের কাছে এ বিয়ে গ্রহনযোগ্য হয়নি, ফলে উত্তরাধিকারসূত্রে কিছু পাওয়ার আশাও ছেড়ে পিসারোকে চলে যেতে হল 'ল্যুভসিয়েন' অঞ্চলে। ল্যুভসিয়েনের গ্রামীন সৌন্দর্যের কারণে নয়, পিসারো ওখানে গেলেন, কারণ ওই অঞ্চলে বাড়িভাড়া তখন সবচেয়ে কম। স্ত্রী জুলি ছিলেন নিখাদ লক্ষী ঘরণী, ফুলে-ফসলে ভরিয়ে তুললেন বাড়ির আঙ্গিনা। সরল গ্রামীন নারীদের নিয়ে আঁকা পিসারো'র ছবিগুলোতে সেই জীবনের গল্পগুলো কি স্পষ্ট নয়?



এভাবে পিসারো অন্য এক জীবনের গল্পে ভরিয়ে তুলতে লাগলেন ক্যানভাস, কিন্তু নিখাদ 'ইম্প্রেশনিস্ট' স্টাইলে ! এবং অন্যান্য ইম্প্রেশনিস্টদেরও তিনি একতাবদ্ধ করে রাখতে লাগলেন, উৎসাহ এবং সমর্থন দিয়ে যেতে লাগলেন ক্রমাগত। প্যারিসের স্যালন এক্সিবিশন থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ইম্প্রেশনিস্ট'রা নিজেদের আলাদা প্রদর্শনী'র আয়োজন করেছিল। পিসারো ছিলেন একমাত্র শিল্পী যিনি ইম্প্রেশনিস্টদের সবক'টা শো'তেই অংশ নিয়েছিলেন এবং সর্বোতভাবে জড়িত ছিলেন। শুধু নিজে আঁকেন নি, অন্য সব শিল্পীকে সমর্থন দিয়ে গেছেন বাবা'র মত। বিস্ময়কর প্রতিভা নিয়ে জন্মানো পল সেজান যখন একের পর এক অন্ধকার জগৎময় ছবি এঁকে যাচ্ছিলেন, পিসারো তাকে নিয়ে আসেন আলো-ঝলমলে পৃথিবীতে। এরপর তো সেজান নিজেই একসময় হয়ে ওঠেন তার নিজস্ব ধারা'র আইকনিক ফিগার। সেজান কখনও অস্বীকার করেননি পিসারো'র অবদান, পিসারো সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন - "he was a father for me. A man to consult and a little like the good Lord"





কামিল পিসারো এবং পল সেজান



আরেক ইম্প্রেশনিস্ট তরুণী মারি কাসাট'ও (Mary Cassatt) আর্টের সকল ক্ষেত্রে নিঃস্বার্থ বন্ধু আর শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন পিসারো'কে। দেগা'র সাথে বন্ধুত্বে যখন টানা-পোড়েন চলছিল, কাসাট তখন পরম অভিভাবকের মত কাছে পান পিসারো'কে। শুধু মানসিক সমর্থন না, আর্টের জ্ঞানটুকুও পিসারো উদারভাবে বিলিয়ে যেতেন ওদের মাঝে। কাসাটের ভাষায় - "such a teacher that he could have taught the stones to draw correctly"



শুধু মূল ধারার ইম্প্রেশনিস্টরা না, পিসারো নিবিড় অভিভাবক ছিলেন তাদের পরবর্তী প্রজন্ম, অর্থাৎ পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্ট যুগের অন্য প্রধান শিল্পীদেরও - ভিনসেন্ট ভ্যান গফ, পল গগ্যাঁ আর জর্জ স্যুরা' ! স্যুরা'কে তিনিই এই গ্রুপে নিয়ে আসেন, আর তার স্টাইলে আকৃষ্ট হয়ে তিনিও স্যুরা'র পদ্ধতিতে ছবি আঁকা শুরু করেন ! তার 'ইগো'-টাইপের কোনও সমস্যাই কখনও ছিল না, দলের নবীনতম সদস্যটার কাছ থেকেও তিনি আগ্রহ নিয়ে শিখতেন, আর সেটা নিজের ছবিতে ব্যবহার করে দেখাতেন ! একটা নতুন ছেলের জন্য এর চেয়ে উৎসাহের আর কী হতে পারে? আর পিসারো'ও কেমন - নতুন যে স্টাইলই তার ভাল লাগত, অবিশ্বাস্য দ্রুততায় সেটা শিখে নিয়ে ওই স্টাইলেও তিনি ওস্তাদ বনে যেতেন ! এক চিত্র সমালোচক পিসারোকে নিয়ে লিখেছিলেন~



"It is difficult to speak of Camille Pissarro . . . What we have here is a fighter from way back, a master who continually grows and courageously adapts to new theories."



তার যেন শেখার ক্ষেত্রে কোনও কৃপনতা নেই, উদারতার কোনও সীমা নেই ! এসব পড়ার সময় আমার মনে হচ্ছিল, পিসারো যেন সত্যি কোনও উপন্যাসের মহৎ চরিত্র ! তিনি নিজে সারাটা জীবনের চরম অভাবের মধ্যে শিল্পচর্চা করেছেন, তাই কোনও শিল্পীকে সংগ্রাম করতে দেখলে তিনি তার সবটুকু সমর্থন ঢেলে দিতেন।





স্যুরা'র স্টাইলে 'ডট' বা 'পয়েন্ট' পদ্ধতি ব্যবহার করে আঁকা ছবি



তবে, স্যুরা'র এই স্টাইল অর্থাৎ 'নিও-ইম্প্রেশনিজম'এর ধারা তিনি বছর-চারেক পর ছেড়ে দিয়েছিলেন। তার মনে হচ্ছিল - এতে আলোক-বর্ণালী'র জাদু দেখা গেলেও, জীবনের চঞ্চলতা নেই ! তার উদ্দেশ্য তো নিখুঁত-শিল্প নয়, তার উদ্দেশ্য বাস্তব এবং গতিশীল জীবনের 'ইম্প্রেশন' ! পিসারো আবার আগের স্টাইলে ফিরে গিয়ে সৃষ্টি করতে লাগলেন একের পর এক মাস্টারপিস !



শহুরে মানুষের ফূর্তিময় জীবন না আঁকলেও, বিশাল-পরিসরে শহরের উদ্দাম-জীবন পিসারো ঠিকই আঁকছিলেন ! তিনি একই স্থানের দৃশ্য বারবার এঁকেছেন, তবে কাইবট'এর মত বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে নয়, বরং ভিন্ন ভিন্ন সময় এবং আব-হাওয়া থেকে !

মঁমার্ত্রে'র সড়কপথের এই চিত্রমালা দেখুন, একটাই দৃশ্য অথচ বিভিন্ন সময় আর বিভিন্ন ঋতুতে~



বৃষ্টিভেজা দিনে





অথবা বিকেলের আলোয়





ঘোর আঁধার দিনে





মিস্টি কুয়াশার ওপর হালকা রোদে





শীতের সকালে





বসন্তকালে





সূর্যাস্তে





কিংবা ভেজা রাতে





এবং আরও ক'টা আব-হাওয়ায় তিনি তুলে ধরছিলেন প্রাকৃতিক পালাবদলের রূপ। আর এই নিরীক্ষা তিনি করে গেছেন আরও অনেকগুলো লোকেশনে। শহুরে রাজপথের ওপর ঋতুবদল নিয়ে এমন গবেষণার চিন্তা ক'জনের মাথায় আসে?ইম্প্রেশনিস্টদের মাথায় আসে - তারা এসেছিলেন সবকিছু ভিন্নভাবে চিন্তা করতে !



পিসারো'র ল্যান্ডস্কেপে অন্যতম প্রধান বিষয় ছিল ছায়া'র রং ধরতে পারা ! ছায়া যে শুধু রং গাঢ় করলেই হয় না, বরং এতে আলোক-বর্ণালীর অন্যান্য রংও ছরিয়ে পড়ে - মনে' এবং সিসলীদের সাথে পিসারোও সেই প্রকৃত রং খুঁজে যাচ্ছিলেন ক্রমাগত ! তবে এসব দেখে ভাববেন না, পিসারো শুধু ল্যান্ডস্কেপ বা পরিশ্রমী মানুষদের ফিগার নিয়েই কাজ করেছেন; তার আঁকা পোর্ট্রেটও কিন্তু গাঢ় মমতার। আগেই বলেছি, ছোট-গ্রামীন সংস্কার এবং সংস্কৃতিতে বড় হয়েছেন পিসারো; তাই নারী পুরুষের অবাধ উদযাপন বা এমনকী ন্যুড-স্টাডিতেও তার তেমন চর্চা দেখা যায় না। তিনি পোর্ট্রেট এঁকে গেছেন চেনা-পরিচিত আপন মানুষগুলোর। তার আদুরে ছেলে-মেয়েদের কিছু ছবি নিচে দিলাম~















আর নিজের চোখে নিজেকে -





সেল্ফ-পোর্ট্রেট



কামিল পিসারো - ইম্প্রেশনিস্ট আর্টিস্টদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত কেউ না, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটি তিনি - অস্বীকার করার উপায় নেই। স্বভাবে আর আচরণে, সাহায্য এবং সমর্থনে, উদারতা এবং আন্তরিকতায় তিনি ছিলেন সমস্ত শিল্পীদের অলিখিত পিতা বা "Père Pissarro" (ফাদার পিসারো)। অসাধারণ প্রতিভাবান একদল শিল্পী সেদিনের প্যারিসে শিল্পচর্চা শুরু করছিল, কিন্তু পিসারো না থাকলে এই ক্ষ্যাপাটে ছেলের দল কখনও একত্রিত হতে পারত কি না বলা যায় না। BBC'র ডকুমেন্টারীতে তাকে নিয়ে বলা হয়, "Pissarro was the glue that held Impressionism together" তার পেইন্টিংসগুলো দেখলেই মনে হয়, শুধু শিল্পের ক্ষেত্রে না, বাস্তব-জীবনেও সহজ-সরল আর পরিশ্রমী মানুষগুলোর প্রতি ছিল তার গভীর মমতা আর শ্রদ্ধাবোধ। তার ছবিকে কটাক্ষ করে লেখা হয়েছিল - "Pissarro’s paintings, for instance, showed scenes of muddy, dirty, and unkempt settings"। তারপরও তিনি ট্র্যাডিশনাল ফিলসফিতে মহাপুরুষদের ছবি না এঁকে তার ক্যানভাসে ক্রমাগত জায়গা দিয়ে গেছেন চাষা-মজুর-কাঠুরেদের। পিসারো জীবনকে দেখেছিলেন সাধুপুরুষের উদারতায়, আর এঁকেছিলেন সাহসী শিল্পীর দক্ষতায়। অসাধারণ এই শিল্পীর জীবনী'র আরও অনেক বলার মত গল্প বাকি থেকে যায়। ওসব আগ্রহী পাঠকের তদন্তের ওপর ভরসা করে আপাতত নিশ্চিন্ত হলাম।



আমি জানালা দিয়ে আবার বাইরে তাকাই। বৃষ্টি থেমে এসেছে। নরম সূর্যের আলোয় শহরটা দেখে আমি এবার ভাবতে থকি, বৃষ্টিশেষে আবার পথে নেমে আসা জীবনের এই চঞ্চলতাকে কামিল পিসারো ঠিক কিভাবে দেখতেন...?



মন্তব্য ৪৮ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৪৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

শাহেদ খান বলেছেন: সমস্ত ছবি কৃতজ্ঞতা: গুগল ডট কম এবং উইকিপিডিয়া

১০ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৫

শাহেদ খান বলেছেন: তথ্য সূত্র:

* বই - Impressionism: A Celebration of Light, by Isabel Kuhl, Parragon books.

* বই - The History of Impressionism by John Rewald, Harry Abrams (1990)

* টিভি ডকুমেন্টারী - The Impressionists Painting and Revolution, BBC.

* ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব।

২| ১০ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: বরাবরের মতই চমৎকার।

১০ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭

শাহেদ খান বলেছেন: বরাবরের মতই ভাল লাগা জানাচ্ছি এই সিরিজে সাথে থাকার জন্যে !

৩| ১০ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

উঠতি বুদ্ধিজীবী বলেছেন: এক কথায় অসাধারন।
সেই সাথে পিলাচ লয়া লন। B-) B-) B-)

১০ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯

শাহেদ খান বলেছেন: দারুণ কমেন্টেও প্লাস ! B-)

ইম্প্রেশনিস্টদের এই সিরিজে স্বাগতম, উঠতি বুদ্ধিজীবী !

৪| ১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:৩২

মানুষ নই বলেছেন: শুরু থেকে নিয়মিতই পড়ছি আপনার এই সিরিজ, সবচেয়ে অসাধারণ আপনার বলার ধরণ। লা-জওয়াব

১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:৫২

শাহেদ খান বলেছেন: আপনার কমেন্ট'টা পড়ে অনেক ভাল লাগল :)

ইম্প্রেশনিজমে আগ্রহবোধ করছেন জেনে আনন্দিত।

৫| ১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৫৭

সকাল রয় বলেছেন:
জানতাম না তো!
জেনে ভালো লাগলো

১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:০০

শাহেদ খান বলেছেন: এই আন্দোলনের শিল্পীদের অনেকের কাহিনীই গল্পের মত; এবং এখন তো ইতিহাস ! নিয়মিত পোস্ট করা হচ্ছে।

ইম্প্রেশনিস্টদের ভুবনে স্বাগতম। 8-|

৬| ১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫৯

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: অনেক কষ্ট করছেন ! আর আপনার কষ্টের বদৌলতে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি ! প্লাস নেন !

১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩৮

শাহেদ খান বলেছেন: অভি, সিরিজজুড়ে সাথে আছেন দেখে ভাল লাগছে। কষ্টের চেয়ে বোধ'টা বড় ছিল।

আমি নিজেও এসব জেনেছি সাম্প্রতিক সময়ে। শিল্পের জগতে এত দারুণ আর এতবড় একটা আন্দোলন, অথচ বাংলা ব্লগস্ফিয়ারে কোনও আর্কাইভে এ সম্পর্কে তেমন কিছু থাকবে না - ব্যাপারটা দুঃখজনক মনে হচ্ছিল। আমি শুধু আমার আগ্রহের ব্যাপারটা শেয়ার করছি। এবং আশা করছি, কেউ হয়তো কখনও এই আন্দোলন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ আর্কাইভ প্রকাশ করবে ! 8-|

৭| ১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৫৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সন্ধ্যায় মোবাইল থেকে দেখেছিলাম আপনার পোষ্ট । বাসায় ফিরে রেস্ট নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে গেছি । আর ঘুম থেকে জেগে নেটের স্পীডে কান্না আসে, বেশীরভাগ দিনই এক অবস্থা। জিপি বদলে টেলিটক নিলাম , আজ টেলিটকের ও করুন দশা। একেকটা পেইজ ওপেন হয় কচ্ছপের গতিতে ।

ভালো লেগেছে পিসারোর আঁকা ঘরের মুহূর্তের ছবি গুলো , তার সন্তানদের। বৃষ্টি ভেজা রাতের ছবিও।

শিল্পীদের মাঝে ( সেটা আর্ট, সাহিত্য, সঙ্গীত, অভিনয় ইত্যাদি ) একটা ইগো , হিংসার ব্যাপার প্রবল ভাবে কাজ করে। আমার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। সে তুলনায় বলতে হয় পিসারো মাটির মানুষ। অনেকেই যারা সংগ্রাম করে আলোর মুখ দেখেছেন তারা গুটি কয়েক বাদে প্রায়শই ভুলে যায় অতীত, আগের অবস্থান । সে তুলনায় পিসারো নিঃসন্দেহে গুনী শিল্পী।

তার আকার ভিউ টা ভালো লাগলো - গ্রামীন পটভূমি বা শহরের বাইরের, ছবিতে জীবন্ত, কর্ম চাঞ্চল্যে ভরপুর , আনন্দ মুখরিত মানুষের সময়ের মুহূর্ত ।

ধন্যবাদ শাহেদ।

১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:১৪

শাহেদ খান বলেছেন: বিবিসি ডকুমেন্টারীতে খুব মজা করে বলছিল - ইগো'র ব্যাপারে পিসারো ছিলেন এক ব্যতিক্রম, যেখানে অন্যান্য শিল্পীদের ইগো'র লেভেল ছিল মোটামুটি 'আইফেল টাওয়ার'-এর সমান উচ্চতার ! =p~

আমার মতে, পিসারো'র মত কিছু লোক থাকে বলেই অন্যান্য ইগোসর্বস্ব লোকদের সাথে নিয়েও ইতিহাস বদলে দেয়া যায় !

ধন্যবাদ লাগবে না, কবি। মনোযোগী পাঠে ভাল লাগা জানবেন। ভাল থাকুন সবসময়।

৮| ১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৫৫

আরজু পনি বলেছেন:
"It is absurd to look for perfection." ...:(

পারফেকশান আনার জন্যে আজকে আমি ফটো এডিটের কাজ শেখা শুরু করলাম হাতে কলমে ...আর এখন এই কাহিনী! :(

এই কাহিনীর জন্যে দুঃখে ভারাক্রান্ত হয়ে পোস্টটা নিজের কাছে নিয়ে গেলাম :((

অসাধারণ একেকটা পোস্ট হচ্ছে...আমি ভাবতে ভঅবেতই, দেখতে দেখতেই কমেন্ট করার অঅগেই নতুন পোস্ট চলে আসতেছে ....আমাকে আরো স্পীডি হতে হবে :(

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৭:০৩

শাহেদ খান বলেছেন: চমৎকার একটা উদাহরণ ! ঘরে ফিরে গিয়ে ছবির ফিনিশিং-এর কাজ করাটা আসলে ফটো তোলার পর আবার ফটো -এডিটিং করার মতই একটা ব্যাপার। এতে মনের মত একটা 'পার্ফেকশন' হয়তো আনা যায়, কিন্তু বাস্তবের মত 'ইম্প্রেশন'টা আর থাকে না

সময় করে ধীরে ধীরে পড়া হোক। পোস্টগুলো তো থাকছেই ! 8-|

৯| ১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৫৬

আরজু পনি বলেছেন:
ইদানিং "আকার" আমার সাথে বড়ই বেয়াদবী করছে /:)

আমার লিখতে যেয়ে অঅমার হয়ে যাচ্ছে...এমন আরো অনেক শব্দ !

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৭:১৪

শাহেদ খান বলেছেন: ওটুকু কোনও সমস্যা না, বোঝা যাচ্ছে তো !

আচ্ছা, পনি'পু, অনলাইন নিউজ হিসেবে bengalinews24.com সম্পর্কে কোনও ধারণা আছে?

গতকাল রাতে নেট-এ খুঁজতে বসছিলাম 'ইম্প্রেশনিস্ট'দের নিয়ে বাংলায় কিছু পাই কি না। মোটামুটি উপরের দিককার এই লিঙ্কটাতে গিয়ে থতমত হয়ে গেলাম। ওরা আমার গত সপ্তাহের একটা লেখা (জর্জ স্যুরা'র গল্পটা) অবিকল ছাপিয়ে দিয়েছে - লেখকের অনুমতি বা নাম ছাড়া... একটু থমকে গেলাম। এমনটা কি হয়েই থাকে? বুঝলাম না।

এখানে ক্লিক করলে দেখা যাবে

আমি মোটামুটি অলস মানুষ। তারপরও এসব একেকটা পোস্ট করতে অনেক পড়ালেখা, ধৈর্য, সময় এবং কিছুটা পরিশ্রমও করতে হয়। আমার লাগে, আমি বুঝি।

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:০২

শাহেদ খান বলেছেন: তখন অফটপিকে অনেক কথা বলে ফেললাম, পনি'পু। মনটা ভারি হয়ে ছিল, কারও সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছা হচ্ছিল।

আচ্ছা যাই হোক।

১০| ১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:২১

েসাহাগ২৫কগগ বলেছেন: কোন কথা নয় আগে প্লাস নেন ++++++++++++++++

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৭:১৬

শাহেদ খান বলেছেন: কমেন্টে ভাল লাগা জানবেন

১১| ১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:৩১

আবদুল্লাহ্‌ আল্‌ মামুন বলেছেন: অসাধারণ। দারুন একটা পোষ্ট। চিত্রকলা'র প্রতি ভাললাগা আরো বেড়ে গেল...

প্রিয়তে !

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৭:১৮

শাহেদ খান বলেছেন: অনেক ভাল লাগল জেনে 8-|

এই চিত্রকরদের নিয়ে সিরিজ পোস্ট করা হচ্ছে ! ইম্প্রেশনিস্টদের আনন্দময় জগতে আপনাকে আমন্ত্রণ !

১২| ১১ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৪:২৮

কাজী মামুনহোসেন বলেছেন: স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: অনেক কষ্ট করছেন ! আর আপনার কষ্টের বদৌলতে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি ! প্লাস নেন !

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৭:১৯

শাহেদ খান বলেছেন: আপনাদের আগ্রহ আর ভাল লাগা'র কারণেই কষ্টগুলো আর খারাপ লাগে না, এরকম পোস্ট আরও দেয়ার উৎসাহ পাই।

ভাল লাগা জানবেন।

১৩| ১১ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৫:৫০

বোকামন বলেছেন:




কামিল পিসারো !!
আমিও কফির পেয়ালা হাতে নিয়ে পোস্টখানা পড়ছি :-) কেন জানি এই পোস্টখানা অনেক বেশী প্রাণবন্ত লাগলো ! (যদিও আপনার পুরো সিরিজ’টিই অসাধারণ হচ্ছে) হয়তো কারণটা পিসারোই। বিভিন্ন সময় আর বিভিন্ন ঋতুতে~ ম্যাজিকাল ! !!

সেল্ফ-পোর্ট্রেট নিজেকে ফুটিয়ে তুললেন ! এই একটি ছবিই ক্ষমতা রাখে শিল্পীর শিল্প-সত্তাকে চিনিয়ে দিতে। সেল্ফ-পোর্ট্রেট সহজ কথা নয় !!

কথা হবে আবারো, ভালো থাকবেন।
কৃতজ্ঞতা :-)

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৭:৩০

শাহেদ খান বলেছেন: সত্যি 'ম্যাজিকাল' ! ইম্প্রেশনিস্ট'রা প্রত্যেকেই সতন্ত্র ধারা'র ম্যাজিশিয়ান ছিলেন !

হুম, 'সেল্ফ পোস্ট্রেট' -- ভাবতে গেলেও বোঝা যায় কতটা মনোনিবেশ আর পারদর্শিতা লাগে এই কাজ করার জন্য। এই সাহসী কাজটাও কিন্তু প্রায় প্রতিটা শিল্পীই করে গেছেন; বাযিল, কাইবট', দেগা' - সবার পোস্টেই ছিল তাদের নিজেদের চোখে দেখা নিজের প্রতিরূপ ! 8-|

কথা হবে অবশ্যই, ভাল লাগছে কথা বলতে। ভাল থাকবেন আপনিও। অনেক অনেক শুভকামনা।

১৪| ১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:০২

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: +++++++++++++++++

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:০৪

শাহেদ খান বলেছেন: B-)

১৫| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৪০

রেজোওয়ানা বলেছেন: কাল রাতে পড়েছি~ আমি এই বিষয়ে তেমন কিছু জানি না।

তাই জেনে ভাল লাগছে :)

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৯

শাহেদ খান বলেছেন: ভাল লাগছে জেনে ভাল লাগল, রেজু'পা। :)

বিষয়গুলো আমিও জেনেছি সাম্প্রতিক সময়ে। মনে হল, শেয়ার করার মত; তাই গল্পের মত করে বলে যাচ্ছি।

শুভেচ্ছা।

১৬| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫

আরজু পনি বলেছেন:

আমি সকালবেলাই ওই লিংকে যেয়ে কমেন্ট করে ফেসবুকে আমার টাইমলাইনেও শেয়ার করেছি।

ভাবছি ওই পত্রিকার সম্পাদককে ফেসবুকে খুজেঁ তাকে ট্যাগ করে জিজ্ঞেস করবো কেন এমন করলো।...আপাতত খোঁজ দ্যা সার্চে আছি...

মনে হচ্ছে একটা কেচাল লাগিয়েই ছাড়বো...এইসব লেখাচোরের আসল চেহারা বের করে দেয়া দরকার।

১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৫২

শাহেদ খান বলেছেন: চায়না'র এখানে ফেসবুক ব্যান করা। যোগাযোগের সীমাবদ্ধতায় আছি...

কখনও ক্যাচালে যাই নি, আপু। এ ধরণের একটা আর্টিকেল কেউ শেয়ার করলে সেটা আমার ভাল লাগারই কথা। কারণ, আমার মূল উদ্দেশ্যই হল এই চমৎকার আন্দোলনের গল্পগুলো যারা জানেনা তাদের সাথে শেয়ার করা; হয়তো তাদের মাঝে কেউ কেউ আগ্রহীও হয়ে উঠতে পারে এবং তারা আরও লিখে এই শিল্পবোধের গল্পগুলো ছড়িয়ে দিতে পারে...

কিন্তু এভাবে বেনামে/বিনা-নোটিফিকেশনে কপি-পেস্ট করাটা হতাশার ব্যাপার...

১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৫

শাহেদ খান বলেছেন: যাই হোক, আমার ধারণা আমি আমার মত লিখে যাব। যারা এর মাঝে আগ্রহী হয়েছে অন্তত তাদের প্রতি ভাল লাগা'র টানে সিরিজটা শেষ করে যাব নিশ্চয়ই...

১৭| ১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৪১

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: চিত্রকলা তেমন একটা বুঝি না,,,কিন্ত এখানে সবটাই কেমন জীবন্ত,,,,,,,,,,,মনে হয় আমি একটু একটু বুঝতে শুরু করেছি,,,,,,,,,

সব জায়গাতেই পদচারণা,,,,,,,ভাল লাগছে,,,,,,,,ভীষণ ভাল লাগছে,,,,,,,,,,অনেক অনেক শুভকামনা,,,,,,,,,,,,,,,

১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:০৭

শাহেদ খান বলেছেন: আমিও খুব একটা বুঝতাম না, লায়লা'পু। এই ইম্প্রেশনিস্ট'রাই আমার আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে। সেই আগ্রহের ব্যাপারটাই শেয়ার করছি।

ইম্প্রেশনিস্টদের নিয়ে নিয়নিত পোস্ট করা হচ্ছে। কিছু ঝলমলে ছবির জগতে আমন্ত্রণ !

১৮| ১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৩৯

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
আপনার এই কয়দিনের প্রতিটা পোস্ট অনন্য।
শুধু ধন্যবাদে কৃতজ্ঞতা শেষ হয় না।
অনেক কিছুই জানছি।

১২ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:২৪

শাহেদ খান বলেছেন: পড়ছেন বলে আমিও অনেক ভাল লাগা জানাচ্ছি, দূর্জয় ভাই ! :)

১৯| ১২ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৪৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: শাহেদ খান,

ঠিকই বলেছেন পিজারো বা পিসারো , কোনও রকম দ্বিধা ছাড়া, উদার মনে ব্রাশ চালিয়ে যা্ও। দৃশ্যটা মনের মাঝে যে প্রাথমিক ইম্প্রেশন তৈরি করে - সেটাকেই ধরে রাখো ....

আমরা তো এভাবেই শুরুতে জীবনটাকেও দেখি । পরে তাতে না হয় রঙ চড়িয়ে 'পারফেক্ট' করার চেষ্টা করি ।

এই যেমন আপনি, বৃষ্টিভেজা এক অচেনা শহরে কফির কাপ হাতে মানুষগুলোকে দেখছিলেন । এটাই ছিলো আপনার চোখ ও মনের ফার্ষ্ট ইম্প্রেশান । সেখানে আপনি কল্পনার রঙ চড়ালেন মনে । এলো পিসারো । বৃষ্টি থেমে গেলেও পিসারো আপনার মনে থেকে গেলোনা ।
যদি ফার্ষ্ট ইম্প্রেশানটাতেই থাকতেন তবে আপনার কলমে অন্যকিছু উঠে আসতো । সেটাই হতো আদি , অকৃত্রিম।

পিজারো একথাটিই বলেছেন , ধরেও রেখেছেন তার ছবিতে । দেখুন কী অনিন্দ্য সুন্দরতায় তার তুলি একে গেছে একর পর এক নৈসর্গিক গ্রাম আর তার মানুষ । ঠিক যেখানে যেমন , তেমন করে ....

ভালো লাগলো । ভালো থাকুন.......

১২ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৩৩

শাহেদ খান বলেছেন: বইয়ের পাতায় পিসারো'র পেইন্টিং থেকে চোখ তুলে বাইরে তাকিয়েছিলাম, তাই এই অভিজ্ঞতা।

তবে বৃষ্টি নিয়ে নিজের ফার্স্ট ইম্প্রেশন থেকে আদি ও অকৃত্রিম অনেক পোস্ট দিয়েছি তো এর আগে ! 8-| যদি সত্যি দেখতে চান, তবে বৃষ্টি-অনুভূতি নিয়ে লেখা আমার সরল-কাব্যগুলোতে আমন্ত্রণ জানাতে পারি ~

উঁইপোকাদের ঢিবি
শ্রাবণ
বিবর্তন
বর্ষায়...

এবং এমন আরো কিছু আছে... হয়তো সময় করে দেখবেন।

ভাল লাগল আপনার মতামত পেয়ে, এবং একই সাথে আমার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে চেয়েছেন বলে। ভাল থাকবেন।

২০| ১২ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১০

রোকেয়া ইসলাম বলেছেন: অপূর্ব......... অসাধারন একটা পোস্ট।
সত্যি ভীষণ ভাল লেগেছে অনেক সুন্দর।
আসলেই এই বিসয়ে আমার জ্ঞান একেবারে নেই বললেই চলে তবে আপনার অসম্ভব সুন্দর লেখনির কারনে খুব মনোযোগ সহকারে পড়লাম এবং অনেক কিছু জানতে পারলাম। অনন্য সব ছবি। ধন্যবাদ এই পোষ্টের জন্য।
অনেক শুভকামনা,,,,,,,,,,,,,,,

১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:০৬

শাহেদ খান বলেছেন: কমেন্ট'টা পড়ে অনেক ভাল লাগল, কবি !

এই সব শিল্পীদের জীবন আর ছবি নিয়ে সিরিজ পোস্ট দিচ্ছি। ভাল লাগলে সময় করে দেখে যাবেন।

শুভেচ্ছা জানাই আপনাকেও !

২১| ১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৫২

~মাইনাচ~ বলেছেন: একেকটি শিল্প একেকটি প্রতিভায় ভরপুর। আমার ভাবতেই অবাক লাগে আসলেই। ছবি আঁকা, গান করা, নাচ করা, একেকটিতে একেক রকম কলা কৌশল, একেক রকম ধরন। একটি আরেকটির সাথে মিলেইনা। ভিতরের ভাষা কিন্তু একিই।


মাইনাচ B-)

২০ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:৩৭

শাহেদ খান বলেছেন: আসলেই। ফর্মে ভিন্নতা তাকলেও, ভেতরের ব্যাপার কিন্তু সবটাতে একই। শুধুই শিল্পীর 'নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি'র প্রকাশ, তা সেই শিল্পটা গান, কবিতা বা ছবি যা-ই হোক না কেন !

মাইনাচ ! B-)

২২| ১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:০১

IN THE NAME OF INNOCENCE বলেছেন:


আপনার গোছানো লেখা পড়তে পড়তে আর ছবি গুলো দেখতে দেখতে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ইম্প্রেসড।

২০ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:৩৯

শাহেদ খান বলেছেন: কমেন্ট'টা পড়ে অনেক আনন্দিত ! :)

২৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৬

পেন্সিল স্কেচ বলেছেন: চমৎকার শিল্পকর্ম , ভালো লাগলো +++

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭

শাহেদ খান বলেছেন: পুরানো পোস্টে এসে মনে করিয়ে দিলেন, ইম্প্রেশনিস্ট'দের নিয়ে শেষ একটা পোস্ট দেয়া আমার এখনও বাকি... যেটা আর আলসেমি করে লেখা হয়নি। :(

ভাল লাগায় ভাল লাগা জানবেন, পেন্সিল স্কেচ। ব্লগে স্বাগতম। 8-|

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.