নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের পরিবর্তনে মানুষ মৌলিক রেখা থেকে অনেক দূরে ছিটকে পড়েছে। কেউ কেউ গমন করতে করতে এতো দূরে চলে গেছে যে্ন ওখানেই তার পরিশুদ্ধ জনম। আমার কামনা সকলে মৌলিক রেখায় প্রত্যাবর্তন করুক।

শাহজালাল হাওলাদার

শাহজালাল হাওলাদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্জন করুন বৈশাখের বাড়াবাড়িঃ অসহায়ের কল্যাণে “বৈশাখী তহবিল” গড়ি

১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:০৭

প্রাচীন যুগ থেকেই ধর্ম বর্ণ জাতি ও জাতীয়তার প্রভেদ চলমান। তেমনিভাবে রয়েছে সাংস্কৃতিক ভিন্নতা। বর্তমানে এ ধারাবাহিকতার রুপ ও বৈচিত্রে এসেছে অনেক পরিবর্তন। এসব সংস্কৃতির মধ্যে যেগুলো মনোরঞ্জন ও চিত্তাকর্ষক অর্থাৎ যেসকল সংস্কৃতি উপভোগ করতে এতই ভালোলাগা জড়িয়ে যায় যে, গুরুত্বপূর্ণ কোন প্রয়োজন ও ধর্মের বাধ্যবাধকতাও গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। আর সে সংস্কৃতি গুলোই দ্রুত ও ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হল পহেলা বৈশাখ।
এ দিনটিকে বরন করা হয় ডেকে ডেকে। এসো হে বৈশাখ এসো এসো। পহেলা বৈশাখ একটি মাত্র দিন কিন্তু এর প্রস্তুতি শুরু চৈত্র মাস থেকেই এবং চেতনা বিদ্যমান থাকে শেষ বৈশাখ পর্যন্ত। Happy new year শুভ বাংলা নববর্ষ পালন হয়ে আসছে মুসলিম সমাজেও অথচ মুসলিম হিসেবে কোথাও তো আহালান সাহালান আরবি নববর্ষ বা পহেলা মহররম পালন করা হয় না। হবেই বা কেন ইসলাম তথা মুসলিম কালচারে তো এ ধরনের অনুমোদন নেই। গদ গদ করে বলে ফেলবেন না অনুমোদন নেই বলেই তো পালন করি না। তাহলে বলুন উপরোক্ত ইংরেজি ও বাংলা নববর্ষ পালনেরর অনুমোদন কি ইসলামে আছে? নিশ্চয়ই নেই। পহেলা বৈশাখ বা বাংলা বর্ষ বরণের কথা বলতে গিয়ে কেউ কেউ বলেন এদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তি বৈশাখের এ ঐতিহ্যকে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি বলে প্রচার করছে। হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির সাথে সদৃশ আছে বলেই হয়তো এই প্রচার। বাংলাদেশে এর সুত্রপাত হয় ১৯৬৫ সালের ১৪ই এপ্রিল (১ লা বৈশাখ ১৩৭২) রমনা বটমূলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এসো হে বৈশাখ এসো এসো এর মধ্য দিয়ে।
কোন অপ সংস্কৃতই মুসলিম কালচারে গ্রহণযোগ্য নয়। অন্য সম্প্রদায় থেকে উদ্ভাবিত এবং পারিপার্শ্বিক ভাবে পালিত হয়ে আসলে ধর্মের অনুশাসনে শ্রদ্ধাহীন মুসলমানেরাও যুগে যুগে গ্রহন করে নিয়েছে এসব সংস্কৃতি। প্রকৃতপক্ষে মুসলিম সমাজে এসব সংস্কৃতি শুধু যে বর্জনীয় তাই নয়, পর লৌকিক জীবনে শাস্তিরও কারন। ইসলামে নিষিদ্ধ সংস্কৃতির পরিপালনই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। রসুলে আকরাম (সঃ) বলেছেন- মান তাসাব্বাহ বি কওমিন ফাহুয়া মিনহুম। অর্থাৎ যে যে জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে সে তাঁদের মধ্যে গণ্য।

কি কুফল রয়েছে পহেলা বৈশাখে-
১. কোন আকর্ষণীয় কিংবা অর্ধনগ্ন পোশাকে তরুন তরুণীর অবাধ মিলন মেলায় পারস্পারিক আকৃষ্টতা অনস্বীকার্য। যার বাস্তব প্রমান বাংলা ১৪২২ সালের (ইংরাজি ২০১৫ সাল) বর্ষ বরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি এস সি তে ঘটিত নির্লজ্জ ঘটনা। সহস্ত্র লোকের ভিড়ের মাঝেও কুকুরদের সেই তরুণীকে বিবস্ত্র করার চিত্র ব্যপকভাবে ধিকৃত হয়েছিল। বখাটেদের সেই লোলুপ আচরণ মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়, তবে এ ধরনের মিলন মেলা গ্রহণযোগ্য কি?
এসব অসংযতের কারণে একদিকে যেমন অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটে যায় অন্যদিকে এর প্রতিবাদ প্রতিশোধের দাবির আগুনে পুড়ে যায় অনেক কিছু। যদি আর একটু বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখা যাবে অপরাধীর বিচার হলেও ভুক্তভোগীরা কখনই তাদের হারানো সম্ভ্রম ফিরে পাবে না। এবং অপরাধীরা বিচারিক ক্ষতিতে তো পতিত হোলই। সুতারং উক্ত সংস্কৃতি বর্জন করাই সর্বোত্তম।
বাংলাদেশের সরকারকে অনুরোধ করবো এ ধরনের সংস্কৃতিকে উস্কে দিবেন না বরং দমন করুন। জাতীয় বেতন স্কেলে বাংলা নববর্ষ ভাতা প্রদান করাতে এ সংস্কৃতিকে উৎসাহ দেওয়াই প্রতীয়মান হয়।
২. ইসলামে মেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাহেলি যুগে ওকাজ মেলাকে কেন্দ্র করে গোত্রে গোত্রে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর হস্তক্ষেপে সংবরিত হয়েছিল সেই অন্যায় যুদ্ধ। অথচ পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে আনন্দ মেলা ( কোথাও মাসব্যপি ), জুয়ার আসর, অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন, গায়রে মহাররম তরুন তরুণীর একান্ত বিচরণ পরিলক্ষিত হয়।
৩. নানা ধরনের মুখোশ পরে, বিচিত্র প্রাণীর মূর্তি বানিয়ে, শরীরে বহু সাজের আলপনা এঁকে, তরুন তরুণী একত্রিত হয়ে উদ্ভট চেতনার এক রালি বের হয় বর্ষবরণে। যার নাম মঙ্গল শোভাযাত্রা। ১৯৮৯ সাল থেকে চারুকলার উদ্যোগে বাংলা বর্ষ বরণে যুক্ত হয়েছে এই যাত্রা। অথচ মঙ্গল শোভাযাত্রা হিন্দুদের বহু পুরানো কালচার। শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে তারা মঙ্গল শোভা যাত্রা বের করে, তাদের সাথে সাদৃশ্য রেখে এ ধরনের পালিত সংস্কৃতিকে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি বললে যাদের গায়ে লাগে তারা আল্লাহ তায়ালার বানী জানতে চেষ্টা করুন- ( নিশ্চয়ই যে কেউ আল্লহর অংশীদার সৃষ্টি করবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন, আর তার বাসস্থান হবে অগ্নি এবং জালিমদের আর কোন সাহায্যকারী নেই। - কুরআন ৫ঃ ৭২ )।
৪. মনগড়া ও অযৌক্তিক পান্তা ইলিশের হিড়িক বেয়াকলদের আরেকটি কাণ্ড। একদিনে এত পরিমান ইলিশের চাহিদা মেটানো দুঃসাধ্য হওয়ায় ইলিশের দাম বেড়ে যায় কয়েকগুণ। ফলে একদিকে ক্রেতাকে যেমন বেগ পেতে হয়, অন্যদিকে বিক্রেতা তার বাবসায়িক সৌন্দর্য ও বৈধতা হারায়। ইতিমধ্যে নিলাম ডেকে একটা ইলিশের মূল্য লক্ষ টাকা অতিক্রম করার ঘটনাও ঘটেছে এই বাংলাদেশে।
পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যে পরিমাণ অর্থ অপচয় হয় তা দিয়ে কমপক্ষে একমাস বাংলার বুভুক্ষু মানুষের জন্য অন্নের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সুতরাং অর্থকে বৈশাখী উৎসবের বিলাসিতায় ব্যয় না করে দুস্থের জন্য ব্যয় করুন। বাংলাদেশে অসংখ্য মানুষ রয়েছে যারা চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরছে তাদের দিকে এগিয়ে আসুন। এটা আপনার নৈতিক দায়িত্ব, বর্ষ বরণ কোন নৈতিক দায়িত্ব নয়। তাদের এই অসহায়ত্বকে নিজ পরিবারের সদস্যদের উপর কল্পনা করুন।
আসুন আমরা অপচয় বাদ দিয়ে স্থানে স্থানে অসহায়ের কল্যাণে “বৈশাখী তহবিল” গঠন করি। এতে করে দাতার দুদিকে কল্যাণ সাধিত হবে।

শেষ কথা-
যেহেতু আরবি সাল অর্থাৎ হিজরি সালের দিনগুলো মৌসুমের সাথে পরিবর্তনশীল তাই বাঙালি হিসেবে বাংলা সনের প্রথম মাস বৈশাখকে হিসেবের নির্দিষ্টতায় রাখাকে দোষণীয় হিসেবে দেখছিনা, বরং অনেক সুবিধাজনক বটে। ব্যবসায়ীরা এই বৈশাখে হালখাতা করে থাকেন গ্রাহক থেকে তার পাওনা আদায় এবং নতুন করে হিসেবের যাত্রা শুরু করার নিমিত্তে। এই নতুনের চেতনায় অপ্রয়োজনীয় বাড়াবাড়ি থেকে বিরত থাকার জন্য সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯

বিজন রয় বলেছেন: আসুন আমরা অপচয় বাদ দিয়ে স্থানে স্থানে অসহায়ের কল্যাণে “বৈশাখী তহবিল” গঠন করি। এতে করে দাতার দুদিকে কল্যাণ সাধিত হবে।

১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৪৭

শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: চেষ্টা অব্যাহত থাকুক, ধন্যবাদ।

২| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৪১

করুণাধারা বলেছেন:
সহমত।

শিলাবৃষ্টি আর অকাল বন্যায় দেশের অনেক অঞ্চলের কৃষকদের ফসল পুরো নষ্ট হয়ে গেছে। এদের ঘরে খাবার নেই।

১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৪৯

শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: আমাদের এ খুদ্র প্রচেষ্টায় কিছু মানুষের অপচয়ও যদি কমে তবেও শ্রম অনেকটা সার্থক।

৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:৪১

চাঁদগাজী বলেছেন:


"পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যে পরিমাণ অর্থ অপচয় হয় তা দিয়ে কমপক্ষে একমাস বাংলার বুভুক্ষু মানুষের জন্য অন্নের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। "

-কোনদিন ভিক্ষুককে ১ পয়সা দিয়েছেন? নাকি অন্যের কিছু দখল করেছেন?

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৫০

শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: -কোনদিন ভিক্ষুককে ১ পয়সা দিয়েছেন? নাকি অন্যের কিছু দখল করেছেন?
দিয়েছি, দখল করার প্রশ্নই ওঠে না। আপনি?
"মুখে কথা বড় বড় মিল নেই কাজে
জ্ঞানীরা মনে করে ও লোকটা বাজে।"

৪| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৭

ধ্রুবক আলো বলেছেন: সুন্দর উদ্যোগ, এসব অযথা একদিন বাড়াবাড়ি খরচ না করে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৪

শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: বারি বিন্দু মিলেই তো সিন্দু হয়, আমার আপনার আপনাদের খুদ্র খুদ্র প্রায়াস ই একদিন বৃহৎ মহীরুহে পরিনত হবে ইন শা আল্লাহ।

৫| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:২১

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: নিজ ঘর সামলাতে হবে আগে...

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৫৫

শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: নিজ ঘর সামলাতে হবে আগে...
আপনার এটাও ভালোর দিকে একটা দাওয়াত। তবে জনাব আমি আমার ঘর ১০০% সামলিয়েই এই পোস্ট দিয়েছি। বেহুদা চাপাবাজি পছন্দ করিনা, ওটা ভণ্ডদের স্বভাব।

৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:১০

কলাবাগান১ বলেছেন: বর্জন করুন ধর্মান্ধদের

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৪৬

শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: ধর্মান্ধদের বর্জন না করে বরং সঠিক পথে ডাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.