নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অব্যক্ত ধ্বনি

আল-শাহ্‌রিয়ার

গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ভেতরের কারণগুলো জানতে এবং বিশ্লেষণ করতে চেষ্টা করি এবং সবার সাথে শেয়ার করতে পছন্দ করি। সামাজিক, রাজনৈতিক আর আন্তর্জাতিক বিষয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে। তাই ব্লগে পদচারনা।

আল-শাহ্‌রিয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

Story of a Modern Affair or so called Love and it's Result!!!!!!!!!!

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৪

বর্তমান সময়ের বেশিরভাগ প্রেমের সম্পর্কই প্রেম থেকে বিছানা পর্যন্ত গড়ায়।তারপর???
তারপর ব্রেকআপ।একটা অনাগত জীবন তথা ভ্রূণকে হত্যা কিংবা প্রেমিকার নিজের আত্মহত্যা।এটা বর্তমান সময়ে একদম কমন একটা বিষয় হয়ে গেছে।তারপরেও এভাবে অবলীলায় লিখে যেতে আমার নিজের কিছুটা হলেও অস্বস্তি লাগছে।আর অস্বস্তি লাগাটাই হয়তো স্বাভাবিক।
যাই হোক,মূল ঘটনায় আসি।
অণু আর অপু পরস্পরকে ভালবাসে তিন বছর যাবৎ।একে আসলে ভালবাসা বলে কি না তা আমি জানি না।তবে তাদের মাঝে একটা সম্পর্কে যে আছে তা নিশ্চিত।তবে এ সম্পর্কটা কেমন কিংবা সমম্পর্কের কি নাম দেওয়া যেতে পারে তা আমি জানি না।সুশীল সমাজ হয়তো এর নাম দিবে প্রেম ভালবাসা কিন্তু আমার দৃষ্টিতে এটা নোংরামি ছাড়া কিছু না।নোংরামি ছাড়া অন্য কিছু হলে সেটার নাম আমি ঠিক জানি নাহ্।আপনারা জানলে জানাবেন প্লিজ।
অণু আর অপুর সম্পর্কটাও এমন একটা পর্যায়ে মানে বিছিনা পর্যন্ত গিয়েছিল।
তারপর যা হবার তাই হয়েছিল।অন্যান্য ছেলের মত অপু অণুকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়।অণু আত্মহত্যা করতে পারতো,কিন্তু করে নি।ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করেছিল, হয়তো অপু ফিরে আসবে।অণুকে বিয়ে করবে।তাদের একটা ফুটফুটে সন্তান হবে।সুখের সাজানো সংসার হবে।
কিন্তু নাহ্!!অপু ফিরে আসে নি।
তারপর???
তারপর একটা ভ্রূণকে হত্যা করা হয়েছিল নির্দিদ্বায়!!!!
এক বছর পর অণুর বাবা মা অণুকে জোর পূর্বক সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার পাত্রের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়।অণু প্রথমে রাজি হয় নি,ছেলেটিকে ঠকাতে চায় নি।কিন্তু বাবা মা,পরিবার আর সমাজের কথা ভেবে নিজের সিদ্ধান্তেও অটল থাকতে পারে নি।অনিচ্ছ্বা সত্ত্বেও অভির সাথে বিয়ের পিড়িঁতে বসে।অন্যান্য পাঁচ দশটা মেয়ের মতই ধুমধাম অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্বশুর বাড়িতে প্রবেশ করে অণু।
অণুর স্বামী অভি অণুকে অনেক বেশি ভালবাসে।অণু আগে ভাবতো অপুর চেয়ে বেশি ওকে কেউ কখনও ভালবাসতে পারবে না।কিন্তু অণুর এ ধারণা অভি ভুল প্রমাণ করে দেয়।অপুর ভালবাসাটা অণুর শরীর পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল,কিন্তু অভির ভালবাসা সব ছাপিয়ে অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত।অভির ভালবাসার স্পর্শে অণু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যেতে থাকে,অভিকে ভালবাসতে শুরু করে।নিজের ভয়ংকর অতীতের কথা ভুলে যেতে শুরু করে।
কিন্তু চাইলেই কি ভোলা যায়???
যায় না.......
অপু অণুকে ভুলতে দিতে চায় না তাদের বিভীষিকাময় অতীতের কথা।অণুর ফোন নম্বর কালেক্ট করে বারবার কল দেয়।প্রথম প্রথম নাম শোনা মাত্রই অণু কল কেটে দিতো।কিন্তু এখন কেটে দিতে পারে না।অপু অণুকে ভয় দেখায় তার সব কথা না শোনলে অভিকে সব জানিয়ে দিবে।অণু ভয় পায়,প্রচন্ড ভয়......
অভির সাথে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার ভয়,অভিকে হারানোর ভয়।
ধৈর্য্য ধরে অপুর কথা শোনে অণু।
অপু লাখ খানেক টাকা চায়,টাকা না দিলে অভিকে সব বলে দিবে.......
প্রতিদিনই সময়ে অসময়ে ফোন করে বিরক্ত করে অণুকে।অণু প্রায়ই চিন্তা করে অভির সাথে বিষয়টা শেয়ার করবে,কিন্তু পারে না।কেননা,বিষয়টা শেয়ার করলে হয়তো অভি ওকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে।একটা ভয় অণুকে সবসময় তাড়া করে বেড়ায়।
কি আর করা!!!
অপুকে ১লাখ টাকা দিতেই হবে নতুবা অভি সব জেনে যাবে।নিজের গয়নাগাটি বিক্রি করে অপুকে টাকাটা দেয় অণু এবং বলে দেয় আর কখনও যেন ওকে ডিস্টার্ব না করে।কয়েকদিন ভালোই যায়.....
তারপর আবার অপু কল দিয়ে টাকা চায়,আবার ভয় দেখায়।কিন্তু এবার অণু টাকা কোথা থেকে দিবে???
অপু রাত বিরাতে কল দিয়ে বিরক্ত করে।এত বারবার কল আসাতে অভি ইদানীং সন্দেহ করতে শুরু করেছে।প্রায়ই ওদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়।অভি এখন প্রচন্ড সন্দেহ করতে শুরু করেছে তার স্ত্রী কে কেননা,কয়েকবার অভি নিজেই অণুর ফোন রিসিভ করেছে।অভির ভয়েস শোনা মাত্রই লাইন কেটে দেয়।অভি নম্বরটা নিয়ে অন্যভাবেও যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেছে কিন্তু তেমন কোন তথ্যই পায় নি।
অপু আবার কল দেয়,টাকা চায়,টাকা না দিলে নেটে ছড়িয়ে দিবে ওদের গোপন ভিডিও।অভিকে দেখাবে সব ভিডিও।অভিকে সব, সব জানিয়ে দিবে।
অণু কিছুই ভাবতে পারে না।
রাতে ঘুমুতে পারে না,চোখের নিচে কালি পরে গিয়েছে ওর।কোন কাজে মনযোগ বসে না.......
একবার ভাবে আত্মহত্যা করবে।তৎক্ষণাৎ ই মনে পরে ওর শীরের বেড়ে উঠা আরেকটি জীবনের কথা,ওর রক্ত মাংসে বেচেঁ থাকা অভির সন্তানের কথা.....
অণু আত্মহত্যা করতে পারে না।
বিভিন্ন সন্দেহ আর সংশয়ে অভির সাথে ওর দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।অভি এখন আর আগের মত নেই।
অণু ভাবে সিমটা চেঞ্জ করে ফেলবে।তখনই মনে পরে অপুর কথা।অপু বলেছিল নম্বর বদলানোর চেষ্টা করলেই নেটে ছড়িয়ে দিবে সেই ভিডিও।
অণু কিছু ভাবতে পারে না।দুচোখে শুধু অন্ধকার দেখে.......
কয়েক মাস পরেই অণু আর অভির সংসার আলোকিত করে আগমন ঘটে ফুঠফুটে এক পুত্র সন্তানের।ভালোই কাটছে দিন।ছেলে,স্বামী সংসার নিয়ে ব্যস্ত অণু।সুখের সংসার.....
কিন্তু আবার অপুর যন্ত্রণা শুরু হয়।এবার অপু পূর্বের চেয়েও বেশি কঠোর।সাত দিনের মাঝে লাখ খানেক টাকা দিতে না পারলে সব জানিয়ে দিবে।নেটে ছেড়ে দিবে সেই গোপন ভিডিও.....
রাত দিন অপুর ফোন......
সময়ে অসময়ে টাকা চেয়ে বিরক্ত করে।
একদিন তো সরাসরি অণুদের বাড়ি এসে হাজির।ভাগ্যিস অভি বাড়ি ছিল না।তাই অণু ২০ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করে দিতে পেরেছে অপুকে।অপুর পায়ে ধরে অনুনয় বিনুনয় করে বলেছে আর যেন ডিস্টার্ব না করে।অপু কথা দেয় আর ডিস্টার্ব করবে না।
কিন্তু অপুর লোভ আরও বেড়ে যায়।
কিছু দিন পর পর ডিস্টার্ব করে,টাকা চায়,হুমকি দেয়..........
অণুর জীবন অতীষ্ঠ হয়ে গিয়েছে।এত যন্ত্রণা আর সহ্য হয় না।
"মরে যাব,মরে যাব আমি" আপন মনে বিড়বিড় করে অণু।এখন আর কোন পিছুটান নেই।ওর শরীরে বেড়ে উঠা শিশুটা পৃথিবীর আলো দেখতে পেরেছে।আর কোন পিছুটান নেই।
অণু একটা ডায়েরীতে সুইসাইড নোট লিখে।এসব ঘটনার আদি থেকে অন্ত লিখে ডায়েরীটা অভির পার্সোনাল ড্রয়ারে রাখে।তারপর অণু আত্মহত্যা করে.....
(খুব স্বাভাবিকভাবেই লিখে ফেললাম)
হঠাৎ অণুর এ আত্মহত্যা অভির জীবনে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্যোগ বয়িয়ে দেয়।অণুকে হারিয়ে অভি শোকে কাতর।কিছুই ভাবতে পারে না।কোন কাজে মন বসে না।সামাজিক, পারিবারিক শান্তিও বিনষ্ট হয়ে গেছে।রাস্তাঘাটে,অফিসে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় বারবার।মানসিক শান্তি নেই।অণুর ছেলেটা ওর দাদুর কাছে আছে এখন।অভির মা অনেক আদর করে তার নাতীটিকে।কিন্তু উনি মারা গেলে ভবিষ্যতে কে দেখবে এ ছেলেকে???
অনেক সংশয় কাজ করে অভির মনে।অনেক অজানা উত্তরবিহীন প্রশ্নেরা ভীড় করে অভির মনে।কিন্তু অভি নির্বাক।
অণু মারা যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর অভি তার ড্রয়ারে অণুর লিখা ডায়েরী টা আবিষ্কার করে।সব কিছু পড়ার পর,সব কিছু জানার পর অভির পৃথিবী এলোমেলো হয়ে যায়।অণুর চেহারটা ভেসে উঠে ওর চোখে।
অণু এমন ছিল????
এমন করেছে??????
এভাবে ঠকিয়েছে ওকে??????
অথচ ও টেরই পায় নি????
ছিঃ ছিঃ
ভাবতে কষ্ট হয় অভির।একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে অভি........
কি জবাব দিবে তার ছেলেকে????
যদি জানতে চায় কেন ওর মা আত্মহত্যা করেছিল?????
কি জবাব দিবে অভি?????
কয়েক ফোটাঁ অশ্রু অভির গাল বেয়ে গড়িয়ে পরে........
বিঃদ্রঃ গল্পটিকে কিভাবে নিবেন তা পাঠকের দায়িত্ব।খারাপ ভাবে নিলে খারাপ,ভালোভাবে নিলে ভালো।তবে লিখা শেষ করার পর আমার মনে হয়েছে শেখার কিছু একটা আছে এতে।
আপুরা,বি কেয়ারফুল।
নিজেকে ভালবাসতে শিখুন,সচেতন হোন,সাবধানে থাকুন নতুবা অণুর মত পরিণতি হবে.........
curtsy: জেনিন

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:১১

শিকদার ওয়ািলউজ্জামান বলেছেন: এমনটি অহরহ ঘটে, কিন্তু...

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:১২

আল-শাহ্‌রিয়ার বলেছেন: এটাই তো চিন্তার বিষয়

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৭

রিফাত হোসেন বলেছেন: হয় বুঝলাম তবে কিছু ব্যাপার পেঁচিয়েছেন। যদি ডিস্টার্ব যদি না করত তাহলে ঘটনার চাকা থেমে যেত, আর এরকম ঘটনা বেশী হয়। আর এগুলুই হয় বেশী।
আর ব্যাপারটা উল্টা হলে ?

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩২

আল-শাহ্‌রিয়ার বলেছেন: কিন্তু আজ ঢাকা থাকছে কম বরং এমন ঘটনার জন্য প্রায় বিবাহ বিচ্ছেদ বা আত্মহত্যার মতন খারাপ উদাহরনগুলো আমাদের সামনে প্রায় আসছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.