নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে
শীত বেশ বেড়েছে। শীতের রাতে রাস্তায় ঘুমিয়ে থাকা মানুষগুলোকেও বেশি বেশি চোখে পড়ছে। ভিক্ষুকমুক্ত ঢাকা গড়ার প্রজেক্টের কি হলো? রাস্তায় ভিক্ষুক কমেছে বলে তো মনে হচ্ছে না! বৌকে নিয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালে প্রায় ছয় দিন কাটিয়ে এলাম। এরই মাঝে একদিন হাস্পাতালের সামনের এলাকায় একবার বেরিয়েছিলাম, ভাত কেনার জন্যে। বউ-এর জন্যে খাবার কিনতে এসে কয়েকজন ভিক্ষুকের ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম প্রায়।
অবহেলিত সেসব মানুষগুলোর যতজনকে জিজ্ঞাসা করেছি, প্রত্যেকেরই উত্তর- এখন পর্যন্ত দুপুরের খাবার যোগাড় হয়নি। ঘড়ি দেখলাম- বিকেল সাড়ে ৪টা বাজে! ফুটপাথে দাঁড়িয়ে থাকা ঔষধ কোম্পানী''র রিপ্রেজেন্টিটিভ আর হুজুরদের সংখ্যা খুব একটা কম চোখে পড়লো না! কারো তো এদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই! এ নিয়ে আমি এতো উতলা হচ্ছি কেন! নিজের কাছেই নিজে লজ্জা পেলাম।
সেই মানুষগুলো আজ রাতে কোথায় শোবে? রাস্তার উপর জমে থাকা ময়লায় প্রশ্নটা নিজের কাছেই ফিরে এল আবার। উত্তর খুঁজে পেলাম না। ভাবনার সাগরে নিমজ্জিত মনটায় কে যেন হঠাৎ মনে করিয়ে দিল বাংলাদেশের খেলাপী ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা। দেশের ব্যাংকগুলোতে এতো টাকা আছে! নিঃসন্দেহে দেশ অনেক এগিয়েছে! এতো টাকাওয়ালা একটি দেশ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। কিন্তু কেন যেন সেই অগ্রগতির সঙ্গে মেঝেতে রাত কাটানো আদম সন্তানগুলোর জীবনকে মেলাতে পারলাম না। কোথায় যেন শুভঙ্করের ফাঁকি!
সেই ফাঁকিটি যত বড়ই হোক, এই খেলাপী ঋণ আদায় হলে সেই টাকা থেকে মাত্র ৮,৪০০ কোটি টাকা খরচ করে কয়টি এক বেডরুমের ফ্ল্যাট বানানো যাবে— সে হিসাবটা করার মতো যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ সরকার বা প্রশাসনে নেই, তা বিশ্বাস করা উচিত হবে না। সেই বিশ্বাসের ধার না ধেরে একটা অংক কষে ফেলা যাক চটজলদি।
একটি এক বেডরুমের ফ্ল্যাট বানাতে যদি ২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়,৮,৪০০ কোটি টাকায় কয়টি ফ্ল্যাট করা যাবে? ৪০ হাজার! সেই ৪০ হাজার ফ্ল্যাটে বসবাসকারী ভূমিহীনদের মাসে ২০০ টাকা করে ভাড়া ধার্য করা হলে প্রতি মাসে কত টাকা আসবে? ৮০ লাখ টাকা। বছরে ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ টাকায় পরের বছর আরো কয়টি ফ্ল্যাট করা যাবে?
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার পথে কতটুকু খরচ করতে হবে? মাত্র ৮,৪০০ কোটি টাকা! সরকার পারবে কি ঋণ খেলাপীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে এমন ইমারত বানাতে?
সরকার পারুক আর না পারুক, দেশের ইসলামী দলগুলো এ নিয়ে কি করছেন বা করেছেন? বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের একটি তথ্যমতে ২০২৪ সালে আমাদের দেশে পথশিশুর সংখ্যা দাঁড়াবে ১৬ লক্ষ। এই পথশিশুসহ কোটি কোটি দুঃস্থ মানুষের বাস্তু সমস্যা সমাধানে কি করছেন তাঁরা? এই সপর্কে তাঁদের পরিকল্পনা কি??
আমার আসলেই তা জানা নেই।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৪
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
জী, আপনার আপা ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ। জানতে চাওয়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
আপনার বক্তব্য সঠিক। যার যার দায়িত্ব, তাঁর তাঁর।
কিন্তু, কিছু মানুষ আছেন, যারা অন্যকেও কেয়ামতের দিন আল্লাহর অনুমতিতে সাহায্য করতে পারবেন। সেই মানুষদের অনুসারীদের সামাজিক সমস্যাগুলোর দিকে না তাকানো সত্যিই অবিবেচনা-প্রসূত!
ভালো থাকুন নিরন্তর।
২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহ চাইছেন বলেই তারা রাস্তায় ঘুমিয়ে থাকে। সব আল্লাহর ইচ্ছায় হয়।
৩| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:২৮
এমেরিকা বলেছেন: রাস্তায় ঘুমানো শিশুদের জন্য এপার্টমেন্ট বানালে তাতে কোন সমাধান আসবে না। একমাত্র সমাধান হল প্রান্তিক গ্রামবাসীদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। তাহলে কাউকে আর ঢাকায় আসতে হবেনা, রাস্তায় ঘুমাতেও হবেনা।
হুজুররা হুজুরদের কাজ করছেন, রাস্তার শিশুদের ঘুমানোর দায়িত্ব তো হুজুরদের নয়। কেবল ভাস্কর্য বানানোর বিরোধিতা করেছেন তারা, তাতে এত জ্বলুনি কেন?
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৯
মরুর ধুলি বলেছেন: গল্পের শেষাংশে আপনার বউয়ের (আমার আপার) শারিরীক অবস্থা জানান দিয়ে ইতি টানা যেত।
আমরা প্রত্যেকেই কেয়ামতের দিন মহান আল্লাহর দরবারে নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হব। আমাদের অধীনস্তদের ব্যাপারে, সময় ও আমাদের অর্জিত অর্থের আয়-ব্যায়ের ব্যাপারে। সেদিন মহান আল্লাহর অনুগ্রত ব্যতিত কেউ মুক্ত হতে পারবে না।
সেদিন বিচার কোন হুজুর আর বাদশা দেখে হবে না । প্রত্যেকের আমল অনুসারে বিচার হবে।