নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথটণ

কথটণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিঃসঙ্গ তারকা

০২ রা জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:১৩

আমার চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। একটা নিস্তব্ধ আর শীতল অনুভুতি । পৃথিবীর কলরব আমার কাছে পৌঁছে না। আমি দূর থেকে আমার মত কিছু একটা দেখতে পাই। এই কিছু একটার নাম হচ্ছে জোনাকি । জোনাকিদের আমার খুব ভালো লাগে। মিটমিট করে জ্বলে । খুব ইচ্ছে হয় একটা জোনাকি পোকা খুব কাছে থেকে দেখতে কিন্তু আমার সেই সুযোগ নেই। আমি সবসময় একটি সুন্দর রাতের অপেক্ষায় থাকি। দিনের বেলায় আমি অস্তিত্বহীন ।
আমি খুব ছোট একটা ছেলেকে দেখতে পাচ্ছি। ছেলেটির নাম মেঘ। মেঘ একা একা বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আমাকে দেখছে। আমাকে মেঘ কিছু একটা বলতে চাচ্ছে। হুম আমি বুঝতে পারছি মেঘকে। মেঘ রাতে সবসময় তার বাবার সাথে ঘুমাত। গল্প করতে করতে একসময় মেঘ ঘুমিয়ে পরত। ঘুমের মধ্যে-ও বাবাকে হাতড়ে খুঁজে বেড়াত । বাবাকে পেয়ে আবার নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পরত। অনেকদিন হল মেঘ তার বাবাকে খুঁজে পাচ্ছে না। এই নিয়ে ছোট্ট ছেলেটির অভিযোগের শেষ নেই। বাবাকে ছাড়া মেঘ একটু –ও ঘুমাতে পারে না। আমি গভীর মনোযোগের সাথে মেঘের অভিযোগগুলো শুনছি। আর একসময় আমার খুব অবাক লাগল । মেঘ ভাবছে আমি-ই নাকি তার বাবা। মেঘের ধারণা মানুষ মরে গেলে তারা হয়ে যায় । আমি মেঘকে কিছুই বলতে পারলাম না কারন আমার বলার ক্ষমতা নেই।
এক খণ্ড ছোট মেঘ এসে আমাকে ঢেকে ফেলে । আর আমি ছোট্ট ছেলে মেঘকে হারিয়ে ফেলি । মেঘ-ও আমাকে দেখতে পাচ্ছে না। মেঘের এবারের ধারণা আমি তার কাছ থেকে লুকিয়ে আছি। মেঘ খুব কষ্ট পেল। অভিমান করে চলে-ও গেল। কিন্তু আমি কিছু-ই বলতে পারলাম না কারন আমার বলার ক্ষমতা নেই।
আমি এখন অন্য একটি ছেলেকে দেখতে পেলাম। ছেলেটির নাম পরশ। পরশ আমার দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে খুব খুশি হল। হুম পরশ একটি মেয়েকে ভালোবাসে। মেয়েটির নাম স্বপ্নলতা । সে তার কল্পনায় এক এলোমেলো স্বপ্নলতাকে দেখছে যার কিছু চুল কপালটার উপর রয়েছে আর কপালের টিপটা নাকের অনেকটা কাছে চলে এসেছে। পরশ তার হাত দিয়ে স্বপ্নলতার কপালটার উপর থেকে চুলগুলো সরিয়ে টিপটি কপালে বসিয়ে দিল। আর স্বপ্নলতা একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে ঘরে চলে গেল। আচ্ছা ঘরে গিয়ে স্বপ্নলতা কি করবে?? হয়তবা তার পড়ার টেবিলের কোন একটা বিশেষ বইয়ে লুকিয়ে রাখা পরশের দেওয়া একটা চিঠি বের করে দরজার খিল লাগিয়ে নিঃশব্দে পড়া শুরু করবে। কোন একটা অক্ষর বাদ পড়ে গেল ভেবে চিঠিটা আবার পড়বে। পড়া শেষে হয়তবা কোন এক বিশেষ জায়গায় চিঠিটা পরম যত্নে লুকিয়ে রাখবে আবার।
মেঘের মত আমার কোন কষ্ট নেই আবার পরশের মত কোন ভাবনা-ও নেই। তারাদের কষ্ট থাকতে হয় না। আর আমি ভাবতে-ও পারি না। আমি শুধু একটি মেঘমুক্ত রাতের আকাশ চাই যাতে মেঘেরা আমাকে ঢেকে ফেলতে না পারে। মেঘেরা আমাকে ঢেকে ফেললে আমি লুকিয়ে আছি ভেবে ছোট্ট ছেলে মেঘ অভিমান নিয়ে ঘরে ফিরে যাবে। অভিমান আমার ভালো লাগে না। আমি অভিমানহীন মিটমিটে জ্বলন্ত একটি রাতের তারা.........

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.