নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার উপরে দেশ - আমার স্বদেশ। ভাল লাগে সততা, সরলতা। খারাপ লাগে নোংরামি, মিথ্যা, অহমিকা, কুটিলতা।
আমরা যারা চল্লিশের কোটা পার করেছি তাদের রাজনীতির ভাবনা আর আজকে যারা ২০-৩০ বয়সের মধ্যে আছেন তাদের চিন্তার পার্থক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক। রাজনীতির হাতে খড়ি আমার ৮০ এর দশকের বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে। পারিবারিক ভাবেই বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর রাজনীতিতে দীক্ষা পেয়েছিলাম। সর্বপ্রথম একটিভলি ভোটের রাজনীতিতে জড়িয়ে যাই ডঃ কামাল হোসেন বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার পর। কৈশরে আর প্রাথমিক যৌবনে যাদের জন্যে জীবনবাজি রেখেছিলাম ভোটের যুদ্ধে আজ তাদের অনেকেই আওয়ামীলীগের সাথে নেই। সময়ের ব্যবধানে পাওয়া না পাওয়ার হিসাব কষলে শুধু হাহাকার করে উঠে মন। এ শুধু ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়ার হিসেব নয়। এ হচ্ছে একটি সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো যখন বিশ্ব শাসণ করতে মরিয়া আমরা তখন এক আত্নঘাতি রাজনীতিতে নিমর্জিত। বিশ্ববিখ্যাত ইকোনমিক ইনটেলিজেন্স ইউনিটের পূর্বাভাস মতে ২০৩৩ সালের মধ্যেই ভারতের অর্থনীতি জাপানের অর্থনীতিকে অতিক্রম করবে আর চীন ২০৪০ সালে আমারিকাকে হটিয়ে বিশ্বের ১নম্বর অর্থনীতির আসন দখল করবে। সেখানে আমরা এ কোন বাংলাদেশ নির্মাণ করছি? বিগত ৫ বছরের রাজনীতি বিশ্লেষন করলে ভবিষ্যতের এক অধোগতির বাংলাদেশ দেখতে পাবেন। গত ২ বছর ধরে আমাদের জিডিপি ক্রমাবনতিশীল। জিডিপির এই ক্রমাবনতিশীল ধারা চলতে থাকলে আপনি আগামী ৫ বছরের মধ্যেই ১৯৯০ এর দশকের অবস্হায় পৌঁছে যাবেন। এ কোন চোরাবালীতে ডুবতে যাচ্ছে বাংলাদেশ? যারা এর নির্মাতার আসনে বসে আছেন সময় হয়েছে তাদের নিকট এর উত্তর খোঁজার।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতির ইতিহাসে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ১) মাওলানা ভাসানীর আওয়ামী মুসলিমলীগ ত্যাগ, ২) আওয়ামী মুসলিমলীগ নাম পরিবর্তন করে আওয়ামীলীগ নাম ধারণ, ৩) ১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের জয়লাভ, ৪) স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার ঘটন ৫) স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের সহায়তা লাভ ৬) বাংলাদেশের স্বাধীনতা ৭) বংগবন্ধু এবং তাজউদ্দীনের মধ্যে রাজনৈতিক দূরত্ব তৈরি, ৮) ১৯৭৪ এর দূর্ভিক্ষ ৯) বাকশাল ঘটন ৯) বংগবন্ধু এবং জাতীয় ৪ নেতার হত্যা ১০) শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন রুপে আওয়ামীলীগের আত্নপ্রকাশ, ১১) এরশাদের সাথে সমাঝোতার রাজনীতি, ১২) জামাতকে সাথে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সফল আন্দোলন, আর সর্বশেষে ১৩) এরশাদ এবং বামদের সাথে ঐক্য করে রাজনীতির গতিপথ নতুনভাবে লিখার চেষ্টা চালানো।
ইতিহাসের প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করলে ১ টি বিষয় ফুটে উঠে আওয়ামীলীগ যখন বাম রাজনীতির দ্বারা প্রভাবিত হয় তখন বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের স্বার্থের বিপক্ষে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়। আর এর মূল্য শুধু আওয়ামীলীগ একাই দেয়না, পুরো বাংলাদেশকেই এর মূল্য দিতে হয়। বাম রাজনীতির ধারকদের মাধ্যমে প্ররোচিত হয়েই বংগবন্ধু বাকশাল গঠন করেছিলেন - উদ্দ্যেশ্য ছিল একটাই বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপথ পরিবর্তন করে দেয়া। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এই অপরাজনীতির স্বিকার হয়েছিলেন স্বয়ং বংগবন্ধু।
ইতিহাসের বড় শিক্ষা হচ্ছে ইতিহাসের পুনোরাবৃতি একই ভাবে হয়না। সাম্প্রতিক রাজনীতির গতিপ্রকৃতি বলে দেয় রাজনীতির এ রুড় শিক্ষা এবার অনেক বেশী কঠিন হবে। এটি পরাবাস্তব না হলেও এর দায় এবং মূল্য এত বেশী হবে যে তা বহন করা সত্যিকারের নিবেদিত প্রাণ আওয়ামীলীগ কর্মীদের জন্য অনেক কঠিন হবে। আগামী পর্বে এই দায় নিয়ে লিখার আশা রইল।
©somewhere in net ltd.