নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সমন্ধে কিছু বলার নেই। এক সময় সামান্য কিছু লেখালেখি করতাম, সে গুলো পার্সোনাল সাইটে পাবলিশ করেছি। পড়তে চাইলে দেখতে পারেন - https://sam-sumon.blogspot.com/

ভবঘুরের ঠিকানা

এখানেই পাবে আমাকে। এটাই হচ্ছে ভবঘুরের ঠিকানা।

ভবঘুরের ঠিকানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুটি বাজে গল্প – সুকুমার রায়

৩০ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:০৬

দুই বন্ধু ছিল। একজন অন্ধ আর একজন কালা। দুইজনে বেজায় ভাব। কালা বিজ্ঞাপনে পড়িল, আর অন্ধ লোকমুখে শুনিল, কোথায় যেন যাত্রা হইবে, সেখানে সঙরা নাচগান করিবে। কালা বলিল, ‘অন্ধ ভাই, চল যাত্রায় গিয়া দেখি।’ অন্ধ হাত নাড়িয়া গলা খেলাইয়া কালাকে বুঝাইয়া দিল, ‘কালা ভাই, চল যাত্রায় নাচগান শুনিয়া আসি।’

দুইজনে যাত্রার আসরে গিয়া বসিল। রাত দুপুর পর্যন্ত নাচগান চলিল, তারপর অন্ধ বলিল, ‘বন্ধু, গান শুনিলে কেমন?’ কালা বলিল, ‘আজকে তো নাচ দেখিলাম-গানটা বোধহয় কাল হইবে।’ অন্ধ ঘন ঘন মাথা নাড়িয়া বলিল, ‘মূর্খ তুমি! আজ হইল গান-নৃত্যটাই বোধহয় কাল হইবে।’

কালা চলিয়া গেল। সে বলিল, ‘চোখে দেখ না, তুমি নাচের মর্ম জানিবে কী?’ অন্ধ তাহার কানে আঙ্গুল ঢুকাইয়া বলিল, ‘কানে শোনো না, গানের তুমি কাঁচকলা বুঝিবে কী?’ কালা চিৎকার করিয়া বলিল, ‘আজকে নাচ, কালকে গান।’ অন্ধ গলা ঝাঁকড়াইয়া আর ঠ্যাং নাচাইয়া বলিল, ‘আজকে গান, কালকে নাচ।’

সেই হইতে দুজনের ছাড়াছাড়ি। কালা বলে, ‘অন্ধটা এমন জুয়াচোর-সে দিনকে রাত করিতে পারে।’ অন্ধ বলে, ‘কালাটা যদি নিজের কথা শুনিতে পাইত, তবে বুঝিত সে কত বড় মিথ্যাবাদী!’





কতগুলো ছেলে ছাতের উপর হুড়োহুড়ি করে খেলা করছে-এমন সময়ে একটা মারামারির শব্দ শোনা গেল। তার পরেই হঠাৎ গোলমাল থেমে গিয়ে সবাই মিলে ‘হারু পড়ে গেছে’ বলে কাঁদতে কাঁদতে নিচে চলল।

খানিক বাদেই শুনি একতলা থেকে কান্নাকাটির শব্দ উঠছে। বাইরের ঘরে যদুর বাবা গণেশবাবু ছিলেন-তিনি ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী হয়েছে?’ শুনতে পেলেন ছেলেরা কাঁদছে, ‘হারু পড়ে গিয়েছে।’ বাবু তখন দৌড়ে গেলেন ডাক্তার ডাকতে।

পাঁচ মিনিটে ডাক্তার এসে হাজির, কিন্তু হারু কোথায়? বাবু বললেন, ‘এদিকে তো পড়েনি, ভেতর বাড়িতে পড়েছে বোধহয়।’ কিন্তু ভেতর বাড়িতে মেয়েরা বললেন, ‘এখানে তো পড়েনি-আমরা তো ভাবছি বার-বাড়িতে পড়েছে বুঝি।’ বাইরেও নেই, ভেতরেও নেই, তবে কি ছেলে উড়ে গেল? তখন ছেলেদের জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘কোথায় রে? কোথায় হারু?’ তারা বললে, ‘ছাতের উপর।’ সেখানে গিয়ে তারা দেখে, হারু বাবু অভিমান করে বসে বসে কাঁদছে! হারু বড় আদুরে ছেলে, মারামারিতে সে পড়ে গেছে দেখেই আর সকলে মার খাবার ভয়ে সেখান থেকে চম্পট দিয়েছে। ‘হারু পড়ে গেছে’ বলে এত যে কান্না, তার অর্থ, সকলকে জানানো হচ্ছে যে ‘হারুকে আমরা ফেলে দিইনি-সে পড়ে গেছে বলে আমাদের ভয়ানক কষ্ট হচ্ছে।’

হারু তখন সকলের নামে বাবার কাছে নালিশ করবার জন্য মনে মনে অভিমান জমিয়ে তুলছিল-হঠাৎ তার বাবাকে লোকজন আর ডাক্তার-সুদ্ধ এগিয়ে আসতে দেখে, ভয়ে তার আর নালিশ করাই হলো না। যা হোক, হারুকে আস্ত দেখে সবাই এমন খুশি হলো যে শাসনটাসনের কথা কারও মনেই এল না।

সবচেয়ে বেশি জোরে কেঁদেছিলেন হারুর ঠাকুরমা। তিনি আবার কানে শোনেন কিছু কম। তাঁকে সবাই জিজ্ঞেস করল, ‘আপনি এত কাঁদছিলেন কেন?’ তিনি বললেন, ‘আমি কি অত জানি? দেখলুম ঝিয়েরা কাঁদছে, বৌমা কাঁদছেন, তাই আমিও কাঁদতে লাগলুম-ভাবলুম একটা কিছু হয়ে থাকবে।’

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:১৯

মাক্স বলেছেন: :P:P:P

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:০০

ভবঘুরের ঠিকানা বলেছেন: :-P :-P :-P

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.