![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জোড়গড়ায় উবাইয়া ডাকি বেকুল বেকারার হাতটি ধরো, স্বর্গে যাবো বন্ধুয়া আমার
শিষ্য, মুরিদরা তাকে ডাকতো ''বাবাজি-ওস্তাদজি-গুরুজি'' বলে। এলাকাবাসী ডাকতো ''পীরসাব'' বলে। ভাটির জীবন্ত ও রূপক-উপমাকে যিনি তার গানে উপস্থিত করেছিলেন বিভিন্ন দর্শনে, সেই বাউলসম্রাটকে হারিয়ে দেশ-বিদেশের লাখো ভক্তদের সঙ্গে শিষ্যরা মুষড়ে পড়েছেন। তারা মুরশিদের বিরহে গাইছেনও ''মুরশিদ যাইও না তোমার প্রেমের বাজার ছাড়িয়া...''
বাউল সম্রাটের মুষড়েপড়া শীষ্যরা তাকে সমাহিত করার পর রবিবার রাত থেকেই নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তার কবরের পাশে। অতন্ত্রপ্রহরায় গান গেয়ে স্মরণ করছেন তাদের গুরুকে। শীষ্যদের এই দৃশ্য মনে হয় যেন একজন শিশুকে ঘুমপাড়ানো হচ্ছে গান শুনিয়ে। ''বাবাজী' যাতে বিরক্ত না হন সেজন্য একজনের পর একজন খালি গলায় ভাটির বুকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন উদাস করা সুর। কালনীর তীর ঘেষে গত তিনদিন ধরে এভাবেই শীষ্যরা স্মরণ করছেন ভাটির কিংবদন্তি পুরুষ বাউল সম্রাটকে।
হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জের শ্যামলা (৩৫) শাহ আবদুল করিমের অসম্ভব ভক্ত। তার নাম ছিল নূরজাহান। বাউলসম্রাট তার নাম রাখেন শ্যামলা। শাহ আবদুল করিম তার নাম রেখেছেন, এজন্য গর্ববোধ করে শ্যামলা। শ্যামলা বলে, ‘বাবাকে হারাইয়া আমি এতিম অই গিছি। কারণ আমার মুরশিদ ছিলেন আমার ধ্যানজ্ঞান। বাবা আমারে ছাইড়া গেলেও আমি বাবার খইবর সমাধি ছাইড়া যাইতাম না।'' এ কথা বলেই শ্যামলা ডুকরে কেঁদে ওঠে আর তার কান্নাভেজা কণ্ঠে ভেসে ওঠে বাউলসম্রাটের গান ''মুরশিদ প্রেমের বাজার যাইও না ছাড়িয়া...''
বাউলসম্রাটের প্রধান খলিফা বাউল রণেশ ঠাকুর। মুষড়ে পড়েছেন তিনি ‘বাবাজির মৃত্যুতে''। তার কাছে তার বাবাজির মৃত্যু মানে বাউল বংশের মৃত্যু। তার ভাষায় ''বাবা বাউল বংশ শেষ খইরা গেছইনগি''। ''বাবার মুখ না দেইখ্যা বাঁচতাম কিলা...'' বলেই উমেদ পাগলা নামে আরেক বাউলসম্রাটের শিষ্যকে ধরে কাঁদতে থাকেন। তিনি বলেন, বুকের ভেতর উচাটন করা এমন মায়ার টান আর কার গানে-সুরে আছে।
পূর্ব দিরাই গ্রামের এক ভক্ত শিল্পী বেগম জানান, ''বাবাজি বাড়িত গেলে আমরার খবর লইতা... আর আক্ষেপক করতা আমার কুন্তা নাই তোমরারে কিতা সমাদর খরি...।'' শিল্পী বেগম জানান, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার আগে ভক্তরা যতোবার তার বাড়ি যেতেন, ততোবারই তাদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যেতেন বাউলসম্রাট।
শাহ আবদুল করিমের প্রতিবেশী সুধীন্দ্র শেখর দাস (৬৫) বলেন, ওস্তাদজির প্রথমদিকের ছাত্র আমি। তার সঙ্গে অনেক আসরে মালজোড়া গেয়েছি। তিনি বলেন, শুধু ওস্তাদ হিসেবে নয়, প্রতিবেশী হিসেবেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত উদার। হিংসা, হানাহানি ভুলে মানুষের সেবা করার কথা বলতেন। তিনি বলেন, এমন মানুষের জন্ম সচরাচর হয় না।
শাহ আবদুল করিমকে রোববার বিকালে যখন কালনী নদী তীরের ছায়াঘেরা নিজ বাড়িতে স্ত্রী সরলার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়, তখন তার শীষ্যরা কেঁদে ওঠেন সমোস্বরে আর কোরাস কণ্ঠে গাইতে থাকেন ও ''মুরশিদ প্রেমের বাজার যাইও না ছাড়িয়ারে...।''
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:০৪
শামস শামীম বলেছেন: এমন অদ্ভুদ মায়ার টান আর কোথায় পাওয়া যাবে...
২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:৫২
সাগর ঢাকা বলেছেন: ''কেন পিরীতি বাড়াইলারে বন্ধু ছেড়ে যাবে যদি .''.....
এই গান টার লিঙ্ক আসে ? খুব শুনতে ইচ্ছা করছে ...ভালো হয় বাউল আব্দুল শাহ করিম এর সব গানের লিঙ্ক পেলে .
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:০৬
শামস শামীম বলেছেন: না ভাইয়া লিংকটা আমার জানা নেই...তবে মন উদাস করা এই গানটি অনেকবার শোনেছি।
৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:১৬
আবদুর রাজ্জাক শিপন বলেছেন:
এই প্রতিভার প্রতি প্রাণের গভীর শ্রদ্ধা ।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৩০
শামস শামীম বলেছেন: বাঙ্গালি জাতিকে প্রেরণা দিবে বারবার তার কালজয়ী সৃষ্টি।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:৩৪
ফকির ইলিয়াস বলেছেন: ''কেন পিরীতি বাড়াইলারে বন্ধু ছেড়ে যাবে যদি .''.....
এই গান সহ সিডি টা শুনছি গেল কদিন ধরে।
আমার ও মন চাইছে , আহা আমি ও যদি ছুটে যেতে
পারতাম বাউল করিমের সমাধি পাশে !