নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন স্বল্প শিক্ষিত মানুষ। অনুভূতি শেয়ার এবং শিখার জন্য লিখি।

কচি খান

কচি খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদায়

১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০২

‘বিদায়’ শব্দটি কি শুধুই ‘দূ:খ-বেদনার’ সাথে সম্পকির্ত? সত্যই কি বিদায় মানেই বুকের ভিতর শুধুই চিন্চিনে কষ্ট বোধ ? এর উত্তর সরাসরি ‘না’ বলার চেয়ে, বলা যেতে পারে এটি অকল্পনয়ী রহস্যময় এবং নানা বর্ণে বর্ণিল ও অর্থবোধক একটি শব্দ। ‘বিদায়’ কথাটি আমাদের অন্তরে শুধুমাত্র দু:খ-বেদনার অনুভূতিই সৃষ্টি করে; এটি সত্য নয়! আসলে ‘বিদায়’ এর কথা শুনে মানব মনে বিচিত্র যে সব প্রতিক্রিয়া জন্মে ‘দু:খ-বেদনা’ তার একটি অংশ মাত্র।

মূলতঃ ‘বিদায়’ তখনই হয় বেদনার, যখন সে কারো কোন প্রিয় মানুষ বা বস্তুকে কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়। আবার ‘বিদায়’ অফুরন্ত আনন্দ-উল্লাসও অন্তরে বয়ে আনে, যখন সে কারও অপছন্দনীয় কোন ব্যক্তি বা জিনিসকে দূরে সরিয়ে দেয়, সাময়িক বা চিরস্থায়ীভাবে। আমাদের ‘পছন্দ-অপছন্দ, নির্বিকারচিত্ততা কিংবা ভালোলাগা বা না লাগার অনুভূতিগুলো অনুঘটক হয়ে ‘বিদায়’-কে নানাভাবে অন্তরে চিত্রায়িত করে। পরিবার, কর্মস্থল, নিজ পরিবেশ অথবা এ গন্ডীর বাইরে থেকে যে কোন মানুষের অন্তর্ধান কিংবা কোন সম্পর্কের সাথে বিচ্ছেদে আমরা বাহ্যিকভাবে যে বেদনার্থক আচরণই করিনা কেন, সেটাই প্রকৃত উপলদ্ধির বহিঃপ্রকাশ তা বলাটা আদৌ ঠিক হবে না। কেননা আমাদের পরিচিত সব মানুষকেই কিন্তু আমরা সমানভাবে ভালোবাসিনা এবং পারিওনা। এর পরও বিদায়ের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় আমরা কথায় ও কার্যক্রমে ব্যক্তি বিশেষের প্রকৃত স্বরূপকে মিথ্যার আবরনে চাপা দিয়ে স্তুতি বাক্য পাঠ করি। কোন ক্ষেত্রে ‘বিদায় হলেই বাঁচি’-অন্তরে এরূপ বিতৃষ্ণা থাকলেও সুচতুরতার সাথে তা গোপন করে সামাজিকতা রক্ষা করি।

আজকাল অনেক সম্পর্কের ক্ষেত্রেই বিদায় যেন অনেক মানুষের জন্য বিশেষ কামনার বস্তু হয়ে দাড়িয়েছে। নতুন কিছু কিংবা অজানার আকর্ষণে মানব মন আজকাল যেন নিয়তই ব্যস্ত। জীবন সময়ের বাঁকে বাঁকে প্রিয়জন হারানোর বেদনায় নাড়ী ছোড়ার যে যন্ত্রণা, সে যেন আর আগের মত চিওকে পাগলপারা করেনা। চির বিদায়ও এখন কি আর মানুষকে দীর্ঘ শোকের ছায়ায় ঢেকে রাখে ? পরিবার সমাজ কিংবা রাষ্ট্রীয় পরিষরেও ‘বিদায়’ বিশেষ কোন বিষয় নয়। সে এখন স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বাভাবিক এক চেতনা। ‘বিদায়ে’-অশ্র“পাত, বিলাপ এগুলো সেকেলে সাংস্কৃতি হয়ে গিয়েছে। যান্ত্রিকতা ও আধুনিকতার স্পর্শে অনুভূতি হারিয়ে ‘বিদায়’ স্বয়ং যেন অত্যন্ত স্বল্পায়ুর কষ্টে পরিনত হয়েছে।

অদ্ভুত ব্যাপার যে, এখন আমরা মানুষেরা, অপছন্দের আর বিপরীত মনোভাবপন্নদের বিদায়ের জন্য কতইনা নিষ্ঠুর পথ ও কৌশল খাটাই! তারপর অপেক্ষায় থাকি। প্রার্থনা করি, বিদায় হয় না কেন ? কবে কার বিদায় ঘটতে পারে তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা এবং পরবর্তী লাভ-ক্ষতির হিসেব নিকেষ করি। সময়ে তো কারও কারও জন্য মৃত্যুকেও আহবান করি। এতটুকুতেও থেমে না থেকে কাঙ্খিত বিদায় ঘটে গেলে মিস্টান্নও বিতরন করি----।

স্বল্প সময়ের-এ জীবনে আমরা কত ভাবেই না ‘বিদায়’ দেয়া-নেয়া করি। কিন্তু আমাদের প্রত্যেককে যে অনিশ্চিত এক সময়ে এ সুন্দর পৃথিবী থেকে ‘চিরবিদায়’ নিয়ে যেতে হবে, তা নিয়ে আমরা এতটুকুও ভাবি কি?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.