নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাট ইয়োর বডি এর্কোডিং টু ইয়োর ইমেজ

শরৎ চৌধুরী

তুমি তোমার ইমেজ মতইপ্রোফাইল বানাওকি ব্লগেকি জীবনে

শরৎ চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহানগরের শিকারী এবং সংগ্রাহক

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:০৩



মহাজ্ঞানী উইকির মতে, “একটি শিকারী-সংগ্রাহক সমাজ হল সেটাই, যেখানে খাবারের আংশিক কিংবা পুরোটাই সংগৃহীত হয় বনজ উদ্ভিদ এবং প্রাণী থেকে। এই ব্যাবস্থা কৃষি ভিত্তিক সমাজের পুরো উল্টো, যেটা নির্ভর করে গৃহপালিত প্রাণীর উপর। শিকারী-সংগ্রাহকরা এক ধরণের যাযাবর।“



একবিংশ শতকের বাংলাদেশ এক জটিল সমাজ নিঃসন্দেহে। কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির ঐতিহ্য বহন করলেও গার্মেন্টস রপ্তানী, রাষ্ট্রের আয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ উৎস। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের তালিকাতেও নামডাক আছে বেশ, মাঝে মাঝেই আমরা ইউএন এর কি যেন সূচক অর্জন করি, বানকি মুন হাসিমুখ পোজ দেন। বিদেশে থাকা বাংলাদেশী মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়, ফলে সকল বাংলাদেশী বাংলাদেশেই থাকেন বিষয়টা এমন নয়। তাদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার গুরুত্বও অনেক। আর যারা থাকেন দেশে, দেশকে গভীরভাবে ভালোবেসেই কিংবা হয়ত নিরুপায় হয়েই, অথবা লোভে, তাদের নিয়েই এই ফটো রচনা।



আশুলিয়া, জনক্লান্ত এই মহানগরের নিঃশ্বাসের জায়গা সেটা আমাদের পনের বছরের পাবলিক স্মৃতিতে গেঁথে আছে ভালোভাবেই। ছুটির দিনগুলোতে বেড়াতে যাই সবাই। চোখের সামনে উপভোগ করি পুরো আশুলিয়ার দুপাশ বদলে যাওয়া। নগর বাড়ছে খুব, বৃহত্তর ঢাকা, ঢেকে ফেলছে চারদিক। আর মারা যাচ্ছে নদী। খবরের কাগজের পুরোনো খবর হলেও আবার যদি একটু চোখ বুলিয়ে নেই কয়েক লাইন তাহলে দেখবো, “আশুলিয়ায় তুরাগ নদ ভরাটের মহোৎসব, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা ও চলমান আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে তুরাগ নদের উত্তর তীর ভরাট করা হচ্ছে।“...যুগান্তর রিপোর্ট।



এবং আবারো, “রাজধানীর বৃত্তাকার নৌপথ বিলীন হয়ে যাচ্ছে, রাজধানীর চারপাশের বৃত্তাকার নৌপথের একদিকে চলছে খননকাজ, অন্যদিকে হাউজিং কোম্পানিগুলো মাটি ফেলে নদীতীর ভরাট করে প্লটের রমরমা ব্যবসা করছে। বর্তমানে টঙ্গী এলাকায় খননকাজ চলছে। গত বছর অক্টোবরে ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আশুলিয়া ও মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকার খননকাজ শেষ হয়। অথচ চার মাসের মাথায় হাউজিং কোম্পানিগুলো সেই নৌপথটি মাটি ফেলে ভরাট করে প্লট ও ফ্ল্যাট আকারে বিক্রি করছে। সরেজমিন বোটানিক্যাল গার্ডেনের পশ্চিম পাশ থেকে আশুলিয়া বেড়িবাঁধ পর্যন্ত দেখা গেছে, ৭০ থেকে ৮০টি হাউজিং কোম্পানি রাত-দিন মাটি ফেলে নদীতীর ভরাট করছে। এসব হাউজিং কোম্পানি শত শত সাইনবোর্ড আর আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্লট ও ফ্ল্যাট বিক্রি করছে। হাউজিং কোম্পানি ছাড়াও ইটভাটা, ইট ও বালির অবৈধ গদি এবং বিনোদন পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে।“

...সমকাল।



এবং আবারো, “রাজধানীর মিরপুর - আশুলিয়া সংলগ্ন নদী ও জলাশয় গ্রাস : চলছে দখলের মহোৎসব-...পরিবেশের এই বিপর্যয়ে ঊদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বিভিন্ন পরিবেশ গবেষনা সংস্থা।বাপার মহাসচিব ড.এম এ মতিন জানিয়েছেন শুধু তুরাগ নয় সারাদেশের নদীগুলোর একই চিত্র।আর এই সমস্যা সমাধানে বর্তমান সরকার আন্তরিক নয় বলেও মনে করেন তিনি।এই পরিবেশবিদের মতে সরকারের পক্ষ থেকে যা বলা হয় তা কিছুই বাস্তবায়ন করা হয় না।“... নিউজবিডি৭১ডটকম।



ভরাট হয়ে যাচ্ছে আশুলিয়া বেড়িবাঁধের দুপাশ। শুরু হয়েছে উত্তরা ৩য় পর্যায়ের প্রকল্প। অন্যদিকে চাষের জমিগুলোকে দখল করে রাখা ইটের ভাটাগুলোর ব্যাবসা এখন তেমন একটা জমজমাট না হলেও বড় বড় চোঙ্গাগুলোর সংখ্যা কখনো কমতে দেখিনি। আর তখনি দেখা মিলল এ কালের নতুন সংগ্রাহকদের।



ড্রেজিং করে নদী ভরাট করার সাথে সাথে উঠে আসছে ইট ভাঁটায় ব্যবহৃত হওয়া, কয়লা আর কাঠের অবশেষ। আর সেগুলোই সংগ্রহ করতে ব্যস্ত দরিদ্র মানুষ।



এভাবে কাঁদার ভেতর থেকে, নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে সংগৃহীত হচ্ছে... ইঁট ভাটায় ব্যবহৃত কাঠ আর কয়লা...



নদীর কবরের ভেতর থেকে উঠে আসছে, সভ্যতার আবর্জনা।



নদীকে শুষে নেয়া ড্রেজিং, ক্রমশ ভরাট করে চলেছে...মানুষের লোভের যেমন সীমা নেই, তেমনি...বিশ্রাম নেই ড্রেজিং যন্ত্রের..



দিনরাত অবিরাম কাজ করে চলেছে।



এই মানুষটার দিকে তাকিয়ে তাই মনে প্রশ্ন জাগে। কোন সমাজে আছি আমরা? কে এখানে শিকারী কেই বা সংগ্রাহক? নগরায়ণ প্রকৃতিকে শিকার করছে। মানুষের লোভ, জনস্বার্থকে, পরিবেশকে শিকার করছে। বড়লোকের বসবাসের জায়গার জন্য গরীব মানুষগুলো বাস্তুহারা হচ্ছে। এই জটিল, ভীষণ অসাম্যের বাংলাদেশে আমরা কি আদৌ সংগ্রাহক নাকি অধিকাংশই শিকারমাত্র?

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:২৫

আমিনুর রহমান বলেছেন:




আমি যখন আশুলিয়া কিংবা তার আশেপাশে যাই তখন অবাক নয়নে তাকিয়ে দেখি জলাভূমির মাঝে " এই জমির মালিক ... " লিখিত সাইনবোর্ডগুলো দেখে। আদৌ কি এরা এই জলাভূমির মালিক না দখল করে রেখেছে। আর যদি দখলই করে তাহলে কি সরকারের লোকজনের চোখে তা পড়ে না !!!


একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ শরৎ দা।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:২৬

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা মনযোগী পাঠের জন্য, আমিনুর।

২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: দারুন এবং দূর্দান্ত একটা পোষ্ট! পোষ্ট প্রেজেন্টেশনটা অনেক ভালো লেগেছে ভাই।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:২৬

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অশেষ শুভেচ্ছা, তোমার পোষ্টও অনেক ভালো লেগেছে।

৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৩

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: “উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের তালিকাতেও নামডাক আছে বেশ, মাঝে মাঝেই আমরা ইউএন এর কি যেন সূচক অর্জন করি, বানকি মুন হাসিমুখ পোজ দেন।” =p~ =p~

নদী রক্ষা অথবা পরিবেশের ভারসাম্য অর্জনে কোন সরকারই আন্তরিক নয়, তারা হতেও পারবে না, যতদিন তারা স্বার্থান্বেষীদের আজ্ঞাবহ হয়ে থাকবে। আমরা আমজনতা শিকার ছিলাম শিকারই থেকে যাবো, সংগ্রাহক হতে পারবো না।

চমৎকার লেখাটির জন্য ধন্যবাদ আপনাকে, অন্যমনস্ক শরৎ :) +++

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:২৭

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: শিকারি আন হলেও সংগ্রাহক তো আমাদের হওয়া দরকার তাই না? অনেক শুভেচ্ছা মইনুল।

৪| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:৫০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: মহানগরের শিকারী এবং সংগ্রাহক ভাল লাগলো। দারুণ উপস্থাপনা তার মধ্যে গুরুত্ব পূর্ণ কিছু ইস্যু তুলে ধরে চমৎকার একটি পোস্টের অবতারণা করতে শতভাগ সফল হয়েছেন।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ সেলিম।

৫| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৫

একজন আরমানের আত্মা বলেছেন:
দ্বিতীয় ছবিটা দুর্দান্ত।

আর উপস্থাপনা তার থেকেও বেশি !

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অনেক অনেক শুভেচ্ছা আরমান।

৬| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৪

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: এই জটিল, ভীষণ অসাম্যের বাংলাদেশে আমরা কি আদৌ সংগ্রাহক নাকি অধিকাংশই শিকারমাত্র?
খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তুলে এনেছেন !

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৪

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা অভি।

৭| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৭

নুর ফ্য়জুর রেজা বলেছেন: অসাম্যতা দিনকে দিন আরও প্রকট হয়ে উঠছে !! :(


++++

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৪

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: রেজা, এটা আমাদের সবার জন্য এক ভয়ংকর দূঃসংবাদ।

৮| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে আনা হয়েছে। জনসচেতনতা সৃষ্টির সাথে এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা দরকার। কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করুন, এরপর পোস্টটাকে স্টিকি করা হোক।

৯| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০২

প্রিন্স অফ পার্সিয়া বলেছেন: তীব্র হিংসা জানাই! :( আমি জীবনেও এতো সুন্দর ছবি তুলতে পারবো বলে বিশ্বাস হয় না! সব মিলিয়েই দুর্দান্ত হয়েছে

১০| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২৩

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: সবকিছু মিলাইয়া চমৎকার পোস্ট!

১১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: তুলে ধরাটা ভাল লেগেছে। গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়ে সুন্দর লিখেছেন।

১২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:০৩

টুম্পা মনি বলেছেন: আমি এই জায়গাটায় অনেকবার গিয়েছি। ছবিও তুলেছি প্রচুর। কিন্তু আপনার ছবির মত এত সুন্দর হয় না। আপনার ছবিগুলো খুব জীবন্ত হয়েছে।

১৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৪০

রোমেন রুমি বলেছেন:
পরিশ্রমী ও অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা পোস্ট ।
ভাল লাগা রেখে গেলাম ।

১৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৩৭

সানড্যান্স বলেছেন: একটা নদী হবে? ভরাট করতাম!!!

১৫| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪২

আহমেদ জী এস বলেছেন: অন্যমনস্ক শরৎ,

আমরা "শিকার" মাত্র ।
এটা আমরা যতো তাড়াতাড়ি বুঝবো ততোই আমাদের মঙ্গল ।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই এর সাথে একমত - ষ্টিকি হোক ।

১৬| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:১৩

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

বেশ সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন কিভবে কিছু সুবিধাভুগি মানুষ ও নগরায়নের ফলে ক আমাদের নিঃশ্বাস ফেলার জায়গা গুলো নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে।

ছবিগুলো অনেক সুন্দর।
পোষ্টে +++++++++++

১৭| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৪১

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


অসাধারন ও অনন্য একটি পোস্ট ++++ রইল।

১৮| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৩

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: মন টা অনেক খারাপ হয়ে গেল ।
সব নষ্টদের অধিকারে যায় ।

১৯| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৮

খাটাস বলেছেন: নগরায়ণ প্রকৃতিকে শিকার করছে। কথা টা অসাধারন। তবে যারা শিকার করছে, আর যারা শিকারের খাবার চেটে পুটে খাচ্ছে- উভয়েই সমান অপরাধি।
পোস্টের ছবি গুলো বেশি সুন্দর। পোস্টে প্লাস।
উত্তরণের পথ দরকার। অভিযোগ এর চেয়ে কাজ বাড়ান দরকার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.