নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তায় মুক্ত - ভাষায় প্রকাশে ভীত , কল্পনার সীমানা মহাকাশ ছাড়িয়ে - বাস্তবতায় পা বাড়াই না সীমানার বাহিরে

শান্তনু চৌধুরী শান্তু

কবিতা লিখি , গল্প লিখি , মুভি রিভিউ লিখি , বুক রিভিউ লিখি , ফিচার লিখি । এই তো আমার লিখিময় জীবন ।

শান্তনু চৌধুরী শান্তু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুক রিভিউ -\'ঘাসের ভেতরে সাপ\'

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৭



ভূমিকা - নামটা অদ্ভুত কারণে আমার খুব মনে ধরেছে । নামটা পড়েই মুখে রহস্য ও টক স্বাদ পেয়েছি । মলাটও চমৎকার । দেখা করতে গিয়েছি এক হার্নিয়ার পেসেন্ট রাইহান ভাইকে । টেবিলে বইটা নজরে এলো । প্রথম দৃষ্টিতে মনে হয়েছিল বইটা ভালোবাসাবাসির পত্র-ফুল-ফল-বীজের গল্প । এই জেনারের বই ছেড়েছি বহুদিন হলো । তবে হার্নিয়ার পেসেন্টের নিকট আমার অবস্থান আরেকটু দীর্ঘস্থায়ী হওয়া বইটা ধরতে হলো । প্রথম পৃষ্টাটা পড়েই বুঝলাম ধারণা ভুল না । তবে বইটা ভালোবাসার চারাগাছ লতা-পাতায় ধীরে ধীরে বটবৃক্ষে পূর্ণতা পাওয়ার কাহিনীতে ভরপুর নয় । সিদ্ধান্ত নিলাম বইটা পড়বো ।



লেখক পরিচিতি : বইটি লিখেছেন জনৈক ইসরাইল হোসেন । জনৈক বলার কারণে বইটির কোথাও লেখককে পেশার কথা উল্লেখ নেই । তবে ধারণা করছি তিনি আইন পেশার কোন না কোন শাখার প্রতিনিধিত্ব করছেন যা তাঁর উৎসর্গ দেখে ধারণা করতে পারছি । লেখকের জন্ম ১৪ এপ্রিল ১৯৫৯ সালে , ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানাধীন কাঠালীঘাটা গ্রামে । তিনি লেখা পড়া করেছেন জয় পাড়া হাইস্কুল , ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে । অধীত বিষয় আই । ইতিমধ্যে তাঁর গল্প , কবিতা , উপন্যাস ও ছড়ার বই বেরিয়েছে । এই যুগের মানুষের বই পড়া নিয়ে লেখক আক্ষেপ করে বলেন মানুষ দেউলিয়া না হলেও বই পড়ে বর্তমানে মানুষ খুব একটা বদলায় না । তা'ছাড়া মানুষ এখন ভীষণ অস্থিরতার শিকার । বই পড়ার জন্য স্থির ও সুন্দর সময় তার হাতে একবারে কম । মানুষ আবার কবে নিজের কাছে ফিরে আসবে ।

স্পয়লার এলার্টঃ বইটিতে ১১টি গল্প । 'ঘাসের ভেতরে সাপ' গল্পটি বইটার প্রথম গল্প । আমি স্পয়েল করবো কেবল প্রথম গল্পটির । সো স্পয়লার এলার্ট ।

একটু বলে রাখি । আইনপেশায় জড়িতদের দ্বারা লাতুপুতু ভালোবাসার গল্প লিখা সম্ভব নয় । এই সিদ্ধান্তে আমি বহু আগে পৌছেছি । কারণ এই জায়গায় পারিবারিক ও সামাজিক নষ্টামীগুলো এত বেশি চোখে পড়ে যে বেশিভাগ ক্ষেত্রে ভালোবাসাবাসি কথা শুনলে বমির উদ্রেগ ঘটে । রোমান্টিসিজমে জায়গা এটা না । ফলে লেখকের লিখাতে তার ছাপ পড়েছে ।



গল্প সংক্ষেপ : গল্পটা নাবিলা আর মাহামুদের । গল্পটা একই সাথে অপ্রধান চরিত্র তৃষ্ণারও । তৃষ্ণা সর্ম্পকে মোবারক সাহেবে নাতনী । যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী এক শিক্ষক তরুণ কবি মাহামুদের কলিগভাই হন । ফলে তৃষ্ণার সাথে মাহামুদের সর্ম্পকও দাঁড়ায় দাদু নাতনীর । চার বছরের তৃষ্ণার কান্না আর দশটা বাচ্চার মত কান্না নয় । সে করুণ এক কান্না । বেদনায় তার বুক যেন চিরে যাচ্ছে । চার বছরের তৃষ্ণার এই কান্নার কোন কুল কিনারা করতে পারেনি ডাক্তার। ডাক্তার থেকে ব্যর্থ হয়ে পীরের খোঁজ করছেন মোবারক সাহেবের পুত্র ও পুত্র বধু ।

নাবিলার সাথে মাহামুদের সর্ম্পক অনেক দিনের । তবু নাবিলার অনেক কিছু সে বুঝতে পারে না । বা বুঝতে চায় না । কটা দিন আগেই হঠাৎই কাউকে না জানিয়েই তারা বিয়ে করেছে । তবে স্বামী স্ত্রীর মত যেটা থাকার সেটা নেই । সামথিং ইজ মিসিং ।

নাবিলা মানসিকভাবে দুর্বল । পরস্পর বিরোধী গুণে এক অদ্ভুত সমাহার তার মাঝে । সে তীব্রভাবে মাহমুদকে ভালোবাসে সত্য । তবে একই সাথে কলিগ তমালকেও ঝুলিয়ে রাখতে পছন্দ করে । ধরা দেয় তো দেয় না । পুরুষের ইনটেনশন তার পছন্দ । অফিসের বস জাকির সাহেবও চুড়ান্ত রকম চরিত্রহীন । সুযোগে ইঙ্গিতে নাবিলাকে আমন্ত্রণ জানায় । নাবিলাও মৌন সম্মতি দেয় । এখানেও বসকে তমালের মত ঝুলিয়ে রাখে । ছাড়ে না । তার উন্নতি তো বসের ইশারায় ।

নাবিলার বস জাকির সাহেবও অন্য রকম কষ্টে আছে । ঘরে বউ আছে তবু সে পরনারীতে আক্রান্ত । স্ত্রী রীতির কাছে ধরা খেয়েও শুধরে জাননি । স্ত্রী প্রতিনিয়ত মোবাইলে তার খোঁজ নিয়ে তাকে উক্ত্যক্ত করে।

মাহামুদ নাবিলাকে চাকুরী ছেড়ে দিতে বলে । নাবিলাও মাহামুদকে ভালোবেসে চাকুরী ছেড়ে দিতে চায় । এদিকে তমাল একদিন তার মা সহ নাবিলার বাসায় চলে আসে । নাবিলা কিছু বলে না । কিছু করে না । এদিকে নাবিলার হাবভাব দেখে জাকির সাহেব বুঝতে পারলেন মেয়েটা চাকুরী ছাড়ার পাঁয়তারা করছে । নাবিলাকে ডেনমার্ক যাবার লোভনীয় অফার দিলেন । নাবিলা কনফিউজ । জাকির সাহেব তাকে এখনই পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে যেতে চান পাসপোর্ট করাতে । নাবিলা জানে তার বসের লক্ষ্য পাসপোর্ট অফিস নয় । তবু নাবিলা তার সাথে গাড়িতে উঠে বসে । কলিগ আকুলতাকে কল দেয় মাহামুদকে মিথ্যা বলার জন্য ।
নাবিলার ভেতরের এক নাবিলা বাধা দেয় আরেক নাবিলাকে । নাবিলা এইবারই শেষ বলে আশ্বাস দেয় । এই দোটানায় তার কাছে কল আসে । কলটা তার বসের স্ত্রী রীতির । তিনি নাবিলাকে অনেক অনুনয় বিননয় করেন । এই কাজ না করার জন্য । নচেৎ তার কষ্টগুলো ফিরে এসে একদিন নাবিলাকেই দংশন করবে বলে অভিশাপ দেয় । নাবিলা হতভম্ভ হয়ে জাকির সাহেবের ক্ষুর্ধাত চোখের সামনে আবিস্কার করে । গাড়ি হোটেলের কাছাকাছি করে চলে এসেছে ।

তৃষ্ণা হঠাৎই ভবিষ্যত বাণী করলো ঢাকার দাদু'টা আজ তাকে দেখতে আসবে । মোবারক সাহেব কি ভেবে রাতে ভালো খাবারের আয়োজন করতে বললেন । একটা সপ্তাশ্চর্যের মত ঘটনা ঘটলো । মাহামুদের কল হঠাৎই কিভাবে যেন নাবিলা ও আকুলতার মাঝে ঢুকে গেলো । মাহামুদ সব শুনলো । মাহামুদ অবশেষে হার মানলো । মেয়েটা প্রতিটা পরীক্ষায় ফেল মেরেছে । এটাতেও ফেল । মাহামুদ ফেরদৌসীকে একটা চিঠি লিখলো । নাবিলা নামটাকে সে মুক্ত করে দিলো ।
.
মাহামুদ ব্যাগ প্যাক করছে । আজ সে তৃষ্ণাকে দেখতে যাবে।
.....
.
.

সংক্ষেপেঃ -
বইয়ের নামঃ ঘাসের ভেতরে সাপ
লেখকের নামঃ ইসরাইল হোসেন
ঘরানারঃ রোমান্টিক
গল্প সংখ্যা : ১১টি
ব্যক্তিগত রেটিং: ৩.৫/৫
প্রকাশনী : চৈতন্য প্রকাশনী
প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০১৫
পৃষ্টা : ২৮০
দাম : ৪০০ টাকা
মতামতঃ একটি সুখ পাঠ্য বই

শান্তনু চৌধুরী শান্তু

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:০০

বাকপ্রবাস বলেছেন: দাম ৪০০ । ঠিক আছে?

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:১৮

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: হুম । তাই তো লিখা
'

২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর রিভিউ।

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৮

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.