![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবিতা লিখি , গল্প লিখি , মুভি রিভিউ লিখি , বুক রিভিউ লিখি , ফিচার লিখি । এই তো আমার লিখিময় জীবন ।
বরাবর, মাননীয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, শিমলা সেফ হাউজ, হিমাচল, ভারত।
বিষয় - কেন আজ আপনি ক্ষমতায় নেই।
জনাবা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, দেশের নাগরিক হিসেবে আপনাকে যে কথাটা বলতে চাচ্ছি, যে কথাটা জানাতে চাচ্ছি - তা বোধহয় আপনাকে কেউ জানায়নি। জানালেও শুনেননি, শুনলেও গা করেননি। যার কারণে আজকে আপনাকে আপনার পৈতৃক জমিদারী ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে ।
যখন আপনি ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন তখন অন্য দশজনের মত আমিও খুশি হয়েছিলাম। যাক দীর্ঘদিনের এক রাজনৈতিক অস্থিতিশীল সময়ের অবসান হয়েছে। ক্ষমতায় আসা মাত্র আপনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সংবিধান থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করলেন। অথচ এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠায় আপনার কত ত্যাগ তিতিক্ষা ।
২০১৪ সাল পর্যন্ত আপনি অন্য সব রাজনীতিবিদের মতন প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে একটি সাকসেসফুল টার্ম পার করলেন। এরপর থেকে আপনার যে যুগ শুরু হয়েছে, তার একটা সুন্দর নাম নেটি সমাজ দিয়েছে। 'আওয়ামী জাহেলিয়াত যুগ'।
২০১৪ সাল পর্যন্ত আপনি ন্যূনতম জবাবদিহিতার মাঝে ছিলেন। ২০১৪ সাল পরবর্তী সময়ে আপনি ও আপনার দল ক্রমে ক্রমে জবাবদিহিতার বাহিরে চলে গেল। যে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আপনি আপনার আশির দশক কাটালেন আজ সেই আপনি ক্রমে ক্রমে স্বৈরাচারে উপনীত হলেন । বিষয়টা আপনাকে জানানো হয়েছে। আপনাকে জানলেও শুনেন নি। শুনলেও গা করেন নি।
নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগ - এই তিন বিভাগের মধ্যে এমন কোন অংশ নেই যা আপনার দল কলুষিত করেনি, বলাৎকার করেনি, ধর্ষণ করেনি। নির্বাহী বিভাগকে ব্যবহার করে পাতানো ভোটে, বিনা ভোটে, ছলে বলে কৌশলে মামাদোবাজি দেখিয়ে শুধু পুলিশ আর আমলাদেরকে ব্যবহার করে ক্ষমতার কুক্ষিগত করে রেখেছেন৷ এটা কি আপনি অস্বীকার করতে পারবেন? দুঃখিত, আপনি পারবেন, আপনাকে আগেও জানানো হয়েছিল। আপনাকে জানলেও শুনেন নি। শুনলেও গা করেন নি।
২০১৪ সালের পরবর্তী আপনার সরকার 'আমলা' ও 'পুলিশ' ছাড়া আর কারো কাছে যেহেতু দায়বদ্ধ ছিলেন না, তাই জবাবদিহিতাও ছিল না। এই আমলা ও পুলিশকে খুশি করতে রবার্ট ক্লায়েভকে যেমন সিরাজউদ্দৌলার খাজনা দুয়ার খুলে দেওয়া হয়েছিল, তেমনি লুটপাটের ব্ল্যাংক চেক দেওয়া হয়েছিল আপনার সর্বোচ্চ অনুগত কুকুরছানা পুলিশ প্রধান বেনজির, রাজস্বে মতিউর সহ আরো কতজনকে!
এরা দুর্নীতি কে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। সামান্য পুলিশ, পিওন, কর্মচারীরাও শত কোটি টাকার মালিক। আজিজ আহমেদ নামক যে অমানুষটার কর্ণেল হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না সে মানুষটাকে করলেন সেনাবাহিনী প্রধান। তার ও তার ভাইদের দুর্নীতির মহাযজ্ঞের কাহিনী সবাই জানে। আল জাজিরাতে স্পষ্ট রিপোর্ট হয়েছিল। অন্য দেশে এই কারণে সরকারের পতন হয়ে যেত।
কিন্তু আপনার হাতের মুঠোয় থাকা পুরো বাংলাদেশের কেউ আপনার একটা লোমও ছিড়তে পারল না। আজিজ আহমেদকে স্বপদে বহাল রেখে দিলেন। ভাগ্য ভালো তার মেয়াদ শেষ যায় । নাহলে আজো সে সেনাপ্রধান থাকতো আর আপনাকে ক্ষমতার মসনদে বহাল রাখতে সে প্রয়োজনে হাজার হাজার প্রাণকে গুলি করে, তাদের অর্ধমৃত লাশ ভ্যানগাড়িতে চড়িয়ে, পুলিশ ভ্যানের ভিতর পুড়িয়ে হত্যা করে দিত।
আপনি মাদার অব ইনহিউমিনিটির অসীম পাপের মধ্যে সবচেয়ে বড় পাপগুলোর একটি হল 'মুক্তিযুদ্ধ'কে ধর্মে পরিনত করা । এই ধর্মের মসিহা বানালেন আপনার পিতাকে । আপনার পিতাকে বানালেন এমন এক ক্লাল্ট ফিগার, যাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করতে পারবে এমন প্রতিটা ফাউন্ডিং ফাদারকে আপনি ইতিহাসের পাতায় বেঈমান, গুপ্তচর, কিংবা আপনার পিতার অধিনস্ত কর্মচারী বানিয়ে দিলেন ।
আপনি আওয়ামী লীগকে বানালেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ধর্ম সম্প্রদায়। নিজে হলেন সেই ধর্মের পোপ। মানুষের প্রতিবাদের যেকোন কন্ঠকে রুদ্ধ করে দেওয়ার ক্রুসেডের হাতিয়ার বানালেন এই মুক্তিযুদ্ধকে। মুক্তিযুদ্ধ হয়ে গেল তখন ট্যাবু। মুক্তিযুদ্ধের প্রতীকের প্রতি এখন মানুষের যে অসীম কটাক্ষ ও জাতির জনকের প্রতি যে তীব্র ঘৃনা চারদিকে। তার বীজ আপনিই রোপন করেছেন। তাই এই ঘৃনার প্রধান দাবীদার আপনিও।
ক্ষমতার শেষ বছরে এসে, আপনিও ক্ষমতার সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে গেলেন, আপনাকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য সামরিক ও বেসামরিক কোথাও কেউ নেই। নিজেকে বোধহয় ঈশ্বরও ভাবা শুরু করেছিলেন। বাতাসে হাত বাড়িয়ে 'হও' বললেন আর সব হয়ে গেল।
এই অসীম আত্মবিশ্বাসের উপর ভর আপনার একনিষ্ঠ অনুগত আমলা হোসেন তৌফিক ইমামকে দিয়ে অভিনব জাদু দেখালেন। কিভাবে সকল জনগণের প্রত্যক্ষ ভোট ছাড়াও ক্ষমতার মসনদে অধিষ্ঠিত হওয়া যায়- আঙ্গুল দিয়ে তা দেখিয়ে দিলেন।
এইভাবেই সকলের কন্ঠ রুদ্ধ করে দেশ সুন্দর করে চলছিল। বাধ সাধলো কোটা আন্দোলন। একের পর এক দুর্নীতি, ভারতকে করিডোর দেওয়ার বিরুদ্ধে দেশের জনগণ যখন ক্রমে প্রতিবাদী হয়ে উঠছিল, তখন দেশের দৃষ্টি ঘুরাতে আপনি ও আপনার সরকার খুব সুন্দর একটা চাল চাললেন ।
নিজ দলের সমর্থক লোক দিয়ে রিট করিয়ে সকলের দৃষ্টি কোটা আন্দোলনে সরিয়ে আনলেন। ভাবলেন বাচ্চা মানুষ সহজে কন্ট্রোল করতে পারবেন। কত কিছুই তো কন্ট্রোল করেছেন। আপনিও জেদ ধরলেন, ছাত্ররাও জেদ ধরল। এই জেদ ও মর্মপীড়ারর কথা আপনাকে জানানো হয়েছিল। আপনি জানলেও শুনেন নাই। শুনলেও গা করেননি।
ক্ষমতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে ক্ষমতার দম্ভে আপনি বুঝতেও পারেননি কিভাবে ছাত্রদের একটি ম্যাচের কাঠি মশালে পরিণত হলো । এই মশালের আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল আপনার ১৬ বছরের গড়ে তোলা ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটারের বিশাল জমিদারি।
আজ যদি আপনি দেশে যথাযথ নির্বাচন দিতেন, জনগণের কণ্ঠরুদ্ধ না করতেন, তাহলে হয়তো আপনি ক্ষমতায় থাকতেন বা নির্বাচনে হারতেন কিন্তু দেশে থাকতেন, দেশের মানুষের ভালোবাসা পেতেন। স্বৈরাচার অপবাদ মাথায় নিয়ে নিজের সকল সমর্থকদের বাঘের মুখে রেখে পালিয়ে গেলেন! এইভাবে অবসান হলো আওয়ামি জাহেলিয়াত যুগের।
আপনি হয়তো ভাবছেন, আমি তো এখন নেই, দেশ কেমনে সামলাও আমি দেখি। আপনার পতনের পর আপনার সুযোগ্য পুত্র জয় ভিডিয়ো বার্তায় একই দম্ভ দেখালেন। জানালেন দেশবাসীর দায়িত্ব এখন থেকে আপনি বা আপনার পরিবারের নয়। যা হওবার হোক। দেশটাকে যে পৈত্রিক জমিদারী মনে করেছিলেন এই দম্ভ তারই প্রমাণ।
আমি জানি এদেশের সামনে একটি বিশৃঙ্খল সময় আসছে। ভাববেন না এই সময়টা আমরা এনেছি৷ এই দিনটা আপনার জেদ, অদূরদর্শিতা ও আপনার দুর্নীতিগ্রস্ত ঘুনে খাওয়া সরকারের কারণে এসেছে। অথচ এই দিনটির কথা, এই বিপ্লব আসার কথা আপনাকে জানানো হয়েছিল। আপনি জানলেও শুনেননি। শুনলেও গা করেননি।
প্লীজ আপনি মরবেন না৷ আপনি আরো ১০০ বছর বেঁচে থাকুন। আমরা আপনার বিচার করতে চাই একজন স্বৈরশাসক হিসেবে, একজন সাইকোপ্যাথ হিসেবে, ভারতের সেবাদাসী হিসেবে। আপনি সারাদেশ জ্বালিয়ে ভারতের মাটিতে স্বস্তির মৃত্যু আপনি ডিজার্ব করে না। যদি আপনি মরেও যান আপনার পাপিষ্ঠ দেহ এই দেশের মাটি যেন স্পর্শ না করে- এটা আমার স্রস্টার কাছে প্রার্থনা । আপনার স্থান নরকের ঐ সর্বনিম্ন স্তরে যেন হয়।
বিপ্লব সফল হোক।
নিবেদক
বাংলাদেশের একজন তুচ্ছ নাগরিক
শান্তনু চৌধুরী শান্তু. এডভোকেট
প্রথম প্রকাশ ৫ আগস্ট ২০২৪
পরিমার্জিত
নোট- ছবি ও ঠিকানা প্রতীকি
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ২:৫১
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: জাতির জনকের কন্যার বিরুদ্ধে এসব কথা কানে তোলার মত নয়।
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৩:৫১
অরণি বলেছেন: তেনারা দেশটাকে পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে।
৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেখ হাসিনা ক্ষমতায় নেই কারণ তিনি সঠিক কাজ করেন নি। সিম্পল।
৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:০৩
লুধুয়া বলেছেন: শীগ্রই রাজাকার দের হটিয়ে দেওয়া হবে।
৬| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:২৭
লোকমানুষ বলেছেন: তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে ধর্মের থেকেও বড় অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন, আর নিজ দলকে ভরসা যুগিয়েছিলেন ঈশ্বরের ওহী রূপে। তাইতো তাদের এই করুণ পরিনীতি হয়ে যাওয়ার পরেও তাদের দলের একনিষ্ঠ কর্মীরা তা বিশ্বাস করে না, কিংবা করলেও গা করে না! আসলে আমাদেরও মাঝে মাঝে বিশ্বাস হতে চায় না যে এমন 'জাহেলিয়াত যুগ' থেকে আসলেই আমরা মুক্ত (আংশিক) হতে পেরেছি!!!
৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: ভাগভ্যের লেখক না যায় খন্ডন।
আওয়ামীলীগ তো আর সাধু নয়। তাদের অনেক ভুল ছিলো। ভুলের মাশুল কত বছর ধরে দিতে হয় কে জানে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ২:৩৮
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: ধুরও ভাই এগুলো কি চিঠি লেখেছেন,
উনি এগুলো কিছু করেননি-
উনি ধুয়া তুলসীপাতা ছিলেন জানেন না
নিম্পাপ বলেই তো পালায়ন করেছেন-
গন্ডায় গন্ডায় পাপ থাকলে তো দেশেই থাকতেন
আর উনার দলকানা মানুষগুলো ভাবছেন
প্রতারনা, ষড়যন্ত্র আরও কত কি
এদেশে মানুষীই মরেনি; রক্তও ঝরেনি
উনি টুপকরে এসে ক্ষমতা নিবেন বুঝলেন;
ভাল থাকবেন ভাই