নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তায় মুক্ত - ভাষায় প্রকাশে ভীত , কল্পনার সীমানা মহাকাশ ছাড়িয়ে - বাস্তবতায় পা বাড়াই না সীমানার বাহিরে

শান্তনু চৌধুরী শান্তু

কবিতা লিখি , গল্প লিখি , মুভি রিভিউ লিখি , বুক রিভিউ লিখি , ফিচার লিখি । এই তো আমার লিখিময় জীবন ।

শান্তনু চৌধুরী শান্তু › বিস্তারিত পোস্টঃ

খ্রিস্টীয় ভবিষ্যৎ বানীতে আসন্ন কেয়ামতে ইজরাইলের ভূমিকা

০৮ ই আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৩:২৫


ভাবছিলাম ফি/লিস্তিনে যে এত কিছু হচ্ছে আমেরিকার ধর্মপ্রাণ খ্রিস্টান সমাজে কোন ইফেক্ট কি হচ্ছে না? রাজনৈতিক মানদন্ডে মুসলিমরা শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হলেও ধর্মীয় মানদন্ডে য়াইহুদিরা তো আরো বড় শত্রু হওয়ার কথা - যেহেতু জিসাসকে তাদের কারণে ক্রুশবিদ্ধ হতে হয়েছে। অন্তত আমার পড়ালিখা তো তাই তো বলে। তাই মানবতার মানদন্ড বাদ দিলাম, ধর্মীয় মানদন্ডে কিছুটা সিম্পেথী পাওয়ার তো কথা। ইন্টারনেটে এই বিষয়ে আরো পড়ালিখা করে আমি রীতিমতো আঁতকে উঠলাম!

আসলে হিজ্রাইল প্রতিষ্ঠাই হয়েছে খ্রিষ্টিয় ভবিষ্যতবাণীকে/প্রফেসীকে ফুলফিল করার জন্য। বিষয়টা ব্যাখ্যা করছি -

বাইবেলের একটি অংশ ইজেকিল (Ezekiel) গ্রন্থে বলা হয়েছে যে 'য়াইহুদিরা তাদের ভূমি থেকে পৃথিবীর প্রান্তে বিতাড়িত হবে এবং তারপর দীর্ঘকালীন নির্যাতনের পর, তারা পুনরায় ওই ভূমিতে ফিরে আসবে।' সেদিন থেকে আর্মাগাডেন (কেয়ামত) শুরুর দিনগুলো গণনা শুরু হবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জয়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হেনরি ট্রু ম্যান ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ খ্রিষ্টান। প্রতিরাতে বাইবেল না পড়ে ঘুমাতে যেতেন না। প্রফেসী ফুলফিল করতে তথা ইহুদিদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে তার প্রধান ভূমিকা ছিল। নিজেকে সাইরাস দ্যা গ্রেট মনে করতেন। বাইবেলে লিখিত সেই পারস্যের রাজা, যিনি য়াইহুদীদের ব্যবলনীয় বন্দিদশা থেকে হিজ্রাইল পুনর্বাসন করেছিল। তিনি এই বিশ্বাস নিয়েই মারা যান।

এখন ১৯৪৮ এ য়াইহুদীদের তো পুনর্বাসন হল। খ্রিষ্টিয় প্রফেসী এখানেও শেষ না । আরো অনেক প্রফেসী আছে । আমি বর্তমানের সাথে মানানসই গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রফেসীর উল্লেখ করছি।

ইজেকিল অধ্যায় ৩৮ পূর্বাভাস দেয় যে পাঁচটি দেশ ভবিষ্যতে হিজ্রাইলের পুনর্জন্মিত রাষ্ট্র আক্রমণ করবে। এটি একটি বড় যুদ্ধ, যা সকল ইহুদিরা যখন তাদের ভূমিতে ফিরে আসবে, তখন ঘটবে—অর্থাৎ এটি যে কোনো সময়ে ঘটতে পারে। বাইবেল বলে ইহুদিরা এই ভূমি চাষ করবে এবং এতটাই সমৃদ্ধ হবে যে পাঁচটি দেশ এই ভূমি নিজেদের জন্য দখল করার চেষ্টা করবে।

এখন, আপনারা এই পাঁচটি দেশের নাম পড়লে অবাক হবেন, কারণ তারা আজকাল কমবশি নিয়মিতভাবে সংবাদে থাকে। এই দেশগুলি হল রাশিয়া (মাগোগ), ইরান (পার্সিয়া), সুদান/ইথিওপিয়া (কুশ), লিবিয়া এবং তুরস্ক (গোমের)।

এর পরের প্রফেসী হল -
এই পাঁচটি দেশ সিরিয়ার সীমান্তের ওপারে হিস্রায়েল গোলান হাইটসে আক্রমণ করবে। বাইবেল এটি "মাউন্টেনস অব ইস্রায়েল" বলে উল্লেখ করেছে। গোলান হাইটস একটি পাহাড়ী এলাকা, যা ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর হিস্রায়েল দখল করেছিল এবং এটি সিরিয়ার সীমানার ঠিক পাশেই অবস্থিত।

এই যুদ্ধের সময় ঈশ্বর আজ পর্যন্ত জানা সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প দিয়ে আঘাত আনবেন। যা রাশিয়ার অস্ত্রগুলোকে ব্যর্থ করবে এবং এক পর্যায়ে এই পাঁচটি দেশ নিজেদের মধ্যে একে অপরকে আক্রমণ করতে শুরু করবে। এর পরে, ঈশ্বর রাশিয়ার বিরুদ্ধে আগুন, বরফ ও বজ্রপাত নিক্ষেপ করবেন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল যে, ঈশ্বর "মাগোগ" (রাশিয়া) এবং "সেনাপতির দিকে" আগুন পাঠাবে। কিছু বাইবেল স্কলার বিশ্বাস করেন যে এটি একটি পরমাণু আক্রমণ নির্দেশ করছে।

এই যুদ্ধের পর, হিস্রায়েলের জনগণ ঈশ্বরের প্রতি তাদের আস্থা পুনরুদ্ধার করবে এবং জিসাসকে গ্রহণ করবে। তথা খ্রিষ্টান হয়ে যাবে।
কিন্তু পৃথিবীতে শান্তি ফিরবে না।

এরপর পৃথিবী এত খারাপ একটা সময় (প্রাকৃতিক দুর্যোগ যুদ্ধ ইত্যাদি) অতিবাহিত করবে যা আজ পর্যন্ত পৃথিবী দেখেনি ও ভবিষ্যতেও দেখবে না।


ঠিক তখন পৃথিবীতে নেমে আসবে অ্যান্টিক্রাইস্ট!

ঠিক এখান থেকে দজ্জাল ও অ্যান্টিক্রাইস্টের চরিত্র অনেকখানি মিলে যায়। সেটা অন্য দিনের জন্য রাখি। আপাতত খ্রিস্টান বিশ্বাসের দিক থেকে আমি বিষয়টা ব্যাখ্যা করছি।

পৃথিবীতে ভয়াবহ অশান্তি, যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে থাকবে। যা ৭ বছরের দুর্ভিক্ষ" বা "গ্রেট ট্রিবুলেশন" হিসেবে পরিচিত হবে । এই সময়ে অ্যান্টিক্রাইস্ট তুমুল জনপ্রিয় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হবে। তিনি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিশ্বের মানুষদের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলবে। একটা পর্যায়ে তিনি নিজেকে ঈশ্বর দাবী করবে ও নিজেকে সর্বশক্তিমান হিসেবে প্রতিস্থাপন করবে।

অ্যান্টিক্রাইস্ট এর শাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার পক্ষ থেকে এক "চিহ্ন" বা "মার্ক" দেওয়া হবে। বাইবেল অনুযায়ী, সবাইকে একটি চিহ্ন দেওয়া হবে, যা না নিলে কেউ অর্থ উপার্জন করতে বা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে না। অনেকে এটাকে ইলেকট্রনিক মার্ক যেমন ‘বারকোড’ বা ‘চিপ’ ব্যবহারকেও বলে থাকে।


অ্যান্টিক্রাইস্ট এর শাসনের সময় জিসাস পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসবেন। তিনি অ্যান্টিক্রাইস্ট এবং তার অনুসারীদের পরাজিত করবেন এবং পৃথিবীতে ঈশ্বরের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। এই ঘটনার পর, জিসাস পৃথিবীতে এক শান্তি এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবেন। যা ১০০০ বছর চলবে।

হাজার বছর শান্তি রাজত্বের পর, শেষ দিবসে পৃথিবী চূড়ান্ত বিচার গ্রহণ করবে। যারা ঈশ্বরের পথে চলেননি, তারা চিরকাল আগুনের গর্তে পতিত হবেন। যারা ঈশ্বরের সঙ্গে বিশ্বাস স্থাপন করেছেন এবং তাঁর পথে চলেছেন, তারা আকাশে উঠবেন এবং শাশ্বত জীবন লাভ করবেন। ঈশ্বর নতুন আকাশ এবং নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করবেন, যেখানে কোনও দুঃখ, মৃত্যু বা কষ্ট থাকবে না।


এই হলো আর্মাগাডেন বা কেয়ামত নিয়ে খ্রিষ্টিয় বিশ্বাসের মুল বিষয়। আর এই ভবিষ্যতবাণীগুলোকে ফুলফিল করতে হলে হিজ্রাইলকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে৷ এই হলো কাহিনী। এই জন্য যত মাসুমের রক্ত ঝরুক, তাদের কিছু আসে যায় না।

শান্তনু চৌধুরী শান্তু. এডভোকেট

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.