![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যাহা সত্য তাহা সত্যই
রাজধানীর ধানমন্ডি ৭/এ এর একটি গলিতে ‘ড্রিম ভ্যান’- এ করে বিভিন্ন রকম লেডিস ও জেন্টস পণ্য ফেরি করে বিক্রি করছেন এক যুবক। দেখতে বেশ হ্যান্ডসাম বলে প্রথম দর্শনে তাকে ফেরিওয়ালা মনে হবে না কারোরই। হাতে দামি ক্যামেরা, কানে হেডফোন, পায়ে দামি জুতা, পরনে জিন্সের প্যান্ট ও সাদা পাঞ্জাবী দেয় আরও আভিজাত্যের পরিচয়।
নাম তার তাজুল ইসলাম (২৯)। পরিবার ও বন্ধুরা ডাকেন লিখন নামে। ফরিদপুর শহরে জন্ম। এখন থাকেন মোহাম্মদপুরে।
২০০৯ সালে মা রওশন আরা বেগম মারা যাওয়ার পর একা হয়ে পড়েন তিনি। তার আগে নিজের দুই বছর বয়সেই বাবা নুরুল ইসলামকে হারান লিখন। পরিবারের অন্য সদস্যরা সবাই উচ্চবিত্ত শ্রেণির।
লিখন রাজধানীর একটি কলেজে ডিপ্লোমা পড়া অবস্থায় ২০১১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় পাড়ি জমান। ৫ বছর পরে দেশে ফেরেন। এরপর উদ্বোধন করেন ফেরি করার বাহন ‘ড্রিম ভ্যান’ এর।
দুই মাস ধরে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে কলেজ ব্যাগ, মানিব্যাগ, বেল্ট, সানগ্লাস, স্যান্ডেল, টি-শার্ট ও ক্যাপ বিক্রি করছেন। আছে দামি ও অভিজাত ক্যাকটাসও। এই ভ্যান কিনতে তার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। আর পণ্য রয়েছে ১৫ হাজার টাকার মতো।
লিখন জানান, এই ৩০ হাজার টাকা পুঁজির ব্যবসায় প্রতিদিনের খরচ চলে যায় তার। শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে হয়েও তিনি জীবিকার্জনের জন্য এই কাজকে বেছে নিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি।
লিখন বলছিলেন, আমার কাছে কোনো কাজই ছোট নয়। সব কাজই মহান। কাজ সবসময় কাজই। কাজের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকা উচিত নয়। কাজকে নানা শ্রেণি ও খাতে ভাগ করার জন্যই আজকে বেকারত্ব বাড়ছে।
তিনি বলেন, আমার অনেক শিক্ষিত ভাইয়েরা পছন্দ মতো কাজ না পেয়ে বেঁচে থাকার জন্যই অসৎ পথ বেছে নেন। কিন্তু আমাদের উচিত সব কাজকে সমান চোখে দেখা। আমি মনে করি মন্ত্রী ও বাদাম বিক্রেতার কাজের মধ্যে কোনো তফাৎ থাকা উচিত নয়।
‘বেকার যুবক ভাইদের লাজ-লজ্জা ভেঙে দেওয়ার জন্যই আমি এই কাজ বেছে নিয়েছি। সামনে ইচ্ছে আছে লুঙ্গি পরে রিকশা চালাবো। এরপরই ফেরি করে বাদাম বিক্রি শুরু করবো।’
কোরিয়ায় উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকা শহরে দু’টি প্লট কিনেছেন। এরমধ্যে একটি আবার অভিজাত এলাকা বসুন্ধরা রিভার ভিউতে। কক্সবাজারের ওশান গার্লের অষ্টম তলায় কোটি টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাটও আছে তার। বাবা মারা যাওয়ার পর নানা বাড়িতেই মামা-খালাদের আদরে বড় হন লিখন। পরিবারের সবাই উচ্চবিত্ত। এরপরও ফেরিয়ালার ব্যবসায় কোনো বাধা আসে না লিখনের।
লিখন বলেন, আমার পরিবারের সব সদস্যই আল্লাহর রহমতে ভালো অবস্থানে আছেন। সবাই আমাকে সাপোর্ট দেন, বাধা দেন না। আমার দেখাদেখি সব বেকার যুবক সব ধরনের কাজ বেছে নিলেই আমি হ্যাপি। তাহলে সমাজ থেকে চুরি, পকেটমার, রাহাজানি ও ছিনতাই উঠে যাবে।
এই হ্যান্ডসাম ফেরিওয়ালা বলেন, আমরা যখন বিদেশ যাই, তখন সব ধরনের কাজ করতে পারি। কিন্তু নিজের দেশে থেকে কেন পারবো না? দেশে কাজের মর্যাদা ও ভেদাভেদ যেদিন উঠে যাবে, সেদিনই আমাদের দেশটা আরও সামনে এগিয়ে যাবে। কাজের নানা ভেদাভেদ থাকার কারণে আমাদের সমাজে শিক্ষিত ভাইয়েরা আজকে বেকার।
বেকারত্ব লিখনকে পীড়া দেয়। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে হারে উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে বের হচ্ছে যুবক শ্রেণি, সেই হারে কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে না। তাই আমাদের উচিত সব ধরনের কাজে মনোনিবেশ করা ও দেশটাকে সুন্দরমতো গড়া।’
- বাংলা নিউজ ২৪
২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭
শরিফুল ইসলাম শোয়াইব বলেছেন: হ্যাঁ, বেচে থাকার জন্য কাজ অবশ্যই দরকার। তবে সেটা সমাজ স্বীকৃত যে কোন কাজ হলেই হলো। পড়াশোনা করে চুরি করার দরকার নেই। প্রয়োজনে চানাচুর বিক্রেতা হওয়া ভাল
২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৭:৩০
মানবী বলেছেন: অসাধারন সুন্দর প্রচেষ্টা! চমৎকার উদ্যোগ!
ছিনতাইকারীদের মাঝে এভাবে ক্যামেরা নিয়ে যিনি নিশ্চিন্তে পথ চলছেন তিনি সাহসী নিঃসন্দেহে।
একজন আত্মমর্যাদাবান তরুন উদ্যোক্তা তাজুল ইসলামকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভকামনা!
শরিফুল ইসলাম শোয়াইবকে ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৫১
শরিফুল ইসলাম শোয়াইব বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ সময় নিয়ে লেখাটি পড়ার জন্য
৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:৪৯
আহলান বলেছেন: যখন ইশকুলে পড়তাম তখন আমাদের ইংরিজি স্যার বলতেন এমেরিকার মেয়েরা এমন ছেলেদের পছন্দ করে যাদের গায়ে কাজ করতে গিয়ে ময়লা্ জড়িয়ে থাকে। কাজ করে ঘামে ভেজা শরীরই নাকি মেয়েদের কাছে বেশী প্রিয়। স্যুটেড ব্যুটেড ছেলেদের তুলনায় ময়লা কালি লাগা পরিশ্রম করা ছেলেরাই নাকি হট ফেবারিট। আর আমাদের দেশে? ঘুষখোর দূর্নিতীবাজ সরকারি কম্মকত্তারা হলো পছন্দের প্রথম তালিকায় .....
৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:১৯
রাকিব সামছ বলেছেন: লিখনের জন্য অনেক শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন। আর যিনি তার এই সুন্দর প্রয়াসকে তুলে ধরেছেন তাকেও ধন্যবাদ।
৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৩৫
মোহাম্মদ রাহীম উদ্দিন বলেছেন: স্যালুট ব্রাদার....!
http://www.somewhereinblog.net/blog/mrahim04/30101173
পড়ুন এবং শেয়ার করুন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৭:১৩
প্রন্তিক বাঙ্গালী বলেছেন: সাহসী যুবক। প্রত্যকটি শ্রমের মর্যাদা আছর। অবহেলা করা উচিত নয়।