নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধর্ম নিয়ে বিতর্কের নাস্তিকতার , ধর্ম বিদ্বেষের কিছু সুনির্দিষ্ট এবং যুক্তি সঙ্গত কারণ রয়েছে।ধর্মের সাথে সংঘাত হয় মূলত মানুষের দর্শনের, মানুষের মুক্ত চিন্তার।যা ছিল মানব সৃষ্ট এবং লক্ষ্য ছিল ক্ষমতা কুক্ষিগত করা।
দর্শনের সাথে ধর্মের কখন কোন সংঘাত কখনই ছিলনা । সক্রেটিস , প্লেটো ,এরিস্টটল শুধু ধর্মকে শ্রদ্ধাই করেনি বরং যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছে ধর্মের যৌক্তিকতা। মজার বিষয় আজ ঈশ্বর বিশ্বাসে প্রমাণের দরকার হয় কিন্তু এই মহান মনীষীরা কোন প্রমাণ ছাড়াই শুধু স্বীয় ভাবনার যুক্তির ভিত্তিতেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করেছিলেন ।
দর্শন মানুষের ভাবনার প্রতিবিম্ব । কিন্তু দর্শন কি শুধু মানুষেরই হয় ? আমার মতে না , প্রতিটি বস্তুর দর্শন আছে । কারণ প্রতিটি বস্তুর নির্দিষ্ট প্রকার বা ধর্ম আছে জড় বা জীব সকল বস্তুই। প্রত্যেকটি বস্তুর ধর্ম বা প্রকারই হচ্ছে এক একটি দর্শন। প্রত্যেকটি বস্তু তার স্বীয় দর্শন প্রকাশ করে। তেমনি প্রত্যেকটি মানুষ একটি দর্শন প্রত্যেকটি মানুষের আচরণ ভাবনা স্বতন্ত্র তাই প্রত্যেকের আচরণ আলাদা আলাদা দর্শন প্রকাশ করে।প্রত্যেকটি মানুষ, প্রত্যেকটি জীব, প্রত্যকটি পদার্থ , পদার্থের অনু পরমানু আরও ক্ষুদ্র কনা সবই এক একটি দর্শন।কারণ প্রত্যেকের নিজস্ব ধর্ম বা গুন বা বৈশিষ্ট রয়েছে অর্থাৎ যা স্বতন্ত্র তাই দর্শন।
দর্শন একটি মুক্ত বিষয় যা মানুষের বা বস্তুর ভিতরে জন্মগত বা সৃষ্টিগত ভাবেই নিহিত । যখন একটি বস্তুর ধর্ম পরিবর্তন করা হবে স্বাভাবিক ভাবেই তার দর্শন বাঁধা প্রাপ্ত হবে ফলে তৈরি হবে নতুন কিছু হয়ত ভালো বা হয়ত খারাপ। ঠিক সেরকমই মধ্য যুগে মানুষের এই দর্শনকে করা হয়েছিল বন্দী। মুক্ত ভাবনার কোন স্বাধীনতা দেয়া হয়নি। মানুষকে বাধ্য করা হয়েছিল কেবল একটি দিক থেকে বা জীবনকে ভাবতে তা হচ্ছে ধর্ম । কিন্তু তা কি করে সম্ভব মানুষের ভাবনাকে শৃঙ্খলিত করে একদিকে ভাবতে বা জীবনকে দেখতে বাধ্য করা ??? আর তাই এই সংঘাতের জারজ সন্তান জন্ম নিল নাস্তিকতা , ধর্ম বিদ্বেষ।
ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে শুরু করে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত আবির্ভূত দর্শন মধ্যযুগীয় দর্শন বলে পরিচিত। সে সময় গ্রীকরা স্কুল বা বিদ্যালয় তৈরি করে যেখানে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে দর্শনের আলোচনা হত এবং নতুন দর্শনের সৃষ্টি হত। অর্থাৎ স্বাধীন মত প্রকাশে বা স্বাধীন বা মুক্ত চিন্তায় কোন বাঁধা ছিলনা ।বরং মুক্ত চিন্তার অনুশীলন করা হত যথারীতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে।
ধারণা করা হয় এই ধরনের দর্শন অনুশীলন প্রতিষ্ঠানের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন প্লেটো।তিনি তার পৈত্রিক সম্পত্তির একটি বাগান বাড়িতে গ্রীক পৌরানিক বীর “একাডেমাসের” নামানুসারে জ্ঞান চর্চার এই প্রতিষ্ঠানের নাম করন করেন। তখন জ্ঞান চর্চার কোন প্রতিষ্ঠান ছিলনা। পরবর্তীতে এই ধরনের জ্ঞান চর্চার আরও শক্তিশালী ও বিস্তৃত রূপ লাভ করে প্লেটোর স্কুলেরই আরেকজন বিখ্যাত দার্শনিক এরিস্টটলের মাধ্যমে। এরিস্টটল একটি ব্যক্তিগত লাইব্রেরী গড়ে তলেন এবং জ্ঞান চর্চার জন্য “লাইসিয়াম” নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে তারই ছাত্র নগর শাসক হারমিয়াসের পৃষ্ঠপোষকতায় তা আরও ব্যপ্তি লাভ করে । কিন্তু এই জ্ঞান চর্চার প্রতিষ্ঠানের চূড়ান্ত সার্থক রূপ পায় এরিস্টটলের ছাত্র “আলেকজাণ্ডার দা গ্রেট” এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। আলেকজান্ডার এরিস্টটলকে পিতার ন্যায় জ্ঞান করতেন বলতেন, একজন আমাকে জীবন দিয়েছেন অন্যজন শিখিয়েছেন সার্থকভাবে বাঁচার শিল্প। তিনি এরিস্টটলের জ্ঞান চর্চায় যা প্রয়োজন তাই যেন দেয়া হয় তার প্রীতিটি রাজ কর্মচারীকে নির্দেশ দেয়া ছিল ।
এগুলো সবারই জানা তারপরেও বললাম । এই কারণে যদি প্লেটো , এরিস্টটলদের এই জ্ঞান চর্চায় কোন বাঁধা না আসতো আলেকজান্ডারের মত বিচক্ষণ রাজারা যদি থাকতেন তাহলে আজ মানুষের দর্শন মানুষের ভাবনা কথায় যেত কতটা পূর্ণতা পেত মানুষের জ্ঞান ! ভাবলে শরীরে কাঁটা দেয় । শুধু মাত্র ক্ষমতার লোভে ইতিহাসের আবর্জনার কীট জাস্টীনিয়াস মানুষের কি ক্ষতি করে গেল !!!
৫২৯ অব্দ ইতিহাসের কলঙ্কজনক সেই ইতিহাস। এই সময় রোমান কুলাঙ্গার সম্রাট জাস্টিনিয়াস সকল গ্রীক স্কুল ভেঙ্গে দিল । মানব সভ্যতার এত বড় ক্ষতি, আজকের ধর্ম ও মানুষের সংঘাতের মূল জন্ম দাতা , মানুষের ভাবনাকে বন্দী করার শৃঙ্খলিত করার মূল হোতা ইতিহাসের জঘন্য কীট এই রোমান ইতিহাসের কুলাঙ্গার নরকের কীট জাস্তিনিয়াস । মানব সভ্যতা ও ইতিহাসের এত বড় ক্ষতি আর কোন নরকের কীট করতে পারেনি। এই পিচাশ শয়তানের দোসর হিটলার , নমরুদ , ফেরাউন যে কোন পিচাসের চেয়ে মানবতা ও মানব সভ্যতার সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করেছে।
এই আবর্জনার কীটের জন্য শুধু যে ধর্ম ও মানুষের ভাবনার সংঘাতের জন্ম তাই নয় এই শয়তানের জন্যই মানুষের মুক্ত চিন্তার পথ প্রায় রুব্ধ হয়ে গিয়েছিল । যা অধুনা রেনেসাঁ ও অন্যান্য মুক্তি চিন্তার বিপ্লবের মাধ্যমে মুক্ত চিন্তার বিকাশ আবার বিকশিত হওয়ার পথ পেয়েছে। এই শয়তানের জন্যই আজ মানব সভ্যতা বা মানুষের ভাবনায় এতটা পিছিয়ে রয়েছে।আজো নানা কুসংস্কারের রীতির জন্মদাতাও এই শয়তান।যা থেকে আজো অনেক জাতি বের হতে পারেনি ।
কেন কিভাবে তার ব্যাখ্যা দিচ্ছি
ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে যখন দর্শনের উৎপত্তি হয় সে সময়ের বিখ্যাত যত দার্শনিক রয়েছেন বা দর্শনের যে বিষয় তার সাথে ধর্মের কোন বিভেদ সংঘাত ছিলনা । ধর্ম ধর্মের জায়গায় দর্শন দর্শনের জায়গায় ঠিক যেমন আজকের সংস্কৃতির মত। যে জাতি যে সংস্কৃতি সে তা পালন করে ধর্মের সাথে সংস্কৃতির কিন্তু কোন বিভেদ নেই। কোন কালে ছিলও না। সক্রেটিস , প্লেটো , এরিস্টটল এর মত বিখ্যাত দার্শনিকরা ধর্মের পক্ষে ছিলেন এবং পক্ষেই কথা বলেছেন তারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব বিশ্বাস করতেন। কারণ তখন ধর্ম ও দর্শনে কোন সংঘাত ছিলনা।
কিন্তু ইবলিসের দোসর জাস্টিনিয়াস নিজের ক্ষমতা পোক্ত করার জন্য দর্শনের বা মুক্ত চিন্তার সকল পথ সকল স্কুল সকল প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে দেয় । ফলে বন্ধ হয়ে যায় মুক্ত চিন্তার সকল পথ। কিন্তু সমাজ বা রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য এমন কিছু নীতির বা ভিত্তির প্রয়োজন যা মানুষ অন্ধভাবে বা বিনা বিতর্কে মেনে নেবে।ধর্ম , দর্শন , সংস্কৃতি সমাজে এই তিনটি বিষয়ের ভিত্তি মজবুত কারণ বেশীরভাগ মানুষ বিনা বিতর্কে এই বিষয়গুলো মেনে নেয়। “সমাজের নীতি তৈরির ভিত্তি” এই জায়গাটি ছিল দর্শনের কিন্তু জাস্টিনিয়াস তা দর্শনের কাছ থেকে ছিনিয়ে ধর্মের কাছে দিয়ে দেয়। কিন্তু তখন ধর্ম কিছু নীতি কথা আর নির্দিষ্ট কিছু আচারেই ছিল সীমাবদ্ধ এত বড় ভার নেয়ার মত শক্তি বা ভিত্তি কোনটিই ধর্মের ছিলনা।
সে তখন নিজের ক্ষমতা পোক্ত করার জন্য ধর্মযাজক বা চার্চকে ব্যবহার করলো। শুরু হল ধর্ম যাজক বা চার্চের রাজত্ব। কিন্তু ধর্ম তখনো পূর্ণাঙ্গ কোন বিধান বা মানুষের পূর্ণ জীবন বিধান দিতে পারেনি । ধর্ম ছিল তখন নির্দিষ্ট কিছু আচারে সীমাবদ্ধ যার কোন পূর্ণ রূপ ছিলনা।
ধর্ম যাজকরা তাদের ইচ্ছা মত রীতি নীতি তৈরি ও তা সমাজের উপর চাপিয়ে দিতে লাগলো। মুক্ত চিন্তার পথ শুধু বন্ধই নয় ছিল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।পরবর্তীতে ইতিহাসের নিকৃষ্ট আরেক জাতি ইংরেজরা পৃথিবীতে তাদের ঔপনিবেশিক শাসন বিস্তার করার সাথে আথে এই নিকৃষ্ট জাতির কিছু নিকৃষ্ট ভাইরাস পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয় যার মধ্যে জাতিগত দাঙ্গা , অবিশ্বাসের হটকারী রাজনীতি , খ্রিস্টান পাদ্রীদের মিথ্যা ধর্মীয় রীতি তৈরির বা ধর্মীয় নেতাদের দ্বারা নীতি তৈরি করে জনতাকে ধোঁকা দেয়া যা পরবর্তীতে অন্য ধর্মকেও সুযোগ সন্ধানীরা একই ভাবে ব্যবহার করছে আজো । নিকৃষ্ট নীচ ইংরেজদের দোষ দেয়ার কারণ পৃথিবীতে ফরাসী , পর্তুগীজ , ওলন্দাজ , ইরানী , আরবরাও পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি ও দেশ দখল ও শাসন করেছে । কিন্তু এই নীচ ইংরেজরা যে পরিমাণ নষ্ট জীবাণু ছড়িয়েছে তা অন্য কোন জাতির ইতিহাসে দেখা তা যায়না।
এখান থেকেই শুরু হল মানুষের ভাবনায় শৃঙ্খলিত করার অপ প্রয়াস যার ফলে আজ সৃষ্টি ধর্ম বিদ্বেষের যার মূল দায় জাস্টিনিয়াস ও খ্রিস্টান ধর্ম যাজকদের । যার পথ অনুসরণ করে সকল ধর্মের ধর্মীয় নেতারা তাদের ইচ্ছা মত সমাজে রীতি তৈরি করতে শুরু করে। স্বাভাবিক ভাবেই মুক্ত চিন্তার মানুষরা এটা মেনে নিতে পারেনি ।
কিন্তু এতে ধর্মের কোন দোষ নেই। দোষ কুলাঙ্গার নরকের কীট জাস্টিনিয়াস আর ঐ সকল বেকুব স্বার্থান্বেষী ধর্মীয় নেতাদের যারা ধর্মের নামে মিথ্যা নিয়ম সমাজের উপর চাপিয়ে দেয়. সমাজের বেশীরভাগ মানুষ তিনটি বিষয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ধর্ম , সংস্কৃতি , দর্শন।যার মধ্যে দর্শন মানুষের ভাবনার প্রতিফলন, সংস্কৃতি মানুষের একতা বা রীতির প্রতিফলন , ধর্ম নীতি বা শৃঙ্খলিত সুন্দর জীবনের প্রতিফলন ।
যদি আমরা সংস্কৃতি ও ধর্মের দিকে দৃষ্টি দেই কি পাই ? এদের মধ্যে কোন সংঘাত নেই । একই সংস্কৃতির কিন্তু ভিন্ন ধর্ম ঐ জাতিতে রয়েছে তাতে কিন্তু কোন সমস্যা নেই। আমরা বাঙ্গালী জাতি পহেলা বৈশাখে সকল ধর্মের মানুষ একই সাথে পালন করি। কোন বাঁধা নেই । কিন্তু যদি কোন দিন এমন হত সমাজের রীতি তৈরির জন্য সংস্কৃতিকে ব্যবহার করা হত তখন এই বিরোধ অবশ্যই তৈরি হত কারণ সংস্কৃতির মধ্যে বা সংস্কৃতির সেই ভিত নেই যা দিয়ে সমাজের রীতি বা নিয়ম তৈরি করা যায়।
ঠিক সে সময় ধর্মেরও এই ভিত ছিলনা। তবে এই রীতি বা নিয়ম তৈরির ভিত হয় কোরআন নাজিলের পর। যেখানে পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান রয়েছে. এর ফলে কোরআন ও নবির(সঃ) এর পথ অনুসরণ করে ৪ খলিফা সহ দীর্ঘ কয়েক শতক এই বিধানের উপর ইসলামী খেলাফত চলেছে । পূর্ণাঙ্গ এবং শক্তিশালী একটি বিধান ছাড়া দীর্ঘ সময় এই রাজত্ব বা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা চলতে বা কায়েম হতে পারেনা। আজো মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রচলিত যার ভিত্তি কোরআন । কিন্তু পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মের বিধান দিয়ে এত দীর্ঘ সময় রাষ্ট্র পরিচালনার কোন নজির পৃথিবীতে নেই। খ্রিষ্ট ধর্ম পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ অনুসারিত ধর্ম কিন্তু বাইবেল দিয়ে কখন কোন রাষ্ট্র পরিচালিত হয়নি।
ধর্মের সাথে দর্শনের এত সংঘাতের পরেও পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অনেক ৯০% বেশী মানুষ এখনো ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এক মাত্র কারণ সকল ধর্মই সাম্য , কল্যান ও শান্তির কথা বলে। ধর্মের সাথে দর্শনের কোন সংঘাত কখনোই ছিলনা । সংঘাত ছিল ধর্মিয় নেতাদের তৈরি স্ব-স্বার্থরক্ষার নীতির সাথে মানুষের মুক্ত চিন্তার। নবী (সঃ) বলেছেন জ্ঞান অর্জনে সুদূর চীন দেশে হলেও যাও । অর্থাৎ ধর্মে মুক্ত চিন্তায় কোন বাঁধা নেই । বরং ধর্ম মুক্ত চিন্তাকে উৎসাহিত করে।
জ্ঞান মানুষকে সব সময়ই আকর্ষণ করে । একটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে কিন্তু তার জ্ঞান , আদর্শ কখন শেষ হয়না তা থাকে অমর। নবী (সঃ) , ঈসা (আঃ) , বুদ্ধ , কনফুসিয়াস, গান্ধী এমন আরও অনেক মনীষী রয়েছেন আজো যাদের দেখানো পথে মানুষ হাঁটছে । কেন ? কারণ তাদের জ্ঞানের আলো , তাদের আদর্শের আলো এত তীব্র যে মানুষ সেই আলোর চারপাশে আসবেই।
ধর্ম ও দর্শনের বা মানুষের সেই সংঘাত যা ইতিহাসের আবর্জনা জাস্তিনিয়াসের সৃষ্টি তা আজো বিদ্যমান । এর ফলই আজকের কুসংস্কার , ধর্মান্ধতা , নাস্তিকতা , ধর্ম বিদ্বেষ কারণ এই বদমাইশ যদি সেদিন মুক্ত চিন্তার স্কুল ভেঙ্গে না দিত তাহলে ধর্ম ধর্মের জায়গায় দর্শন দর্শনের জায়গাতেই থাকতো । আজ যেমন সংস্কৃতি নিয়ে কোন নেতি বাচক ভাবনা নেই সংস্কৃতির নিয়ে কোন বিতর্ক নেই বরং সংস্কৃতি সমৃদ্ধ করতে সবাই একমত। ঠিক তেমনি ধর্ম নিয়েও কোন বিতর্ক থাকতো না বরং ধর্মের ভাবনা সমৃদ্ধ করতে সবাই একমত হত।
ধর্মকে একটি নির্দিষ্ট বৃত্তে আটকে রেখেছে প্রত্যেক ধর্মের ধর্মীয় নেতারা । আর তা হচ্ছে স্বর্গ নরক।এই বিষয়টি পরকালের যা সম্পর্কে মানুষের কোন ধারণা নেই । মানুষ আছে ইহকালে বা বাস্তবে ধর্মও আছে ইহকালে বা বাস্তবে তাহলে কেন ধর্ম শুধু পরকালের বিষয় হয়ে থাকবে। আবার এটিও সত্য পরকালের বিষয়টি কেবল ধর্মই স্বীকৃতি দেয় ঠিক যেভাবে ধর্ম স্বীকৃতি দেয় মানুষ শ্রেষ্ঠ। কিন্তু ধর্মীয় নেতারা খুবই চাতুর্যের সাথে কেবল পরকালের বিষয় তুলে ধরে কিন্তু ইহকালের কথা তেমন বলেনা। আর কারণ হচ্ছে যদি ইহকালের কথা বলে এবং ধর্মে ইহকালের কথা মানুষ বুঝে ফেলে তাহলে তাদের আর কর্তৃত্ব থাকলো কই ? তখন মানুষ ধর্মে ইহকালের কথা খোজা শুরু করবে এবং ধর্ম হয়ে যাবে মানুষের নাগালের মধ্যে খুবই সহজবোধ্য বিষয় ঠিক মাতৃভাষার মতই । ধর্মের নেতাদের জারীজুরি শেষ।
জানিনা কবে এই পরিবর্তন আসবে , কেবল চোখ বন্ধ করে ঈশ্বরের নাম জপাই ধর্ম নয় বরং চোখ খুলে ধর্মে ইহকালের কথা জীবনের কথা কি বলা আছে তা মানুষ তার নিজের মত করে প্রত্যেকটি মানুষের নিজের দর্শন নিজের ভাবনা দিয়ে নিজের মত করে বের করবে।
তবে প্রক্রিয়া চলছে । নাস্তিক বা ধর্ম বিদ্বেষী যখন ধর্মের বিপক্ষে কথা বলে আস্তিক তখন পক্ষে বলে এই তর্কে কিন্তু উভয় পক্ষ ধর্ম নিয়েই ভাবছে এবং প্রত্যেকে তার অবস্থান থেকে বা তার দর্শন থেকে নিজের মত করে ভাবছে । আর এটাই হচ্ছে প্রকৃত পথ ঠিক বিষয়টির কাছে যাওয়ার।এক সময় হয়ত এই তর্ক থেকেই জন্ম নেবে নতুন দর্শন যা কোন ঐশী বাণী বা কোন ধর্মীয় নেতার বিতর্কের ঊর্ধ্বের বাণী যা মেনে নিতেই হবে এমন কিছু নয় বরং সাধারণ মানুষের ভাবনার বা মানুষের দর্শনের প্রতিফলন হবে সেই ধর্মের দর্শন । আমাদের সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে । ধর্মের পক্ষে হোক বা বিপক্ষে হোক কোন মত বা দর্শন অনুসরণ করে নয় বরং নিজের ভাবনা বা নিজের জিজ্ঞাসা নিয়েই ধর্ম নিয়ে ভাবতে হবে । প্রচলিত পথে ধর্মের ভাবনা বা স্বর্গ নরক পর্যন্ত ধর্ম বা কেবল পরকালের বিষয় ধর্ম এটি খুবই ভুল ভাবনা । এ থেকে বের হয়ে ইহকাল বাস্তবকে সামনে রেখে ধর্ম নিয়ে ভাবতে হবে। তাহলেই হয়ত ধর্ম নিয়ে সঠিক দর্শনের দেখা মানুষ পাবে। অবসান হবে ধর্ম ও মানুষের দর্শনের সংঘাত।
©somewhere in net ltd.