![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালবাসি মানুষ, অপছন্দ করি মানুষের নীচতা।
The Truman Show (1998)
IMDb- 8.0/10
RT- 95% “Certified Fresh”
Metacritic- 90/100
আজকাল সারা পৃথিবীতেই রিয়েলিটি শো এর জয়জয়কার, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম না। রিয়ালিটি শো হচ্ছে টিভির জন্য তৈরি এমন একটা প্রোগ্রাম যেখানে কোন স্ক্রিপ্ট ছাড়াই অনুষ্ঠান তৈরি করা হয়, আর “মেলোড্রামাটিক” অথবা “হিউমেরাস” সব মুহূর্ত আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। যেহেতু বেশীরভাগ অনুষ্ঠানেই অংশগ্রহণ করেন আপনার আমার মত সাধারণ মানুষ, তাই “মেলোড্রামা” বেশ ভালোই হয় এসব অনুষ্ঠানে! আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকটা সফল রিয়েলিটি শো হয়েছে যার মধ্যে আছে ক্লোজ আপ ওয়ান, সেরা কণ্ঠ, সাউথ এশিয়ান সুপারস্টার, সুপার হিরো সুপার হিরোইন ইত্যাদি ইত্যাদি…এছাড়া কয়েকদিন পরেই শুরু হচ্ছে বাংলাদেশী আইডল। আসলে এরকম শো এত বেশী বেশী হচ্ছে যে এখন আর কেউ পাত্তাই দেয়না এসব অনুষ্ঠানকে, প্রতিযোগীরা যখন বলে “আমাকে ভোট করার জন্য এসএমএস করুন এই নাম্বারে”…আমার মনে হয় “ট্যাকা কি তোর বাপে দিবো”??
কিন্তু এসব হচ্ছে সাধারণ গতানুগতিক রিয়েলিটি শো, কিন্তু কেমন হবে যদি আপনার জীবনটাই হয় একটা রিয়েলিটি শো? আপনি জীবনে যা কিছু করেছেন আর আপনার যত প্রিয়জন আছেন, সবই যদি আসলে মেকি হয় তাহলে কেমন বোধ করবেন? আপনাকে যদি একটা গিনিপিগের মত খাঁচায় আটকে রেখে দিনের পর দিন আপনার উপর চালানো হয় এক্সপেরিমেন্ট? কেমন হবে সেই জীবনটা? জানি ব্যাপারটা খুব বাস্তবসম্মত না, তবে এমন কিন্তু হতেও পারে! The Truman Show এমনই এক অভাগাকে নিয়ে তৈরি একটা অসাধারণ মুভি। যেখানে ট্রুম্যান (জিম ক্যারি) হচ্ছে একটা রিয়েলিটি টিভি শো এর হিরো, যদিও তাঁর কোন ধারনাই নেই যে তাঁর জীবনটাই হচ্ছে সেই শো!
কাহিনীর শুরু হয় যখন ট্রুম্যান কে একটা জায়ান্ট কর্পোরেশন আইনগতভাবে adopt করে নেয়। ট্রুম্যান এর জন্ম হওয়া থেকে শুরু করে প্রতিটা সেকেন্ড তাঁরা ভিডিও করে বিশ্বব্যাপী লাইভ প্রচার করতে থাকে, যেই শো এর নাম হচ্ছে “The Truman Show”। এই শো এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে হিরো নিজেই জানেনা যে সে আসলে একটা রিয়েলিটি শো এর হিরো, এর কারনে এটি পরিনত হয় পৃথিবীর সবচেয়ে “রিয়েল” রিয়েলিটি শো তে…আর সবচেয়ে জনপ্রিয়ও বটে। ট্রুম্যান এর ধারণা সে একটা সাধারণ মানুষ যে একটা ছোট চাকরি করছে, তাঁর বাবা মারা গেছেন তাঁরই সাথে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে। অথচ তাঁর মুখকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে পরিচিত মুখ, যেটা ৫০০০ ক্যামেরা প্রতিনিয়ত সারা বিশ্বব্যাপী সম্প্রচার করে যাচ্ছে। সে যে শহরে থাকে সেটা আসলে বিশাল একটা সেট, আর সেই শহরের প্রতিটা মানুষ হচ্ছে ট্রেইন্ড অ্যাক্টর, যারা প্রত্যেকটা কাজ করছে শো এর স্ক্রিপ্ট ধরে ধরে। এভাবেই কেটে যাচ্ছিলো দিনের পর দিন, বছরের পর বছর…ট্রুম্যান এর বয়স যখন ৩০ বছর, ঝামেলাটা বাজে তখনই। যদিও ট্রুম্যান বিবাহিত (অবশ্যই স্ক্রিপ্ট অনুসারে তাঁর নায়িকার সাথে), কিন্তু সে প্রেমে পড়ে যায় শো এর এক এক্সট্রা’র সাথে। সেই মেয়েটিই ট্রুম্যানকে জানায় যে তাঁর জীবনের সবকিছুই আসলে নকল, আর এরপরই ট্রুম্যান এর মনে সন্দেহ দানা বেঁধে উঠতে থাকে। যদিও ওই মেয়েটিকে সাথে সাথেই শো থেকে ছুড়ে ফেলা হয়, ট্রুম্যানের মনে তাঁর ছায়া পড়েই যায়! শুরু হয় ট্রুম্যানের সত্য অনুসন্ধানের চেষ্টা।
কিন্তু চাইলেই কি সব হয়? ট্রুম্যান যতই চেষ্টা করুক, সত্য উদঘাটন করতে গেলে সে পদে পদে বাঁধা পায়…এত বড় আর সফল একটা শো তো আর নষ্ট করা যায় না! শো এর এক্সেকিউটিভ প্রডিউসার, যে কৌশলী আর দারুন বুদ্ধিমান একজন মানুষ (এড হ্যারিস) বারবারই ট্রুম্যান কে বিশ্বাস করতে বাধ্য করে ট্রুম্যানের ধারণা ভুল। শেষ পর্যন্ত ট্রুম্যান কি সেই শো এর নকল জীবন থেকে বের হতে পারবে? নাকি সারা জীবন একটা টিভি শো এর নায়ক হিসেবেই কাটিয়ে দেবে, এটাই হচ্ছে মিলিওন ডলারের প্রশ্ন!
আমার কাছে মুভিটা খুবই ভালো লেগেছে, বেশ ইউনিক একটা মুভি আর জিমের অভিনয় তো ছিল মাইন্ড-ব্লইং। জিম ক্যারি আসলে একজন টপ ক্লাস অভিনেতা; কিন্তু তাঁর কথা মনে হলেই আমাদের মনে একটা ভাঁড় এর ছবি ভেসে উঠে। যেমন নোকিয়া মোবাইল বলতেই এখনও আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে ৩৩১০, যদিও নোকিয়ার অনেক ভালো ভালো সেট আছে। আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে মুভির “আইডিয়া”, এমন একটা বিষয় নিয়ে যে মুভি বানানো যায় সেটাই অবাক করা ব্যাপার। এছাড়া কাস্টিং, সেট ডিজাইন, সিনেমাটোগ্রাফি বা অভিনয় ছিল অসাধারণ। মুভিটা ছিল কমেডি আর ড্রামা এর একটা পারফেক্ট মিশ্রণ, কাতুকুতু দিয়ে হাসানোর কোন চেষ্টা নেই…আপনি এমনিতেই হাসবেন এই মুভি দেখলে!
মুভিটা আপনাকে ভাবাবে, হাসাবে, চরিত্রগুলোর সাথে একাত্ম করে তুলবে, আর এইসব সো কল্ড রিয়েলিটি শো এর ব্যাপারে একটা চমৎকার স্যাটায়ার হিসেবে অনেকদিন টিকে থাকবে। এই মুভিটা মোট তিন ক্যাটাগরিতে অস্কার নমিনেশন পেয়েছিল, এর মধ্যে আছে সেরা পরিচালক, সেরা পার্শ্ব-অভিনেতা আর সেরা অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে। জিম কোন অস্কার নমিনেশন পাননি এই মুভির জন্য, আমার কাছে একটু অবাকই লেগেছে জিনিশটা। তবে জিম আর এড হ্যারিস দুজনেই গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারটা ঠিকই বগলদাবা করেন! সবাইকেই রেকমেন্ড করার মত একটা মুভি, যারা দেখেছেন তাঁরা জানেন মুভিটা কেমন, আর যারা দেখেননি তাঁরা তাড়াতাড়ি দেখে ফেলেন!
ডাউনলোড লিংক- Click This Link
** একটা মজার তথ্য শেয়ার করছি, আপনারা অনেকেই হয়তো স্কিজোফ্রেনিয়া নামের মানসিক রোগের কথা শুনেছেন। এই রোগের রোগিরা নিজেদের সম্পর্কে এবং পরিপার্শ্ব সম্পর্কে একটা অযৌক্তিক ধারণা করে থাকেন। একজন সাইকিয়াট্রিস্ট বলেছেন তিনি এমন কিছু স্কিজোফ্রেনিয়াক রোগী পেয়েছেন যারা মনে করেন তাঁদের জীবনটা আসলে একটা রিয়েলিটি শো! এদের মধ্যে একজন নিউ ইয়র্ক গিয়েছিলেন শুধুমাত্র এই কারনে যে World trade Centre কি আসলেই ধ্বংস হয়েছে কিনা সেটা চেক করার জন্য, তিনি ধারণা করেছিলেন সেটা হয়তো তাঁর শো’র একটা “প্লট টুইস্ট” ছিল। আরেকজন স্ট্যাচু অফ লিবার্টি এর উপরে উঠার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁর ধারণা ছিল তাহলে হয়তো তিনি তাঁর হাইস্কুল গার্লফ্রেন্ড এর সাথে আবার মিলিত হতে পারবেন আর তাঁর “শো” থেকে মুক্তি পাবেন! এই অবস্থাকে ব্রিটিশ জার্নাল অফ সাইকিয়াট্রি নাম দিয়েছে “ট্রুম্যান সিনড্রোম”।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৮
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: আসলেই অসাধারণ মুভি, জিম ক্যারি তার সেরা পারফরম্যান্স দিয়েছে এই মুভিতে!
২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯
ভেজাল* বলেছেন: ছবিটা সুন্দর। কিন্তু কমেডি ক্যাটাগরিতে ফেলা যায় না। আর জিম ক্যারি তার রেগুলার ট্রেডমার্ক কোন কমেডি করেনি এটাতে। বরং একটা সময় চোখের পানি চলে আসে।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০৮
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: আমিতো বলিনি এইটা কমেডি, এইটাকে বরং ড্রামা মুভি বলা যায়। কাহিনিটা পুরাই ইউনিক, অসাম লেগেছে জিম এর অভিনয়। আপনার সাথে সহমত।
৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১০
একাকী বালক বলেছেন: আমি মাঝে মাঝে ভাবি ধরেন আমরা সবাই এমন। দুনিয়াটাই একটা সেট। আর আমাদের সৃষ্টিকর্তা চুপচাপ আমাদের সবার কান্ড দেখতেছে।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৫
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: কথাটা তো ঠিকই বলসেন ভাই, আসলেই তো তাই!
৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২০
বইয়ের পোকা বলেছেন: খুবই ভালো লেগেছিল সিনেমাটা। বেচারার জন্য কষ্ট পেয়েছিলাম।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৬
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: আমারও কষ্ট লেগেছিল, এটাই মুভির আর অভিনেতার সার্থকতা!
৫| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১০
কালা মনের ধলা মানুষ বলেছেন: যেসব মুভি শেষ করে চমকে গেছি কিম্বা তব্দা খেয়েছি, তার মধ্যে এই সিনেমা অন্যতম।
অসাধারন ভাবে লিখেছেন প্রিয় এই মুভিটা নিয়ে। ামার কাছে জিম ক্যারির অন্যতম সেরা কাজ, সম্ভবত নাম্বার ২১ এর পরেই।
+++++++++++++++++++
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৫
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: আমার কাছে থিমটা একেবারেই আলাদা লেগেছে, একটা চমৎকার স্যাটায়ার মুভি। এই মুভিতে জিম এর পারফরম্যান্স অনেকদিন মনে থাকবে, আপনার কমেন্টে প্লাস!
৬| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: চ্রম মুভি। অসাধারণ থিম। +++
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৫
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: আসলেই, জোস লেগেছে মুভিটা!
৭| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫২
এ্যাংগরী বার্ড বলেছেন: মুভি দেখেছি অনেক অনেক আগে। তবে নতুন মাত্রায় আপনার রিভিউ ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ। +++++
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৬
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: আমার রিভিউ ভালো লাগায় সম্মানিত বোধ করলাম! কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ!
৮| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১২
পুলক20 বলেছেন: দেখি নাই,দেখতে হবে।অনেক আগের মুভি,এটার ডিভিডি কি পাওয়া যাবে??
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৭
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: ডিভিডি হয়ত পাওয়া যাবে, তবে সেটার কি দরকার? ডাউনলোড করে নেন, লিঙ্ক তো দিয়েছিই!
৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৪৯
কাউসার রুশো বলেছেন: দারুন একটা মুভি
“ট্রুম্যান সিনড্রোম” এর তথ্যগুলো জানতাম না। ইন্টারেস্টিং
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০৪
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: রুশো ভাই কমেন্টের জন্য ধইন্যা! "ট্রুম্যান সিনড্রোম" ব্যাপারটা জেনে আমিও অবাক হয়েছিলাম।
১০| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৩৮
ছাই তানিম বলেছেন: ধুর্, মিয়া কি কন ? এখনকার লাইফটা তো আসলেই রিয়েলিটি শো, নাকি আমিও স্কিজোফ্রেনিয়াক ??
যাই হোক, চ্রম মুভি, চ্রম পোস্ট । ধইন্যা !!
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৭
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: কি কন ভাই? এখনকার লাইফ কি রিয়েলিটি শো নাকি? আমি নিজেই তো কনফিউজড হয়ে গেলাম! কমেন্টের জন্য ধইন্যা।
১১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৪
নিওফাইটের রাজ্যে বলেছেন: চমৎকার রিভিউ শাতিল ভাই
ঐ মুভিটা দেখছেন নাকি?
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৮
নিস্প্রভ নীল বলেছেন: ধইন্যা লন! "ওই" মুভিটা আবার কোনটা?
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪
মাক্স বলেছেন: দেখসি মুভিটা। একটা সময়তো ধারণা করছিলাম ট্রুম্যান সাগরে ডুবে মারাই যাবে।
অসাধারন একটা মুভি