![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনের কথাগুলো শেয়ারের জন্যে এই ছোট্ট শেয়ার বক্সটা যথেষ্ট নয়। কিন্তু আমি এতই সাধারণ যে এর বেশি করার ক্ষমতাও নাই।।।।। এই ছোট্ট সময়েই বুঝে গেছি স্রষ্টার কাছে কিছু চাওয়া ঠিক না। সারাজীবনে আমি তার কাছে কিছুই চাইনি হাত জোড় করে। কিন্তু গত কিছু দিনে রেগুলার হাত জোড় করে প্রার্থনা করে গেছি, তাও আমার জন্যে না। আমার বাবার জন্যে। আমায় ঘিরে যে স্বপ্ন দেখেছেন সেগুলো পূরণ করতেই হাত পেতে ছিলাম স্রষ্টার দ্বারে। কিন্তু তিনি আমার কপাল এতটাই যে খারাপ বানিয়েছেন সেটা তো আর আগে বুঝি নি। বাবা বলত তুই বড় কিছু একটা কর, নিজের জন্যে কিছু কর, তোর মায়ের জন্যে কিছু কর। কিছু কর যাতে সমাজে মাথা উচু করে নিজের নামটা বলতে পারিস। চাকুরি স্বপ্নটাও তারই দেখানো। শেষ মুহুর্তে এসে এভাবে তার করুণ মুখ দেখব এটা ছিল আমার কল্পনার বাইরে।। ভেবেছিলাম রেজাল্ট নিয়ে বাড়ি গিয়ে সারপ্রাইজ দেব। কিন্তু সবার যে সব আশা পূরণ হয় না।।।
একটি মর্মস্পর্শী পত্র!
প্রিয় বাবা
এ চিঠিটা যখন তুমি পড়ছ, তখন আমি তোমাদের কাছ থেকে দূরে। অ…নে…ক দূরে। না, তোমাদের প্রতি কোনো রাগ বা অভিমান থেকে আমার এই চলে যাওয়া নয়। ভয় পেয়ো না, এটা কোনো সুইসাইড নোট না। আমি বেঁচে আছি এবং থাকব তত দিন, যত দিন আমার জীবনটা উপভোগ করতে পারব।
অনেক ভেবে দেখলাম, আমার নিজস্ব একটা জীবনদর্শন আছে এবং সেটা বাস্তবায়ন করাই সমীচীন। আমি ইশরাত এর সঙ্গে চলে যাচ্ছি। তুমি কি ইশরাতকে চেনো? চেনার অবশ্য কথা নয়। কখনো দেখনি। যা-ই হোক, এটা টিনএজ আবেগের বশবর্তী হয়ে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত নয়। হ্যাঁ, ওকে আমি ভালোবাসি, কিন্তু সেটাই এই চলে যাওয়ার একমাত্র কারণ নয়। ও শুধু আমার বন্ধু বা প্রেমিকা নয়, আমার কমরেড। আমরা একই মতাদর্শে বিশ্বাসী। আমরা এ দেশে একটা সামাজিক পরিবর্তন আনতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এর জন্য হয়তো অনেক বাধা আসবে, অনেক রক্ত ঝরাতে হবে। কিন্তু আমরা আমাদের আদর্শে অটল। এ ছাড়া নেতারা খুব ভালো ভাবে আমাদের প্রশিক্ষিত করছেন।
আমার কোনো উপায় ছিল না বাবা। অবশ্য আমার আয়ু আর বেশি দিন নেই, তাই আমাকে আর ফিরে পেলেও খুব বেশি দিনের জন্য পেতে না। ইশরাত ওর অজান্তে একটা ভয়াবহ অসুখ বয়ে বেড়াচ্ছিল শরীরে। আর সেই রোগটা এখন আমার মধ্যেও সংক্রমিত। জীবনের যে কয়টা দিন বাকি আছে ইশরাতের ভালোবাসা আর আদর্শের সশস্ত্র লড়াই-ই হবে আমার সম্বল।
আমার আর ইশরাতের চিকিত্সার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। ভয় নেই, বাসা থেকে কিছু নিয়ে যাচ্ছি না, তোমার কাছেও চাইব না কখনো। আমরা নিজেদের ব্যবস্থা নিজেরাই করব। আগে হেরোইন নিতাম (তোমাকে টের পেতে দিইনি কখনো)।
ভালো থেকো, বাবা মা_কে ভালো রেখো।
বিদায়…।
বি. দ্র. মাথাটা এবার একটু ঠান্ডা করো, বাবা। প্রেশার তো বেড়ে গেছে, বুঝতেই পারছি। একটা ট্যাবলেট খেয়ে নাও। ওপরে লেখা সবকিছুই মিথ্যা— ইশরাতের আদর্শের সংগ্রাম—সব। কিন্তু দেখলে তো বাবা, পৃথিবীতে খারাপ কত কিছুই ঘটতে পারে! এর তুলনায় একটা সেমিস্টার পরীক্ষায় ফেল করা তো কিছুই না, তাই না? রিপোর্ট কার্ড আমার ড্রয়ারে রাখা আছে। ওটাতে সাইন করে দিও। আর মাথা পুরোপুরি ঠান্ডা হলে আমাকে জানিও, আমি চলে আসব। আমি এখন বড় মামার বাসায়।
তোমার মেজো ছেলে সাজ্জাদ
#ইশরাত_নামটি_একটি_কাল্পনিক_নাম
©somewhere in net ltd.