![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ এমন একটি জায়গা যেখানে 'আমার ওটা ভালো লাগেনি' এই কথাটা বলতে গেলেও হয়তো বা ভাবতে হয় কথাটি উষ্কানিমূলক কি না, সমাজ কি ভাববে বলা ঠিক হবে কি না! আসলে এমন পরিবেশে বড় হয়ে নিজেও অনেকটা এমন ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে গিয়েছি। ঐ যে বলে না? জন্ম-মানুষ কি বলবে?-মৃত্যু ... আমাদের জীবনটাও এরকম। তাই ভাবলাম বাস্তবে না হো ভার্চুয়ালি তো এমন কোথাও যাওয়া যাবে যেখানে মানুষ কি বলবে? এটাকে এতটা পাত্তা না দিলেও চলে, যাই হোক। আমি অতি সাধারন একটি বালিকা। বিতর্কিত বিষয়ে জড়ানো পছন্দ করিনা। তাই তর্কাতর্কি না করলেই ভালো। আমার কবিতা গল্প লেখার প্রতি ঝোঁক আছে... মাঝে মাঝে ছবি আঁকার চেষ্টা করি। প্রচন্ড রকমের স্বাধীনচেতা, নারীদের ক্ষমতায়ন কামনা করি, কিছুটা নারীবাদি। সবার ওপরে মনুষ্যত্বের ধর্ম এটাই বিশ্বাস করি।
আজ ঐশ্বর্য মারাত্মক রকমের ঝগড়া করার মুডে আছে, ভুরুগুলো কুঁচকে গোলাপী রং এর টিপটার চারিদিকে বক্ররেখা ঘিরে ধরেছে, দেবাশীষ যদি কবি হতো তাহলে ও ঠিক হেসে বলে উঠতো, “তোমার ভুরুদুটো সাগরে এক গোলাপী পাল তোলা নৌকোকে ঘিরে ঠিক যেন ঢেউ রচনা করে তুলেছে...” আর তখন ঐশ্বর্যও আরো ক্ষেপে বলে উঠতো, “তোমার মুন্ডু!! সাগরে পালতোলা নৌকা চলে?”
কিন্তু দেবাশীষ কবিতা লিখতে পারেনা শুধু সিম্পল ভাবে এক্সপ্রেস করতে জানে, “তোমার রেগে যাওয়া মুখটা দেখতে আমার খুব ভালো লাগে...” ঐশ্বর্য তখন রাগ ধরে রাখার চেষ্টা করতে করতে হেসে দেয়...তবু আজ কেন জানি এমন হলোনা, আজ ঐশ্বর্যের চোখে রাগ আগ্নেয়গিরির মাঝে স্তূপ হয়ে থাকা লাভার মতো জমাট বেঁধে আছে। “তুমি কি বলোতো? তুমি জানো পরশু আমাকে দেখতে আসবে আর আজ তুমি এমন ভাব দেখাচ্ছো যেন কিছু যায় আসেনা?”
দেবাশীষ অন্যদিকে তাকিয়ে একটা সিগারেট ধরানোর চেষ্টা করছিলো লাইটার দিয়ে...
-“হ্যালো! আমি তোমাকে কিছু বলতেছি!!”
-“হুম শুনলাম তো!”
-“কিচ্ছু যায় আসে না?”
-“শুনো, আমি খুব ভালো করে জানি যে দেখতে আসবে তার সাথে তোমার বিয়ে হবেনা, এইজন্যই আমি রিল্যাক্সড মুডে সিগারেট খাচ্ছি...”
-“কেন হবেনা? এত শিউর কেমন করে তুমি?”
-“ঐ ছেলে ইতালি থেকে আসছে বলছিলা না? ইতালিয়ান মেয়েরা অনেক সুন্দর হয়. উচ্চতর রসের স্বাদ পেয়ে গেলে নিম্নমানের রস আর জিভে স্বাদ যোগায় না, বুঝতে পারছো?”
ঐশ্বর্য ডিপার্টমেন্টে টপ করা মেয়ে হলেও মাথায় বাস্তবিক জগতের সবকিছু একটু দেরী করে ঢুকে সবসময়ই। ও দেবাশীষের কথাটা ঠিক বুঝতে না পেরেও বোঝার ভান করে মাথা নাড়লো।
-“আর এজন্যই রসগোল্লা খাওয়ার পর আপেল খাইলে মিষ্টি লাগেনা...” দেবাশীষ নন-স্টপ বলেই যাচ্ছিলো।
-“ও তো তুমি বলতে চাইছো আমি নিম্নমানের রস?? আমাকে তুমি রস বলতেছো তাও নিম্নমানের?? আমি কালকে পার্লার থেকে সেজে ঐ ইতালিয়ানের সামনে বসবো... আমি মা কেও বলে দিবো যে আমি আর তোমাকে বিয়ে করতে চাইনা...”
-“কুল ডাউন বেবি!! তোমাকে কাল না পরশু দেখতে আসবে। আর পার্লার থেকে সেজে গেলে তো আমার জন্য আরো ভালো হবে। তুমি একদিক দিয়ে ঘরে ঢুকবা আর তোমার ইতালিয়ান পেছনের দরজা দিয়ে তোমার বিভৎস আটা ময়দা মাখা চেহারা দেখে পালাবে!!”
-“তুমি একটা অপদার্থ! একটা অসভ্য! একটা মহা ছোটলোক তুমি! তোমার সাথে আমি তিনবছর কিভাবে প্রেম করছি ভাবতে আমার ঘেন্না হয়!! আমি এই মুহুর্তে ব্রেক-আপ করলাম তোমার সাথে। আমি পরশু সত্যি-ই ইতালিয়ানের সামনে বসবো... I hate you!!!” ভ্যানিটি ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে গটগট করে হেঁটে চলে গেল ঐশ্বর্য... দেবাশীষ তখনও ফুরফুরে আমেজে সিগারেটে টান দিয়ে চলছে যেন কিছুই হয়নাই।
©somewhere in net ltd.