নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্প @ মায়া

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:২১



কি রে মায়া তুই আজ কাজে জাবি না । না রে বুবু আজ কাজে যাব না । মেয়েটার শরীরে জ্বর । তাছারা আজ বিকালে বিচার । মেয়ের বাপ তার লোকজন নিয়ে আসবে
আমি রাস্তার মাটি কাটার কাজ নিয়েছি তাতে নাকি তার ইজ্জত গেছে । আমি যদি কাজ না করি তবে খাব কি ?
--- বিচারের কে করবে শুনি ।
--- কে আবার আমার স্বামীর মামা হল তাদের ইউনিয়নের মেম্বার । সে আসবে আর যারা বিয়ের সময় ছিল তারা আসবে ।
---- টা তকে আর তোর মেয়ের যে ভাত কাপড় দেয় না । এই বিচার কে করবে ।
---- আমার ভাত কাপড় দিবে না। বলে ভাই দের কাছে ওয়ারিশ পাই না। সেটা নিতে
বলে । আমি যদি আজ ভাই দের কাছে ওয়ারিশ বেঁচে নিয়ে যাই , কাল আমাকে
যদি বের করে দেয় কই যাব । ওয়ারিশ আছে বলেই তো ভাইয়েরা এখন দেখে
ঘরে জায়গা দেয় ।
--- ঠিক কথা রে মায়া । আচ্ছা চিন্তা করিস না। আমরা বিকালে আসব নে । আছরের
পরে হবে তো বিচার দেখি ।
--- মায়া কান্না করে বলে ফুলজান বউ তুমি কিন্তু আইস । ওরা আমার মেয়ে কে নিয়ে যাবে না হয় ।
--- আরে চিন্তা করিস না। দেখি কই করা যায় ।
ফুলজান , ললিতা । খুকি, নাজু রাস্তার কাজ করছে । মাঝে মাঝে একটু পান খায় ।
তাদের কাজ দেখা শুনা করে নাছিমা বেগম । নাছিমা বেগম মেয়ে মানুষ হলেও খুব সাহসী । গ্রামের মধ্যে দিয়ে মটর সাইকেল চালায় ।
নাছিমা আজ এসেছে ফুলজানের সাইড ভিজিটে ।
--- কি ফুলজান খালি পান খেলে হবে । সবাই মিলে কাজ করতে হবে । সবাই এসেছে
--- না আপা আজ মায়া আসে নাই ।
---- ঐ নতুন মেয়েটা ।অতো কাজে অনেক ভাল । আসে নাই কেন ?
---- আপা গরীবের জীবন । ওর স্বামী তার বাপের অংশ বেঁচে স্বামী কে দিতে বলে ।
কিন্তু ও তার বাপের ওয়ারিশ বেঁচে না। তাই স্বামী তাকে নেয় না। এখন স্বামী
শুনেছে যে মায়া রাস্তার কাজ নিছে তাই ওকে নিবে না। এখন আজ বিকালে
মেম্বার নিয়ে বিচার বসিয়েছে ।
--- আচ্ছা তাই । ফুল জান তুমি আমাকে মায়ার কাছে নিয়ে চল ।
ফুলজান কে নিয়ে সুপার ভাইজার নাছিমা আসে মায়ার বাড়িতে । মায়া খুব ভয়ে
আছে । জামাই যদি ছেড়ে দেয় সে কোথায় যাবে । তার মেয়েটার কই হবে ।
নাছিমা মায়া কে বলে বাচ্চা নিয়ে তুমি ঐ রিক্সা করে আমার সাথে এসো ।
মায়া কে নিয়ে নাছিমা থানায় যায় । থানার ওসি নাছিমার কথা শুনে বলল আপা আমি যৌতুকের মামলা আর মেয়ে আর স্ত্রী কে পালার ভরন পোষণ মামলা নিয়ে নিচ্ছি । আছের পর বিচার । আমি ওকে বিচারর মধ্যে ধরে নিয়ে আসব ।
মায়া বলল নাছিমা আপা ওর মামা কিন্তু মেম্বার ।
--- আরে মেম্বার হয়েছে তো কই হয়েছে । চাইলে তুমিও মেম্বার হতে পার । খুব সাহস
দিল নাছিমা মায়া কে । নাছিমা বলল তোমার কাজ খুব ভাল । আর তুমি কাজ বুজতে পার তারা তারি । আমি চাই তুমি এই কাজের গ্রুপ লিডার হউ । মায়া মনে
রেখ যারা কাজ করে নিজের পায়ে দাড়ায় তারাই মানুষ । তুমি কেন ভয় পাও
আমরা তোমার সাথে আছি ।
বিকালে মায়ার জামাই রনি মিয়া ও রাজ্জাক মেম্বার তার লোক জন নিয়ে মায়ার বাড়িতে আসছে । মায়ার ভাই একজন দিনমজুর অন্য ভাই রিক্সা চালায় ।
মায়া তার চার বছরের মেয়ে নিয়ে তাদের সামনে আসলো । রাজ্জাক মেম্বার বলছে
মায়া তুমি তো কাজটা ভাল করলে না। স্বামীর হুকুম ছাড়া তুমি রাস্তার কাজ নিচ এটা ঠিক না। আমি তোমার চেয়ার ম্যান কে বলেছি । আর তুমি তো তোমার স্বামীর
কথা শুন না। তুমি কই স্বামীর সংসার করবা না। যদি না কর সেটা ভিন্ন কথা । আর করতে হলে স্বামীর কথা শুনতে হবে । স্বামী যা বলে তাই মেনে চলতে হবে ।
মায়ার ভাবি বলল- মেম্বার সাব ছয়মাস যাবত মায়ার স্বামী কোন খোঁজ খবর নেয় না। এখন কাজ নিছে আর আপনাদের নিয়ে আসছে ।
--- মেম্বার বলল ছয়মাস খবর নেয় না । আমাকে জানাবা না। । আমরা আছি কেন ।
--- মায়া বলল - আমার মেয়ের জ্বর কেউ একটা দাওয়াই কিনে দেয় না। আমার
ভাইয়েরা কত দেখবে ।
--- মায়ার স্বামী রনি বলে এই জন্য তুমি দায়ী । ভাই ভাই না করে আমার কথা চিন্তা করতে পার না। মেয়ে মানুষের বিয়ের পর স্বামীই সব কিছু । মেম্বার মামা বললাম তোমার ভাইদের কাছে ৪ গণ্ডা জায়গা আছে বেঁচে দাও । আমি ব্যবসা করি তাও না ।
এই খানে এক গণ্ডা জায়গার দাম ৭০ হাজার টাকা ।
--- মায়া বলল না আমি আমার বাবার জায়গা বেচব না। আমার ভাইরা এখন এত
টাকা দিয়ে জায়গা নিতে পারবে না।
---- তাহলে কই আমি ব্যবসা করব না।
---- মেম্বার বলল তোমার দু ভাই তো কিছু করতে পারে ।
এমন সময় পুলিশ এসে বলল , না দুই ভাইয়ের কিছু করতে হবে না। যা করার থানা
পুলিশ করবে । কে কে আসছে যৌতুকের মামলায় সবাই কে থানায় নিয়ে চল ।
রাজ্জাক মেম্বার বলল আমি মীমাংসার জন্য আইছি । ঠিক আছে থানায় চলুন ।
মায়া সকালে রাস্তার মাটি কাটছে । মায়ার শাশুড়ি এসে বলল বউ তুমি মামলা টা তুলে নাও । মায়া বলল মা আমি তো মামলা তুলতে পারব না। আপনার ছেলের বিচার হলে এই গ্রামের আরও ১০ টা মেয়ের সংসার যৌতুকের জন্য নষ্ট হবে না।
যদি আপনার মেয়ের সাথে এমন হত আপনি কই করতেন । শাশুড়ি চোখের পানি মুছে বলে মা তুমি ঠিক কাজ করেছ । মায়ের মন তাই ছেলের জন্য কাদে । আমার স্বামী আমার বাবার বাড়ির সব বেঁচে এনে দিলাম । আমার বাবা তোমার শ্বশুর কে কত টাকা যে দিছে তার কোন হিসাব নাই । আমার পলাটা বাপের মত লোভী । মা তুমি ঠিক কাজ করেছ । বলে বউ কে বুকে জরিয়ে ধরে বলে । মা এর যদি ভাল হয়ে তোমাকে নিতে আসে তুমি আইসো । মায়া বলে মা ওর আসা লাগবে না। আপনি আসলেই আমি যাব । মা আমি চাই আমার মেয়েটা লিখা পড়া শিখে আমাদের লিডার আপার মত হউক ।।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:২৬

প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার গল্প। ধন্যবাদ

২| ১০ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:১৩

বিজন রয় বলেছেন: এত সুন্দর লেখা বাদ দিলাম কি করে!!

++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.